চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যায় ধুকছে। দীর্ঘদিন ধরে গাইনি ও সার্জারি চিকিৎসকসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদায়ন না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এতে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ গুরুতর রোগীদের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে অকেজো হয়ে পড়ে আছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবায় ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০১২ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাও করা হয়। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। তবে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এর সুফল পাচ্ছেন না উপজেলাবাসী।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্বনয়হীনতার কারণে সেখানে বিরাজ করছে চিকিৎসক সংকট। হাসপাতালটি পরিচালনায় মেডিকেল অফিসার ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিলিয়ে ৩০ জন থাকার কথা। কিন্তু সেখানে বর্তমানে ২২ জন চিকিৎসক দিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে কার্যক্রম। বিশেষ করে ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে গাইনি, সার্জারি, চর্ম ও নাক-কান-গলার চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, গাইনি চিকিৎসকের অভাবে গত এক বছরে হাসপাতালটিতে একটি সিজারও হয়নি। বর্তমানে ছোট খাট ১-২টি অপারেশন ছাড়াও গুরুতর কোনো অপারেশন হচ্ছে না। এতে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অনেকটা অকেজো হয়েই পড়ে আছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জনসাধারণ সেবা না পেয়ে ছুটতে হচ্ছে জেলা সদর হাসপাতালসহ আশ পাশ প্রাইভেট ক্লিনিকে। বিশেষ করে গর্ভবর্তী নারীদের নিয়ে অন্যত্র যাতায়াত করার ফলে তাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে।
এছাড়াও প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে অতিরিক্ত খরচ করে স্বাস্থ্য সেবা নিতে হয়। এতে হতদরিদ্ররা অনেকটা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। গত ৮ মাস আগে একজন গাইনি চিকিৎসককে এই হাসপাতালে পদায়ন করা হলেও তিনি কেবল যোগদান করে আর একদিনের জন্যও হাসপাতালে আসেননি। পরে তিনি এখান থেকে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যান। এ অবস্থায় দ্রুত সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
সরাইল মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুব খান বাবুল বলেন, প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণের পর প্রান্তিক জনপদের হতদরিদ্ররা কম খরচে সরকারি চিকিৎসা পাওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে উপজেলাবাসী তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটির আরো একটি সমস্যা হচ্ছে এখানে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ও গাইনি চিকিৎসককে একত্রে পদায়ন করা হয় না। এতে বছরের পর বছর ধরে সিজার বা সার্জারির কাজ ব্যাহত হয়ে আসছে। আমরা চাই সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে হাসপাতালটি পরিচালিত হোক।
চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নোমান মিয়া জানান, দ্রুত চিকিৎসক পদায়নের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবেই চলছে।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. একরাম উল্লাহ জানান, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও গর্ভবতী নারীদের নিরাপদ সন্তান প্রসব নিশ্চিত করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দ্রুত সময়ের মধ্যে গাইনিসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পদায়ন করা হবে। সেই সঙ্গে সিজারিয়ান বিভাগ দ্রুতই পুরোদমে চালু করা হবে। এতে উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ কমে আসবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবে গতকাল সোমবার দুপুরে নাতনী জামাই এডঃ রাখেশ চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দিদি শ্বাশুরীর রাসমনি ভৌমিক ও রসরাজ সরকার । দিদি শ্বাশুড়ি রাসমনি ভৌমিক সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর বড়বাড়ির মৃত পান্ডব ভৌমিকের স্ত্রী। রসরাজ সরকার হলেন রাসমনি ভৌমিকের বড় মেয়ের জামাই।
সংবাদ সম্মেলনে সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর বড়বাড়ির মৃত পান্ডব ভৌমিকের স্ত্রী রাসমনি ভৌমিকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ উত্থাপন করেন তারা।সংবাদ সম্মেলনে দিদি শ্বাশুরীর রাসমনি ভৌমিক দাবি করেন, তার স্বামীকে পৈত্রিক জমি জমা দুই পরিবারের মধ্যে সম বন্টন করে মারা গেছেন।
দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে হরলালের কন্যা মুকুল রানী সরকারকে স্বামী এডঃ রাখেশ চন্দ্র সরকার আমার সমস্ত সম্পত্তি জবর দখল করে আমাকে ও আমার পরিবারের সকলকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। সংবাদ সম্মেলনে রাসমনি ভৌমিক আরো বলেন, আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমি আমার মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে রসরাজ সরকার জানান, এ সম্পত্তি আমার শ্বাশুরী তার পাপ্যমালিকানা সম্পত্তি পাওয়ার অব এটর্নির মাধ্যমে এফিডেভিট করিয়া আমাকে মালিকানা প্রদান করেছেন। আমার শ্বাশুড়ীর উপর জুলুম অত্যাচার চালাইতে থাকে।
এমনকি জজকোর্টে আমাকে সে নিজে মারধর করেছে। রাখেশ চন্দ্র সরকার নাসিরনগর উপজেলার কয়েরপুর গ্রামের মৃত অমৃত লাল সরকারের ছেলে এবং তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য। রাসমনি ভৌমিক ও মেয়ের জামাই রসরাজ সরকরের নামে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়িছাড়া করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্পত্তি লোভে নাতনী জামাই অ্যাডঃ রাখেশ চন্দ্র সরকারের অত্যাচার ও মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে রাসমনি ভৌমিক ও রসরাজ অত্যাচার- নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে রসরাজ সরকার লেখিত বক্তব্য পাঠ করেন। বক্তব্য রাখেন, রাসমনি ভৌমিক ও আষিশ সরকার প্রমুখ।
দাফন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লক্ষীমুড়া গ্রামের নিহত হারুন মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মনিপুর বন্দরবাজার বালুর মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় হারুন মিয়ার আত্মীয় স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হারুন মিয়া নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের পর হারুন মিয়ার মরদেহে এসে পৌঁছায় তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীদের ভিড় বাড়ে তার বাড়িতে। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, পত্তন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা হৃদয় আহমেদ জালাল, সাবেক মেম্বার সেলিম মিয়া, হোসেন মিয়া, মাওলানা সিরাজ আকরামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়া হত্যার শিকার হয়েছে। আমার চাচার হত্যার সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাই।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে হারুন মিয়ার জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি ঝোঁক ছিল তার। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় ক্যাম্পাসে অল্প কদিনে সংগঠক হিসেবে নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্য পরিচিতি পান ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী। এমবিবিএস শেষ করে নিজের শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল সেন্টারে চিফ মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সাম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপ-কমিটির সদস্য করা হয়েছে তাকে।
উপ-কমিটির সদস্য পদ প্রসঙ্গে ডা. আশীষ বলেন, ‘রাজনীতির মধ্যেই ছিলাম, সরকারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পলিসিতে যেখানে যখন আমি ও আমার প্রতিষ্ঠানের কাজ করার সুযোগ ছিল, আমরা ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী প্রান্তিক মানুষের জন্য যে টেলিমেডিসিন সেবা গোঁটা বাংলাদেশ জুড়ে শুরু করেছিলেন, আমার প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ সে প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার ছিল।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এক নবশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। নবরুপের এ বাংলাদেশের ডিজিটাল অংশীদার ছিলাম, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে কর্মী হয়ে শ্রম দিব, এজন্য রাজনীতির মাঠে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মূলধারার রাজনীতিতে থেকে একটা অঞ্চল বা গোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক জীবনে যতটুকু ভূমিকা রাখতে যায়, একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তা সম্ভব নয়। গণমানুষ, জনস্বাস্থ্য বা গণশিক্ষা একটা জাতির সামগ্রিক আগ্রগতির হাতিয়ার। আমার স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান, সেবার পরিধি ও বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই কাজ করছিলাম। উপ-কমিটির সদস্য পদ পাওয়ার পর থেকে দায়িত্ব বেড়েছে তা বুঝতে পারছি।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি নৌকার টিকিট পান তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আপনার ভূমিকা কী হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি সামান্য কর্মী। এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে আমার আত্মার আত্মায়তা হয়েছে এখন তারই প্রতিফিলনে তারা হয়ত আমাকে চাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন আমি যোগ্য অবশ্যই নির্বাচনের মাঠে আমাকে দেখা যাবে, তবে দল আমার ওপর যে দায়িত্ব দেবে তা পালন করে যাব।’
ডা. আশীষ বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে সবাইকে মাঠে কাজ করতে বলা হয়েছে, আমি আমার পেশাগত জায়গা স্বাস্থ্য খাতে গত ১৪ বছরে সরকার যে অমূল পরিবর্তন করেছে তা একটা পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করছি। এটাকে নানা মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। শুধু মাত্র স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে তাকালে বোঝা যায় শেখ হাসিনা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কেন এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী ১৯৯০ সালে সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯২ সালে নটর ডেম কলেজ থেকে স্টার মার্কস নিয়ে এইচএসএসি পাশ করেন। তিনি সরকারি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল সেন্টারে পেশাজীবনের হাতেখড়ি করেন। ২০০৪ সালে তিনি বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতলের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন, প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ করেছে।