চলারপথে রিপোর্ট :
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল উমারপুর ইউনিয়ননের হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা হামিদ মোল্লা (৮৬) ও তার স্ত্রী ফজিলা খাতুন (৭৭) দম্পতি। সংসারে ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের রয়েছে তাদের। যমুনা নদীর ভাঙনে বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলেরা যার যার মত সুবিধা মত জায়গায় চলে গেছেন। কিন্ত ৫ ছেলের সংসারে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ঠাঁই হয়নি। কয়েকদিন আগে তাদের উপজেলার সম্ভুদিয়া জান্নাতুল বাকি কবরস্থান এলাকায় নির্জন স্থানে ফেলে রেখে গেছেন স্বজনরা। এ ঘটনার পর তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। চলছে মামলার প্রস্তুতি।
জানা যায়, প্রায় ২ মাস আগে সেজ ছেলের মানিকগঞ্জের বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতিকে চৌহালী উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের হাঁপানিয়া চরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বৃদ্ধের ভাগ্নের বাড়িতে আশ্রয় হয়েছিল তাদের। সেখানেও অবহেলার শিকার হন তারা। এ অবস্থায় কয়েকদিন আগে পাশের বাঘুটিয়া ইউনিয়নে এ দম্পতির বড় মেয়ের বাড়ি সংলগ্ন সম্ভুদিয়া কবরস্থানের পাশে কাউকে না জানিয়ে ফেলে রেখে যায় স্বজনরা। সংবাদ পেয়ে এ দম্পতির বড় মেয়ে মনোয়ারা খাতুন বাবা-মাকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে মেয়ে মনোয়ারা খাতুন বলেন, আমি নিজেই স্বামী হারা। দরিদ্র সন্তানদের সংসারে থাকি। আমার পাঁচ ভাইয়ের কেউ বাবা মাকে ভরনপোষণ করে না। এই বৃদ্ধ বয়সে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগে আমাকে না জানিয়ে আমার বাড়ির পাশে বাবা- মাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। অভাব অনটনের সংসারে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা মাকে ভরণপোষণ আমার জন্য কষ্টসাধ্য। বিষয়টি জানতে পেরে অসহায় বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও বাগুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা এবং চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় দম্পতিকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সহায়তা করা হয়েছে। ওই দম্পতিকে সাময়িকভাবে তাদের মেয়ের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
ইউএনও মাহবুব হোসেন আরো বলেন, এই অসহায়তা দম্পতিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ঘর তুলে দেওয়ার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভরনপোষণ না করার অপরাধে ছেলেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১ ফেব্রুয়ারি। শুরু হলো রক্তে রাঙানো সেই ফেব্রুয়ারি মাস-ভাষা আন্দোলনের মাস। বাঙালি জাঁতি পুরো মাসজুড়ে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাবে ভাষার জন্য যারা আত্মত্যাগ করেছিলেন তাদের। সবাই গেয়ে উঠবেন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’।
ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দুর্বার আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাঁতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরে নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বস্তুত ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে আছে এর গৌরবোজ্জ্বল দিক। কারণ, এ মাসে পৃথিবীতে একমাত্র জাঁতি হিসেবে বাঙালিরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন। আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযঞ্জ মাসব্যাপী বইমেলা শুরু হচ্ছে। বাংলা একাডেমিতে বিকেল ৩টায় এই মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হবে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে ১৯৮৭ সালে শুরু হয় এ উৎসবের। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ মাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সোমবার থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হচ্ছে। আগামীকাল ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে হালনাগাদের কাজ চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আজ সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপির) পক্ষ থেকে ইসিকে ল্যাপটপ ও স্ক্যানার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সিইসি।
আগামীকাল ২০ জানুয়ারি সোমবার সাভারে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে। নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠান সিইসি নাসির জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রাথমিকভাবে ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০ ডকুমেন্টস স্ক্যানার ও ৪৩০০ ব্যাগ দিয়েছে ইউএনডিপি। আগামীকাল ২০ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।’ এ কার্যক্রমে ৬৫ হাজার মানুষ কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সিইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, ‘এ কার্যক্রমে ইউএনডিপি লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছে। পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াতেই হয়তো আমরা তাদের সমর্থন চাইবো।’ প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন যে, চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। মাস ছয়েকের মধ্যে বিএনপির তরফে ভোট চাওয়া হলেও ভোটার হালনাগাদেই ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার কথা বলছেন সিইসি নাসির, ‘আমরা ছয় মাসের জন্য প্লান করেছি। কিছু কমবেশি হতে পারে। টার্গেট হচ্ছে- ছয় মাসের যাতে শেষ করতে পারি।’ এ হালনাগাদে নতুন করে ১৯ লাখ ভোটার যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে বিশেষ সভা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত আজ ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সম্মেলন কক্ষে এ সভা করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বগুড়ায় নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকট রোধে সকলে মিলে কাজ করতে হবে। যে সমস্ত কোল্ড স্টোরেজ মালিক এবং ব্যবসায়ীরা সরকারি মূল্যে বাজারে আলু দিচ্ছেন না তাদেরকে আবারো বলা হচ্ছে। এরপরও যদি ন্যায্য মুল্যে আলু না দেয়া হয় তাহলে ওইসব কোল্ড স্টোরেজ মালিক এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজন হলে প্রশাসনের উদ্যোগে আলু কিনে বাজারে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হবে। বগুড়ার বাজারে কোন ভাবেই বেশি দামে আলু, পিয়াজ, ডিম ও সবজিসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করতে দেয়া যাবে না। বাজার সিন্ডিকেট এবং কৃত্রিম সংকট রোধে বগুড়ার প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মাদ আল মারুফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন, টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগম, কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-পরিচালক মো, মতলুবর রহমান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন, কোল্ড স্টোরেজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এনামুল হক দুলাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার ১২টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ সহ অন্যান্য থানার ওসি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কোন্ড স্টোরেজ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। সভায় বগুড়ার বাজার নিয়ন্ত্রনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
মো: আব্দুর রাজ্জাক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
অনলাইন ডেস্ক :
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন আদালত। আজ ৬ জুন মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এরমধ্যে দিয়ে এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো।
মামলায় অন্য তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মঙ্গলবার সকালে শ্রম আদালতে হাজির হন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আদালতে তার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন ও ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন বিচারক।
পরে ড. ইউনূস উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ বলেন, মামলার পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য এখন পর্যন্ত তারিখ পাওয়া যায়নি। এটা পরে জানানো হবে।
তিনি বলেন, এ মামলায় ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আমরা আদেশ পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে ওই মামলার আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
একই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল করা হলে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছর ১৭ আগস্ট সেই রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর ড. ইউনূস আপিল আবেদন করেন। গত ৮ মে ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে নারী-পুরুষ উভয়ের সমান অংশগ্রহণ প্রয়োজন। অর্থনৈতিকভাবে আমাদের আরো অগ্রসর হতে হলে দেশের নারী ও পুরুষকে সমভাবে শ্রম দিতে হবে। কারণ সমাজের অর্ধেক জনশক্তি নারী।
আজ ৮ মার্চ শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নানা প্রতিবন্ধকতা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে পাঁচ নারীকে ‘সেরা জয়িতা পুরস্কার’ প্রদান করেছেন।
নারীরা সমাজের অর্ধেক অংশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমাজের অর্ধেক কাজ না করলে সেই সমাজ দাঁড়াতে এবং সামনে অগ্রসর হতে পারে না।
তিনি বলেন, নারী ও পুরুষ সমানভাবে কাজ করলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। আজ আমরা এগিয়ে যাচ্ছি কারণ আমরা নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের নারীরা কখনই পিছিয়ে থাকবে না।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত নারীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তার দলই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা সংবিধান ও ইশতেহারে নারী ও পুরুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করেছে।
তিনি বলেন, শুধু বলার জন্য নয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছে। তার সরকার সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তবে নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। ঘরে থাকবেন না। কারণ সমাজের জন্যও নারীদের অনেক কাজ করতে হবে।
এক পরিসংখ্যানে নারীদের ৪৩ শতাংশ শ্রমের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (নারীরা) আরো অতিরিক্ত কাজ করেন এমনকি অফিস থেকে বাড়ি ফিরেও কাজ করতে হয় যা হিসাব করা হচ্ছে না।
এ বছর সেরা জয়িতা পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন- আনার কলি (অর্থনীতি), কল্যাণী মিঞ্জি (শিক্ষা ও চাকরি), কমলি রবি দাশ (সফল মা),জাহানারা বেগম (নিপীড়ন প্রতিরোধ) এবং পাখি দত্ত হিজড়া (সামাজিক উন্নয়ন)।
অনুষ্ঠানের সভাপতি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। পুরস্কার গ্রহণের পর জয়িতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে কল্যাণী মিঞ্জি তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা প্রত্যেকে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট, ও সনদপত্র গ্রহণ করেন। শুরুতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ওপর তথ্যচিত্র প্রর্শন করা হয়।
‘জয়িতা’ (বিজয়ী), একজন নারী যিনি সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন, এটি সংগ্রামী ও অদম্য নারীর প্রতীকি নাম। সরকার পাঁচটি বিভাগে জয়িতাদের পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার,স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলা।
তিনি বলেন,যদি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এই যাত্রায় নারীদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে আমরা দ্রুত আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
দেশে প্রথম মুন্সীগঞ্জ জেলায় মহিলা পুলিশ সুপার নিয়োগ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) নারীদের নিয়োগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যদি নারীদের এই সুযোগ দেওয়া না হতো তাহলে এই সাফল্য আসতো না।
তিনি বলেন, আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) সব সময় বলতেন, অর্থনৈতিকভাবে মেয়েদের মুক্তিই সবচেয়ে বড় মুক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তাদের যেখানে নিয়োগ দিয়েছি তারা সেখানে তাদের কাজের ক্ষেত্রে বিরাট দক্ষতা প্রদর্শন করেছে, আমি তাদের প্রশংসা না করে পারি না।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংকে দুই নারীর নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দুই নারী সচিব এই সংস্থাগুলোর জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। আমি সেটা প্রমাণ করতে চাই বাংলাদেশি নারীদের শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কাজ করার দক্ষতা রয়েছে। তারপর থেকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি।