বাংলাদেশ-ভারত কোস্টগার্ডের জোনাল কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক

জাতীয়, 28 August 2023, 933 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ও ভারতীয় কোস্টগার্ডের মধ্যে জোনাল কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৮ আগস্ট সোমবার সকালে মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও ভারতীয় কোস্টগার্ডের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের কোস্টগার্ডের বৈঠকে বাংলাদেশ মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কিবরিয়া হক, কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের পরিচালক অপারেশন্স ক্যাপ্টেন ফাইজ উদ্দিন আহমেদসহ কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

banner

এসময়ে ভারতীয় কোস্টগার্ডের পক্ষে ভারতীয় জোনাল কমান্ডার ইন্সপেক্টর জেনারেল ইকবাল সিং চোহান ছাড়াও ভারতীয় কোস্টগার্ডের কলকাতা আঞ্চলিক সদর দপ্তরের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ ও ভারতীয় কোস্টগার্ডের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সে দুই দেশের জোনাল কমান্ডার পর্যায়ে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় হয়। বৈঠকে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নয়ন, উভয় দেশের কোস্টগার্ড সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ বিনিময়, দুর্যোগকালীন সময়ে দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় ও সার্চ এন্ড রেসকিউ কার্যক্রম জোরদারসহ উভয় দেশের মধ্যে সৌহার্দ এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও দুই দেশের আন্তর্জাতিক পানি সীমানায় মানব পাচার, চোরাচালান, মাদক পাচার ও অবৈধভাবে মাছ আহরণ রোধে উভয় দেশের কোস্টগার্ডের করনীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

ঝটিকা সফরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওলাদে রাসুল (সা.) সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি (দা. বা.)

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 18 January 2023, 3832 Views,

জেলা জামে মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :
ক্ষণিকের সফরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঘুরে গেলেন আওলাদে রাসুল (সা.) সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি (দা. বা.)। তিনি উপমহাদেশের বিখ্যাত আলেমেদ্বীন আওলাদে রাসুল (সা.) সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি (রহ.) এর সুযোগ্য কনিষ্ঠ সাহেবজাদা ও সাইয়্যিদ আসআদ মাদানি (রহ.) এর ছোটভাই। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে জোহরের নামাজের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামে মসজিদে আগমন করেন। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান জেলা জামে মসজিদের খতিব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলেমেদ্বীন আল্লামা মুফতি নুরুল্লাহ (র.)’র সাহেবজাদা মুফতি সিবগাতুল্লাহ নুর। পরে বাদ আসর জেলা জামে মসজিদে উপস্থিত প্রায় ৫ শতাধিক মুসল্লীদের নিয়ে বিশেষ দোয়া করেন। আসরের নামাজে ইমামতি করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়া ইসলামিয়ার হেফজখানার সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রখ্যাত হাফেজ আইয়ুব আলী (দা. বা.)।
আসরের নামাজের পর বিশেষ দোয়ায় আওলাদে রাসুল (সা.) সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি (দা. বা.) পবিত্র কোরআনে বর্ণিত কয়েকটি দোয়ার আয়াত উচ্চারণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট মুফতি আল্লামা মুফতি নুরুল্লাহ (রহ.)কে স্মরণ করেন। দোয়ায় তিনি কামনা করেন- ‘হে আল্লাহ, আপনি যেভাবে মুফতি সাহেবের আওলাদদের কবুল করে ইসলামের পথে অগ্রগামী করেছেন, তেমনিভাবে আমাদের আওলাদসহ আগামী প্রজন্মকে আপনি ইসলামের খেদমতের জন্য কবুল করুন, আপনার হুকুম-আহকাম সঠিকভাবে পালনের তৌফিক দান করুন, আমাদের সবাইকে আপনি সঠিক ও হক্বপথে পরিচালিত করুন।’
উর্দু ভাষায় পরিচালিত বিশেষ দোয়ায় মাওলানা আসজাদ মাদানি আল্লাহর কাছে কামনা করেন- ‘হে আল্লাহ, আমাদের সবাইকে আপনি মাফ করে দিন। সারা বিশ্বের মুসলিম জাহানকে আপনি শয়তান ও বিধর্মীদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করুন। মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি জনপদে আপনি নামাজ, রোজা সর্বোপরি রাসুল (সা.) এর সুন্নত জারী করে দিন।’
বিশেষ দোয়ায় আওলাদে রাসুল (সা.) আরও কামনা করেন- ‘হে আল্লাহ, কঠিন এই দুনিয়ায় সমস্ত মুসলমানদের ইবাদত করাটাকে আপনি আরও সহজ করে দিন। প্রত্যেক মুসলমানের অন্তরে আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) প্রতি জযবাহ-তামান্না-ভালোবাসা তৈরি করে দিন।’ ‘ও আল্লাহ- প্রত্যেক মুসলমানকে আপনি সুন্নতের সঠিক পাবন্দিওয়ালা করে তৈরি করে দিন। সবাইকে ইসলামের সঠিক পথ সম্পর্কে জানার ও বোঝার তৌফিক দান করুন। ঈমান-আমল রক্ষায় প্রতিটি মুসলমানকে আরও যতœবান ও সচেতন হওয়ার তৌফিক দান করুন।’
দোয়া শেষে আওলাদে রাসুল (সা.) সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি (দা. বা.)’কে সালাম পেশ করেন উপস্থিত মুসল্লীগণ। পরে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ত্যাগ করেন।
মহান আল্লাহ, আওলাদে রাসুল (সা.) এর দোয়াকে কবুল করে প্রতিটি মুসলমানদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তির ফায়সাল করে দিন।-আমীন।

আমরাই মানুষের ভোটের অধিকারের সুরক্ষা দেব: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 7 June 2023, 1121 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যতই দেশি-বিদেশি চাপ আসুক, এ দেশের মানুষ চাপের কাছে মাথা নত করবে না। আমরাই আমাদের দেশের মানুষের ভোটের অধিকারের সুরক্ষা দেব। আমরা পরমুখাপেক্ষী হবো না, পরের ওপর নির্ভর করে থাকবো না।

banner

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আজ ৭ জুন বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে যা করার তা আওয়ামী লীগই করেছে। দেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে এখন সচেতন। কেউ ভোটের অধিকার কেড়ে নিলে মানুষ তাদের ছেড়ে দেয় না।

আমেরিকার ভিসা নীতি বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি মনে করে অন্য কেউ কোথাও থেকে এসে নাগরদোলায় করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কিন্তু দেবে না। ব্যবহার করবে, কিন্তু ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। ক্ষমতায় বসাতে পারে একমাত্র জনগণ।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দিনের মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। দশ থেকে ১৫ দিন পর দেশে আর বিদ্যুতের কষ্ট থাকবে না। এর মধ্যেই দেশে বিদ্যুতের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শাজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।

আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

জাতীয়, 25 March 2024, 703 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।

banner

বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।

প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।

এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।

কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।

কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।

কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।

সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্ণামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন

আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, জাতীয়, 3 June 2024, 1571 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্ণামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আজ ৩ জুন সোমবার মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে নেপালকে ৪৫-৩১ পয়েন্টে হারিয়ে টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থ ট্রফি ঘরে তুলল চ্যাম্পিয়নরা।

banner

বাংলাদেশ এই টুর্ণামেন্টে প্রতিটি ম্যাচই সহজে জিতেছে। ফাইনালও তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। নেপাল সেমিফাইনালে কেনিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই করে জিতলেও বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। আজ ম্যাচের কোনো মুহূর্তেই নেপাল বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি।

এদিন শুরুতে ১-০ পয়েন্টে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। নেপাল পরক্ষণে ১-১ স্কোর করে লড়াইয়ের আভাস দেয়। ধারাবাহিকতায় ২-১ স্কোরে এগিয়ে যায় হিমালয়ের দেশটি। তবে স্বাগতিকরা বেশিক্ষণ তাদের রাজত্ব করতে দেয়নি। ঘুরে দাঁড়িয়ে একের পর এক পয়েন্ট নিতে থাকে। একপর্যায়ে ১৬-২ স্কোরে এগিয়ে প্রতিপক্ষকে ব্যাকফুটে ফেলে দেয়।

প্রথমার্ধে ২৪-১০ পয়েন্টে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকে। এই সময়ে একবার অলআউট করে লোনাও পায় মিজান-আল আমিনরা। স্বাগতিকদের পয়েন্ট নেওয়ার অভিযানে নেপালও কম যায়নি। গ্রুপ পর্বের চেয়ে আজ পয়েন্ট বেশি পেলেও বড় ব্যবধানে হার এড়াতে পারেনি।

বিরতির পর এগিয়ে চলা অব্যাহত থাকে বাংলাদেশের। দ্বিতীয়বার প্রতিপক্ষকে অলআউট করার সময় স্কোর দাঁড়ায় ২৯-১১ তে। শেষ দিকে এসে বাংলাদেশ একবার অলআউট হয়। ৪৩-২৮ পয়েন্টে নেপাল পিছিয়ে থাকে। ম্যাচ শেষ হতেই দর্শকদের আনন্দ-উল্লাস বলে দিচ্ছিল, ট্রফি জেতা কতটা সার্থক হয়েছে।

কিডনি বিক্রি করতে গিয়ে চক্র গড়ে তোলেন তিনি

জাতীয়, 20 July 2023, 1079 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আনিছুর রহমান নিজের কিডনি বিক্রি করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে গড়ে তোলেন কিডনি কেনাবেচা চক্র। বিত্তবান কিডনি গ্রহীতার কাছ থেকে কিডনি প্রতি ৫০ লাখ টাকা চুক্তি করলেও ভুক্তভোগীকে দেওয়া হতো পাঁচ লাখ টাকা। বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতেন তারা। চক্রটি অবৈধ উপায়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কিডনি নিয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

banner

গতকাল বুধবার রাজধানীর ভাটারা, বাড্ডা, বনানী ও মহাখালী এলাকা থেকে ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব–১।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন– চক্রের মূলহোতা আনিছুর রহমান ও তার চার সহযোগী আরিফুল ইসলাম রাজিব, সালাউদ্দিন তুহিন, সাইফুল ইসলাম ও এনামুল হোসেন। তাদের কাছ থেকে অঙ্গিকারনামা ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে করা চুক্তির এফিডেভিট কপি উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. মোস্তাক আহমেদ।

তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে চক্রের সদস্যরা। কখনও তারা বলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে একটির বেশি কিডনি দরকার নেই। কখনও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসার খরচ দেওয়ার কথা বলে পার্শ্ববর্তী দেশে নিয়ে যেতেন। টাকার লোভে কিডনি হারিয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পরে অসহায় মানুষগুলো।

মোস্তাক আহমেদ বলেন, ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য ভুয়া কাগজপত্রে ভারতে গিয়ে প্রতারিত হন টাঙ্গাইলের আনিছুর। অর্থের বিনিময়ে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করেন। তবে সেখানে কিডনি প্রতিস্থাপনের রোগীদের ব্যাপক চাহিদা দেখে প্রলুব্ধ হন তিনি। পরে দেশে ফিরে নিজেই কিডনি বেচাকেনার অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। সেখানে ভারতে অবস্থানরত কিডনি কেনাবেচা চক্রের সহযোগিতায় একটি দালাল চক্র গড়ে তোলেন। অনলাইনে বিত্তশালী কিডনি রোগী এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কিডনি ডোনার সংগ্রহ করে বৈধ ও অবৈধভাবে বিমানে বা স্থলপথে ভারতে পাঠাতেন।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, জীবন বাঁচাতে কিডনি ক্রেতারা ৪৫-৫০ লাখ টাকা খরচ করেন। এই টাকার থেকে চার–পাঁচ লাখ টাকা পান ডোনার। আর দেশের অভ্যন্তরে সক্রিয় দালাল, অসাধু ট্রাভেল এজেন্টসহ চক্রের অন্যান্য সদস্যরা ৫-১০ লাখ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। বাকি প্রায় ৩০ লাখ টাকা বিদেশে অবস্থানরত কিডনি পাচার সিন্ডিকেটের মধ্যে ভাগ হয়।

‘চক্রটি চারটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। দ্বিতীয় গ্রুপ দেশে থাকা মূলহোতা আনিছ ঢাকায় বসে বিদেশে ডোনার পাঠানোর বিষয় তদারকি করে।’

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, চক্রের তৃতীয় দলটির সদস্য আরিফ এবং তুহিন প্রথম দলের চাহিদা মোতাবেক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবী মানুষদের চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হাতে প্রলুব্ধ করে নিয়ে আসতেন। চতুর্থ গ্রুপটির হোতা ‘সাহেবানা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’ এর মালিক সাইফুল ইসলাম ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিংসহ ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন।

সম্প্রতি সরকারি একটি স্বনামধন্য হাসপাতালে দেশের প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনে প্রতারণার বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে। এই প্রতারণার সঙ্গে এই চক্রটি জড়িত কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, না..। তাদের জড়িত থাকার এমন কোনো তথ্য পায়নি।