চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভা আজ ২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়।
হাসপাতালের শহীদ ডাঃ মিলন হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পৌর সভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরামউল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন, জেলা বিএম’র সভাপতি ডাঃ এফ. জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডাঃ আবু সাঈদ,উপ-পরিচালক, পরিবার পরিবল্পনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, উপ-পরিচালক, সমাজসেবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, বিশিষ্ট নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, পৌর কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াছমিন, বিশিষ্ট নারী নেত্রী নন্দিতা গুহ প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান।
সভায় হাসপাতালের আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ১০ শয্যার কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু, হাসপাতাল ভবন থেকে টিকেট কাউন্টার ভবনের বাইরে নেয়া, রোগীদেরকে অনলাইনে টিকেট দেয়ার বিষয়ে, হাসপাতালের নিজস্ব ওয়েব পোর্টালটি নিয়মিত আপগ্রেড করা (চিকিৎসকদের নাম ও প্রতিদিন হাসপাতালে থাকা রোগীদের সংখ্যাসহ), হাসপাতালের সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্য বাগান করা, হাসপাতাল চত্বরে সোনালী ব্যাংকের বুথ স্থাপন, একটি মেডিকেল বর্জ্য শোধানাগার স্থাপন, হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার ক্যামিকেল রি-এজেন্ট, এক্সরে ফিল্ম, হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যা উন্নীত করন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন, হাসপাতালের কোয়ার্টারে বসবাসরত মোঃ আমিনুল ইসলামের বাসা বরাদ্ধ বাতিলের আদেশ বাস্তবায়ন ও হাসপাতালের মর্গের (ডোম) অনিয়ম বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে র. আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, হাসপাতালে সেবা নিতে এসে কোন রোগী যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য ও মেডিকেল সার্টিফিকেট দেয়ার বিষয়ে চিকিৎসকদের আরো সর্তক হওয়ার আহবান জানান। সভায় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকগনসহ কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসায় কোন রোগীর মৃত্যু হলে সেটি “ভুল চিকিৎসা নয়, এটি দুর্ঘটনা এবং এটি অপরাধ হিসেবে গন্য করা যাবেনা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা করেছেন জেলা বিএমএর নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ এফ. জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ।
লিখিত বক্তব্যে ডাঃ আবু সাঈদ বলেন, চিকিৎসকরা রোগীদের সম্মতি নিয়ে অস্ত্রোপচার করে থাকেন। দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ ও ৮৯ অনুসারে চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক এক্ষেত্রে রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার পরও রোগীর মৃত্যু হলে সেটা কোনোভাবেই হত্যা মামলা হতে পারে না। তিনি বলেন, এই আইনে চিকিৎসকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সততার সাথে নিঃসংকোচ চিত্তে কর্তব্য পালন করার নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে এবং হত্যা মামলার মতো ফৌজদারি মামলা হতে ‘দায়মুক্তি’ প্রদান করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ ও ৮৯ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ অনুসারে ভাল উদ্দেশ্যে বা রোগ উপশমের উদ্দেশ্যে সম্মতিসহ কোনো রোগীর অস্ত্রোপচার করার সময় বা পরবর্তীতে যদি ‘মৃত্যু’ ঘটে তবে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। আর দণ্ডবিধির ধারা ৮৯ অনুসারে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা মানসিক প্রতিবন্ধী কোনো ব্যক্তি সম্মতি দিতে অসমর্থ হলে এবং তাকে সুস্থ করার উদ্দেশ্যে কোনো অস্ত্রোপচার করা হলে এবং সেটি করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটলে তা কোনো অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
তিনি বলেন, তারপরও সম্প্রতি চিকিৎসা দুর্ঘটনায় কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে চিকিৎসকদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। অথচ চিকিৎসা সঠিক নাকি ভুল সেই মতামত দেয়ার একমাত্র এখতিয়ার বিএমডিসির।
তিনি বলেন, তদন্তে চিকিৎসকের ভুল বা অপরাধ প্রমাণিত হলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে বিচার হবে। চিকিৎসা দুর্ঘটনা কোনো অপরাধ নয়। তবে রোগীর স্বজনরা জানে না চিকিৎসা নিয়ে কোনো সন্দেহ হলে বিচারের জন্য বিএমডিসির কাছে অভিযোগ দায়ের করতে হয়। এই সুযোগে কতিপয় অতিউৎসাহী মিডিয়া জনগণকে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেয়। বিচার প্রক্রিয়া যেমন আদালতে বিচারকের কাছে গোপনীয়, তেমনি চিকিৎসকের কার্যক্রম ও তার নিজের পেশাগত গোপনীয়তা বিএমডিসির আইন দ্বারা নির্ধারিত এবং সংরক্ষিত। রোগীর শরীর অস্ত্রোপচারে আকস্মাৎ দুর্ঘটনা ঘটে যায় যেমন জ্ঞান না ফেরা, হার্ট ব্লক হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণ বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ জখম হওয়া যা চিকিৎসকের কাছে অনাকাঙ্খিত। এ কারণেই বাংলাদেশ পেনালকোড-এ সার্জনকে দায়মুক্তি দেয়া আছে।
তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ধারা ৩০৪, ৩০৪ এর উপধারা ক ও খ প্রয়োগ করে যদি কোনো চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করতে হয়, সেক্ষেত্রে আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের মতামত লাগবে। এবং উপযুক্ত মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক তদন্তে দোষী সাব্যস্থ হলেই কেবল এই ধারাটি প্রযোজ্য হবে। রোগীর মৃত্যুকে হত্যাকান্ড হিসেবে নথিভূক্ত করা অনাকাঙ্খিত। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি চিকিৎসক আবু সাঈদের অনুরোধ, তারা যেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করেন এবং সঠিক কারণ অনুসন্ধ্যানে বিএমডিসি, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনকে সাহায্য করেন। সেই সাথে চিকিৎসায় কোনো রোগী মারা গেলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন প্রকাশের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্বাবধায়ক ডাঃ মো. শওকত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রানা নূর সামস্, ডাঃ ফয়েজুর রহমান ফয়েজ, ডাঃ আজহারুর রহমান তুহিন, খোকন দেবনাথ, মাহফিদা আলম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হন চিকিৎসক নেতারা। কিভাবে মিডিয়া ক্রাইম হলো? একজন চিকিৎসক অধিক হাসপাতালে কিভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং তার মান কতুটুকু? বেসরকারি হাসপাতালে রাতে কেন কোনো চিকিৎসক থাকেন না? সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের দূর্ব্যবহারসহ সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক।
মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনাড়ম্বর আয়োজনে ৩ ফুট উচ্চতার যুবকের সঙ্গে আড়াই ফুট উচ্চতার তরুণীর বিয়ে দিয়েছে দুই পরিবার।
১০ নভেম্বর শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়ন উলচাপাড়া গ্রামের মন মিয়ার ছেলে মো. ফরহাদ মিয়ার সঙ্গ বিয়ে হয় পূর্ব তালশহর ইউনিয়ন পুথাই গ্রামের আলী আকবর এর মেয়ে মোছা. আরিফা আক্তারের। দুজনেরই শারীরিক উচ্চতা অস্বাভাবিক।
বরের মামা জুয়েল মিয়া বলেন, ফরহাদের বয়স ২৭ বছর। কিন্তু তার উচ্চতা মাত্র তিন ফুট। বিয়ের বয়স হওয়ার পর থেকে কনে খুঁজছিলাম। দীর্ঘদিন কনে খুঁজে না পেয়ে, অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পুথাই গ্রামে একটি মেয়ে খুঁজে পাই। মেয়েটির উচ্চতা আড়াই ফুট। আমরা দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে তাদের বিয়ের আয়োজন করি। বিয়েতে ৪০ বরযাত্রী গিয়েছি। দেড় লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে হয়।
বরের প্রতিবেশী শেখ তারেক আহমেদ বলেন, বর ফরহাদের জন্ম দরিদ্র পরিবারে। সে রুপার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তার উচ্চতা তিন ফুট হলেও তাকে পরিবারের সদস্যসহ গ্রামবাসী খুব আদর করেন। পরিবারের সদস্যদের সার্বিক সহযোগিতায় তার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কনের উচ্চতাও আড়াই ফুট। বিয়ের পর বর-কনেকে দেখতে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন ভিড় করছেন। তাদের বিয়ের আয়োজনে আমরা খুব খুশি।
বর মো. ফরহাদ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, দু’জনের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। বিয়ে করতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে। দেশবাসীর কাছে আমরা দোয়া চাই। আমরা যেন সুন্দরভাবে সংসার করতে পারি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সতিন মোচর, দুধপুলি, মিষ্টি কুমড়া, চিড়াপুলি, শুটকী পুলি, দুধ চিতই, ঝাল চিতই, হান্দেশ নামক নকশী, মাংসপুলি, পোয়া, মালপোয়া, ঝালভর্তা, ঝিনুক, চকলেট পাটিসাপটা, পাটিসাপটা, ঝুরি, পাপর, ঝিরমিল, শামুক, ঝাল ও মিষ্টি দুই ধরণের ভাপা, মাছ পিঠা, ফুল পিঠা, ভাপা, মেরা, গোল পিঠা, বউ সুন্দরী, আলু পিঠা প্রভৃতি বাহারী নামের অর্ধ শতাধিক জাতের মুখরোচক লোভনীয় পিঠার সমাহার নিয়ে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী পূর্বাঞ্চল সীমান্তের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ইন্ডাষ্ট্রিয়েল স্কুল চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় চলছে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব-১৪৩০ এবং লোক সংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবেশনা।
স্থানীয় সরকারি মহিলা কলেজ, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ, নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী মহিলা কলেজ, উপজেলা মহিলা উন্নয়ন ফোরাম, সরকারি শিশু পরিবার, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন, চাপুইর মহিলা উন্নয়ণ সমিতি, দরিদ্র মহিলা উন্নয়ন সংস্থা, আনোয়ারা পিঠাঘর সহ ১৭টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত ষ্টল প্রতিদিন বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত পিঠা প্রদর্শণ এবং বিক্রয় করছে। গত বুধবার বিকেলে প্রধান অতিথি নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান গেটে ফিতা কেটে উৎসব উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষে প্রতিদিন ভেন্যু এলাকায় বিপুল সংখ্যক পিঠাপ্রেমী শিশু শিক্ষার্থী, নারী, পুরুষের সমাগম ঘটছে। এই উৎসব সমগ্র জেলা সদরে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম মাহমুদুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ছড়াকার কবি জয়দুল হোসেন।
উপস্থাপনা করেন প্রভাষক ওসমান গণি সজিব।
বক্তারা বলেন, শীতকালে ঘরে ঘরে বাঙালী লোক সংস্কৃতির ঐতিহ্য পিঠা উৎসব আমরা ভুলতে বসেছি। ছোট বেলায় মায়ের বকুনি খেয়েও পিঠা না খাওয়া পর্যন্ত পড়তে বসতাম না। পিঠা উৎসব শুধু হিন্দুর নয়, শুধু মুসলমানের নয়। এটা বাঙালী জাতির লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য। এই পিঠা উৎসব আমাদের জাতির হারানো সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনবে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরী করতে আবারো মনোযোগী হবে। ঘরে ঘরে মা চাচীদের শীতকালীন পিঠা আয়োজন আমাদের অতীত স্মৃতির একটা অংশ। পিঠা উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব। এটাকে আমরা ধরে রাখতে চাই, হারাতে দিব না।
প্রতিদিন বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৭টি ষ্টলে বাহারী নাম ও সৌন্দর্যের পিঠা বিক্রির পাশাপাশি মঞ্চে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনায় লোকজ অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিবেশ করে সবাইকে মুগ্ধ করছেন। আগামী কাল শুক্রবার রাতে তিনদিন ব্যাপী পিঠা উৎসবের সমাপনী ঘটবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কেটে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি সাচ্চু মিয়াকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯ সদস্যরা।
গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিকে জেলার আশুগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেফতার সাচ্চু মিয়া আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সামার ছেলে।
আজ ১ অক্টোবর রবিবার দুপুরে র্যাব-৯ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ আগস্ট রাত সোয়া ৯টার দিকে তালশহর নতুন বাজার জিল্লুর রহমান ব্রিজে যুবলীগ নেতা জনি মিয়ার (৩৫) ওপর হামলা চালায় সাচ্চু মিয়া ও তার সহযোগীরা। এসময় তারা জনি মিয়ার দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে কুপিয়ে আহত করে। এসময় জনির চাচাত ভাই আউয়াল মিয়ার ওপর হামলা চালায় তারা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় নিতে বলেন। পথে জনি মিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোকসেন মিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
মামলার পর র্যাব-৯ চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
পরবর্তীতে শনিবার বিকেলে প্রধান আসামি সাচ্চু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরআগে এ মামলায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন তালশহর গ্রামের আজহার শেখের ছেলে আজিম শেখ (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (৩২)।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাহিদ আহমেদ বলেন, পায়ের রগ কেটে হত্যার মামলার প্রধান আসামিকে র্যাব গ্রেফতার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা তাকে আদালতে পাঠিয়েছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোটর সাইকেলের লাইসেন্স না থাকা ও হেলমেট না পড়ায় ১৭ মোটর আরোহীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় ৯জন মোটর সাইকেল আরোহীকে আরোহীকে ১৭ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা ও বিজয়নগরে ৮জন মোটর সাইকেল আরোহীকে ১৩ হাজার ১০০টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়।
আজ ৫ জুলাই বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ ও সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন শহরের থানা ব্রীজের সামনে অভিযান পরিচালনা করে ৯ মোটর সাইকেল আরোহীকে ১৭ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা করেন।
অপর দিকে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা-আখাউড়া সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৮ মোটর সাইকেল আরোহীকে ১৩ হাজার ১০০টাকা জরিমানা করেন।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, সবার আগে নিজের নিরাপত্তা। হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেল চালানো অপরাধ ও ঝুঁকিপূর্ন। রাস্তায় চলাচলের সময় বেশিরভাগ সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হেলমেট না থাকায় মাথায় আঘাত পায়। এই দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তার জন্য হেলমেটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি বলেন, দুপুরে থানা ব্রীজের পাশে অভিযান পরিচালনা করে হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেল চালানো ও মোটর সাইকেলের লাইসেন্স না থাকায় সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ধারায় ৯ মামলায় ১৭ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অপর দিকে বিজয়নগর উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ জানান, সড়কে নিরাপত্তা আনয়নের লক্ষ্যে, দুর্ঘটনা এড়াতে এবং মোটর সাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ আইনের ধারা মতে হেলমেট ও লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল চালানোর অপরাধে মঙ্গলবার ৮জনকে ১৩ হাজার ১০০টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়।