চলারপথে রিপোর্ট :
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের দূর্গাপুর এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা ও কাভার্ড ভ্যান এর মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। আজ ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নিহতরা হল, চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের রফিক মিয়ার পুত্র সিএনজি অটোরিক্সা চালক জামাল মিয়া (২২) ও একই উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের কাশেম আলীর পুত্র ও সিএনজি অটোরিক্সা যাত্রী ফরিদ মিয়া (৪০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার (ওসি) রাশেদুল হক জানান, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একটি কাভার্ড ভ্যান চুনারুঘাট উপজেলার দূর্গাপুর এলাকায় পৌছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সিএনজি অটোরিক্সার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিতে থাকা যাত্রী ফরিদ মিয়ার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
আহত অবস্থায় ৩ জনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিএনজি চালক জামাল মিয়াকে মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। সিলেটে নেয়ার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়।
ওসি বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অন্য আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ও সেখানকার শরণার্থীরা বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট থেকে মনোযোগ সরিয়ে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ (ইউক্রেনে) পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। পুরো ফোকাস (দৃষ্টি) এখন যুদ্ধ এবং ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের দিকে।’
কাতারের দোহায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি ৫) ফাঁকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি এবং সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আজ ৮ মার্চ বুধবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৪ মার্চ কাতারে পৌঁছান শেখ হাসিনা এবং আজ বিকেলে তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। সূত্র : বাসস
প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎকারে বলেন, ঢাকা সমস্যা সমাধানে আলোচনায় নিয়োজিত থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে ইতিবাচক নয়।
আল জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকারের একটি সংক্ষিপ্ত অংশ ইতোমধ্যেই সম্প্রচার করা হয়েছে এবং পূর্ণাঙ্গ অংশটি আল জাজিরাতে আগামী ১১ মার্চ শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সম্প্রচার করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমারে নিপীড়ন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড এবং পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে যখন রোহিঙ্গা নিপীড়ন শুরু হয়, রোহিঙ্গারা নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয় তখন আমরা তাদের জন্য দুঃখ অনুভব করেছি। এরপর আমরা সীমান্ত খুলে দিয়েছি, আমরা তাদের আসতে দিয়েছি। এছাড়াও, আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের সকলের জন্য আশ্রয় ও চিকিৎসা দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেও কথা বলতে শুরু করি। আমরা তাদের বলি, আপনারা তাদেরকে (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে নিন। দুর্ভাগ্যক্রমে তারা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু এটা সত্যিই খুব কঠিন। আমরা তাদের জন্য আলাদা জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করেছি। ভাসান চর একটি ভালো জায়গা, থাকার জন্য ভালো জায়গা… আমরা সেখানে শিশুদের জন্য ভালো থাকার ব্যবস্থা এবং চমৎকার সুবিধার ব্যবস্থা করেছি।’
রোহিঙ্গা শিবিরে জীবনযাত্রার পরিস্থিতি এবং আগুনে ১২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয় হারানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তারা (রোহিঙ্গারা) একে অপরের সাথে লড়াইরত। তারা মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়িত। তারা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে।’
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সাথে সরকার পতন পর্যন্ত যুগপৎ আন্দোলনের জন্য জোট ছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ভাষ্যমতে, ‘এই মুহূর্তে কোনো জোট নেই। আমাদের যে জোট ছিল, আন্দোলনের জন্য জোট, সেটা অনেক আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে। এটা এখন কোনো কাজ করে না। অনেক আগেই আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রোগ্রাম ঠিক করে যুগপৎ আন্দোলন করেছি সরকার পতন অবধি। এটা এখন বলবত নেই।’
আজ ৩০ আগস্ট শুক্রবার দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে জোট নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল। ফখরুল আরো বলেন, ‘অন্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি, কারণ এখনো কেয়ারটেকার সরকার আছে, এরপর নির্বাচন আছে। সুতরাং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা বজায় রাখছি, এটা জরুরি। এই মুহূর্তে আমাদের কোনো জোট নেই। আমরা জোটবদ্ধ নই।’
নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তো অন্তর্বর্তী সরকার। একটি নির্বাচিত সরকার থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকার হতে যে সময় দরকার। এটি কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এটি একটি সিলেক্টেড সরকার।’
এদিকে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে পুরোনো সব দ্বন্দ্ব মেটাতে প্রস্তাব করেছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সরকার পতনের পর চেয়ারপারসনও বলেছেন- আমরা প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আমরা সৌহার্দ্য, ভালোবাসা এবং সুসম্পর্কের রাজনীতি করতে চাই। কিন্তু একই সময়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি একটা বড় বিষয়। আজকে আওয়ামী লীগকে তার গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিকে কীভাবে তারা ধ্বংস করেছে, তার জন্য তাকে তো জবাবদিহি করতে হবে। তারা জবাবদিহি করে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। আমরা বিশ্বাস করি- যেকোনো দলের যে কোনো ব্যক্তির রাজনীতি করার অধিকার আছে, সেভাবে করবে।’
তারেক রহমানকে বিএনপি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর ফিরে আসা দেশের জন্য, দলের জন্য খুব প্রয়োজন।’ এ সময় চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি কাজ করছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘চেষ্টা হচ্ছে কত দ্রুত তাকে বিদেশে নেওয়া যায়। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে তার শারীরিক কন্ডিশনের ওপর।’ সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার
অনলাইন ডেস্ক :
আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চের কালরাত। ১৯৭১ সালের এ রাতেই বাংলার বুকে নেমে এসেছিল মৃত্যুর ঘনতমসা। পৃথিবীর ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের একটি ঘটেছিল আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমিতে।
রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হিংস্র হায়েনার মতো বর্বর শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতাকামী বাঙালি জনগণের ওপর। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্ণ সামরিক সম্ভার নিয়ে রাত ১০টার পর সারা দেশে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা শুরু করে তারা।
সামরিক ভাষায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিচিত ছিল পাক-হানাদারদের এ হত্যা-অভিযান। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের পথেই এগিয়েছিল। অত্যাচার, উৎপীড়ন, পাশবিকতা, নৃশংসতা আর হিংস্রতার কালো থাবায় বিভীষিকা ছড়িয়ে দিয়েছিল পুরো ঢাকা শহরে।
বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটি ‘গণহত্যা দিবস’ হিসাবে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে। কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার সেই নৃশংস ঘটনার স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। দিনটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বর্বরোচিত হামলায় বিশ্ববাসী হতবাক হয়ে দেখেছিল উন্মত্ত পাক বাহিনীর গণহত্যাকাণ্ড। মধ্যযুগীয় কায়দায় হানাদাররা রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা ঢাকা শহরে চালায় হত্যাযজ্ঞ, করে অগ্নিসংযোগ। এই রাতেই গ্রেফতার করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। ২৫ মার্চের কালরাতের বেদনাদায়ক ঘটনা সমগ্র জাতিকে শিহরিত করে। নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে পাখির মতো গুলি চালিয়ে হত্যা করে সেদিন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায়নি। ভয়াবহ সেই কালরাতের হত্যাযজ্ঞ বাঙালিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জোগায়।
প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের এই দিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট চলে যান। রাত পৌনে ৮টায় তিনি গোপনে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন নিরপরাধ বাঙালির ওপর কাপুরুষোচিত সশস্ত্র হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে। পাক হানাদার বাহিনী জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে জল্লাদের মতো বাংলার নিরপরাধ জনগণের ওপর মেশিনগান, মর্টার আর ট্যাংক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে।
রাত ১টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টারে আক্রমণ চালায়। কেন্দ্রীয় কোয়ার্টারে ১৮ জন বাঙালি গার্ড থাকলেও তারা পালটা আক্রমণের সুযোগ পাননি। পিলখানা আক্রমণের পাশাপাশি রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারী বাজারসহ ঢাকাজুড়েই শুরু হয় প্রচণ্ড আক্রমণ। বিভিন্ন এলাকাতে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগ করে চলে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী।
মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকে ট্যাংক, সঙ্গে সেনা বোঝাই লরি। ইকবাল হল (বর্তমানে জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হলে মধ্যযুগীয় কায়দায় চলে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতা। শহিদ হন কয়েকশ ছাত্রছাত্রী। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।
হানাদাররা চলার পথে রাস্তার দুই পাশে গুলি ছুড়ে মেরে ফেলে অসংখ্য নিরীহ, গরিব মানুষকে। মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাসে গোলার পর গোলা ছুড়ে হত্যা করা হয় অজস্র মানুষকে। রাজারবাগে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাদের সামান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই। ট্যাংক আর ভারী মেশিনগানের মুখে এ প্রতিরোধ বেশিক্ষক্ষণ টেকেনি। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুরো সদর দপ্তর।
২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়্যারলেস বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ছাত্র-জনতা-পুলিশ-ইপিআর শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমি ঘোষণা করছি আজ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সর্বস্তরের নাগরিকদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। সম্মিলিতভাবে শত্রুর মোকাবিলা করুন। এই হয়তো আপনাদের প্রতি আমার শেষ বাণী হতে পারে। আপনারা শেষ শত্রুটি দেশ থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যান।’
এর আগে সকালে প্রেসিডেন্ট ভবনে ভুট্টো-ইয়াহিয়া এবং ইয়াহিয়া ও পিপলস পার্টির উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগের খবর সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে ছিল। রাত ৯টার পর বঙ্গবন্ধু তার বাসভবনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছেন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট অখণ্ড পাকিস্তানের সমাপ্তি টানতে চলেছেন।
পিলখানায় ইপিআর ব্যারাক ও অন্যান্য স্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত বাণী ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে মেসেজ আকারে পাঠানো হয়। এ বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দপ্তরে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজও এ বার্তা গ্রহণ করে। চট্টগামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী সাইক্লোস্টাইল করে রাতেই শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন। রাত ১টায় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের অদূরে শুক্রাবাদে ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। এখানে প্রতিরোধ ব্যুহ ভেঙে হানাদাররা রাত দেড়টায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে আসে। হানাদার বাহিনী এলাপাতাড়ি গুলি চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধুকে রাত দেড়টায় তার বাসভবন থেকে বন্দি করে শেরেবাংলা নগরের সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুকে সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়। সকাল পর্যন্ত আদমজী কলেজের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুকে আটক রাখা হয়।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের রাতে ১ মিনিট ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাত ১১টা থেকে ১১টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে। অন্ধকারে থাকবে দেশ।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। সেই হিসেবে ১৪ জানুয়ারি থেকে রজব মাস গণনা শুরু। আর ৮ ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হবে শবে মেরাজ।
আজ ১২ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. নায়েব আলী মন্ডল।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব রুহুল আমীন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. কাউসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে একটি বড় পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পরমাণু শক্তি আমরা শান্তি রক্ষায় ব্যবহার করব।’
আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিশ্বব্যাপী পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে রাশিয়া। এর ফলে আজ থেকে পরমাণু স্থাপনার মর্যাদা পেল রূপপুর প্রকল্প।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর আকাশপথে রাশিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছায় পারমাণবিক জ্বালানি। এরপর বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সড়কপথে এটি রূপপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনই জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না, এটি মজুত করে রাখা হয়েছে রূপপুরে। এরপর আজ সকালে পারমাণবিক জ্বালানির দ্বিতীয় চালান রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।