৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশির চিঠি

আন্তর্জাতিক, 27 August 2023, 1044 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি লেখা মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্যকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশন’। সেখানে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির তথ্যকে অসত্য বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠির তথ্যের সত্যতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কংগ্রেসের যে ছয় সদস্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন ব্যারি মুর, টিম বার্চেট, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, স্কট পেরি ও কিথ সেলফ।

banner

গত ২৬ আগস্ট ওই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ২৬৭ জন বাংলাদেশি-আমেরিকান স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, মার্কিন সরকারি উচ্চপদে কর্মরত বাংলাদেশি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণরা।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাইডেন প্রশাসনের কাছে লেখা চিঠিতে নিজের জন্মভূমি সম্পর্কে মিথ্যা ও অসম্পূর্ণ তথ্য লেখা হয়েছে।

এতে গর্বিত বাংলাদেশি হিসেবে তাদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।

চিঠিতে জানানো হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী-পুরুষের সম-অধিকার, নারী উন্নয়ন প্রগতি, ধর্মীয় সহিষ্ণুতাকে বিবেচনা না করে খুবই সংকীর্ণ আর একচোখাভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশনের সদস্যরা চিঠিতে মনে করিয়ে দেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীসহ বাংলাদেশবিরোধী দলগুলো বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে লবিস্ট ফার্ম দিয়ে এসব অপপ্রচার চালিয়ে থাকে। চিঠিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশি খ্রিস্টান কমিউনিটি প্রধানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সবাই সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের শন্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা এবং অর্জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের হয়ে শান্তিরক্ষা করতে গিয়ে বিদ্রোহীদের হাতে নিহতদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনার কারণে এত বিশাল অবদান আর আত্মত্যাগ কি অস্বীকার করবে জাতিসংঘ? জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের উজ্জ্বল অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করা কোনোভাবেই নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বমানবতা রক্ষায় ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়। এত বিশাল সংখ্যক উদ্বাস্তু পৃথিবীর আর কোনো দেশ একসঙ্গে আশ্রয় দেয়নি উল্লেখ করে মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও প্রধানমন্ত্রীর অবদান তুলে ধরা হয়। শেখ হাসিনা নিজ দেশের স্বার্থের কথা না ভেবে এত বিশাল সংখ্যক অসহায় উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘ থেকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃত হন।

গণতন্ত্র নস্যাতের অভিযোগের জবাবে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংগঠন অতীতের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী বিএনপি-জামায়েত-শিবিরের সন্ত্রাস ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনের কথা উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, আমেরিকান হিসেবে তারা ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছে, কিন্তু তার পরও আমেরিকা গণতন্ত্র ব্যবস্থা, মানবিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সে তুলনায় ৫২ বছর বয়সী বাংলাদেশের চেষ্টাটি প্রশংসার দাবি রাখে কি না, সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছে চিঠিতে।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং মানবতা উন্নয়নের চারটি দিক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই দুর্নীতি দমনে কার্যকর ও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নানা পর্যায়ে দুর্নীতি কমে আসছে ক্রমান্বয়ে। দীর্ঘ সময় অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি ও অন্যান্য স্বৈরশাসকের আমলে দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে বিস্তার লাভ করেছিল যে রাতারাতি তা নির্মূল করা সম্ভব নয়।

দ্বিতীয়ত, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ সামরিক শাসকদের দুঃশাসন ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসে। ইতিহাস থেকে আমরা জানি, দীর্ঘদিন সামরিক শাসিত একটি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনো সহজ কাজ নয়। তার পরও বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক মানের গণতান্ত্রিক ভাবধারায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে।

তৃতীয়ত, রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক বিরোধী মতকে দমন-নিপীড়ন ও হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ও সামরিক শাসকদের আমল থেকে। সেখান থেকে বাংলাদেশকে আইনের শাসনে ফিরিয়ে এনে সন্ত্রাস-মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ দেখিয়ে বাংলাদেশ সুশাসনের ধারায় ফিরছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মার্কিন বন্ধুদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে আবার যদি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে এ অঞ্চলে মৌলবাদের বিস্তার লাভ করবে আগের মতো। যা প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। ২০০১-০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের ছত্রচ্ছায়াতেই এ অঞ্চলে ইসলামী জিহাদি আর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যে।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

পুলিশের অনুমতি নিয়েই বিয়ে করতে হবে

আন্তর্জাতিক, 4 July 2023, 1176 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিয়ে একটি সামাজিক-পারিবারিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নিয়ে থাকেন বর-কনের আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশিরা। বিয়ের বিভিন্ন ধরণ আছে। সমাজের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থানের ওপর এসব নির্ভর করে। ধনীদের বিয়ে একরকম আবার গরীবের বিয়ে অন্যরকম। বিয়ে মানে আনন্দ-উৎসবের আমেজ। কিন্তু সেই বিয়েতে এবার সেই আমেজের কিছুটা হলেও বাটা পড়বে। কারণ বিয়ে অনুষ্ঠানের সব কিছু পুলিশকে জানিয়ে করতে হবে।

banner

এখন থেকে বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করলে পুলিশকে জানাতে হবে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে লাইসেন্স করা কোনো অস্ত্র আছে কি না তাও জানাতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে অতিথিদের নামের লিস্ট।

সম্প্রতি ভারতের বিহারে পুলিশের পক্ষ থেকে এমন আদেশ জারি করা হয়েছে। এমন আদেশ জারি করায় সাধারণ মানুষ মনে করে এতে বিয়ের আনন্দে ভাটা পড়বে। পাশাপাশি তারা অনেকটা বিরক্তও।

তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। এর পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

বিহার পুলিশের দাবি, রাজ্যের বহু বিয়েবাড়ির আনন্দ খুনখারাবিতে বদলে গেছে। এক মুহূর্তে বিয়ের আনন্দ মাটি। নিভে গেছে সব আলো। বিয়ে বাড়িতে এমন অস্থিরতা বন্ধ করতেই এই ব্যবস্থা।

পুলিশ আরো বলছে, বিয়েবাড়িতে আনন্দের মধ্যে গুলি চালিয়ে দেয় অনেকে। আকাশে গুলি ছুড়তে গিয়ে কখনো প্রাণ গেছে বরের তো কখনো বরযাত্রীর। কখনোবা অন্য কারো। এসব থামাতে হবে। তাই পুলিশের জানা উচিত কোথায় বিয়ে হচ্ছে।

রাজ্যের এডিজি সঞ্জয় সিং বলেন, আনন্দ করতে গিয়ে বিয়ে বাড়িতে অনেকের প্রাণ গেছে, অনেকে আহত হয়েছেন। কেননা আনন্দ করতে গিয়ে গুলি চালানো হচ্ছে। তাই বিয়েবাড়ি, ধর্মশালা বা ব্যাঙ্কোয়ট হল রয়েছে তাদের বলা হচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠান হলেই খবর দিতে হবে। পুলিশের গাইডলাইন অনুযায়ী, বিয়ে হল, লন, ব্যাঙ্কোয়েট হলে পর্যাপ্ত সংখ্যায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে।

প্রসঙ্গত বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিয়েবাড়ি, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আনন্দে মাত্রা ছাড়িয়েছে। মাতলামি তো রয়েছেই, গুলি চালিয়েও আনন্দ করতে দেখা গেছে। আর তাতে প্রাণ গেছে অনেকের। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে বিহার সরকার।

যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী হলেন টিউলিপ সিদ্দিক

আন্তর্জাতিক, 10 July 2024, 637 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে দেশটির নগরমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। টানা চতুর্থবারের মতো লেবার দলীয় এমপি হিসেবে নির্বাচিত টিউলিপকে ৯ জুলাই মঙ্গলবার মন্ত্রী নিয়োগের তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

banner

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের আর্থিক পরিষেবা খাত তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করবেন। গত ৪ জুলাই ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে লেবার পার্টি। দেশটির ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টিকে বিপুল ব্যবধানে হারিয়ে বামপন্থি লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসেন।

দেশটির রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড-কিলবার্ন আসনে লেবার পার্টির প্রার্থী হয়েছিলেন টিউলিপ। নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী ডন উইলিয়ামসের চেয়ে ৮ হাজার ৪৬২ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।

২০১৫ সালে প্রথম হ্যাম্পস্টেড-কিলবার্ন আসনের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন টিউলিপ। সেবারই প্রথম হাউস অব কমন্সে তার প্রবেশ ঘটে। তারপর ২০১৭ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনেও এই আসন থেকে জয় পান তিনি। ওই বছর যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১ হাজার রাজনীতিবিদের তালিকায় তার নামও উঠেছিল।

২০২১ সাল থেকে লন্ডনের সিটি অব ফাইন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্টের ‘দ্য সিটি’ নামে পরিচিত আর্থিক পরিষেবা শিল্পের নীতি তৈরিতে লেবার পার্টির নেওয়া পদক্ষেপের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ৪১ বছর বয়সী সিদ্দিক। তবে তাকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয় ব্রিটেনের লেবার দলীয় সরকার।

এর আগে, লন্ডনের ফাইন্যান্সিয়াল সিটির ছায়া মন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১৬ সালে লেবার পার্টির শ্যাডো মিনিস্টার ফর আর্লি ইয়ার্স এডুকেশন নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সেই সময় শিশু কল্যাণ ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন টিউলিপ।

এছাড়াও লেবার পার্টির সাবেক প্রধান জেরেমি করবিন নেতত্বাধীন প্রথম ছায়া মন্ত্রিসভার সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়াবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল ডাগারের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। রিজেন্ট পার্কের কাউন্সিলর এবং ক্যামডেন কাউন্সিলের কালচার অ্যান্ড কমিউনিটির সদস্যও ছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনি লন্ডনের হ্যামস্টেড ও কিলবার্নে বসবাস করছেন তিনি। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে তিনি পলিটিকস, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হওয়া টিউলিপ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্রেটার লন্ডন অথরিটি ও সেভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে স্বামী ক্রিস পার্সির সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে বসবাস করেন। তাদের সংসারে এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের মেয়ে আজালিয়া জয় পার্সি ও ছেলে রাফায়েল মুজিব সেন্ট জন পার্সি।

উল্লেখ্য, ব্রিটেনের এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টির অপর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী রুপা হকও ইলিং সেন্ট্রাল-অ্যাকটন আসনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেমস উইন্ডসরকে ৮ হাজার ৩৪৫ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন তিনি। তার মোট ভোটের সংখ্যা ২২ হাজার ৩৪০ বা শতকরা হিসেবে ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

রুপা হক ইলিং সেন্ট্রাল-অ্যাকটন আসনে প্রথম জয় পেয়েছিলেন ২০১৫ সালে। তারপর ২০১৯ সালেও বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি।

দিল্লি মেট্রোর ১৬০০ যাত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

আন্তর্জাতিক, 26 July 2024, 615 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের দিল্লিতে মেট্রোয় আসন নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা হতে দেখা যায়। হাতাহাতি, কখনো আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য ভিডিও বানানোর মতো ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। শুধু তাই-ই নয়, ভরা মেট্রোর মধ্যেই কখনো আবার ‘দুষ্কর্মের’ ছবিও ধরা পড়েছে। এবার এসব ঘটনা কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

banner

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে শুক্রবার এ তথ্য জানা গেছে।

দিল্লি মেট্রো রেল করপোরেশন (ডিএমআরসি) সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ধরনের বেশ কিছু ঘটনার জন্য এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে এক হাজার ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, যা গত বছরে একই সময়ের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি। মেট্রো রেলের তথ্য বলছে, এই তিন মাসে এক হাজার ৬৪৭ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।

ডিএমআরসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ কুমার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, মেট্রো ও মেট্রো চত্বরে ঝামেলা, অশান্তির জন্য এই জরিমানা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তবে কর্মীর অভাবে সব ঘটনায় নজরদারি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সিসিটিভি ফুটেজে যদি এই ধরনের ঘটনা ধরা পড়ে, তা হলে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’

এ ছাড়া বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে এই ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক, 29 June 2025, 182 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আরো চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

banner

আল-শিফা হাসপাতালের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজা শহরের একটি স্টেডিয়ামের কাছে হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। স্টেডিয়ামটি তাঁবুতে বসবাসকারী বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তারা বসে ছিলেন। একটি রাস্তায় হামলা হওয়ার পর হঠাৎ বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন।

আহমেদ কিশাউই নামে এই ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই এলাকাটি তাঁবুতে পরিপূর্ণ ছিল– এখন তাঁবুগুলো বালুর নিচে। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা খালি হাতে খুঁড়েছি।

তিনি বলেন, এখানে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যাকে খোঁজা হচ্ছে, বা তাদের (ইসরাইলিদের) দাবি অনুযায়ী কোনো সন্ত্রাসীও নেই এখানে। কেবল বেসামরিক বাসিন্দা, শিশু, যাদেরকে কোনো দয়া না দেখিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক এবং একটি তাঁবুতে হামলায় আরো ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল।

আত্মীয়রা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, আল-মাওয়াসিতে হামলায় তিনটি শিশু এবং তাদের বাবা-মা নিহত হয়েছেন, যারা ঘুমের মধ্যেই মারা যান।

শিশুদের দাদি সুয়াদ আবু তেইমা বলেন, এই শিশুরা তাদের কী ক্ষতি করেছিল? তাদের দোষ কী?

শনিবার বিকালে জাফা স্কুলের কাছে তুফফাহ মহল্লায় একটি বিমান হামলার পর আরো মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে শত শত বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী আশ্রয় নিয়েছিল।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এই হামলায় পাঁচ শিশুসহ প্রায় আটজন নিহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ হাবুব রয়টার্সকে বলেন, হামলায় তার ভাগ্নে, বাবা এবং প্রতিবেশীদের সন্তানরা নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা তাদের কোনো ক্ষতি করিনি, তারা কেন আমাদের ক্ষতি করছে? আমরা কি তাদের ক্ষতি করেছি? আমরা বেসামরিক নাগরিক।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় চলাচল অসম্ভব হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকে পড়া অনেক হতাহতের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।

গত মার্চ মাসে ইসরাইল গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করলে দুই মাসের একটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে। ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি তিনটি ধাপে বিভক্ত ছিল, কিন্তু তা প্রথম ধাপের পর আর এগোয়নি।

দ্বিতীয় ধাপের অন্তর্ভুক্ত ছিল একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা। ইসরাইলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে গাজায় থাকা বাকি জীবিত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।

বৃহস্পতিবার হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় একটি নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির জন্য তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনা স্থবির হয়ে আছে।

গাজায় হামাসের হাতে আটক বাকি ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে একটি চুক্তির জন্য শনিবার সন্ধ্যায় তেলআবিবে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা বলেন, যুদ্ধ শেষ করে এক দফাতেই সবাইকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মেয়র নিহত, প্রাণহানি বেড়ে ৩৩২০৭

আন্তর্জাতিক, 9 April 2024, 725 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় হাতেম আল-গামরি নামের এক মেয়র নিহত হয়েছেন। তিনি গাজার মাগাজি পৌসরভার মেয়র ছিলেন। মাগাজি ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় তার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। এদিকে, গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।

banner

আজ ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান কেন্দ্রীয় গাজার মাগাজি ক্যাম্পের একটি কাউন্সিল ভবনে বোমা হামলা চালিয়ে মাগাজি পৌরসভার মেয়রসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে বলে গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে।

গাজার মিডিয়া অফিস টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, নিহত হাতেম আল-গামরি তার কাজের প্রতি নিবেদিত ছিলেন এবং ‘নিজের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত’ মাগাজির জনগণের সেবা করেছিলেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ হাজার ৯৩৩ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।