চলারপথে রিপোর্ট :
ঝিনাইদহে বারোইখালি এলাকায় আজ ২৫ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ জুয়াড়িকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন সদর উপজেলার আড়ুয়াডাঙ্গা গ্রামের আসামি মৃত আফসার উদ্দিন বিশ্বাস ছেলে গোলাম রসুল, বারোইখালী গ্রামের শাহাদত শেখের ছেলে সবুজ হোসেন, মৃত সায়েম মন্ডলের ছেলে কালাম হোসেন, উদয়পুর গ্রামের বাহাদুর মীরের ছেলে রজব আলী,যশোর সদর উপজেলার মঙ্গলগাতী গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে হাসিনুর রহমান খোকন।
ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহীন উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে বারোইখালি এলাকায় টাকা দিয়ে জুয়া খেলা চলছে। সেসময় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে জুয়া খেলা অবস্থায় পাঁচ জন জুয়াড়িকে আটক করে। ওইসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ৯ হাজার ২৫০ টাকাসহ জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনার চাটমোহরে ১০ লাখ টাকার নিষিদ্ধ কারেন্ট ও চায়না দুয়ারি জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়ানো ও রক্ষার্থে আজ ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার এ অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা: তানজিনা খাতুন।
চাটমোহর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তরার কার্যালয়ে সূত্রে জানা যায়, নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বন্ধে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় এ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় উপজেলার বিলচলন খলিশাগারী, বোয়ালমারী ও ডাকাতের ভিটা এলাকার বিলে অভিযান চালিয়ে ২০০টি চায়না দুয়ারি জাল ও ১ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা। পরে জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আব্দুল্লাহ আল নোমান ও চাটমোহর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের তিনটি বিলে অভিযান চালিয়ে ১০ লক্ষাধিক টাকা সমমূল্যের কারেন্ট ও চায়না দুয়ারি জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এটি শুধুমাত্র চলনবিল অধ্যূষিত এলাকায় আমরা পরিচালনা করবো। কেননা ইতিমধ্যেই অসাধু মাছ শিকারীরা ছোট ছোট পোনা মাছ নিধন করছেন বলে আমার নিকট অভিযোগ এসেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের দেশীয় খেলাধুলাগুলোর চর্চা বেশি বেশি করে করা উচিত। এই খেলাধুলার মধ্য দিয়ে শরীরচর্চা হয়। খেলাধুলা হলে বাচ্চাদের মধ্যে ছোটবেলা থেকে ঐক্যের মনোভাব গড়ে ওঠে। তাই আমরা এ বিষয়ে আরো বেশি মনোযোগী হয়েছি।
ছেলে এবং মেয়েদের জন্য বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা টুর্ণামেন্ট শুরু করেছি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও খেলাধুলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও সেভাবে গড়ে তুলতে হবে।’
দেশের সব বিভাগীয় শহরেই একটি করে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) কেন্দ্র করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খেলাধুলায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে উন্নত প্রশিক্ষণ দরকার।
এ জন্য দেশের সব বিভাগীয় শহরে একটি করে বিকেএসপি করা হবে। ইতিমধ্যে এর কাজও শুরু হয়েছে।’
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন প্রশিক্ষক তৈরি করতে হবে।
সে জন্য প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে একটা করে বিকেএসপি গড়ে তুলতে হবে। এটা আটটা বিভাগে আটটা হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ছোটবেলা থেকে ভালো ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে তারা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা খুবই এগিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।
ফুটবলে ভুটানকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে। আমরা প্রত্যেক উপজেলায় খেলার মাঠ, মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করছি। আরো কয়েকটা বাকি আছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মিনি স্টেডিয়াম করেছি একটা লক্ষ্য নিয়েই যে খেলাধুলা হবে, প্রতিযোগিতা হবে। আমি মনে করি, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার আয়োজন করলে ছেলে-মেয়েরা মন-মানসিকতায় উদার হবে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।’
খেলাধুলার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা নিজে খেলাধুলার প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। জাতির পিতার উদ্যোগেই এই শীতকালে শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। জাতির পিতার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের পরিবারটি সব সময় খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। আমার বাবাও নিজে ফুটবল খেলতেন। আমার ভাই কামাল এবং জামাল নিজেও খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।’
স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম, রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. হুমায়ুন কবির, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী ড. মুহম্মদ মনিরুল হকসহ দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, শিক্ষা অফিসার ও ক্রীড়া কর্মকর্তরা উপস্থিত হয়েছেন।
‘খেলাধুলায় স্মার্ট দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা সমিতি ৫২তম এই শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। গত জানুয়ারিতে সারা দেশে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে প্রায় সাত লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে চূড়ান্ত পর্বের খেলায় অংশগ্রহণে সারা দেশের ৮২৪ জন রাজশাহী এসেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী এর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে।
ছয় দিনব্যাপী এই ক্রীড়াযজ্ঞের সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
এই প্রতিযোগিতায় ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা ইভেন্টে অ্যাথলেটিকস, দৌড়, বর্শা নিক্ষেপ, দীর্ঘ লাফ, চাকতি নিক্ষেপ, গোলক নিক্ষেপ, দড়ি লাফ ইভেন্টসহ হকি, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন একক ও দ্বৈত, সাইক্লিং ইভেন্টে জাতীয় স্কুল, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির শীতকালীন খেলার মহারণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই আটটি ডিসিপ্লিনে সারা দেশ থেকে আট শতাধিক ছাত্রছাত্রী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। চূড়ান্ত পর্বে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে- চারটি ফুলের নামে।
এগুলো হলো- রাজশাহী ও দিনাজপুর ‘চাঁপা’ অঞ্চল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ ‘পদ্ম’ অঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা ‘বকুল’ অঞ্চল এবং খুলনা ও বরিশাল ‘গোলাপ’ অঞ্চল। বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নানা ধরনের ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ-২৪৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের ৫ নভেম্বর উপনির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রকৌশলী আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ) এর সংবাদ সম্মেলন ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আজ ৫ অক্টোবর ২০২৩, সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয়।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র ঘনিষ্ঠ সহচর ও একনিষ্ঠ কর্মী, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইস্টার্ণ কমান্ড কাউন্সিলের প্রধান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক জেলা রেজিষ্টার (ভূমি), বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোহাম্মদ আলী বিল্লাল এর কনিষ্ঠপুত্র প্রকৌশলী আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ)।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, তিনি যদি নৌকার মনোনয়ন পায় তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল আশুগঞ্জ) আসনে ৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করবেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছার প্রতি ফলন ঘটাতে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের বিকল্প নাই।
প্রকৌশলী আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ) সুদূর জাপান থেকে করোনা কালে সরাইলে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। এই সময় তিনি নগদ অর্থ বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ও একটি অক্সিজেন ব্যাংক চালু করেছিলেন। এছাড়া তার মানবিক সহায়তা থেকে বাদ যায়নি, গরীব অসহায়রাও। তারাও পাচ্ছেন তার নিয়মিত সহায়তা।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান হিসাবে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণেও তিনি কাজ করেছেন। তিনি সরাইল উপজেলার ৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সংর্বধণা প্রদান করেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধারা ও তাঁর পরিবারের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া ভাল কাজের জন্য ৯জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, আমি জন্মগত ভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমার পরিবারের দলের প্রতি ত্যাগ আছে। আমিও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সব কিছু বিবেচনা করে যদি দল আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাব।
আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পেলে র্দীঘ দিনের হারানো এই আসনটি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও আমার নেত্রী গণতন্ত্রের মানস কন্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের চারবারের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিব ইনশাল্লাহ।
চলারপথে ডেস্ক :
আজ ২৪ এপ্রিল সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীতে অবস্থিত বঙ্গভবনের দরবার হলে বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। চেয়ার বদলের মাধ্যমে এদিন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব নেন তিনি। তাকে শপথ পড়ান বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, জাতীয় সংসদ সদস্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিক, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক।
শপথ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নতুন রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ও ছেলে আরশাদ আদনান রনিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। আর শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের আপন বিভাগ।
এই শপথের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রপতি হিসেবে টানা দুই বারের মেয়াদ শেষ হলো আবদুল হামিদের। তিনিই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি দিন দায়িত্ব পালন করা রাষ্ট্রপ্রধান।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন অতিবাহিত করে বিদায় নেন আবদুল হামিদ।
এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এই পদে কয়েকজন একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন। সেই হিসাবে সাহাবুদ্দিন সপ্তদশ ব্যক্তি, যিনি দায়িত্ব নিলেন।
শপথ বাক্য পাঠের পরে আবদুল হামিদের সঙ্গে করমর্দন করবেন। এরপর চেয়ার বদলের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।
বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শপথ অনুষ্ঠানের পর ঢাকার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় তার বাসভবন প্রেসিডেন্ট প্যালেসে উঠবেন। ২০০০ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে তিন কাঠার এই জমি বরাদ্দ পান তিনি। সেখানে কয়েক বছর পর তোলেন বাড়ি।
জানা যায়, নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংক পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম চুপ্পু। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী, মাতা খায়রুন্নেসা।
১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
সাহাবুদ্দিন ৬৬’র ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
পাবনা জেলার আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। ওই সময় সামরিক স্বৈরশাসকদের রোষানলে তিন বছর জেল খাটেন এবং অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন।
মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতাও করেছেন। তার অনেক কলাম বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে।
কর্মজীবনে তিনি জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাহাবুদ্দিন পরপর দুবার বিসিএস (বিচার) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। চাকরি থেকে অবসরের পর হাইকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।
২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দুদক কমিশনার হিসেবে সাহাবুদ্দিন পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিরুদ্ধে ওঠা তথাকথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দৃঢ়তার পরিচয় দেন।
সাবেক এ ছাত্রনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন।
অনলাইন ডেস্ক :
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপর ভরসা রাখতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভাষণ দেন তিনি।
জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর আপনাদের সামনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছি। বিশদভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছি কী অবস্থায় দেশকে পেয়েছিলাম, আর আপনাদের জীবনমান উন্নয়নে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। দেশের যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছে, তা টেকসই করে আরও উন্নত জীবন যাতে আপনারা পান- আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হতে পারলে আগামী ৫ বছরে আমরা কী কী কাজ করব সেই ব্যাখ্যা তুলে ধরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হাজির হয়েছি। এই উন্নয়নকে টেকসই করা, আপনাদের জীবনমান উন্নত করা, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ চাই।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে। ইতোমধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে সুযোগ পাওয়া যাবে তা কার্যকর করা এবং যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে; তা একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মোকাবিলা করতে পারবে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ সমাজ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল কারিগর। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোন উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন জোগাবেন না।
তিনি বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। এই প্রথম বাংলাদেশে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করছে। আমাদের সরকার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। গণমানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, দেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করে। জনগণের খাদ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যাপক হারে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, সংঘাতে নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এই নীতিতেই আমরা বিশ্বাস করি। এই নীতি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে উন্নত করেছি।
দেশবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দীর্ঘ চলার পথে যতটুকু অর্জন, তার সবটুকুই আপনাদের অবদান। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ অর্জন করা সম্ভব হতো না। চলার পথে যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি করে থাকি, তাহলে আপনারা ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন- এটাই আমার আবেদন। আবার সরকার গঠন করতে পারলে, ভুলগুলো শোধরাবার সুযোগ পাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য। আমি বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে দুঃখ-বেদনাকে সম্বল করে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের মাঝে খুঁজে পেয়েছি- আমার বাবার স্নেহ, মায়ের মমতা এবং ভাইয়ের মায়া। আপনারাই আমার পরিবার, আমার ওপর ভরসা রাখুন। আসুন, সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন পূরণ করি।
কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই-
‘আমাদের ডাক এসেছে
এবার পথে চলতে হবে।
ডাক এসেছে চলতে হবে আজ সকালে
বিশ্বপথে সবার সঙ্গে সমান তালে।
পিছন পানে তাকাস নি আজ, চল সম্মুখে
জয়ের বাণী নূতন প্রাতে বল ও-মুখে।’