কুমিল্লার যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার আসামী আখাউড়ায় আটক

আখাউড়া, জাতীয়, 13 September 2023, 1965 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দুবাই থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় হত্যা মামলার এক আসামীকে আটক করেছে আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ। আটক ব্যক্তি হলো মোহাম্মদ বাদল রিয়াজ (৪৮)।

banner

তিনি কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার আলোচিত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যার মামলার ৫নং আসামী। বাদল রিয়াজ তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে।

আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকাল ৫টার দিকে ত্রিপুরার আগরতলা ইমিগ্রেশন হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি। এসময় তার পাসপোর্ট নম্বরটি কালো তালিকাভূক্ত থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তাকে আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ মোঃ হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আটক ব্যক্তি একটি হত্যা মামলার আসামী মর্মে ইমিগ্রেশন পুলিশকে অবহিত করেছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার পাসপোর্টটি কালো তালিকাভূক্ত করা হয়। বিকালে আগরতলা হয়ে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে এলে তাকে আটক করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বশত্রুতা ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জেরে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারে য্বুলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪০) কে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বোরকা পরে একদল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে।

জামাল হোসেন তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। তিনি তিতাসের জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের জিয়ারকান্দি নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তবে গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

১০০ কোটি টাকার কোকেনসহ মালাউইর নারী গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 25 January 2024, 1613 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সলিড কোকেনের চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। আফ্রিকান দেশে মালাউইর এক নারী ৮ কেজি ৩০০ গ্রামের এই কোকেনের চালানটি বাংলাদেশে নিয়ে আসনে। বুধবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালাউইর নাগরিক নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকোকে (৩৫) কোকেনের এই চালানসহ গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা কোকেনের মূল্য ১০০ কোটি টাকা।

banner

ডিএনসি জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালাউই অথবা ইথোপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল চালানটি পাচার করার জন্য। কারণ এই পরিমাণ কোকেন চাহিদা বাংলাদেশে নেই।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ।

তিনি বলেন, কোকেন চোরাচালানের আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের দেশি ও বিদেশি সক্রিয় কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে কোকেনের একটি বৃহৎ চালান আফ্রিকা থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে আফ্রিকান একজন নাগরিকের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে এমন তথ্য পাই আমরা।

‘এর পর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়ানো হয়। এপিবিএনকে সঙ্গে নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম গঠন করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮ নম্বর টার্মিনালের বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেওয়া হয়। ফ্লাইটি থেকে নামা সব বিদেশি যাত্রীকে আমরা ফলো করি।’

তানভীর মমতাজ বলেন, এ সময় দেখা যায়, নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো (৩৫) নামে এক বিদেশি নারী বিমানবন্দরের নিচতলায় ভিসা অন এ্যারাইভাল ডেক্সে দীর্ঘক্ষণ ধরে অবস্থান করছেন। তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন লাগেজে কোকেন আছে। পরবর্তী সময়ে লাগেজের ভেতরে বিশেষভাবে রাখা ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেন জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো আফ্রিকান দেশ মালাউইর নাগরিক। তিনি প্রথমে মালাউই থেকে ইথোপিয়া যান। পরে তিনি ইথোপিয়া থেকে যান দোহাতে। পরে তিনি দোহা থেকে কাতারের এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তার বাংলাদেশ থেকে আবারও মালাইউতে যাওয়ার কথা ছিল। কোকেনের এই চালানটি বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করার কথা ছিল। পরে বাংলাদেশ থেকে কোকেনের চালানটি অন্য কোনো দেশে চলে যেত। আমাদের ধারণা তাওয়েরা সোকো কোকেনের এই চালানটি মালাইউ থেকে নয়তো ইথোপিয়া থেকে সংগ্রহ করেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সোকো জানান, ২০২৩ সালে তিনি বাংলাদেশে একবার এসেছিলেন। গার্মেন্টস ব্যবসার কথা বলে তিনি ওই বছর বাংলাদেশে আসেন। এবারও তিনি বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টসের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন। অন এ্যারাইভাল ভিসা নেওয়ার জন্য তিনি তার পরিচয় লুকিয়ে গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে বাংলাদেশে ঢুকার চেষ্টা করছিলেন। সোকো মালাইউতে পেশায় একজন নার্স। তিনি মূলত কোকেনের এই চালানের বহনকারী। বাংলাদেশে তিনি আরেক জন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই চালান পৌঁছে দিয়ে নিজ দেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল।

বাংলাদেশে সোকো কার কাছে কোকেন হস্তান্তর করতেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। তবে বাংলাদেশ অবস্থারত কয়েকজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই কোকেন যাওয়ার কথা ছিল। আমরা একজন বিদেশিকে সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমরা আশা করি চক্রটিকে ধরতে পারব।

২০২৩ সালে সোকো বাংলাদেশে কোকেনের চালান নিয়ে এসেছিলেন কিনা জানতে চাইলে তানভীর মমতাজ বলেন, তখনো তিনি গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে এসেছিলেন। তিনি আসলে কিসের জন্য এসেছিল সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করে যাচ্ছি।

কোকেনের এই আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কেউ জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোকেনের চালানের সঙ্গে দেশি ও বিদেশি চক্র জড়িত আছে। এই চক্রটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।

কোকেনের চালানটি বাংলাদেশে কোনো দেশে যাওয়ার কথা ছিল, এমন প্রশ্নে মাদকের এই কর্মকর্তা বলেন, এগুলো আমরা আমাদের তদন্ত শেষে বলতে পারব। তবে এটা বলতে চাই- কোকেনের চালানটি বাংলাদেশের জন্য ছিল না। কারণ বাংলাদেশে এই পরিমাণ কোকেন কনজিউম করার মার্কেট নেই।

এই কোকেনের আনুমানিক বাজার দর ১০০ কোটির ওপরে। দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের এইটিই বড় চালান বলে জানান ডিএনসির এই কর্মকর্তা।

মুক্ত আকাশে ডানা মেললো ২০টি বক পাখি

জাতীয়, 3 August 2023, 1140 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নাটোরের গুরুদাসপুরে শিকারীর ফাঁদ থেকে উদ্ধার হওয়া ২০টি বক পাখি মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে। আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর মাঠে পাখিগুলো উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগ। এ সময় শিকারি পালিয়ে গেলেও শিকারির হাত থেকে উদ্ধার করা ১৮টি বক পাখি ও দুইটি শিকারি বক পাখি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন, সাধারণ সম্পাদক সুবাসিষ কবিরসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্থানীয়দের নিয়ে অবমুক্ত করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মশিন্দা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সুজন, রিয়াদ, আক্তার, আরিফ,মুক্তার ও সোহাগ।

banner

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন ও সাধারণ সম্পাদক সুবাসিষ কবির জানান, ‘মশিন্দা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাহাপুর মাঠে পাখি শিকার করার সময় শিকারির ফাঁদ থেকে ২০টি বক পাখি ও ফাঁদ আটক করে খবর দেয়। ততক্ষণাৎ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের নিয়ে পাখিগুলো মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করেছি। পাখি শিকার বন্ধে পরিবেশকর্মীদের পাশাপাশি উপজেলা ছাত্রলীগ তৎপর রয়েছে। পাখিগুলোকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তবে শিকারি পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া স্থানীয়দের নিয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে। আশা করছি এমনভাবেই একসময় পাখি শিকার বন্ধ হয়ে যাবে।
গুরুদাসপুর জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। তারা আমাদের পাশাপাশি এ সকল মানবিক কার্যক্রম করে থাকে। সমাজের সকলেই যদি সচেতন হতো তাহলে পাখি শিকারিরা পাখি শিকার করতে পারতো না। আশা করছি সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা পাখি শিকার বন্ধ করতে পারবো।

বিবাহ নিবন্ধন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

জাতীয়, 5 September 2023, 1028 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাল্যবিবাহ আইন ও তাদের দায়িত্ব নিয়ে বিবাহ নিবন্ধন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জনপ্রতিনিধি, কাজী, ইমাম, পুরোহিতসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড কনসার্ন ইপজিয়া প্রকল্প এর আয়োজন করে।

banner

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়া। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য মো.ফজলুল হক সুমন, মো. হামিদুর রহমান, ইমাম-কাজী মাওলানা জাহাঙ্গীর, পুরোহিত শৈলেন চক্রবর্তী, ধর্মীয়নেতা এলবার্ট শোভন বিশ্বাস প্রমুখ।

আগুনে দগ্ধ হয়ে তিন বোনের মৃত্যু

জাতীয়, 12 July 2023, 1120 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
চার মেয়েকে ঘরে রেখে গত ২০ জুন ভোরে কাজে যান মিঠুন ও আরতি দম্পতি। ওই দিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঘরের ভেতর হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দাউ দাউ করে পুরো ঘরে আগুন ধরে যায়। আড়াই বছরের সুইটি রানী দাশের গায়ে আগুন লাগার উপক্রম হলে তাকে বাঁচাতে শরীরের ওপর মানবঢাল তৈরি করে বড় তিন বোন। এতে শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায় তাদের। সামান্য পুড়লেও রক্ষা পায় ছোট বোন। পরে আগুনে দগ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু গত ২২ জুন শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সারথি ও হ্যাপিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। ঘটনার প্রায় ২৪ দিনের ব্যবধানে এক আগুনের ঘটনায় একে একে মারা গেল তিন বোন।

banner

নিহতরা হলো‒ সারথি রানী দাশ (১৭), সাখশী রানী দাশ (১৩) ও হ্যাপি রানী দাশ (৬)। সবশেষ বুধবার রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছে হ্যাপি। এর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জুন একই ইনস্টিটিউটে সারথি ও তার আগে ২৪ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা যায় সাখশী। নিহতরা চট্টগ্রাম নগরের বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির বাসিন্দা মিঠুন ও আরতি দম্পতির মেয়ে। নিহত সারথি সপ্তম শ্রেণির, সাখশী পঞ্চম ও হ্যাপি কেজি শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

অগ্নিদগ্ধ হয়ে একে একে তিন শিশুর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী বলেন, ‘শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় তিন বোনের শারীরিক অবস্থা শুরু থেকেই গুরুতর ছিল। বেশি খারাপ হওয়ায় দুই বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমি ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কিন্তু কাউকে আর বাঁচানো গেল না। ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। সিটি করপোরেশন থেকে তাদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা এবং স্থানীয় এমপি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন।’

নিহতদের প্রতিবেশী উত্তম দাস বলেন, ঘটনার দিন সকালে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে নিজের ঘর থেকে বের হয়ে দেখি কেবল ধোঁয়া আর ধোঁয়া। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন ধরে যায়। এক পর্যায়ে কয়েকজন মিলে দগ্ধ চার বোনকে আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিই। বড় তিন বোনের কারণে তাদের ছোট মেয়ে আগুনে কম দগ্ধ হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সে কয়েক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু এ ঘটনায় একে একে তিন মেয়ের মৃত্যু হলো। এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জানা গেছে, গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। নিহত তিন বোনের শরীরের ৯০ শতাংশের ওপর আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।

জুলাই গণহত্যা মামলা : শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা

জাতীয়, 12 May 2025, 210 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় ফ্যাসিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হয়েছে। তদন্তে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যায় নির্দেশ দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে সংস্থা। আজ ১২ মে সোমবার সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন তদন্ত সংস্থার কোর্ডিনেটর, তদন্ত কর্মকর্তাসহ তিনজন।

banner

জুলাই গণহত্যায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন। একইসাথে জুলাই গণহত্যায় তার জড়িত থাকারও প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন এটি।

এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন আদালত এমন আদেশ দেন। সেদিন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এ মামলায় পরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকেও (গণঅভ্যুত্থানের সময় আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন) আসামি করা হয়।