চলারপথে রিপোর্ট :
রাজশাহীকে নবনির্মিত কারা প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয়েছে। কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি নির্মাণে ৯৪ কোটি ১২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৬ দশমিক ৬৯ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে।
আজ ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার পৌনে ১১ টার দিকে ফলক উন্মোচন ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সরকার কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করছে। রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে পরিণত করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এটি চালু হলে সেখানে আগতরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার আত্মত্যাগ দেখতে পাবে, জানতে পারবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কারা সদস্যদেরকে আধুনিক, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের কারাগারসমূহে আগত বিপথগামী লোকদের সংশোধন এবং পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, যথাযথ প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দক্ষ জনবল দরকার। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কারা প্রশিক্ষণ অধিদফতর এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নবনির্মিত রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, প্রশাসন ও একাডেমিক ভবন, এম আই ইউনিট ভবন, পুরুষ স্টাফ ও প্রশিক্ষণার্থী ব্যারাক, মহিলা স্টাফ ও প্রশিক্ষণার্থী ব্যারাক, অফিসার্স মেস, কমান্ড্যান্ট, ডেপুটি কমান্ড্যান্টের বাসভবনসহ অফিসার্স কোয়ার্টার, ১০০০ বর্গফুটের অফিসার্স কোয়ার্টার, গার্ড ভবন, মসজিদ, পাওয়ার হাউস, পাম্প হাউস, ট্রেনিং সেড, ক্যাফেটেরিয়া, পোডিয়াম, প্যারেড গ্রাউন্ড ও সুইমিং পুল আছে।
উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর উত্তর তীরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় ১৯৯৫ সালে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৫ সালের ৯ জুন কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রাজশাহীর নির্মাণ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গণপূর্ত অধিদফতর এ বছরের ৩০ জুন নির্মাণ কাজ শেষ করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজশাহী মহানগরীতে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া ১৮ লাখ টাকা বোয়ালিয়া মডেল থানায় জমা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ ১৮ আগস্ট রবিবার ভোর ৫টার দিকে মহানগরীর ভদ্রা এলাকার একটি গলি থেকে ব্যাগভর্তি টাকা পাওয়া যায়। বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় গিয়ে টাকাগুলো জমা দেন। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নগরীর বড়কুঠি ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল আলম এবং সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার ইকবাল হোসেন বোয়ালিয়া মডেল থানায় আসেন।
এ সময় উভয়ের উপস্থিতিতে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাগসহ টাকাগুলো গ্রহণ করেন। বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি এসএম মাসুদ জানান, থানায় টাকা জমা দিতে আসেন নাটোরের সিংড়ার রহমত ইকবাল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আকাশ আলীসহ কয়েকজন। তাদের বাড়ি ভদ্রা এলাকায়।
টাকা কুড়িয়ে পাওয়া শিক্ষার্থী আকাশ সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাতভর নগরীর ভদ্রা এলাকায় অবস্থান করছিলাম। রাতের ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে এলাকার একটি ছাত্রাবাসের সামনে থেকে টাকার ব্যাগটি কুড়িয়ে পাই। তিনি আরো বলেন, ব্যাগটি খুলে দেখা যায়, ভেতরে ১ হাজার টাকার নোটের ১৮টি বান্ডিল। মোট টাকার পরিমাণ ১৮ লাখ। ব্যাগে একটি সোনালি রঙের ধাতব বস্তুও পাওয়া যায়।
ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে টাকাগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ বা শবেমেরাজ আজ। লাইলাতুন বা শব অর্থ হলো-রাত আর মেরাজ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। শবেমেরাজ বা লাইলাতুল মেরাজের অর্থ দাঁড়ায়-ঊর্ধ্বগমনের রাত। ব্যাপক অর্থে রাসূল সা:- এর বায়তুল্লাহ শরিফ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে উপনীত হয়ে সেখান থেকে সপ্তাকাশ এবং আরশে আজিম পৌঁছে আল্লাহর সাথে কথা বলাকেই মেরাজ বলে। রাসূল সা:-এর ৫২ বছর বয়সে অর্থাৎ নবুয়তের ১২তম সনে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে মেরাজের আশ্চর্যতম ঘটনাটি সংঘটিত হয়।
শবেমেরাজ আল্লাহর অসীম কুদরত। মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা বনি ইসরাইলের ১ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেন-‘মহামহিম পরম পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতেরবেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যাতে আমি তাকে দেখিয়ে দেই, এর চারপাশের নিদর্শনগুলো, যা বরকতময়। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।’
হাদিস সূত্রে জানা যায়, রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতে রাসূল সা: এশার নামাজ শেষে হজরত উম্মে হানি রা:-এর ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। এ সময় হজরত জিবরাইল আ: আল্লাহ তায়ালার হুকুমে জান্নাত থেকে বোরাক নামের একটি সাওয়ারি আর অসংখ্য ফেরেশতা নিয়ে রাসূল সা:-এর কাছে হাজির হয়ে সালাম দিয়ে বললেন, হুজুর! আপনার প্রতিপালক আপনাকে স্মরণ করেছেন, এ মুহূর্তেই আপনাকে সেখানে যেতে হবে। মুহাম্মদ সা: প্রস্তুত হলে জিবরাইল আ: রাসূল সা:-কে নিয়ে কাবা শরিফের হাতিমে যান। জমজমের পানিতে অজুর পর বোরাক নামক বাহনে জেরুসালেমের বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। সেখান থেকে প্রথম আকাশে পৌঁছান মহানবী সা:। সেখানে হজরত আদম আ:-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। এভাবে সাত আকাশ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে সাক্ষাৎ করেন হজরত ঈসা আ:, হজরত ইয়াহইয়া আ:, হজরত ইদ্রিস আ:, হজরত হারুন আ:, হজরত মুসা আ: এবং হজরত ইবরাহিম আ:-এর সাথে। সপ্তম আকাশ থেকে হজরত মুহাম্মদ সা:-কে বায়তুল মামুর পরিদর্শনে নেয়া হয়, যেখানে প্রতিদিন (সকাল-সন্ধ্যায়) ৭০ হাজার ফেরেশতা তাওয়াফ করেন ও প্রস্থান করেন; তাঁরা দ্বিতীয়বার আর সেখানে আসার সুযোগ পান না। এরপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহার কাছে যান। সেখান থেকে রফরফ নামক বিশেষ বাহনে আরশে আজিম যান। এক ধনুক দূরত্ব থেকে আল্লাহর সাথে কথোপকথন হয়। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- অতঃপর তিনি নিকটবর্তী হলেন, তাদের মধ্যে ধনুকের দুই মাথার ব্যবধান রইল অথবা আরো নিকটে। তখন আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি প্রত্যাদেশ করলেন যা করার ছিল।
হাদিসের বর্ণনা মতে, শবেমেরাজে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয় মহানবী সা:-এর উম্মতদের জন্য। এছাড়া দেখেছেন অনেক নিদর্শন। দেখেছেন জান্নাতের নেয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় উঠে আসা কয়েকটি শাস্তির বিবরণ তুলে ধরা হলো- বেনামাজির শাস্তি: বড় পাথর দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হচ্ছে, আঘাতে মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে, আবার ভালো হয়ে যাচ্ছে, আবার আঘাত করা হচ্ছে। জাকাত না দেয়ার শাস্তি : তাদের সামনে ও পেছনে পাওনাদারেরা থাকবে। তারা পশুর মতো চরবে আর নোংরা আবর্জনা ময়লা ও পুঁজ এবং কাঁটাযুক্ত আঠালো বিষাক্ত ফল খাবে, জাহান্নামের উত্তপ্ত পাথর ভক্ষণ করবে। চোগলখোরের শাস্তি : তাদের পার্শ্বদেশ হতে গোশত কেটে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে; আর বলা হচ্ছে, যেভাবে তোমার ভাইয়ের গোশত খেতে, সেভাবে এটা ভক্ষণ করো।
গিবতকারীদের শাস্তি: তাদের অগ্নিময় লোহার নখর দিয়ে তারা তাদের চেহারা ও বক্ষ বিদীর্ণ করছে। এসব দেখে রাসূল সা: বললেন, হে জিবরাইল আলাইহিস সালাম! এরা কারা? তিনি (জিবরাইল) বললেন, এরা হলো সেসব লোক যারা পশ্চাতে মানুষের গোশত খেত (আড়ালে সমালোচনা করত)। সুদখোরের শাস্তি: সুদখোরদের বড় বড় পেট, যার কারণে তারা তাদের অবস্থান থেকে নড়াচড়া করতে পারছে না। তাদের সাথে রয়েছে ফেরাউন সম্প্রদায়, তাদেরকে অগ্নিতে প্রবিষ্ট করানো হচ্ছে। ব্যভিচারী নারী ও পুরুষের শাস্তি: জেনাকার বদকার নারী, যারা ব্যভিচার করেছে এবং ভ্রƒণ ও সন্তান হত্যা করেছে, তাদের পায়ে আংটা লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে; তারা আর্তচিৎকার করছে। এক সম্প্রদায় তাদের সামনে একটি উত্তম পাত্রে উপাদেয় তাজা ভুনা গোশত এবং অন্য নোংরা একটি পাত্রে পচা মাংস। তারা উত্তম পাত্রের উন্নত তাজা সুস্বাদু গোশত রেখে নোংরা পাত্রের পচা মাংস ভক্ষণ করছে। রাসূল সা: বললেন, হে জিবরাইল! আ: এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো ওই সব পুরুষ যারা স্বীয় বৈধ স্ত্রী রেখে অন্য নারীর কাছে গমন করেছে এবং ওই সব নারী যারা স্বীয় বৈধ স্বামী রেখে পরপুরুষগামিনী হয়েছে।
মেরাজ শেষে পৃথিবীতে ফিরে রাসূল সা: পুরো ঘটনা হজরত আবু বকর রা:-এর কাছে বর্ণনা করেন। তিনি নিঃসংশয়ে তা বিশ্বাস করেন। রাসূল সা: তাকে সিদ্দিক বা বিশ্বাসী খেতাব দেন। মক্কার কাফেররা রাসূলের মেরাজের ঘটনাকে অবিশ্বাস করে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন : শবেমেরাজ উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ বাদ জোহর ‘পবিত্র শবেমেরাজ’র ‘গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা: বশিরুল আলম। আলোচনা করবেন মিরপুরের জামিয়াহ মোহাম্মাদিয়া আরাবিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস মুফতি খালেদ সাইফুল্লাহ। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় নির্মীয়মাণ একটি সেতুর বিকল্প সড়কে পাথর রাখার ঘটনায় সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক খাদে পড়ে যায়। এ সময় আটকা পড়ে ঢাকা-আগরতলা সার্ভিসের বাস। এতে এই গরমে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আজ ২৪ এপ্রিল বুধবার সকালে আখাউড়া-আগরতলা সড়কের আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সড়ক থেকে পাথর সরিয়ে নেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার গাজীর বাজার এলাকা পার হয়ে একটি সেতুর নির্মাণকাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজটি করানো হচ্ছে।
বেইলি সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে বিধায় এর পাশ দিয়ে বিকল্প সড়ক করা হয়। সকাল থেকে ওই বিকল্প সড়কে নির্মাণকাজের জন্য পাথর রাখা হয়। এতে সড়কটি একেবারে সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। ছোট ছোট যান চলতেও বেশ বেগ পেতে হয়।
সকালে স্থলবন্দরগামী সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক ওই জায়গাটি পার হতে গিয়ে উল্টে খাদে পড়ে যায়। পরে একটি প্রাইভেট কার পার হতে গিয়েও এখানে আটকে যায়।
এদিকে ঢাকা-আগরতলা পথের রয়েল মৈত্রী পরিবহনের বাসও বাংলাদেশে প্রবেশ করে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার। যাত্রী দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তিনি উদ্যোগ নিয়ে পাথর সরানোর ব্যবস্থা করলে এ পথে যান চলাচল শুরু হয়।
রয়েল মৈত্রী বাসের যাত্রী প্রশান্ত গুপ্ত বলেন, ভারতের আগরতলা থেকে তারা গাড়িতে ওঠেন। আখাউড়া স্থলবন্দর আসার পর জানতে পারেন সড়কে সমস্যার কথা। এ অবস্থায় তাঁদের দুই ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করতে হয়।
ইউএনও রাবেয়া আক্তার জানান, খবর পেয়ে তিনি সেখানে ছুটে যান। মূলত সড়কে সেতু নির্মাণকাজের পাথর রাখায় সমস্যা দেখা দেয়। পাথর সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
চলারপথে রিপোট
নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রাম ও মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজবাড়ীয়া গ্রামের একমাত্র সংযোগ সেতুটি ১০ বছর ধরে ভেঙে থাকার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে। সেতুটি ভাঙার প্রায় ১০ বছর পার হলেও এখনো সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। নারী-পুরুষ, বয়স্ক মানুষ, রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দায়িত্বশীল কেউ উদ্যোগ নেয়নি সেতু মেরামতের বা নির্মাণের। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার বাসিন্দা সেতুটি পারাপার হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে দুই ইউনিয়নের সংযোগ এই সেতু ভেঙে আছে। লোকজন থেকে কিছু টাকা তুলে কাঠ দিয়ে সেতুটি প্রতিবছর সংস্কার করা হয়। কিন্তু অনেক গাড়ি ও লোকজন চলাচল করায় কাঠ দিয়ে সংস্কার করলে বেশিদিন টিকে না। ফলে গ্রামীণ জনপদের লোকজন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। এই সেতুটি বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙা ওই সেতু দিয়ে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যানগাড়িসহ যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ ছাড়াও ভারী যানবাহন চলাচল না করতে পারায় অনেকেই দুর্ভোগে পড়ছেন।
মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজা বাড়িয়া গ্রামের আব্দুল বারেক হাওলাদার বলেন, ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।
রানাপাশা ইউনিয়নের ইসালাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ বলেন, সেতুটির জন্য হাজার হাজার মানুষ বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে কেউ নতুন করে সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে না।
অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হাওলাদার ও রাজ্জাক ফকির বলেন, আমাদের প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা পারাপার করতে হয়। এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে যেতে এই সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। কিছুদিন আগে এই সেতু দিয়ে একটি টমটম পার হতে গিয়ে উল্টে যায়। আমরা গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে তারপর গাড়ি পার করি। এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম মাহাবুবুর রহমান সেন্টু বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু কিছু কাছ অসমাপ্ত রয়েছে। এই সেতুটির কারণে দুই ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নলছিটি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইকবাল কবীরের সঙ্গে সেতুর বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ঝালকাঠি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকার বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে আন্ডার হান্ড্রেড মিটার প্রকল্পের আওতায় ওই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুমোদন পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।
১১ দিনের ব্যবধানে
স্টাফ রিপোর্টার:
ইতালিতে গত ১১ দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন কারণে সাত বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বা কারও মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আবার কেউ হার্ট অ্যাটাকেও প্রাণ হারিয়েছেন। পরবাসে এমন অনাকাক্সিক্ষত ও অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে শোকের আবহ বিরাজ করছে। সাত বাংলাদেশীর মধ্যে একজনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।
জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর মো. সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবক রোমের অদূরে সিভিতা ভেক্কিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ। গত ৫ ডিসেম্বর রেদুয়ানুর রহমান নামে বাংলাদেশিকে মৃত অবস্থায় রাস্তায় পাওয়া যায়, তার বাড়ি ঢাকা। পুলিশ মৃতদেহ মর্গে পাঠিয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন। একই দিনে কাতানিয়া সিসিলিতে মো. শাহ আলম নামে এক বাংলাদেশি যুবক হার্টঅ্যাটাকে মারা যান। ৬ ডিসেম্বর মো. বারেক সারেং নামে আরেক বাংলাদেশি হার্টঅ্যাটাকে দক্ষিণ ইতালির নাপোলির হাসপাতালে মারা যায়। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে। একই দিনে রোমে হার্টঅ্যাটাকে মারা যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মো. ফয়সাল খান। ইমরান দরবারি নামে আরেক বাংলাদেশি ইতালির আনকোনা শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তার বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। বাংলাদেশি আরেক রেমিট্যান্স যোদ্ধা মোহাম্মদ আজিম গত ৭ ডিসেম্বর ইতালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন। তিনি ঢাকার বাসিন্দা ছিলেন।
চলতি মাসে কয়েক দিনের ব্যবধানে সাত বাংলাদেশির মৃত্যুতে ইতালিতে অনেক প্রবাসী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, মৃতদের বেশিরভাগ বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের অকাল মৃত্যুতে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।