চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়র ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ ২৬ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। সকাল সোয়া ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি প্রফেসর ড. মো. ইব্রাহিম।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সমিতির সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ হামজা মাহমুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ. এস.এম. শফিকুল্লাহ, প্রফেসর খালেদ খান, আহসান শাহরিয়ার তোফা, মোঃ সাইদুল ইসলাম খান, শায়েলা ইয়াসমিন, মোঃ মোসলেম উদ্দিন, শামসুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত সরকারি কলেজ সমূহে উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা স্তরে প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা মাত্র ১৬ হাজার। গুরুত্বপূর্ণ এই খাতে ১২ হাজার ৪৪৪ টি পদ সৃজনের প্রস্তাব আটকে আছে ৯ বছর ধরে।
উপরন্ত আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভুত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চুড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুষ্পষ্টই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। আমরা এ সকল কর্মকান্ডকে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামিল মনে করি। শিক্ষা ক্যাডারকে অন্ধকারে রেখে এই বিধি করার এখতিয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। আমরা শিক্ষা ক্যাডার বিরোধী এসকল কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে এই বিধি বাতিলের দাবি করি।
আমাদের দাবি না মানলে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ২ অক্টোবর সারাদেশে একদিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে। এতে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১০, ১১, ১২ অক্টোবর টানা তিনদিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, প্রশাসনসহ অন্যান্য সেক্টরের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অফিস রয়েছে। কিন্তু জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনের জন্য শক্তিশালী শিক্ষা প্রশাসন গড়ে উঠেনি। দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত জেলা ও উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৬০২টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুজা। যা গত বছরের চেয়ে ১১টি বেশী।
এবছর জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৪৮টি পুজা হবে নাসিরনগরে। এছাড়া নবীনগরে ১৩৩টি, সদর উপজেলায় ৭৯টি, বিজয়নগরে ৫৭টি, কসবায় ৫২টি, সরাইলে ৪৮টি, বাঞ্ছারামপুরে ৪৬টি, আখাউড়ায় ২৩টি ও আশুগঞ্জে ১৬টি মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬০২টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ৩৯৪টিকে সাধারণ ও ২০৮টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নাসিরনগরের ১৪৮টি মণ্ডপকেই সাধারনের তালিকায় রাখা হয়। আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে জেলা পুলিশের অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। মূলত ‘ঝুঁকিপূর্ণগুলোকে’ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরে নেয় পুলিশ।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ি, নাসিরনগরের পাশাপাশি কসবা উপজেলায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপ নেই। সদর উপজেলার ৫৭টি, আশুগঞ্জের ১৬টি, সরাইলের ৩২, নবীনগরের ৪৬টি, বাঞ্ছারামপুরের ১২টি, আখাউড়ার ২০টি, বিজয়নগরের ২৫টি মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়।
পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুুষ্ঠিত প্রস্ততি সভায় বক্তব্য রাখেন, সোমেশ রঞ্জন রায়, নির্মল চৌধুরী, সঞ্জীব সাহা বাপ্পী, নিতীশ চন্দ্র রায়, মন্টু রঞ্জন সাহা, সঞ্জয় সাহা, কার্তিক চৌধুরী, সঞ্জয় চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় নাসিরনগর পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বলেন, তাঁর এলাকার পুজা নিয়ে তিনি শঙ্কায় প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেনন, ২০১৬ সালের ৩০ মে নাসিরনগরে যে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছিল সেসব মামলার আসামীরা এখন জামিন পেয়ে ঘুরাফেরা করছেন। যে কারণে তাদের এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে পুজা করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারার শঙ্কায় সেখানে তিনি বাড়তি নজরদারির আবেদন জানান।
মত বিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সার্বিক প্রেক্ষপটে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে গুজবে কান দেওয়া যাবে না। কিছু একটা ঘটলে আমাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।’ যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ জানাতে তিনি আহবান জানান।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপুজার প্রস্তুতি মূলক সভায় বলা হয়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) হেলেনা পারীভনের সঞ্চানলায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরমান আরিফ, ৬০ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জোবায়ের বিন জাবের, সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ, সাবেক অধ্যক্ষ বিভ‚তিভূষন দেবনাথ, সাবেক অধ্যক্ষ অমৃত লাল সাহা, সোমেশ রঞ্জন রায়, সঞ্জিব সাহা বাপ্পী, নিতীশ রঞ্জন রায়, বিশ্বজিৎ পাল বাবু, সাধন চন্দ্র চৌধুরী, কার্তিক চৌধুরী প্রমুখ। সভায় বলা হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুন্দরভাবে পুজা উদযাপনে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।
স্টাফ রিপোর্টার : আজ ২১ জানুয়ারি শনিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পশ্চিম মেড্ডা বড় বাড়ি এলাকার সবুজ আলীর বাসা থেকে শিরিনা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি সবুজ আলীর স্ত্রী। ভাড়াটিয়া আমিনকে (২৬) পিটুনির পর পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।
শিরিনার ছেলে মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের বসবাস করা একটি বাড়ি ছাড়াও পাশে আরো একটি বাড়ি ভাড়া দেওয়া আছে। সেখানে তিনটি ঘরে আলাদা ভাড়াটিয়ারা বসবাস করেন। বেলা ১১টার দিকে মা সে বাসার ভাড়া তুলতে যান। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও মাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিকেলে ভাড়াটিয়া আমিন মিয়ার ঘরে খুঁজে খাটের নিচে দেখি মা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এনামুল হক বলেন, শিরিনা বেগম হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন। তার মরদেহ মর্গে রাখা আছে।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। এলাকাবাসীর পিটুনিতে আহত আমিনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিহত শিরিনের গলায় দাগ আছে। ধারণা করা হচ্ছে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
আজ ২৪ জুন শনিবার বেলা ১১টায় কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন।
কসবা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক ভোরের কাগজের কসবা উপজেলা প্রতিনিধি খ.ম. হারুনুর রশীদ ঢালীর সভাপতিত্বে ও কসবা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল-মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন কসবা পৌরসভার মেয়র এম.জি হাক্কানী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিমুল এহসান খান, সংবর্ধিত অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সঞ্জিব সরকার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আরজু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সংবর্ধিত অতিথি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সময় টিভির ব্যুরো চীফ উজ্জ্বল কুমার চক্রবর্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, কসবা বিআরডিবির চেয়ারম্যান জহিরুল হক খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দিন বিপু, কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বেলাল, দপ্তর সম্পাদক শাহজাহান সাজু, আইসিটি সম্পাদক মোজাম্মেল চৌধুরী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে গ্রামবাসীর কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফরিন আহমেদ হ্যাপী এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উপজেলার কালিসীমা গ্রামের বাসিন্দা কাইয়ূম মিয়া ও একই গ্রামের এলাই মিয়া।
ব্রাহ্মণবাাড়িয়া জেলা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আসামিরা চার মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আব্দুল কাইয়ূম ও এলাই মিয়া নিজেদের বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বৈধ ঠিকাদার বলে ভুয়া পরিচয় দিয়ে গ্রামবাসীকে প্রলুব্ধ করেন। বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে কালিসীমা গ্রামের মানুষের কাছ মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। তারা প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এভাবে গ্রামের মোট ৫৮টি পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখেরও বেশি টাকা নেন।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, এক পর্যায়ে আসামিরা ভুয়া গ্যাস বিলের বই ছাপিয়ে এতে ভুতুড়ে হিসাব নম্বর বসিয়ে দুই মাসের অগ্রিম বিল পরিশোধের কথা বলে গ্রামবাসীর কাছ থেকে আরও টাকা নেন। পরে গ্রামের কয়েকজন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আসামিরা তাদের যে বিলের বই ও হিসাব নম্বর দিয়েছেন সেগুলো ভুয়া।
এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ হলে গ্রাম্য সালিশ বসানো হয়। সালিশে অভিযুক্তরা গ্যাস সংযোগ দিতে অপরাগতা স্বীকার করেন এবং সবাইকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপণ করায় ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করেন।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহ তদন্তে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিওর ইসলাম বিরোধী বক্তব্যে প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আজ ২৪ নভেম্বর শুক্রবার বাদ জুম্মা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা ও ওলামা সমন্বয় পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে ওলামা সমন্বয় পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ক্বারী আনাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা ইলিয়াছ চৌধুরী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ওলামা সমন্বয় পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজী আবুল কালাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলার মুফতি মাকবুল হোসেন, মনিরুজ্জামান শিপু, কাজী খায়রুল ইসলাম, আবদুল আজিজ অনিক। সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোমিন মিয়া প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২১ নভেম্বর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, “মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন। এটা মেডিসিন হিসাবে খায়।”
ফেসবুক লাইভে সজিবুল হুদা ভূঁইয়া নামে একজন যুবক ফিরোজুর রহমান ওলিকে প্রশ্ন করেন “আপনি সংসদ সদস্য হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মদের বার খুলবেন কি?”
জবাবে ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেন, “সংসদ সদস্যরাই মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। এ দেশে বিখ্যাত মদের কারখানা বানায়ে রাখছে। আগে তো রেলস্টেশনে মদের দোকান ছিল। তুমি যদি আবদার করো তাইলে দেব। তবে তোমরা এই মদ খাইতে পারবা না। সেই শক্তি তোমাদের হইছে না। মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন। ভালো কথা বলো। এটা মেডিসিন হিসাবে খায়। তোমার যদি ইয়ে থাকে, ডাক্তার বললে ব্যবস্থা করে দেব। আমরা তো ঘুষ খাইনা। আমরা তো মানুষের মনে আঘাত দেই না। আমরা শুনি, ঘুষের টাকা কোথায় ধরা খাইছে। সরকারকে জিগাইবা কেন দেয়। তোমাদের সরকারই দিতাছে।’
তিনি বলেন, আমার ব্যবসা পবিত্র ব্যবসা। আমি হালাল ব্যবসা করি। হালাল না হলে সরকার ব্যবসা করে কেন। হালাল না হলে সরকারই বেহালাল হয়া যায়। আমি ব্যাংকের ব্যবসা করি। মদের ব্যবসার জন্য যদি ১০টা বেত মারে। তাহলে ব্যাংকের ব্যবসার জন্য একশটা বেত মারবে। ইসলাম কী কইছে না কইছে সরকার বুঝবে। ভালো কথা বলো।’
বক্তারা বলেন, ফিরোজুর রহমান ওলিও মদকে হালাল বলে পবিত্র কোরআন অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত করেছেন এবং যুব সমাজকে মাদকদ্রব্য সেবনে উৎসাহিত করেছেন।
বক্তারা বলেন, ফিরোজুর রহমান ওলিও একজন বিতর্কিত ব্যক্তি ও মদ ব্যবসায়ী। তিনি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদকের ব্যবসার প্রসার ঘটবে।
বক্তারা ফিরোজুর রহমান ওলিও বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পবিত্র কোরআন অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত করায় ফিরোজুর রহমান ওলিওকে মুরতাদ ঘোষনা ও তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এ ব্যাপারে ফিরোজুর রহমান ওলিওর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি হালাল ব্যবসা করি কিন্তু মদকে হালাল বলি নাই। উল্লেখ্য, ফিরোজুর রহমান ওলিওর রাজধানী ঢাকায় হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল, গোল্ডেন ড্রাগন ও পিকক নামে তিনটি মদের বার আছে বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলোচনা আছে।