গাছের ডাল কাটা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 29 August 2023, 1218 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গাছের ডাল কাটা নিয়ে সংঘর্ষে যুবলীগ নেতাসহ ৩ জন আহত হয়েছেন। আজ ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে শহরের সরকার পাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- নুরুল ইসলাম (৫০), আমাতু (৪০), রফিকুল ইসলাম (১৮)।

banner

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরকার পাড়ার নুরুল ইসলামের বাড়ির গাছের ডাল কাটা নিয়ে স্থানীয় হারুন মিয়া ও বাচ্চু মিয়ার পরিবারের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে নুরুল ইসলামের পরিবারের ৩জন আহত হয়। শহর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আহত নুরুল ইসলাম জানান, গত ৪২ বছর যাবত মস্তু মিয়ার ভাই হারুন মিয়ার সাথে ৩৭ শতাংশ জায়গা নিয়ে নুরুল ইসলামের বিরোধ চলছিল। এ জায়গা নিয়ে দু’পক্ষের মামলা হয়েছে। আদালতের রায়ে নুরুল ইসলাম জায়গা পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুপুরে হারুন মিয়ার ছেলে আশরাফুল, সিরাজুল, সাইফুল, ও বাচ্চু মিয়ার ছেলে বিজয়, হৃদয়, বাক্কি তাদের বাড়ির গাছের ডাল কাটতে আসে। এসময় তাদেরকে বাধা দিলে তারা নুরুল ইসলাম, তার স্ত্রী আমাতু ও তার ছেলে রফিকুল ইসলামকে পিটিয়ে জখম করেন। আহত অবস্থায় তার স্ত্রী ও ছেলেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তার তাদেরকে ঢাকায় রেফার করেছে। তিনি এ হামলার সঠিক বিচার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসাইন জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন উপজেলাসহ ১২ উপজেলার চেয়ারম্যান নিলেন শপথ

জাতীয়, নবীনগর, বিজয়নগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 4 July 2024, 2200 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
শপথ গ্রহণ করেছেন ষষ্ঠ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচিত চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা। গতকাল ৩ জুলাই বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ১২ উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করান চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম। এ সময় সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার। নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরাও জনগণের সেবক হয়ে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলা, বিজয়নগর ও নবীনগর উপজেলা, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, পটিয়া ও লোহাগাড়া, কক্সবাজারের টেকনাফ, কুমিল্লার হোমনা, চৌদ্দগ্রাম ও নাগঙ্গলকোট, চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যানরা শপথ গ্রহণ করেন।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন বাস্তবায়নে কাজ করেবো। সদর উপজেলাকে একটি সমৃদ্ধ, আধুনিক, স্মার্ট, পরিবেশবান্ধব, শিল্পোন্নত ও সারাদেশের মধ্যে মডেল উপজেলায় রূপান্তরে নিরলসভাবে কাজ করে যাবো। শহরের সঙ্গে উপজেলার সকল ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ভালো করে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব সেক্টরে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তিনি জানান।

আমরা ভোটের জন্য রাজনীতি করিনা, জনগণের কল্যাণে কাজ করি : মোকতাদির চৌধুরী এম.পি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 18 June 2023, 1245 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রী শ্রী শীতলা পূজা উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর ঋষিপাড়া পঞ্চায়েত কমিটির আয়োজনে ১৭ জুন শনিবার সকালে ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

banner

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

এ সময় তিনি ঋষিপাড়া মন্দিরের জন্যে তিনলাখ টাকা অনুদান ঘোষনা করেন ও ঋষিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশের যে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছি, অতীতের কোন সরকার এই ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড করতে পারেনি। তিনি বলেন, আমরা ভোটের জন্য রাজনীতি করিনা। জনগনের কল্যানে কাজ করছি। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনাদের কাছে বসন্তের কোকিলরা ছলছাতুরি ও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোট চাইতে আসবে। আপনারা তাদের ব্যাপারে সর্তক থাকবেন।

পরে তিনি দুপুর ১২টার দিকে শহরের মেড্ডা এলাকার তিতাস নদীর তীরে অবস্থিত নাথ সম্প্রদায়ের সমাধি মন্দিরে শ্রী শ্রী মহাদেব দেবতার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এ সময় প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিন্টু ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মোঃ মেয়র হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের (পিপি) অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর শেখ মোঃ মহসিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, এই সমাধি মন্দিরের উন্নয়নে আমি আগেও আপনাদের পাশে ছিলাম। আগামী দিনেও যে কোনো উন্নয়নে পাশে থাকবো। তিনি মন্দিরের সার্বিক উন্নয়নের আশ্বাস দেন।

আমি না থাকলে নির্বাচনের গন্ধই থাকতো না : ফিরোজুর রহমান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 4 January 2024, 941 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান বলেছেন, মানুষ ভোট দেওয়া ভুলে গেছে। ভোট দিতে চায় না কারণ মনের মতো মানুষ পায় না। এটা আমাদের জন্য কলঙ্ক হয়ে গেছে। আমি যদি না থাকতাম তাহলে নির্বাচনের গন্ধই থাকত না।

banner

২ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন নিয়ে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমবেত জনতাকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে পাওয়া একটি ভিডিওতে ফিরোজুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ ধৈর্য ধরেন। প্রশাসন থেকেও বলেছে একটু ধৈর্য্য রাখেন।

তারাও মনে করে যে আপনাদের জয় হবেই। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে হবে। নির্বাচন খারাপ হলে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে। যারা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন তাদের সঙ্গে জনগণ নেই।

কেউ গালি দিলে ধন্যবাদ দেবেন। আঘাত করতে এলে নাম ঠিকানা দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি আমার নির্বাচন করতে এলে কেউ আহত হলে সেই দায়িত্ব আমার। আমার জন্য করতে গিয়ে কেউ আহত হলে আমি চলে যাব আমি এমন মানুষ না।’

অভিযোগের সুরে ফিরোজুর রহমান বলেন, ‘আমাকে নিয়ে অনেকে মন্তব্য করে।

আমি একাডেমিকেলি দুর্বল। কিন্তু আমি লায়ন্স-এর গভর্ণর। আমি এখানে একে একে আসছি। ইউনিয়ন, উপজেলা ও সংসদ। তিলে তিলে ব্যবসা করতে করতে এখানে এসেছি। আমি পারব না দুর্নীতি করতে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। আমরা তো আওয়ামী লীগেরই।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম কাজ হবে আপনাদেরকে সম্মান দেওয়া। মানুষের মূল্য একটাই তার আচার ব্যবহার। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে শান্তিমতো কাজ করতে পারিনি। অনেক বাধা-বিপত্তি আসছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার বাড়িতে আসাটাও বন্ধ রাখছে কেউ কেউ। আমাদের গ্যাস আমরা সবাই পাই না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলে না কেউ। আমি সংসদের যেতে পারলে এসব বলব।’

সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে ভোট কেন্দ্রে থাকতে হবে। যদি পাহারাদার ঠিক থাকে তাহলে চোর চুরি করতে পারবে না। আপনারা না গেলে চুরি করে নিয়ে যাবে।’

ফিরোজুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাতিল করলে আপিলে তিনি তা ফিরে পান।

পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 23 February 2023, 1731 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজ এর আয়োজনে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার।

banner

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ আবদুল কবির তপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইবনে আইন মারুফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, কলেজের উদ্যোক্তা হারুন অর রশিদ, শাহীন মৃধা, শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।

কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মোট নয়টি স্টলে পাটিসাপটা, পাক্কন পিঠা, মাশরুম পিঠা, মালপোয়া, ভর্তা পিঠা, চকলেট ভেজিটেবল, তালের পিঠা, দুধ পলি, বিবিখানা পিঠা, বেøইড পিঠা, হৃদয় হরণ, গোলাপফুল পিঠা, চিতই, নারকেল পুলি, খাজা পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের ৫৪ জাতের পিঠা প্রদর্শন করা হয়। প্রতিটি স্টলে গড়ে ২২ থেকে ৫৪ ধরণের বাহারি পিঠা প্রদর্শন করা হয়।

পিঠা উৎসবে ঘুরে দেখা যায়, কলেজর নিচ তলায় চোখে পড়ে অর্কিড স্টল। সেখানে টেবিলে ৩০ ধরণের বাহারি পিঠা সাজানো হয়েছে। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বৃষ্টি রানী দাস ও আফিফুল ইসলাম বলেন তারা ৩০ ধরণের পিঠা তৈরি করেছেন।

দ্বিতীয় তলায় বাটার কাপ স্টলের আকরাম মিয়া, সাইমা সরকার ও মারিয়া আক্তার বলেন, তারা ১১জন মিলে এই স্টল সাজিয়েছে। ২২ধরনের পিঠা রয়েছে তাদের স্টলে। বেলা ১১টা পর্যন্ত তারা ১ হাজার ৫০০ টাকার পিঠা বিক্রি করেছেন।

অপরাজিতা স্টলের সূবর্ণা আক্তার ছোঁয়া, বন্যা আক্তার ও জান্নাত আক্তার বলেন, তাদের স্টলে ৩৩ ধরণের পিঠা রয়েছে। সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তারা সাড়ে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন।

ফাল্গুনের পিঠা বিলাস স্টলের উম্মে মাইশা আফরিন, তাহসিন মিম, সাইফুল ইসলাম ও জেবুন্নেছা ইসলাম বলেন, আমরা ২২ধরণের পিঠা নিয়ে এসেছি। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার টাকা বিক্রি করেছি।

ক্যামেলিয়া স্টলের জান্নাতুল হাসান বলেন, ২৬ থেকে ২৭ ধরণের বাহারি পিঠা তাদের স্টলে রয়েছে। পৌনে ১২টা পর্যন্ত তারা ৫ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেছেন।

টিউলিপের স্টলে রয়েছে ২০ ধরণের পিঠা। লুবাবা আক্তার, মোঃ এমরান ও তানভীর সরকার বলেন, ১৬জন মিলে স্টল সাজিয়েছি। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তারা ১ হাজার ৩০০ টাকার পিঠা বিক্রি করেছেন।

গ্রুপ বেলির স্টল সাজিয়েছে ১৬জন শিক্ষার্থী। মিনহাজুল হক, মানসুরা আক্তার ও তাসফিফা তাবাসসুম বলেন, ৫৪ ধরণের পিঠা রয়েছে তাদের স্টলে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা ১০ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেছেন।

উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল মামুন সরকার বলেন, পিঠা উৎসব এর আয়োজন দেখে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেছে। মা-চাচিরা আগে এসব পিঠা বানাত। এখন আর সেই আমেজ নেই। আয়োজনে খুশি হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের ২০হাজার টাকা দেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামী ধরতে গিয়ে নারীর কপালে পিস্তল ঠেকানো ও গুলির ঘটনায় তোলপাড় ॥ তদন্ত কমিটি গঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 12 May 2024, 714 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামী ধরতে গিয়ে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে নারীর কপালে ঠেকানোর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগে প্রবাসীকে ধরতে গিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এমন ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

banner

এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্য দিবসে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত করে এর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের থলিয়ারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরুল আলম নূরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে সদর থানায় ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের মামলা হয়। এতে অভিযোগ আনা হয়, নূরুল আলম সৌদি আরব থেকে আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি।

এ ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এনামুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন। গত শুক্রবার বিকেল ৫টার প্রবাসী নূরুল আলমকে গ্রেপ্তারের জন্য সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস.আই রেজাউল করিমসহ আরো কয়েকজন। এ সময় নূরুল আলমের বাড়িতে তার ভাতিজার সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান চলছিল।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে একদল লোক নূরুল আলমকে খুঁজতে আসে। তারা তাকে না পেয়ে আক্রমানাত্মক হয়ে উঠে। এসময় অনুষ্ঠানে আসা বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। তারা নূরুল আলমের স্ত্রী, সন্তান, পিতাসহ পরিবারের লোকজনকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে এস.আই রেজাউল প্রবাসীর স্ত্রী বন্যার কপালে দিকে প্রকাশ্যে পিস্তল তাক করে। পাশাপাশি পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা ঘরে থানা নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। ভুক্তভোগীরা তখন তারা গোয়েন্দা পুলিশ নাকি ডাকাত বুঝে উঠতে পারিনি।

ঘটনার সময় উপস্থিত নুরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম অভিযোগ করেন, সাদা পোশাকে যাওয়া লোকজন বাড়িতে প্রবেশ করেই তার ভাইকে খোঁজ শুরু করে। ভাই বাড়িতে নেই বলা হলেও তারা মানতে নারাজ। এ সময় সাদা পোশাকে আসা লোকজন নুরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বেগমসহ কয়েকজনকে মারধর করে।

তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণ নিয়ে মামলা হয়েছে। স্বর্ণ আমার ভাই আনেনি। আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা হবে। বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আদালতে মামলা করব। তিনি বলেন, সাদা পোশাকে আসা লোকজন পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসাও আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে খোসা কার।

এ ব্যাপারে নূরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বলেন, প্রবাসে আব্দুল কুদ্দুসকে ব্যবসায়ীক অংশীদার না করায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার দিন আমাদের বাড়িতে সুন্নতে খাৎনার অনুষ্ঠান চলছিল। এমন সময় ৫/৬ জন সাদা পোশাকে এসে ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাদের কাছ থেকে আলমারির চাবি নেয়। এ সময় তারা তল্লাশি করে কিছু পায়নি। কিন্তু আমাদের ঘরে থাকা প্রায় ৫ লাখ টাকাসহ গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি দেখে চিৎকার করায় শিশু নিশাতের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। প্রতিবাদ করায় তারা আমার কপালে পিস্তল ঠেকায় এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের এস. আই রেজাউল করিম বলেন, বাদী পক্ষ বিষয়টি আমাদেরকে জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়ি চিল্লাফাল্লা শুনছিলাম। আমি যাওয়ার পর তারা খারাপ আচরণ করে। আসামীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। আমার হাতে পিস্তল ছিলো। তবে কারো দিকে তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামী ধরা সেহেতু সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশানে যাইনি। সদর উপজেলা বিশ্বরোড এলাকার বাদী এসে বাড়িতে আসামীর অবস্থানের কথা জানালে সেখানে যাওয়া হয়।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। যারা প্রবাসীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তদন্ত কাজ শেষ হলে প্রতিবেদন জমা দিব।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, কোনো অফিসার যদি আসামী ধরতে গিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা বিষয়টির গভীরভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্য দিবসে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত করে এর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।