চলারপথে রিপোর্ট :
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধস্থল, গণহত্যা, বধ্যভূমি, শহীদ সমাধি এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ফলক নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ।
এরই অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধস্থল, শহীদ সমাধি, গণকবর ও বধ্যভ‚মি সংরক্ষণসহ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ এবং বিভিন্ন সড়ক দ্বীপে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচত্বর স্থাপন করা হবে। তিনবছর মেয়াদি এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে পাঁচ কোটি টাকা।
আজ ১ অক্টোবর রবিবার দুপুরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার এসব প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সাংবাদিক সমাজের পরামর্শ সহযোগীতা কামনা করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব ও দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি হিসেবে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরসহ বিজয়নগর, আখাউড়া ও কসবা। এসব এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘ ৯ মাস অনেক গুলো ঐতিহাসিকযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে।
প্রজন্ম প্রজন্মান্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে এসব স্থানে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হবে। তিন বছর মেয়াদী এসব পরিকল্পনায় ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এ জন্য প্রকল্পের একটি তালিকা করা হয়েছে। জেলা পরিষদের তৈরী করা এসব প্রকল্পের তালিকার বাইরে যদি আরো কোন প্রকল্প বাদ পড়ে থাকে তিনি ওইসব প্রকল্পের জন্য তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ, জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতার হোসেন সাঈদ, কসবা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমীন ভূইয়া বকুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছেল সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোরায়রাহসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাগন, জেলা পরিষদের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
১৭ মার্চ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ ৫২তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস ২০২৩ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার এর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ২৯ মার্চ বুধবার সকালে কুমারশীল মোড়স্থ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার এর সহকারী পরিচালক (লাইব্রেরিয়ান) মো. সাইফুল ইসলাম লিমন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, বিশিষ্ট কবি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক জয়দুল হোসেন, উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি, লোকগবেষক জহিরুল ইসলাম স্বপন, জেলা পাবলিক লাইব্রেরির যুগ্নসাধারণ সম্পাদক মমিনুল আলম বাবু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তরুণ লেখক ও সংগঠক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিশুদের সুকুমারবৃত্তি প্রকাশের জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদেরকে বিভিন্ন ক্রীড়া-সাহিত্য-সংস্কৃতিমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা প্রয়োজন। এতে তাদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা মেধা ও প্রতিভার প্রকাশ হবে। এবং বাহিরের পৃথিবীর সঙ্গে তাদের একটি সংযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, যারা সাহিত্য সংস্কৃতিক কর্মকান্ডের যুক্ত থাকে না ভবিষ্যতে তারা বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতে বা নিজেকে উপস্থাপন করতে ভয় পায়। তাই এই বয়স থেকেই তাদের মঞ্চে উঠে পারফরমেন্স করা উচিত।
বক্তব্য তিনি আরো বলেন, এই সমস্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট ও বই বাসার আলমারির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, আলমারিকে স্মার্ট বানায়। কিন্তু এই বইগুলো যদি আমরা না পড়ি তাহলে মানুষ হিসেবে আমরা স্মার্ট হতে পারবো না। তিনি বলেন, স্মার্ট হওয়া মানে শুধু মোবাইল, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরিচালনার দক্ষতাকে বোঝায় না, স্মার্ট হওয়া মানে হচ্ছে জ্ঞান সমৃদ্ধ মানুষ হওয়া। কাজেই এই স্মার্ট মানুষ গড়ে উঠবে বই পড়ার মাধ্যমে। তাই শিশুদেরকে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বই অন্যান্য বই পড়ার আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত রচনা লিখন ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে বই ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অস্ত্রসহ জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. সুমন মিয়া প্রকাশ সুমন কে গ্রেফতার করছে যৌথ বাহিনী। ১৮ অক্টোবর শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জেলা শহরের মধ্যপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সুমন মিয়া পৌর শহরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলিম মিয়ার ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ছিলেন।
শুক্রবার রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে রাতে পৌর শহরের মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার বসত ঘর তল্লাসী করে অবৈধ ১টি পিস্তল, ১টি খালি কার্টুস ও ৩ রাউন্ড এ্যামোঃ উদ্ধার করা হয়। পরে রাতেই তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ ৭ বছর পর বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৯ জুন শনিবার শহরের শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ি নাটমন্দির চত্বরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জেলার ৯ উপজেলা থেকে আনন্দ মিছিল নিয়ে শহরের হালদার পাড়াস্থ শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ি নাটমন্দির চত্বরে সম্মেলনস্থলে সমবেত হন।
এ সময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা।
সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনিল চন্দ্র দেবের সভাপতিত্বে ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদেও সদস্য সচিব সঞ্জীব চন্দ্র সাহা বাপ্পীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিন্দ্র নাথ বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক এড: কিশোর কুমার রায় চৌধুরী পিন্টু, কার্যকরী সদস্য ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেসবুক ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া” এর উদ্যোগে নির্মিত “আই লাভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া” নামে একটি লোগো উদ্বোধন করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার বিকেল সোয়া ছয়টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম শহরের ফারুকী পার্কে নির্মিত “আই লাভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া” লোগো উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডাঃ আবু সাঈদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ সালমা বারী, কসবা সৈয়দাবাদ আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক এস.আর.এম ওসমান গনি সজীব ও সাংবাদিক শাহাদৎ হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মিশুক মাহমুদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য রেজুয়ান রনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, অসংখ্য সচিব ও মলয়া সঙ্গীত থেকে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্ম এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর্তৃক নির্মিত একটি ব্যতিক্রমধর্মী লোগো উদ্বোধনের মাধ্যমে জেলাবাসীর মাঝে জেলার প্রতি ভালোবাসা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্বাস করি।
জানা গেছে, বিবর্ধন রায় ইমন নামে এক যুবক ২০১৫ সালে ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ নামে ফেসবুকভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালে ‘রঙিন হবে আমাদের স্কুল” শ্লোগানে জেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথার নানা আঁকা ছবি আঁকে এই সংগঠন। পরে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে জেলার গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খ্রিস্টিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুলে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়াল মুক্তিযুদ্ধের ছবিতে রাঙিয়ে দেন সংগঠনের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বিবর্ধন রায় ইমন বলেন, এই উদ্যোগ জেলার প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও কর্তব্যের বহিপ্রকাশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম, সুনাম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। তাই এই লোগো স্থাপন করেছি। সার্বিক সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ।
এই লোগে নির্মাণে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের মাসিক চাঁদার টাকায় এই লোগো স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ২৮। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকুরি করা তরুণ-যুবকরা এই সংগঠনের সদস্য। জেলার জন্য ব্যতিক্রম কিছু করার ভাবনা থেকেই এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা। চলতি বছরের গত ৯ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফারুকী পার্কে সংগঠনের সদস্যরা জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে “আই লাভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া” লোগো নির্মাণের কাজ শুরু করেন।