চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে গ্যাসের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গ্যাস সিলিন্ডার ডিলার সহ বিভিন্ন দোকান ও হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
আজ ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন নবীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান। এতে সহযোগিতা করেন নবীনগর থানার সাব ইন্সপেক্টর আবু বক্কর সঙ্গীয় ফোর্স।
জানা যায়, দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় ৫ হাজার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশন করায় ২টি হোটেল ও ১ টি রেস্টুরেন্টকে ১৫ হাজার টাকা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে জরিমানা করা সহ গ্যাস সিলিন্ডার ডিলারের গোডাউনে বাজারদরে রশিদের মাধ্যমে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়া হেমলেট বিহীন মোটর সাইকেল চালানো সময় দুইজন মোটর সাইকেল চালককে সড়ক পরিবহন মোটরযান আইনে ৪ শত টাকা সহ সর্বমোট ২০ হাজার ৪ শত টাকা অর্থদন্ড করে।
এ বিষয়ে নবীনগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান জানান, গ্যাস সিলিন্ডার ডিলারদের কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে রশিদ বিহীন বাজারদরের অধিক মূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে, জনস্বার্থে এধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় পরিবারের লোকজনের হাতে মার খেয়ে আহত বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আজ ২৩ জুন শুক্রবার রাতে প্রতিবন্ধী হেদায়েত উল্লার বাবা মজিদ মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাকপ্রতিবন্ধী হেদায়েত উল্লাহ।
জানা যায়, কয়েক মাস আগে হেদায়েত উল্লাহর বাবা-ভাই মিলে তার স্ত্রী রাকিবা আক্তারকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্ত্রী রাকিবা আক্তারকে বাড়িতে আনার জন্য পরিবারের লোকজনের কাছে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করলেও তারা তার স্ত্রীকে আনতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৬ জুন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করে হেদায়েত উল্লাহ। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে হেদায়েত উল্লাকে মারধর করে বাবা-ভাইসহ পরিবারের লোকজন। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে নবীনগর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা অবনতি হলে পরবর্তীতে তাকে ঢাকা নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
তার স্ত্রী রাকিবা আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে পরিবারের লোকজন নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করেছে। আমার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এখন আমি কি করব? আমি এর সঠিক বিচার চাই।
নবীনগর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, রাতেই আমরা অভিযুক্ত মজিদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পরদিন প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাকিবা আক্তার বাদী হয়ে মজিদ মোল্লা, তার স্ত্রী ও ছেলের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন।
নবীনগর প্রতিনিধি :
নবীনগর উপজেলার শিবপুর রাধিকা সড়কের অধিগ্রহণকৃত ভূমির ১৯ জন মালিকদের মধ্যে ৬ কোটি ২২লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৫৮ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের সাহারপুর গ্রামে এই চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম, কুমিল্লা সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুহেনা মোহাম্মদ তারেক। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী শাহান প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছে লামিয়া নামের দেড় বছরের এক শিশু।
আজ ১৮ জুন রবিবার দুপুরে নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত লামিয়া কুড়িঘর গ্রামের মধ্য উত্তরপাড়া এলাকার সোহেল মিয়ার মেয়ে।
শিশু লামিয়ার দাদি আমেনা বেগম বলেন, দুপুরে লামিয়া বাড়ির উঠানে রাজহাঁসের সঙ্গে খেলা করছিল। এসময় বাড়ির পাশের পাটক্ষেত থেকে একটি শিয়াল উঠানে এসে লামিয়ার মাথায় ও মুখে কামড় দেয়। এসময় শিশুটির চিৎকারে পরিবারের লোকজন ছুটে এলে শিয়ালটি পালিয়ে যায়। পরে লামিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তারা জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেফার করেন।
আমেনা বেগম আরো বলেন, এ এলাকায় শিয়ালের উৎপাত বেশি। শিয়ালগুলো বাড়ির হাঁস-মুরগি খেয়ে ফেলে। মানুষসহ কেউ শিয়াল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু বিশেষজ্ঞ তৌকতুল ইসলাম চয়ন বলেন, শিয়ালের কামড়ে একটি শিশু আহত হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে চলছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সওজ‘র জায়গা দখলের মহোৎসব! আর এইসব দখল মহোৎসবের আড়ালে কোটি টাকার বাণিজ্যে মেতে উঠেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।
সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে গিয়ে এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেয়া ‘তরী বাংলাদেশ’ এর একটি ফেইসবুক পোস্ট নজরে আসলে নড়েচড়ে বসেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ঘটনাটি নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের মালাইবাংগরা বাজার এলাকায়।
কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত বাংগরা বাজার। বাজারটির পশ্চিম পাশে সওজ’র সড়ক। সড়কের পশ্চিম পাশে প্রসস্ত খাল। যা যুক্ত হয়েছে অদের খালের সাথে। এই সড়কের পাশে দোকানপাট নির্মাণের নামে সরকারী জায়গা হরিলুট চলছে দীর্ঘদিন ধরেই!
জানা যায়, সওজ’র একশ্রেণীর অসাধূ কর্চারীর যোগসাজসে এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যস্থতায় সরকারী জমি দখলের এই মহোৎসবের পাশপাশি চলে আসছে বিশাল অংকের আর্থিক বাণিজ্যও। যার পরিমাণ কোটি কোটি টাকা। রাস্তা ও খালের পাশে দখলের মহোৎসবের ফলে একদিকে যেমন সংকুচিত হয়ে খালটির অবস্থা হচ্ছে বেহলা, অন্যদিকে সড়কও হচ্ছে সংকুচিত। এতেকরে এখানে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে প্রকট আকারে। যানজট লেগে থাকার কারণে যাত্রীদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বছরের পর বছর।
এ ব্যাপারে ‘তরী বাংলাদেশ’ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ বলেন, কিছুদিন যাবৎ তরী’র কাছে বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন সংবাদ আসছিলো যে, ‘নবীনগরের সাবেক এমপি এবাদুল করিম বুলবুলের সময়ে বাংগরা বাজারের পাশে দুইশ’টির মতো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওই উচ্ছেদের বছর পাড় না হতেই আবারও সেই জায়গায় দোকানপাট ও পাকা স্থাপনা তৈরী করছে দখলদারার।’এমন সংবাদের সত্যতা যাচাই করতেই গত ২১ এপ্রিল রবিবার নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন ‘তরী বাংলাদেশ’ এর একটি প্রতিনিধিদল দখলকৃত স্থানটি পরিদর্শন করে। আহবায়ক শামীম আহমেদ এর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক কমিটি সদস্য, খালেদা মুন্নী ও সোহেল রানা ভূঁইয়া প্রমূখ। তরী বাংলাদেশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পেয়ে গত ২৩ এপ্রিল তরী’র পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবর অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য আবেদন করা হয়।
শামীম আহমেদ আরো বলেন, আমরা সরজমিন গিয়ে যা দেখলাম তা রীতিমতো বিস্মিত হওয়ার মতো! বাজারের উত্তর পাশে নেমে পায়ে হেটে বাজারের দক্ষিণ মাথায় অদের খালের উপর অবস্থিত ব্রিজটির কাছে যাই। সেখানে ব্রিজের নীচের অবস্থা দেখে আরও বিস্মত হই! পরে আমরা অদের খালটির রাজাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে অবাক হই। এখানে একটি অবৈধ ব্রিজও দেখতে পাই যার ফলে নৌরুট বন্ধেরও অভিযোগ আছে! এ বিষয়টি নিয়েও আমরা কাজ করছি।
শামীম আহমেদ বলেন, এখানে যেভাবে দখলের হরিলুট চলছে তা দেখে মনে হবেনা দেশে আইন বলতে কিছু আছে! তিনি বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন কালে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে সরকারী জায়গায় গড়েতোলা এসব দোকানের বৈধতা দিচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। বিনিময়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।
নাম প্রকাশ না করা সর্তে বেশ কয়েকজন অবৈধ দখলদার জানান, প্রতিটি দোকনের পজিশন ফিরে পেতে মাথাপিছু এক থেকে দেড় লাখ টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের!
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারজুড়ে চলা এই দখলের প্রতিযোগিতায় যাত্রীছাউনি হয়েছে সেলুন! ব্রিজের ওপরে বসেছে চায়ের দোকান। অদের খালের পাশ নদী দখল করে বসানো হয়েছে মুরগীর দোকান! যার মালিক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইয়ের বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বাংগরা বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল আলম রবি বলেন, সবাই নিজ নিজ দায়িত্বেই সড়কের পাশে দোকানঘর নির্মাণ করছে। এখানে কোনো টাকা-পয়সার লেনদেন করা হয়নি। তিনি বলেন, তারা আগে থেকেই এখানে ব্যবসা করে আসছিল। সড়কের গাইডওয়াল নির্মাণকাজের প্রয়োজনে সাবেক এমপির অনুরোধে তারা দোকান সরিয়ে নিয়েছিল।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। উচ্ছেদ অভিযানের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট পেলেই আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালাব।’
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় তরী’র একটি পোস্ট আমার নজরে আসে। এ বিষয়ে জেলাপ্রশাসক স্যারের সাথেও কথা বলেছি। আমি সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি, অবৈধ দখলকৃত জায়গাগুলো সওজ’র। সংশ্লিষ্ট দপ্তর যদি উচ্ছেদে সহযোগিতা চায় তাহলে আমরা সহযোগিতা করব।’