চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে “সর্বজনীন পেনশন স্কীম” সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভা আজ ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হেলেনা পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম মাহমুদুর রহমান, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির প্রমুখ।
সভায় বক্তব্য রাখেন কসবা পৌরসভার মেয়র এম.জি হাক্কানী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা জাসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার হোসেন সাঈদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা কমান্ডের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু হোরায়রাহ, শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম।
সভায় বলা হয়, ২০১৫ সালে প্রনীত জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা হয় এবং ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুষ্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ (২০২৩ সালের ৪ নং আইন) প্রনয়ন করা হয়। সর্বজনীন পেনশন স্কীমে রয়েছে “প্রবাস” “প্রগতি” “সরক্ষা” ও “সমতা” নামের ৪টি ব্যবস্থা।
“প্রবাস” স্কীমে বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক তার অভিপ্রায় অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের শর্তে নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান পূর্বক এই স্কীমে অংশ গ্রহন করতে পারবেন। প্রবাস হতে দেশে ফিরে আসার পর সম পরিমান টাকা দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করা সহ প্রয়োজনে স্কীম পরিবর্তন করতে পারবেন। পেনশন স্কীমের মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনার দেশীয় টাকায় পেনশন পাবেন।
এই আইনের অধীনে চাঁদাদাতাগন অনলাইন প্লাটফরমে রেজিষ্ট্রেশন করে যে কোন একটি পেনশন স্কীমে যুক্ত হতে পারবেন।
“প্রগতি” স্কীমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোন কর্মচারী বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক তফসিলে বর্নিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কীমে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তার কর্মচারীগনের জন্য এই স্কীমে অংশ গ্রহনের ক্ষেত্রে স্কীমের চাঁদার ৫০% কর্মী এবং বাকী ৫০% প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অংশ গ্রহণ না করলেও উক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোন কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এই স্কীমে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।
“সুরক্ষা” স্কীমে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি যেমনঃ- কৃষক, শ্রমিক, রিকসা চালক, কামার, কুমার, জেলে তাঁতিসহ সকল অনানুষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিগন নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করে এই স্কীমে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।
“সমতা” স্কীমে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক সময়ে সময়ে প্রকাশিত আয় সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র সীমার নি¤েœ বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিগন তফসিলে হারে চাঁদা দিয়ে এই স্কীমে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন এবং সমতা স্কীমে কর্তৃপক্ষ বিধি অনুসারে সমপরিমান অর্থ জমা দিবে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কীম বর্তমান সরকারের একটি অন্যতম কার্যক্রম। এটি সরকারের সর্বোত্তম কাজ। তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কীম একটি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী। যারা সরকারি চাকুরী করেন বা অন্য কোন ভাবে সরকারি ভাতা ভোগ করেন তারা এই সর্বজনীন পেনশন স্কীম করতে পারবেন না। তবে যারা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ভাতাভোগী তারা যদি নিজেদের ভাতা সরকারের কাছে সারেন্ডার করলে তাহলে ওইসব ব্যক্তি পেনশন স্কীমের অর্ন্তভুক্ত হতে পারবেন।
তিনি বলেন ১৮ বছরের অধিক বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে সর্বজনীন পেনশন স্কীমের আওতায় আনা সম্ভব হলে তারা একটি সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতাভুক্ত হবেন। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা কার্যকর হলে ধীরে ধীরে বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সুবিধাভোগীর সংখ্যা কমে আসবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম আরো বলেন, ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট মূল্যমানের চাঁদাদাতা হিসেবে সর্বজনীন পেনশন স্কীমের অংশ নিতে পারবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকগণ স্কীমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হবেন। সকল স্কীমের জন্য চাঁদার কিস্তি প্রদানকারীর পছন্দ মাফিক মাসিক-ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধের সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতগণ ইচ্ছে করলে অগ্রীম হিসেবে চাঁদার টাকা পেনশন ফান্ডে জমা দিতে পারবেন। সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অংশগ্রহণকারী চাঁদাদাতাগণ নিরবিচ্ছিন্নভাবে চাঁদা প্রদানে শর্তে ৬০ বছর পূর্তিতে আজীবন মাসিক নির্ধারিত হারে পেনশন পাবেন। স্কীমের চাঁদাদাতা স্কীমে জমাকৃত বা জমার বিপরিতে প্রাপ্ত পেনশন বাবদ অর্থ তার মৃত্যুর পর গ্রহণ বা উত্তোলনের নিমিত্ত এক বা একাধিক নমিনি মনোনয়ন করতে পারবেন। তবে চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা প্রদান করার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ নমিনীকে ফেরত দেয়া হবে। ব্যাংকে সরাসরি গিয়ে, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এবং ডেভিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে চাঁদার টাকা জমা দেয়া যাবে। প্রবাসী স্কীমে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি নাগরিকগণ ক্রেডিটকার্ড বা ডেভিট কার্ডের বৈধ চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রায় মাসিক চাঁদা জমা দিতে পারবেন।
অবহিতকরণ সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ, রাজনীতিবিদ, জেলার ৯টি উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যানগণ, ৯টি উপজেলার ইউএনওগণ, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রগণ, সাংবাদিক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী ও কিশোরীকে জরায়ু মুখ ক্যান্সারের টিকা দেয়া হবে। ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রথম ডোজের এইচভিপি টিকাদান কর্মসূচি। কিশোরী ও মাতৃমৃত্যু ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে এই কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আজ ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে সিভিল সার্জনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নোমান মিয়া বলেন, জেলার নয়টি উপজেলা ও পৌরসভার ২৪৯৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ণরত এক লাখ ৯১ হাজার ২০৬ জন পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে একটি করে ডোজ দেয়া হবে। পরবর্তীতে ৩০৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যালয় বহির্ভুত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি ১১ হাজার ২২৮ জন কিশোরীকে টিকা দেয়া হবে।
এ সময় আরো বলা হয়, টিকার জন্য অনলাইন জন্মনিবন্ধন দিয়ে নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে নিজের বিদ্যালয়ের নাম খোঁজে পাওয়া না গেলে, নিকটস্থ বিদ্যালয়ের নামে অন্তর্ভুক্ত হওয়া যাবে। টিকাকার্ড প্রিন্ট করে কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শোভন চন্দ্র সাহা।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রোনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৭ নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীরা হলেন, সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমির খন্দকার, সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সোহাগ নিয়ামুল, শাহবাজপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য আজহার উদ্দিন, কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সোহরাফ ইসলাম, একই উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক দিপু মিয়া, কুটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির আহমেদ, উপজেলার কুটি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম হাসিব, বিনাউটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য সৈকত আলী, খাড়েরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য আসিফুল আলম, নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী মোঃ মমিন সরকার, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী আমিন সুমন, আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক বাইজিদ খান, আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ সোহান, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ফুরকান আহম্মেদ, আখাউড়া পৌর ছাত্রলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি রবিন খান, কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সদস্য নাজমুল সরকার ও সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রিয়াজ উদ্দিন খান। গত বুধবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদেরকে বহিস্কার করা হয়।
সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের নেতা জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর দিন রাতে তাদের নিজ নিজ ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসগুলো দেন। কিছুক্ষণ পরই তারা এসব পোস্ট ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের ওই নেতারা আদর্শ বিরোধী কাজ করেছেন। তাই সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। স্থায়ী বহিস্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। তার মৃত্যুর পর অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কাজ করেছেন। তিনি ওই ১৭ নেতা-কর্মীর ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস আমরা স্ক্রীন শট রেখেছি। অবশ্য পরে তারা এসব পোস্ট ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ২৮ জুলাই শুক্রবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলাফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫৯৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৯৩৮ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.এসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯২জন শিক্ষার্থী। ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে।
সদর উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৪৪টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১০টি দাখিল মাদরাসা ও ১টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ৪৪টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৬২৬ জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪৫৬০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭৪জন পরীক্ষার্থী।
উপজেলার ১০টি দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৫৪২ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২৩০ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১জন।
সদর উপজেলার একমাত্র টেকনিক্যাল স্কুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে থেকে ২২৬ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.সি টেকনিক্যাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৪৮জন পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭জন শিক্ষার্থী।
ফলাফল ঘেঁটে দেখা যায় সদর উপজেলার উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ ও বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে। উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৭৮জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জনই পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০জন শিক্ষার্থী।
বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল থেকে ৫জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৫জনই পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২জন শিক্ষার্থী।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় জিপিএ-৫-এর দিক থেকে বরাবরের মতো এবারো তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে।
অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৫৩জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩৪৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৪জন শিক্ষার্থী।
সাবেরা সোবহান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৩৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩২৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৬ জন শিক্ষার্থী।
গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল থেকে ২০৪জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২০০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৭ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২১৩জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৯৪জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫জন শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৯২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২৭৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন শিক্ষার্থী।
নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৫৬জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪২৭জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৭০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৬৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০জন শিক্ষার্থী।
চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৭৪ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫জন শিক্ষার্থী।
আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১১৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১০২জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ জন শিক্ষার্থী।
অষ্টগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২১জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪জন শিক্ষার্থী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৮৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৪১জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ জন শিক্ষার্থী।
আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৬০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২১৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ জন শিক্ষার্থী।
বুধল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪৫জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১০১জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন শিক্ষার্থী।
রামকানাই হাই একাডেমি থেকে ৪৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩২জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন শিক্ষার্থী।
লায়ন ফিরোজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১১০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৬৪জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ শিক্ষার্থী।
অন্বেষা বিদ্যাপীঠ (স্কুল এন্ড কলেজ) থেকে ২২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জীবন ভট্টাচার্য বলেন, এ বছর আমাদের রেজাল্ট আশানুরুপ হয়নি। জেলায় জিপিএ-৫-এর দিক থেকে অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভালো করেছে। আগামীতে যাতে ফলাফল সন্তোষজনক হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ দেড় মাস পর স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আইনজীবীরা আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেন। বিচারপ্রার্থীরাও আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। এতে আদালতের স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
এর আগে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা আইনজীবী সমিতিতে অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভায় আইনজীবীরা আদালতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। তবে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত বর্জন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
এদিকে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা) ছুটিতে থাকায় বিচার কাজ পরিচালনা করেন ট্রাইব্যুনাল -৩ এর বিচারক। ফলে সব আদালতের কার্যক্রমেই অংশ নিচ্ছেন আইনজীবীরা।
এদিন দুপুর ১২টায় জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগারকে তার এজলাসে বসে স্বাভাবিক বিচার কাজ পরিচালনা করতে দেখা গেছে। জেলা জজের এজলাসেও আইনজীবীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি ছিল।
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ছুটিতে থাকায় ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) রবিউল আলম ট্রাইব্যুনাল -১ এর মামলাগুলো পরিচালনা করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী সামসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সোমবারের বিশেষ সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনজীবীর আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সব আদালতের কার্যক্রমেই অংশ নিয়েছেন।
নতুন মামলা রুজু নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১ জানুয়ারি থেকে আইনজীবীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করতে থাকেন।পরে জেলা ও দায়রা জজ ও নারী এবং শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর অপসারণ এবং নাজির মোমিনুল ইসলামের বিচারের দাবিতে গত ৪ জানুয়ারি থেকে আইনজীবীরা দফায় দফায় আদালত বর্জন করেন।
পরে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দুটি আদালত ছাড়া অন্য সব আদালতের কার্যক্রমে অংশ নিতে থাকেন। এদিকে বেঁধে দেওয়া সময়ে আইনজীবীদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বাত্মক আদালত বর্জন কর্মসূচির ঘোষণা দেন আইনজীবীরা।
এতে হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী চরম দুর্ভোগের শিকার হন। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে স্থানীয় এমপি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার আগামী ২১ আগস্ট সোমবার জেলা আওয়ামীলীগ আহুত “সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ” কে সফল করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে আয়োজিত এই সমাবেশকে সফল করার জন্য সদর উপজেলাধীন প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভাধীন প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মিছিলসহ জনসভায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রস্তুতি সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, অ্যাড. মাহবুবুল আলম খোকন, জায়েদুল হক, আবুল কালাম ভূঁইয়া, রফিকুল ইসলাম, অ্যাড. শাহনুর ইসলাম, অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, অ্যাড. লোকমান হোসেন, রবিউল হোসেন রুবেল, শাহদাত হোসেন শোভন, আব্দুল মালেক চৌধুরী ও আশরাফ উদ্দিন খান আশা প্রমুখ আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তৃতা করেন।