অটোরিকশা চাপায় শিশুর মৃত্যু

জাতীয়, 7 September 2023, 575 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চাপায় আমান উল্লাহ (৭) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

আজ ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার গুতুরা-বড়খাপন সড়কের বড়খাপন এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত আমান উল্লাহ বড়খাপন গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ২য় শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে গুতুরা থেকে একটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা বড়খাপন বাজারের দিকে যাচ্ছিল। এদিকে আমান উল্লাহ বাড়ির পাশের ওই রাস্তায় খেলাধুলা করার সময় যাত্রীবাহী অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাল উল্লাহকে চাপা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াাধীন রয়েছে।

Leave a Reply

নিরাপদ সড়কের জন্য সম্মিলিতভাবে ভূমিকা রাখতে…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেছেন, Read more

নাসিরনগরে বিলের ইজারা নিয়ে জেলেদের বিক্ষোভ…

চলারপথে রিপোর্ট : বিলের ইজারা নিয়ে নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে Read more

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালানোর সময়…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালানোর Read more

ডেঙ্গুর প্রতিরোধে বিজয়নগরে আলোচনা সভা ও…

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলায় সামাজিক সংগঠন তরী বাংলাদেশ এর Read more

মেয়াদোর্ত্তীর্ণ ওষুধ সেবনে শিশু মৃত্যুর অভিযোগে…

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে মেয়াদোর্ত্তীর্ণ ওষুধ সেবনে আয়েশা মনি (০৪) Read more

আশার উদ্যোগে এসএমএপি প্রকল্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আশা’র এসএমএপি প্রকল্পের Read more

কসবায় ৬০০ কৃষকের মাঝে সবজি বীজ…

চলারপথে রিপোর্ট : কসবায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬শ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের সাথে সিভিল সার্জনের মতবিনিময়

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী ও কিশোরীকে Read more

জেলা পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম ওরিয়েন্টেশন…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের ব্যবস্থাপনায় “শিশু, কিশোর-কিশোরী Read more

সিভিল সার্জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট…

বাংলাদেশ হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এইচপিভি টিকা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এইচপিভি টিকা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নার্স Read more

আশুগঞ্জ ২৪০০ কেজি ভারতীয় জিরাসহ ৩জন…

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৪০০ কেজি (৮০ Read more

এবারের নির্বাচন দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 9 January 2024, 413 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ জানুয়ারি জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এবারের নির্বাচন দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এবার নির্বাচন হতেই দেবে না। তাদের লক্ষ্য ছিল নির্বাচন হতে দেবে না। তাদের কিছু মুরুব্বি আছে তারাও সেই পরামর্শ দেয়। এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে যাতে নির্বাচন না হয় কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে তারা চিনে নাই। ’৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এ দেশের মানুষ এটাই প্রমাণ করেছে।

তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর থেকে যত নির্বাচন আমরা দেখেছি, তার মধ্যে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল এবং অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সড়কে গেল দাদা-নাতিসহ ৪ প্রাণ

জাতীয়, 19 October 2023, 541 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে অটোরিক্সার চালকসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত চারজনের মধ্যে দু’জনের পরিচয় জানা গেছে। বাকি দুজনের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

আজ ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসেনপুর-কিশোরগঞ্জ সড়কের আদু মাস্টার বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কামালিয়াচর গ্রামের অটোরিক্সা চালক মো. আলম মিয়া (৪২) ও হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের বীর হাজীপুর গ্রামের মিজানুর রহমান (২৪)। সম্পর্কে তারা দাদা-নাতি। বাকি দুজনের পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, কিশোরগঞ্জ থেকে আসা অটোরিক্সার সঙ্গে বিপরীতমুখী বালুবাহী একটি ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে।

এতে অটোরিক্সাটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে চালকসহ দুজনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা আহত আরো দুজনকে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঠায়। অবস্থা ‍গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক তাদের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন ওই দুজনেরও মৃত্যু হয়।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

ভোক্তা অধিকারের অভিযানে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা

জাতীয়, 23 August 2023, 605 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা প্রদান করা হয়েছে। আজ ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পৌর শহরে এ অভিযান পরিচালনা করে মোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়।

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অপরাধে লোকনাথ মেডিকেল হলকে ৩ হাজার, পণ্যের গায়ে মূল্য তালিকা না থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধে তৃষ্ণা বেকারিকে ৮ হাজার এবং সরদার স্টোরসকে ১০ হাজারসহ মোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়।

অভিযান পরিচালনার সময় শাহ মোহাম্মদ শোয়াইব মিয়া ফার্মেসি, ডিমের দোকান, মুদি দোকান, মিষ্টির দোকান, মাছ বাজার ও কাঁচা বাজারগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এ সময় তিনি সকলকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সব কিছু বিক্রি করার নির্দেশ প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শুভঙ্কর চন্দ্র দাস ও গলাচিপা থানার এসআই মো. বশির।

জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহ মোহাম্মদ শোয়াইব মিয়া বলেন, বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী

জাতীয়, 8 May 2023, 1086 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
এক উজ্জ্বল সূর্যের ব্যতিক্রমী কিরণে বিশেষভাবে মহিমান্বিত ২৫ শে বৈশাখের আজকের এই দিনটি। কেননা এদিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন।

১৮৬১ সালের এদিন কলকাতার জোড়াসাঁকোয় সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে জন্ম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। আজ তার ১৬২তম জন্মবার্ষিকী।

বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা বিপুল ও বৈচিত্র্যময়। তার মেধা-মনন-সৃজনশীলতায় সমৃদ্ধ হয়েছে কবিতা, সংগীত, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ, ভ্রমণ, শিশুতোষ রচনাসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখা। প্রায় একক প্রচেষ্টায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে তিনি আধুনিক করে তুলেছিলেন। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর-সারদা দেবী দম্পতির চতুর্দশ সন্তান রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার জয়ের মধ্য দিয়ে তার অতুলনীয় সাহিত্য সৃজনী প্রতিভায় বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত করেন।

বাঙালির নিত্যদিনের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি এখনো দীপ্যমান। তার জন্মদিনটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালির কাছেই এক আনন্দঘন উৎসবের দিন। রাজধানী ঢাকাসহ কবির স্মৃতিধন্য স্থানগুলোতে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কবিগুরুর জন্মদিনের উৎসব পালিত হয়। এ ছাড়া সারা দেশেই রবীন্দ্রজয়ন্তীর অজস্র অনুষ্ঠান আয়োজন করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় প্রিয় কবির স্মৃতির প্রতি।

রবীন্দ্রনাথের রচনায় কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে মানুষ, প্রকৃতি ও দেশপ্রেম।

কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি আমাদের জাতীয় সংগীত। ভারত ও শ্রীলংকার জাতীয় সংগীতও কবির লেখা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, গল্পকার, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ ও চিত্রশিল্পী। তবে প্রধানত তিনি কবি। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। বাঙালি সমাজে তার রচিত সংগীতের জনপ্রিয়তা এত বছর পরেও তুলনাহীনভাবে বাড়ছে। তিনি প্রায় ২ হাজার গান রচনা করেন। অধিকাংশ গানেরই সুরারোপ করেন। তার সব গান ‘গীতবিতান’ গ্রন্থে রয়েছে। জীবিতকালে তার প্রকাশিত মৌলিক কবিতাগ্রন্থ ৫২টি, উপন্যাস ১৩, ছোটগল্পের বই ৯৫, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬ এবং নাটকের বই ৩৮টি। কবির মৃতু্যর পর বিশ্বভারতী থেকে ৩৬ খন্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ১৯ খন্ডের রয়েছে ‘রবীন্দ্র চিঠিপত্র’। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত কবির আঁকা চিত্রকর্মের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। কবির প্রথম চিত্র প্রদর্শনী দক্ষিণ ফ্রান্সের শিল্পীদের উদ্যোগে ১৯২৬ সালে প্যারিসের পিগাল আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয়।

বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ১৩৪৮ সালের বাইশে শ্রাবণ (ইংরেজি-৭ আগস্ট ১৯৪১) দীর্ঘ রোগ ভোগের পর কলকাতায় পৈতৃক বাসভবনে মৃতু্যবরণ করেন। রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষরা খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবার রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁর পতিসরে।

এ ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহ্‌জাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান হবে ঢাকার ছায়ানটে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কবির চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলা একাডেমিও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

মজুদদারির বিরুদ্ধে ডিসিদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 3 March 2024, 335 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন রোজায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি মজুদদারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

আজ ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এসব নির্দেশনা আসে।

বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব থেকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন। আর তাছাড়া সামনে রোজা আসছে, এই রমজান মাসে কিছু কিছু ব্যবসায়ী থাকে যারা মজুদদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেই দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

“কারণ এটা আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের। কোথাও যেন ভোক্তাদের কোনো হয়রানি হতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে এবং এটা যে আমরা পারি, এটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। কাজেই সেদিকে নজর রাখা দরকার।”

শেখ হাসিনা বলেন, “সরবরাহের ক্ষেত্রেও কখনো শোনা যায়, কখনও সেটা নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়, একটা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। মজুদদারি করে পচিয়ে ফেলবে, কিন্তু বাজারে দেবে না। এরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

“রমজান মাস সামনে রেখেই আমি বললাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে। সেই ব্যবস্থার দিকে সকলকে নজর দিতে হবে।”

খাদ্যে ভেজাল বন্ধে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোজা এলে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়। খাদ্যে নানা রকম সমস্যা করে, এগুলোর ওপর নজর দিতে হবে।”

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসকদের সামনে ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়েও কথা বলেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে কয়েকটি সমস্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিশোর গ্যাং, যখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে, সেই সময়ে এই কিশের গ্যাং। যখন করোনাভাইরাসের অতিমারী সব থেকে বেশি, সে সময়ে এটা সামনে এসেছে। প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক যে ছেলেমেয়েরা, যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে? তারা কেন এই ধরনের গ্যাং হবে? তারা কেন এই ধরনের অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই খুন ডাকাতিতে লিপ্ত হবে? সে সমস্ত বিষয় নজরদারি করা একান্তভাবে অপরিহার্য।

“আমাদের কমিশনারবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দ, একেবারে উপজেলা পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছেৃ সেখানে ছেলেমেয়েরা কী কী কাজ করছে, জঙ্গিবাদ, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে, এই জিনিসগুলো কমবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে জেলেৃ অপরাধীদের সঙ্গে মিশে এরা আরও খারাপ হয়ে যায়। সে কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলেমেয়েরা যেন এই পথে যেতে না পারে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা যেন কোনোভাবে অস্থির না হয়, সে দিকেও নজর রাখতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছি। আমরা কিন্তু অন্য কোনো দেশের সাহায়তা নিইনি। কারণ তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলে, কী কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকেৃ সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি।

“যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং যখন ১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এসেছি, তখন সংসদে কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজেও এদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি। শুধু শান্তি চুক্তি না, সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, ১৮০০ অস্ত্রধারী, প্রকাশ্যে আমার সামনে তারা অস্ত্র সারেন্ডার করেছে। পৃথিবীর বহু দেশে শান্তি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা।“

শেখ হাসিনা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কমই ঘটে যে অস্ত্র সারেন্ডার করে। পর্বত্য চট্টগ্রামে খুব উন্নয়নের কাজ চলছে। অর্থ সামাজিক উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেগুলো আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে বর্ডার লাইন ছিল না, সেখানে কোনো বর্ডার পোস্ট ছিলো না। আমরা নতুন করে সেখানে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।

“পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এই বিষয়েও সকলকে নজর দিতে হবে। সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ অবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা যেন বিরাজমান হয়। এরা বিশেষ আইনে চলে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেও তাদের সার্বিক বিবেচনায় দৃষ্টি দিতে হবে।”

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আসতে মানুষকে সচেতন করার জন্য ডিসিদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে নজর দিতে বলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের এলাকাভিক্তিক কিছু উৎপাদিত পণ্য আছে। সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো এবং কোয়ালিটিটা দেখা, সেই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।”

প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কতটুকু কাজে আসবে, সে বিষয়টি আগে বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু প্রকল্প প্রণয়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নই নয়, সাধারণ মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে? আর্থিকভাবে দেশ কতটুকু স্বচ্ছল হবে? সে অঞ্চলের মানুষের কতটুকু আর্থসামাজিক উন্নতি হবে? সেসব বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র বড়সড় একটা টাকার অংক আর একটা প্রকল্প, সেই প্রকল্প কিন্তু আমি গ্রহণ করি না।”

গ্রামীণ অর্থনীতিকে যত বেশি শক্তিশালী করা যায়, গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেন বাড়ানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

শিশু-কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “একবার যখন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস শুরু হল, আমাদের দেশে একটামাত্র ঘটনাই ঘটেছিল, সেটা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করতে পেরেছি। কিন্তু অনেকগুলো মানুষকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।”

এরপর যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে অভিভাবকদের সচেতন করা শুরু হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাশাপাশি যুব সমাজকে ব্যস্ত রাখার জন্য বা শিশু কিশোরদের ব্যস্ত রাখার জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।”

উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগ থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে যাত্রা শুরু করব ২০২৬ সালে। এখন থেকে সেই প্রস্তুতিটা নিতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। পরে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে।

সম্মেলনের বিভিন্ন কার্য-অধিবেশন হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।