চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর এলাকায় চলতি আমন মৌসুমে জমে উঠেছে ধানের চারার হাট। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত থাকে হাটটি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশ জেলা থেকে কৃষকরা আসেন এই হাটে ধানের চারা কিনতে। প্রতিদিন এই বাজারে প্রায় ৮ লাখ টাকার চারা বিক্রি করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নন্দনপুরের এই ধানের চারার হাটটি বেশ পুরাতন। আমন মৌসুমে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারনায় মুখরিত থাকে এই হাটটি। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই হাটে ধানের চারা বেচা-বিক্রি হয়।
সরজমিনে দেখা গেছে, ক্রেতারা বাজারে ঘুরে ঘুরে তাদের পছন্দসই ধানের চারা কিনছেন। বিক্রেতারাও তাদের চারার প্রকারভেদে দাম চাচ্ছেন। এই হাটে ধানের চারা আটি ভেদে বিক্রি করা হয়। ছোট চারার আটি প্রকারভেদে ৭০ টাকা থেকে ১২০ ও বড় চারার আটি প্রকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করা হয়।
এবার এই হাটে বিআর-২২, খাসা, নাজির, ও বিনা ধান-৭ এর চারা বেশী বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা তাদে পছন্দসই চারা কিনে বিভিন্ন যানবাহনে করে নিয়ে যান।
সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মোঃ সফর মিয়া বলেন, তিনি এই বাজারে ধানের চারা কিনতে এসেছেন। প্রতি বছরই তিনি এই বাজার থেকে তার চাহিদা অনুযায়ী ধানের চারা কিনেন।
তিনি বলেন, বিআর-২২ জাতের ২০ আটি চারা ১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। এই চারা দিয়ে ১ কানি (৩০শতাংশ) জমি রোপন করতে পারব। তবে গত বছরের তুলনায় এই বছর চারার দাম একটু বেশী। তিনি বলেন, এই বাজারের চারার মান অনেক ভালো। চারা ভালো হলে ধানের ফলনও ভালো হয়।
ধানের চারা কিনতে আসা জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের ভলাকুট গ্রামের স্বপন মিয়া বলেন, আমন মৌসুমে এই অস্থায়ী ধানের চারার বাজারটি বেশ জমজমাট হয়। আমি গত কয়েক বছর ধরে আমার ৬ কানি জমিতে রোপন করার জন্য এই বাজার থেকেই চারা কিনি। বিআর-২২ জাতের ২৮ আটি চারা ২ হাহার ৮২০ টাকা দিয়ে কিনেছি। এই চারা দিয়ে দেড় কানি জমি রোপন করতে পারবো।
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা থেকে আসা কৃষক রমিজ মিয়া বলেন, তিনি দুই কানি জমির জন্য চারা কিনবেন। চারা বিক্রেতারা প্রকারভেদে চারার দাম চাচ্ছেন। চারার দাম আমাদের নাগালেই মধ্যেই আছে। প্রকার ভেদে ছোট চারা প্রতি আটি ৮০ টাকা থেকে ১২০ ও বড় চারার আটি ২০০-২৫০ টাকা দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। এই চারার হাটে কোন দালাল নেই। মহাসড়কের পাশে বাজারটি হওয়ায় যানবাহনও সহজে পাওয়া যায়।
হাটে চারা বিক্রি করতে আসা সদর উপজেলার হারিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার ২ কানি জমিতে ধানের বীজতলা করেছি। চারা ভালো দামেই বিক্রি করছি। ছোট চারা আটি ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এই হাটে বিআর-২২, খাসা, বিনা ধান-৭সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা বিক্রি হয়। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসহ আশপাশের জেলার কৃষকরা এই বাজারে আসেন তাদের পছন্দসই চারা কিনতে।
বাজারে চারা বিক্রি করতে আসা সুহিলপুর ইউনিয়নের মিন্টুর রঞ্জন দাস বলেন, আমন মৌসুমে অস্থায়ী এই ধানের চারার হাটটি ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারনায় মুখরিত থাকে। এই হাটে যে কেউ চারা বিক্রি করতে পারে। তিনি বলেন, দেড় কানি জমিতে বীজতলা করেছি। দেড় কানি জমি বীজতলা করতে তার ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি জমিতেই পাইকারের কাছে ৪৫ হাজার টাকায় চারা বিক্রি করেছেন।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, প্রতিদিনই নন্দনপুরের এই অস্থায়ী হাটে ধানের চারা বেচা-বিক্রি হয়। এই বাজারে মান সম্মত চারা পাওয়া যাওয়ায় আশপাশ জেলা থেকেই কৃষকরা আসেন চারা কিনতে। তিনি বলেন, উন্নত বীজতলা তৈরীর জন্য আমরা কয়েকজন কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে। এই বাজারে প্রতিদিন ৮/ ১০ লাখ টাকার চারা বিক্রি হয়। এবছর এই হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার চারা বিক্রি হবে বলে আশা করি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন ও তিনজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ ৯ জুন রবিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক আব্দুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার উত্তর পৈরতলার দাড়িয়াপুর গ্রামের কানু দাসের ছেলে কাজল দাস (৩৯), রঞ্জন দাসের ছেলে জুনু দাস (৩৮) ও অশ্বিনী দাসের ছেলে অভিরাম দাস (৩৬)।এছাড়া কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, একই গ্রামের রঞ্জন দাসের ছেলে জুয়েল দাস (৩৯), হীরালাল দাসের ছেলে স্বপন কুমার দাস (৪৪) ও হরি দাসের ছেলে অশ্বিনী দাস (৭৬)। রায় ঘোষণার সময় শুধু স্বপন কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ১৬ জুন রাতে নিখোঁজ হন শহরের উত্তর পৈরতলার সের আলী মিয়ার ছেলে মো. নাঈম। ১৮ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে স্বজনরা। পরে ২৩ জুন উত্তর পৈরতলা-কালিসীমা সড়কের সেতুর নিচ থেকে নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে নাঈমের চাচা আলী মিয়া বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ চার্জশিট দেন। কিন্তু আসামি পক্ষ নারাজি দিলে মামলাটি সিআইডিতে অধিকতর তদন্তের জন্যে স্থানান্তর করা হয়। পরে তদন্ত শেষে সিআইডি ২০১০ সালের ২৯ জুলাই ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর আদালত চার্জ গঠন করে। আদালত এ মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন ও তিনজনকে সাতবছর করে কারাদণ্ড দেন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রকিব আহাম্মদ তুরান বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।
তবে, বিবাদী পক্ষের আইনজীবী মো. রাকিব আহমেদ বলেন, মামলার জবানবন্দিতে নিজেদের না জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। কোনো সাক্ষী আসামির নাম বলতে পারেননি। এ রায়ে ন্যায় বিচার বিঘ্নিত হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর তীরে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ভাদুঘরের বান্নি (বারুণী) মেলা।
আজ ২৭ এপ্রিল) শনিবার সকালে তিতাস নদীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গা স্নানের মধ্য নিয়ে এই বান্নি শুরু হয়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ১৪ তারিখ এ বান্নি অনুষ্টিত হয়। ঠিক কত বছর আগে এই বান্নির যাত্রা শুরু হয়েছে, তার সঠিক তথ্য কেউ জানাতে পারেননি। মূলত গঙ্গাস্নান কে কেন্দ্র করে তিতাস পাড়ে বসে এ বান্নি মেলা। মেলায় অংশ নেয়া ভক্ত ভক্তপূর্ণার্থীদের পাশাপাশি দোকানিরা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। বেঁচাকেনা ভাল হওয়ায় বেশ খুশি তারা।
শনিবার সকালে ভাদুঘর তিতাস পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই নদীর তীরে এসে জড়ো হয়েছেন হাজারো ভক্তপুন্যার্থী। তারা তিথি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গঙ্গা স্নানে অংশ গ্রহন করেন। নদীর পবিত্র জলে গঙ্গা স্নানের মধ্য দিয়ে ভক্তরা নিজেদের পরিবারের পাশাপাশি দেশ জাতীর কল্যাণ কামনায় তারা বিশেষ প্রার্থনা করেছেন।
সুস্মিতা রানী দাস নামে এক ভক্ত জানান, নদীতে গঙ্গাস্নান করেছি নিজের জড়ো দেহের জানা অজানা পাপ মোচনের জন্য। গঙ্গাস্নান শেষে গঙ্গা মায়ের কাছে পরমকরুনাময় ভগবানের কাছে নিজের পরিবার ও দেশের মানুষের মঙ্গলকামনায় প্রার্থনা করেছি।
মিষ্টিদেব নামে অপর ভক্ত জানায়, গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করার পর রোগশোগ মোচন হয়। এই বিশ্বাস থেকে গঙ্গাস্নানে অংশ নিয়েছি। ভগবান যেন সবার মঙ্গল করেন।
মেলায় আসা বিজয় দাস বলেন, গঙ্গাস্নান করেছি।মেলা থেকে নারু, মন্ডা মিঠাই,তিল্লাই, খই,চিড়া কিনেছি। বাচ্চাদের জন্য খেলনা সামগ্রী ক্রয় করেছি, বেশ ভাল লেগেছে।
এ দিকে ঐতিহ্যবাহী এ গঙ্গাস্নান কে কেন্দ্র করে তিতাস নদীর তীর ঘেষো বসেছে লৌকজ মেলা (বান্নি)। মেলায় নাগরদৌলা, হরেক রকম বাহারী খাবার মুড়ি-চিড়া, মাঠা, তিল্লাই, বাতাসাসহ মাঠির তৈরী বাহারী খেলনা দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা। ভক্ত সমাগম বৃদ্ধির পাশাপাশি বেঁচাকেনা ভাল হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা।
খাবারের দোকানের পসরা নিয়ে আসা রথিন্দ্র নাথ রায় জানান, ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ ভাল। বেঁচা-কেনাও হচ্ছে বেশ। তাই তিনি বেশ খুশি।
মাটির খেলনা সামগ্রী নিয়ে আসা পবিত্র পাল বলেন, প্রতিবছর ভাদুঘরের বান্নিতে আসি। এবারো এসেছি। ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ ভাল।
মেলায় ঘুরতে আসা রাফি বলেন, বৈশাখ মাসে জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা হয়ে থাকে। তবে ভাদুঘরের এই মেলা ঐতিহ্য রয়েছে। এই মেলাকে আমরা বান্নি বলে থাকি। আগে বাবা দাদাদের সাথে আসতাম। আজ নিজের ছেলে মেয়ে কে নিয়ে এসেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আসলাম হোসেন জানান, মেলায় যে কোনো ধরনের অপতৎপড়া রোধ করার জন্যে পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দিনব্যাপী এই মেলায় অন্তত ৫’শতাধিক দোকানি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে। এর থেকে কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্যের আশাবাদ স্থানীয়দের।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্মরণ সভা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আজ ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে লেকচার থিয়েটার (এল টি) ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ।
দর্শন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোঃ নাছির উদ্দিন এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু হানিফ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উত্তরা আজমপুরে বিস্কুট পানি বিতরণ করতে যেয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
শিক্ষার্থী তাহির আহমেদের কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া স্মরণ সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রাজধানী ঢাকার সরেজমিন প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক মোঃ আবদুল কুদ্দুছ, অধ্যাপক আবদুল কাদির আলম শাহ, অধ্যাপক দিলারা আক্তার খান, সহযোগী অধ্যাপক এ.কে.এম. ওবাইদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মাইদুল ইসলাম। ছাত্র আন্দোলনকালীন ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করেন শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম চৌধুরী, মোঃ আসাদুজ্জামান, শাহ আলম পালোয়ান।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ বলেন, চাকুরী ও সমাজসহ সর্বক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিরাজ করছে তা যেন দূর হয়ে যায়। আমরা বৈষম্যহীন (মুক্ত) একটা সমাজ চাই। যেখানে সবাই স্বস্তি ও শান্তিতে থাকবে।
বিশেষ অতিথি শহীদ মুগ্ধ’র পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এতে আমি বিশ্বাস করি না। সুশিক্ষাই হলো একটা জাতির মেরুদন্ড। কারও দালালী না করে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। সুশিক্ষা গ্রহণ করে নীতি নৈতিকতা বজায় রেখে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন কলেজ মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ ইয়াহিয়া। পরে কলেজের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশ নেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
অপারেশন ডেভিল হান্টের অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী খাদিজাকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার আটকের পর তাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কিশোরী সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশন দেন। গ্রেফতারকৃত খাদিজা কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ছয়গ্রাম হাজী বাড়ির মনির হোসেনের মেয়ে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। খাদিজা তার পরিবারের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আফরিন ফাতেমা ওরফে জুঁইয়ের সহযোগী ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে তারুণ্য উৎসব উপলক্ষ্যে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বিকেল তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোনের শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী খাদিজাকে আটক করে। পরে তাকে সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সদর থানা পুলিশ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার এক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখান।
১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মীর মোহাম্মদ এমদাদুল হক তাকে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব চলছিল। সেখানে খাদিজা আক্তার গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নজরে পড়েন। পরে খাদিজাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা। খাদিজা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাহমিনা আক্তার বলেছেন, আমাদের জাতীয় খেলা কাবাডি। কাবাডি খেলাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বেশি বেশি প্রতিযোগিতা করতে হবে।
তিনি বলেন, খেলাধূলা মানুষকে প্রাণবন্ত করে এবং মানসিক বিকাশের সহায়তা করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্রীড়াঙ্গকে সমৃদ্ধি করতে হলে খেলাধূলায় প্রতিযোগি হতে হবে।
আজ ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের পৃষপোষ্টকতায় টেংকেরপাড় লোকনাথ দিঘীর ময়দানে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পর্যায়ে আন্ত: উপজেলা যুব কাবাডি অনুর্ধ্ব-১৮ (বালক বালিকা) কাবাডি প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূইয়া, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আমির আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মহিম চৌধুরী, ক্রীড়াবিদ বাকের মোশাররফ, মোঃ আজিম, আতাউর রহমান ইয়াকুব, মোঃ আজাদ, সাংবাদিক আবুল হাসনা রাফি প্রমুখ। কাবাডি প্রতিযোগিতায় জেলার ৯টি উপজেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ ৭টি বালক এবং ৩ বালিকা দল অংশ গ্রহণ করেন। বালিকাদের মধ্যে সরাইলকে হারিয়ে সদর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং বালকদের মধ্যে সদর উপজেলাকে হারিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। খেলায় ক্রীড়ামোদি দর্শক উপস্থিতি ছিলেন ব্যাপক।