দেশের নীতি প্রণয়নের সার্বভৌমত্বকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়েছে ফ্রান্স: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 11 September 2023, 923 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স বাংলাদেশের নীতি প্রণয়নের সার্বভৌমত্বকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

banner

আজ ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। এসময় দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানানো হয়।

ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে আমার সার্বিক বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স বাংলাদেশের নীতি প্রণয়নের সার্বভৌমত্বকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার এই নতুন কৌশলগত অগ্রযাত্রা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা উভয়েই আশাবাদী।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার পাঁচ দশকের অধিক সময় চলমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি ঐতিহাসিক দিন। আমার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন, আজ তা একটি নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে চলমান সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা উন্নয়ন এবং সুশাসন এই নতুন সম্পর্কের মূল ভিত্তি। ফ্রান্স সরকার বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকারের দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিমূলক কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অভাবনীয় ও ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায় ফ্রান্স সরকারের আস্থার কথা দৃঢ়তার সঙ্গে উদ্ধৃত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাখোঁর এই সফরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতে আমরা কিছু সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ফ্রান্স আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আমাদের নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের কৌশলগত সুরক্ষা অবকাঠামো বিনির্মাণে উন্নত ও বিশেষায়িত কারিগরী সহায়তা প্রদানে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স নেতৃস্থানীয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

ভাতশালা স্টেশনে তিতাস ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে মানববন্ধন

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 20 September 2024, 724 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেল পথে চলাচলকারী তিতাস কমিউটার ট্রেন ভাতশালা স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সুলতানপুর, মাছিহাতা ও বাসুদেব ইউনিয়নের কয়েকশত গ্রামবাসী। আজ ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাতশালা রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা সহ ১৮টি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সাধারণমানুষ অংশগ্রহণ করেন।

banner

তিতাস কমিউটার যাত্রা বিরতি আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসানুজ্জামান ভূইয়া (তায়েফ) বলেন, ভাতশালা স্টেশনে ট্রেনটি গত ৮মাস আগেও যাত্রাবিরতি করতো। কিন্তু হঠাৎ করেই এই যাত্রাবিরতি বাতিল করেন তিতাস কমিউটার কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে যাত্রী প্রবাসী এবং শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা ঢাকা যাতায়তের ক্ষেত্রে আখাউড়া অথবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা। ছাত্র জনতা অবিলম্বে ট্রেন টি পুনরায় ভাতশালা স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি জানাই। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে গণসাক্ষর জমাদেবো। যদি আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের দাবি না মানা হয়, তাহলে আমরা দ্বিতীয় ধাপে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধন চলাকালে জয়নাল আবেদীন ভূইয়া বলেন, “আখাউড়া থেকে ভোরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় তিতাস কমিউটার ট্রেনটি। আবারো রাতে আখাউড়ার উদ্যোশে ফিরে আসে। যাত্রা পথে গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাতশালা স্টেশনে ট্রেনটি গত ৮মাস আগেও যাত্রাবিরতি করতো। কিন্তু হঠাৎ করেই এই যাত্রাবিরতি বাতিল করেন তিতাস কমিউটার কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে যাত্রী প্রবাসী এবং শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা ঢাকা যাতায়তের ক্ষেত্রে আখাউড়া অথবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা। ছাত্র জনতা অবিলম্বে ট্রেন টি পুনরায় ভাতশালা স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারন করেন বক্তারা।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কবির আহম্মেদ ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মহিউদ্দিন মুক্তা বলেন এটা আমাদের নাগরিক যুক্তি দাবি এই দাবি অবিলম্বে কার্যকর করা হোক।

মো: আক্কাছ মীর সমন্বয় বলেন, এখানে আগে তিতাস ট্রেন দাঁড়াতো। কিন্তু এখন অজানা কারণে ট্রেন আর দাঁড়ায় না। এতে করে আমরা তিন ইউনিয়নের মানুষ চরম ভোগান্তীতে আছি। আমরা চাই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তিতাস ট্রেন আমাদের স্টেশনে না দাড়ালে আমরা কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।

লাখ টাকা আয় চিতই পিঠা বিক্রি করে

জাতীয়, 3 December 2024, 328 Views,
ছবি সংগৃহীত

চলারপথে রিপোর্ট :
আব্দুল কাদের চিতই পিঠা বিক্রি করে মাসে আয় করেন লাখ টাকা। পিঠা বিক্রি শুরু করেন রিক্সা চালানো বাদ দিয়ে। প্রতিমাসে লাখ টাকা আয় করে হয়ে যান সফল উদ্যোক্তা। স্বামী-স্ত্রী দুইজন মিলে পিঠা বিক্রি করে তিনি এখন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। একসাথে তিনি সাতটি চুলায় পিঠা তৈরি করেন, পিঠা বানানোর কৌশল দেথে মুগ্ধ লোকজন।

banner

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের গোকুল নগর গ্রামের ওসমান গনির হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আব্দুল কাদের। রিক্সা চালিয়ে অতিকষ্টে চলতো তার সংসার। এক পিঠা বিক্রেতার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ২০১২ সালে স্ত্রী রুবি আক্তারকে সাথে নিয়ে শুরু করেন পিঠা বিক্রি । মানিকগঞ্জ বাজারের উত্তর পারে রাস্তার পাশে বসে তিনি পিঠা বিক্রি করেন। শুরুতে একটু কমহলেও এখন মাসে আয় করেন লক্ষ টাকা।

আব্দুল কাদের জানান, প্রতিদিন ৯০০-১০০০ পিঠা বিক্রি হয়। প্রতিটি পিঠা দশ টাকা দরে বিক্রি হয়। প্রতি পিঠায় কমপক্ষে লাভ হয় তিন টাকার মতো। কাদের পিঠা বিক্রি করেই নউখন্ডা এলাকায় সাড়ে পাঁচ শতক জমি ক্রয় করে নির্মাণ করেছেন বাড়ি। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক। তারা স্কুলে লেখাপড়া করে। ভেজাল মুক্ত পিঠার সাথে দেয়া হয় ধনেপাতা, সরিষাবাটা, শুটকি ভর্তাসহ বিভিন্ন ভর্তা। বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে মজাদার এই চিতই পিঠা খেতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক ভিড় করেন আব্দুল কাদেরের দোকানে। বিকেল ৩টা থেকে রাত ১২টা নাগাদ বিক্রি হয় এই পিঠা। রাতেই বিক্রি বেশি হয়। পিঠা খেতে হয় সিরিয়াল ধরে। গরম গরম পিঠা দোকানে বসে খাওয়া শেষে পরিবারের জন্যও অনেকে নিয়ে যায়। দেখা যায়, পিঠার জন্য লোকজন অপেক্ষা করছেন। কেউ আবার বসে খাচ্ছেন, কেউ বা বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই সাবার করছে পিঠা।

আব্দুল কাদের ছাড়াও আজিজুল হক, ফরমান আলীসহ জেলায় শতাধিক লোক চিতই পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কেউ কেউ ভাপা পিঠাও বিক্রি করেন। আসল খেজুরের গুড় সংকট হওয়ায় ভাপা পিঠার কদর খুব বেশী নেই। শহরের রিজার্ভ ট্যাংকের পাশে বসে আজিজুলও প্রতিদিন পাঁচশত পিঠা বিক্রি করেন বলে জানান। আজিজুলও মাসে আয় করে থাকেন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা। জেলায় শতাধিক লোক পিঠা বিক্রির সাথে জড়িত। জানা যায়, তারা প্রতিজন ৫ থেকে ৬শত পিঠা বিক্রি করে থাকেন। তাদের দেয়া তথ্য মতে জেলায় প্রতিদিন প্রায় ৫ লক্ষ টাকার চেতই পিঠা বিক্রি হয়।

বিজয়নগরে কমলার বাম্পার ফলন

জাতীয়, বিজয়নগর, 29 November 2024, 603 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
খুবই নিস্তব্ধ ও সুনসান নীরব দুলালপুর গ্রামটি। লালমাটির ওপর তৈরি পাঁকা সড়ক দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই দুই পাশে দেখা যায় হরেক রকমের বাগান। আর সেখানেই স্থানীয় আলমগীর ভূঞা গড়ে তুলেছেন চায়না থ্রি জাতের কমলার বাগান। বাগানজুড়ে ধরে আছে অনেক রঙিন কমলা। গত বছরও এ বাগানে প্রচুর কমলা ধরেছিল। দ্বিতীয়বারের মতো বাগানে কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম দুলালপুর। ২০১৯ সালে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নে চায়না জাতের কমলা বাগানের যাত্রা শুরু হয়। প্রবাসফেরত আলমগীর ভূঞা এই এলাকায় সর্বপ্রথম চায়না থ্রি জাতের কমলার বাগান চাষের উদ্যোগ নেন। পরীক্ষামূলক চাষেই তিনি লাভবান হয়েছেন। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে দুলালপুরের এই কমলা বাগান। বিভিন্ন হণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে আলমগীর ভূঞা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছিলেন। কমলা বাগানে কর্মরত মো. রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, এ বছর আলমগীর ভূঞা দুই বিঘা জমিতে চায়না থ্রি জাতের কমলার চাষ করছেন। বিশাল এই বাগানে রয়েছে ১৭৫টি গাছ। তবে বাগানে পরিচর্যা ও যত্নে দিতে হয় অক্লান্ত শ্রম ও অর্থ। দুই বিঘা জমির কমলা চাষে খরচ পড়েছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। গত বছরের তুলনায় যত্ন ভালো হওয়ায় ও স্থানীয় কৃষি অফিসারের সঠিক পরামর্শে ১৬ খেকে ১৭ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হবে বলে আশা রাসেলের। জানা যায়, আলমগীর মিয়ার চাষ দেখে অনেকেই এখন কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে বিষ্ণপুর গ্রামে এখন পাঁচজন কমলাচাষ করছেন। তারা হলেন—ছতুরপুর গ্রামের খোকন মিয়া, মহেশপুর গ্রামের নুরুজ্জামান, কালু মিয়া, ইগরতলির তৈয়বুর রহমান।
কথা হয় আরেক কমলা চাষি মহেশপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রবাস থেকে ফিরেছেন চার বছর আগে। এলাকায় ফিরেই চাষাবাদ শুরু করেন। গত মৌসুমে আলমগীর মিয়াকে দেখেই নতুন উদ্যোক্তা হয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করে তিন বিঘা জমিতে চায়না থ্রি জাতের রঙিন কমলা চাষ করেন। নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো মুনাফা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন নুরুজ্জামান।
বাগানে প্রবেশ করলেই বাশের বেড়া দিয়ে বানানো হয়েছে একটি ছোট ঘর। তার পাশেই টেবিল চেয়ার ও মাপ নির্ধারণের জন্য ডিজিটাল মেশিন নিয়ে বসে রয়েছেন বাগানের কর্মরত লোকজন। পাশেই একটি বিশাল ঝুড়িতে রাখা আছে কমলা। বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী অথবা কমলা নিতে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেই ঝুড়িতে কমলাগুলো বাছাই করে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ী অথবা দর্শনার্থী সবার কাছ থেকে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় রঙিন কমলা। তবে অনেকেই আবার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। সেই কমলাগুলো পাকাপোক্ত হওয়ার আগেই এমন দরে বিক্রি করছে। বাগানের ভেতর ঢুকতেই দেখা মিলে মনোমুগ্ধকর অপূর্ব দৃশ্য। বাগানজুড়ে ধরে আছে অনেক কমলা। প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় সবুজ পাতার ফাঁকে যেন রঙিন কমলাগুলো উঁকি দিচ্ছে।
বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল উদুদ জানান, বিজয়নগর কৃষিতে সম্ভাবনাময় একটি উপজেলা। এ উপজেলায় নানা সবজি ও ফলমূল আবাদ হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের লিচুর খ্যাতি পুরো দেশজুড়ে। কাঁঠাল, পেয়ারা, ড্রাগন, আম, আনারস, বড়ই, গ্রিন মাল্টা চাষ হচ্ছে। এরই মধ্যে চায়না কমলা চাষ শুরু হয়। বাণিজ্যিকভাবে নতুন করে কমলা চাষে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৯ বিঘা জমিতে চায়না কমলা আবাদ করেছেন পাঁচজন কৃষক। এ বছর বিষ্ণপুর ইউনিয়নের এই পাঁচ বাগানে ২৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে আশা করি সেটি ছাড়িয়ে যাবে এবং সামনে কমলার বাগান আরও বাড়বে বলে কৃষি বিভাগ মনে করেন।
এদিকে কমলা বাগানগুলো এখন ভ্রমণের স্থান হিসেবে রূপ নিয়েছে। রঙিন কমলার স্বাদ নিতে ভ্রমণপিপাসুরা আসছেন প্রতিনিয়ত। বাগান পরিদর্শন শেষে টাটকা কমলা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ি। কমলা বাগানের এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
বাগানে ঘুরতে আসা এক দম্পতি জানান, ফেসবুকের ছবি দেখে বাগানে এসেছেন নিজের চার বছরের ছেলেকে নিয়ে। কমলা বাগান দেখে অনেকটাই মুগ্ধ হয়েছেন। এই বাগানের কমলা খেতে নাকি বেশ সুস্বাদু বলে জানান তিনি।

banner

অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি, ডিলারকে জরিমানা

জাতীয়, 12 October 2023, 891 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মেহেরপুরে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রয়ের অপরাধে বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স মাসুদ আল নুরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

banner

আজ ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন মদনাডাঙ্গা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন মেহেরপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ জানান, সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকা কেজির টিএসপি সার ৩৯ টাকা, ২১ টাকা কেজির ডিএপি সার ৩০ টাকা, ২০ টাকা কেজির এমওপি সার ৩০ টাকা কেজি এবং ২৭ টাকা কেজির ইউরিয়া সার অধিক দামে বিক্রয়, সার ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার প্রদান ও সংরক্ষণ না করা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধে বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স মাসুদ আল নুরকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ও ৪৫ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এসময় জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ও নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা রিয়াজ মাহমুদ এবং মেহেরপুর পুলিশ লাইনের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে ফের টেকনাফে মিয়ানমার প্রতিনিধিদল

জাতীয়, 25 May 2023, 1440 Views,

অনলাইন ডেস্ক :

banner

প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল ফের কক্সবাজারে পৌঁছেছে। আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি দিয়ে ১৪ সদস্যর প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ আসেন। এ সময় অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) সামছু দৌজাসহ সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির মিনিস্ট্রি অব সোস্যাল অ্যাফেয়ার্সের মংডুর আঞ্চলিক পরিচালক অং মাইউ।

আরআরআরসি সামছু দৌজা বলেন, সম্ভব্য প্রত্যাবাসনকে সামনে রেখে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছেন। ঢাকায় মিয়ানমার দূতাবাসের দুজন সদস্যও প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়েছেন। তারা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবেন।

রোহিঙ্গা নেতা খিন মং বলেন, ক্যাম্পে মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা এসেছেন। অনেক রোহিঙ্গা দাবি তুলছেন, নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনের। আমরা নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন চাই।

এর আগে, ১৫ মার্চ মিয়ানমার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। সে সময় প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গাদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে মিয়ানমার ফিরে যায় দলটি। পরে ৫ মে বাংলাদেশ সরকার ও রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধিদল রাখাইন সফর করে।