চলারপথে রিপোর্ট :
রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এক নারী মারা গেছেন। আজ ২৭ আগস্ট রবিবার বিকেলে উপজেলার উচাপাড়া রেল গেটের পাশে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ওই নারীর নাম আয়শা বেগম (৬৫)। তিনি অনন্তরাম উচাপাড়া গ্রামের কমল মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ওই নারী পদ্মরাগ মেইল ট্রেনের সাথে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার জেনারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি রেলওয়ে বোনারপাড়া থানায় জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আজ রবিবার বৈঠক ছিল বলে জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
তবে সেই বৈঠক আজ হচ্ছে না। বরং আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রাথমিক বিদ্যালয় কবে খোলা হবে তা নিয়ে বৈঠক করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে সার্বিক দিক আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ ২৮ জুলাই রোববার সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল ক্যাবিনেট (মন্ত্রিসভা) মিটিং আছে। এটা নিয়মিত মন্ত্রিসভার বৈঠক। কোনো স্পেশাল মন্ত্রিসভার বৈঠক নয়। এ বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়েও আলোচনা হতে পারে। সেখানে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া গেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার বৈঠক করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে। তারপর সিদ্ধান্ত জানা যাবে। এটাই হয়ে থাকে, এবারও সেটাই হতে পারে।’
এর আগে গতকাল শনিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘চলতি সপ্তাহে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। রবিবার বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে গত ১৭ জুলাই রাতে দেশের ৮টি সিটি করপোরেশন এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সারাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু ছিল। ২৪ জুলাই সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্রে রেখে ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে ৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশন আগামী ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে এবং হাজারো মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য একটি অভূতপূর্ব সময় ও সুযোগ আমরা অর্জন করেছি। এর বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশে ফ্যাসিজম বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানা ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। উক্ত সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচনব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশন সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন- এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানা ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এর পাশাপাশি করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি।
এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ছয়টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে কমিশনগুলো পরিচালিনার দায়িত্ব দিয়েছি। এরপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া আমরা অব্যাহত রাখবো।
প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সরফরাজ চৌধুরী, বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন।
‘এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শসভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।’
ড. ইউনূস বলেন, পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি এবং এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আমরা ধারণা করছি। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শসভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।
‘এই আয়োজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনঃনির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
চলারপথে রিপোর্ট :
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বসতঘরে আগুন লেগে নারী-পুরুষ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ ৩০ জুলাই রবিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ইমরান হোসেন (২৬) ও নাছরিন আক্তার (২৩)। সম্পর্কে তারা ভাবি ও দেবর বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৌলতলী এলাকার কাজিরপাড়া গ্রামে নূর ইসলামের বসতঘরে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আব্দুল মতিন জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে বিচ্ছিন্ন এলাকায় রাস্তা না থাকায় নৌকাযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়েছে। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় দু’টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণ করে সেখান থেকে দুই জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নারী অপরজন পুরুষ।
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বসতঘরে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ঘটনাস্থলটি স্বাভাবিক লোকালয় থেকে একটু দূরে এবং বর্ষার পানির কারণে বিচ্ছিন্ন বলে জানান স্থানীয়রা।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণে নগরের টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সড়কে চলাচল করা একটি মাইক্রোবাসের ওপর পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে। এতে গাছগাছালি ভেঙে সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ ছিল ঘণ্টা কয়েক।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে সড়ক পরিষ্কার করলে যান চলাচল শুরু হয়। আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার সকালে নগরের টাইগারপাস-লালখানবাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, টাইগারপাসে রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি পাহাড়ের একাংশ ধসে পাশে সিডিএ এভিনিউ সড়কে ছিটকে পড়ে। এতে সড়কের একাংশ যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ছুটির দিন হওয়ায় সড়কে তেমন যান চলাচলও ছিল না। তাই কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে এসে সড়কের মাটি সরানো শুরু করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি সরানো সম্ভব হয়। এরপর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগারপাস এলাকার বাটালি হিলের ঢালে পাহাড় ও প্রতিরক্ষা দেয়াল ধসে মারা যায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৭ জন। এর আগে ২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রাম নগরের কুসুমবাগ, কাইচ্যাঘোনা, সেনানিবাসের লেডিস ক্লাব সংলগ্ন লেবুবাগান, বায়েজিদ বোস্তামী, লালখান বাজারের মতিঝর্ণা পাহাড়সহ সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে মারা যায় শিশু-নারী ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের ১২৭ জন।