বাঞ্ছারামপুরে মুক্তিপন না দেয়ায় শিশুকে হত্যা, দুই অপহরণকারী গ্রেফতার

বাঞ্চারামপুর, 3 October 2023, 887 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে মুক্তিপন না দেয়ায় ফাতেহা আক্তার (৭) নামের এক শিশুকে হত্যার পর লাশ ডোবার ফেলে রাখে অপহরণকারিরা।

banner

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের শুটকিকান্দি গ্রামের একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু ফাতেহা আক্তার ওই গ্রামের প্রবাস ফেরত বাছেদ মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত নাজিম (১৯) ও আলাউদ্দিন (২১) কে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত নাজিম শিশু ফাতেহা আক্তারের ফুফাতো ভাই এবং দরিয়াদৌলত গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার ছেলে ও গ্রেফতারকৃত আলাউদ্দিন শুটকি কান্দি গ্রামের মমিন মিয়ার ছেলে।

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নূরে আলম জানান, শিশু ফাতেহা আক্তার গত ৩০ আগস্ট বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধ্যান পায়নি। এরই মধ্যে শিশুর পরিবারে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারিরা। তবে কোন প্রকার মুক্তিপণ দেয়নি তার পরিবার। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

তিনি জানান, সোমবার সন্ধ্যায় প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ দুই যুবককে আটক করে। পরে তাদের মোবাইল ফোনে শিশুটিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি সংক্রান্ত চ্যাটিং পাওয়া যায়। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা জানায়, শিশুটিকে হত্যার পর ডোবার পানিতে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডোবা থেকে শিশু ফাতেহার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি বলেন, এ ঘটনায় শিশুর পরিবার থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির দোয়া ও ইফতার

বাঞ্চারামপুর, রাজনীতি, 21 March 2025, 218 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২১ মার্চ শুক্রবার বিকালে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়ন রাধানগর মাদ্রাসা মাঠে এ দোয়া ও ইফতার মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুইয়া।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম, হোমনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সাবেক ও সিনিয়র সহসভাপতি আহ্বায়ক লিয়াকত আলী ফরিদ বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবু লাঈম, সহসভাপতি হাজী আব্দুল মতিন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একেএম মূসা, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান মাসুম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএইচজেড শুকরী সেলিম, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সাংগঠনি সম্পাদক হারুন আকাশ, বাঞ্ছারামপুর পৌর বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক সাঈদ, পৌর বিএনপি সদস্য সচিব সালে মূসা, বাঞ্ছারামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন সরকার রাজিব, উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাঈদ, পৌর বিএনপির সহসভাপতি শামিম আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব ফয়সাল বিন ইউসূফ, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু কালাম, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বাঞ্ছারামপুর বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব লিটন সরকার, উপজেলা ছাত্রদল নেতা আশিকুর রহমান অন্তু, কলেজ ছাত্রদল নেতা সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন এবং ইফতি।

বাঞ্ছারামপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ ॥ থানায় মামলা

বাঞ্চারামপুর, 7 January 2023, 1375 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রবিবার (১ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টায় বাঞ্ছারামপুর পৌরসভায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মনির হোসেন বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড নতুনহাটির মরহুম আব্দুল হাকিম সিকদারের ছেলে। এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি ডায়েরি ও মামলা দায়ের করা হয়।
জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর প্রতাবগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মনির হোসেন ও ইমান মিয়ার উপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয় আব্দুল কাদির মিয়ার ছেলে আমির হামজা, আব্দুল মজিদ মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া, সিরাজুল ইসলামের ছেলে ওসমান গণি, সাইজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাদির, সফিক মিয়ার ছেলে এরশাদ মিয়া, বাবুল মিয়ার ছেলে মাহবুব মিয়া, সাইদুল মিয়া, জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম, মজিবুর রহমানের ছেলে নাজিমউদ্দিন, ফোরকান মিয়ার ছেলে শরিফ মিয়া, আলমগীর মিয়ার ছেলে কামরুল মিয়া, আশাবুদ্দিনের ছেলে আরিফ মিয়া এবং ধারিয়ারচর গ্রামের সাম মিয়ার ছেলে ইমন মিয়ার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। হামলাকারীদের কাছ থেকে মনির হোসেন ও ইমান মিয়াকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন ইয়াছিন সিকদার, আমজাদ হোসেন, আব্দুল্লাহ, মোহাম্মদ আশিক মিয়া, জামাল সিকদার ও ফজর আলী সিকদার। হামলায় গুরুতর আহত মনির সিকদারকে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী ও একটি মামলা করা হয়। সাধারণ ডায়েরি নং- ৮২/২০২৩। এছাড়া ১৪৩/ ৩৪১/ ৪৪৭/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৪২৭/ ১১৪/ ৫০৬ পেনাল কোডের আওতায় রজু করা মামলা নং-২, তারিখ- ০২.০১.২০২৩ইং।
হামলায় আহত আমজাদ হোসেন জানান, ফারুক মিয়া নানাবিধ অপকর্ম করে যাচ্ছে। তার অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই এলাকাবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। একই কারণে স্থানীয় রবি মিয়া ও মোশারফ হোসেন ২০২২ সালের ১৩ ও ১৫ নভেম্বর ২টি মামলা দায়ের করেন। নতুনহাটির প্রবাসী জামাল মিয়াও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। ফারুক মিয়া অপ্রতিরোধ্য উল্লেখ করে তিনি তার নানা অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

ইস্ট ওয়েষ্ট মিডিয়ায় হামলার প্রতিবাদে বাঞ্ছারামপুরে মানববন্ধন

বাঞ্চারামপুর, 1 September 2024, 491 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউজ ইস্ট ওয়েষ্ট মিডিয়া গ্রুপ কমপ্লেক্সে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে সাংবাদিকবৃন্দ ও ছাত্র জনতা মানববন্ধন করেছে। আজ ১ সেপ্টেম্বর রবিবার বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজ মাঠে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

banner

এ ঘটনায় হামলায় জড়িতদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেছেন বক্তারা। সাংবাদিকরা সরকারের কাছে বাংলাদেশের সকল সাংবাদিক এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার নিশ্চিতে জোর দাবি জানান।

এতে উপস্থিত ছিলেন এম এ আউয়াল, রিপন মিয়া, মো. জহিরুল হক, মোল্লা মোঃ নাছির, দিলীপ কুমার সূত্রধর, মীর মোশারফ হোসনে, মোঃ শামিম শিবলী, মোঃ শফিকুল ইসলাম, সুমন চক্রবর্তী, আশিকুর রহমান, মাহবুবুর রহমান বাবু, মোঃ নাছির উদ্দিন, মোঃ বাহারুল ইসলাম, মোঃ পলাশ সরকার এবং আতাউর রহমান সনেট প্রমুখ।

বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সম্পাদক ও হিসাব বিজ্ঞান বিভিাগরে বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার বলেন, হামলাকারীদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। তা না হলে মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকরা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ঝুঁকি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করতে উৎসাহ হারাবে সাংবাদিকরা।

বাঞ্ছারামপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধ ১৬ জন

বাঞ্চারামপুর, সারাদেশ, 1 January 2025, 689 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১৬ জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। আজ ১ জানুয়ারি বুধবার সকালে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

banner

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শান্তিপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সফু সরকার বাড়ির সঙ্গে আজগর আলী সরকার বাড়ির বিরোধ চলছিল। পূর্ববিরোধের জেরে বুধবার সকালে দুই পক্ষের লোকজন রামদা, বল্লম, টেঁটা, ছুরি, লাঠিসোঁটাসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৬ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন-আলমগীর হোসেন (৩৬), সোলেমান মিয়া (৩৯), সোহরাব হোসেন (৪৫), রাসেল মিয়া (৩২), রফিক মিয়া (৩৫), দুলাল মিয়া (৩৭), সনি মিয়া (২৭), রাসেল মিয়া (৩১), সামীর মিয়া (৩৬), ইসমাইল হোসেন (৪৪), ইমরান হোসেন (২৯), হক মিয়া (৪৩), মাসুদ মিয়া (৪০), শাহিন মিয়া ৩৯), লালু মিয়া (৪৩), রাব্বি মিয়া (২৬), হোসেন মিয়া (৪৫), শাহ পরান (২৮), শাহজালাল (৩৪), শাহিন মিয়া (৪৫)। তাদের পাশের নরসিংদী জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সফু সরকার বাড়ির মতিউর রহমান সরকার বলেন, দুই মাস ধরে আজগর আলী সরকার বাড়ির মো. সুলতান মাস্টারের পক্ষের লোকজন রাতের বেলা তাদের বাড়িঘর ও লোকজনের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে আসছেন। আজ সকালে হঠাৎ সুলতান মাস্টারের লোকজন তাদের ওপর হামলা করেন। তখন তারা আত্মরক্ষার জন্য তাদের ধাওয়া দেন। এ সময় তাদের কয়েকজন টেঁটাবিদ্ধ হন।

আজগর আলী সরকার বাড়ির ইসমাইল হোসেন বলেন, মাস দেড়েক আগে মতিউর রহমান ও তার লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছিলেন। তখন তাদের পক্ষের অনেক লোকজন আহত হয়েছিলেন। তার পর থেকে তারা গ্রামে যেতে পারেন না। মঙ্গলবার তারা গ্রামের বাড়িতে গেলে পূর্ববিরোধের জেরে আজ মতির লোকজন তাদের ওপর হামলা করে বাড়িঘরে ভাঙচুর চালান। এতে তাদের পক্ষের অনেকেই টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন।

বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, শান্তিপুর গ্রামে পূর্ববিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা নরসিংদীতে চিকিৎসা নিয়েছেন। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেঘনা নদী থেকে অবাধে লুট হচ্ছে বালু

নবীনগর, বাঞ্চারামপুর, 16 January 2025, 530 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় মেঘনা নদী থেকে অবাধে লুট হচ্ছে বালু। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার একটি চক্র অবৈধভাবে প্রতিদিন অন্তত ২০ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে। বালু লুটের ফলে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো যেমন ভাঙন ঝুঁকিতে, তেমনি বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এছাড়া চড়া মূল্যে বালুমহাল ইজারা নেওয়া বৈধ ইজারাদার প্রতিষ্ঠানও বিপাকে পড়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

banner

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসন ও নৌপুলিশকে ম্যানেজ করেই দিনের পর দিন চলছে বালু লুট। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ধরাভাঙ্গা এলাকায়ও মেঘনা নদী থেকে বালু লুট করছে রায়পুরার আরেকটি চক্র।

আরও পড়ুন
শীগ্রই ‘কালনী এক্সপ্রেস’ ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি এলাকায় মেঘনা নদী থেকে প্রতিদিন অন্তত ১০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার একটি বালুখেকো চক্র। প্রতিদিন অন্তত ২০ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে চক্রটি। যার বাজারমূল্য অন্তত প্রায় ৫০ লাখ টাকা। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অবাধে বালু লুট করে বিক্রি করছে ওই চক্রটি। রীতিমতো অস্ত্রে সজ্জিত ক্যাডার বাহিনীর পাহারায় দিনভর চলে বালু উত্তোলন। বালুখেকো চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন যুবদল নেতা কাইয়ূম মিয়া। তার সাথে আছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী। অবাধে বালু তোলার কারণে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি, কানাইগর ও শান্তিনগর গ্রাম।

অপরদিকে, নবীনগর উপজেলার ধরাভাঙ্গা এলাকায় মেঘনা নদীতে ৫-৭টি ড্রেজার দিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে রায়পুরা উপজেলার অপর একটি চক্র। স্থানীয় বিএনপির কয়েকজনকে নিয়ে এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলাম। এই চক্রটি কয়েক মাস আগে নবীনগর উপজেলার চরলাপাং এলাকা থেকেও বালু উত্তোলন করে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচটি ড্রেজার জব্দ করে। সম্প্রতি ড্রেজারগুলো ছাড়ানোর পর আবারও ধরাভাঙ্গা এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো। এসব গ্রামের বাসিন্দারা নদীগর্ভে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার আতঙ্কে আছেন।

আরও পড়ুন
কসবায় ৫শ টাকার জন্য ফুফাতো ভাইয়ের হাতে মামাতো ভাই খুন

এদিকে, মেঘনা নদীর জাফরাবাদ বালু মহালটি প্রায় ৭৫ কোটি টাকায় ইজারা নিয়ে বিপাকে পড়েছে মুন্সি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ইজারার এক বছরের মধ্যে ইতোমধ্য ৯ মাস পেরিয়ে গেছে। মূলত এই মহালে বালুর জন্য আসা ক্রেতাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রায়পুরার বালুখেকো চক্রটি নিজেদের কাছ থেকে বালু কেনার জন্য বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করছে মুন্সি এন্টারপ্রাইজ। এর প্রতিবাদ করায় বালুমহাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত মুন্সি এন্টারপ্রাইজের কার্যালয়ে ওই চক্রটি কয়েকবার এসে হামলাও চালিয়েছে।

মুন্সি এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নবীর হোসেন জানান, বৈধ ইজারাদার হয়েও আমরা নদী থেকে ঠিকমতো বালু উত্তোলন করতে পারছি না। সরকারি কোষাগারে যে টাকা দিয়ে মহাল ইজারা নিয়েছি, মেয়াদ ফুরিয়ে আসলেও সেই টাকা তুলতে পারছি না। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি রায়পুরার ওই চক্রটি ক্রেতাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে বালু কিনতে বাধ্য করে। যেহেতু তাদের ইজারা মূল্য দিতে হয়নি, সেহেতু তাদের পুরোটাই লাভ।

আরও পড়ুন
জমিতে সেচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ১

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম এর জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। খুব দ্রুতই আমরা বড় রকমের অপারেশনে যাব। যেহেতু এটি বারবার হচ্ছে, সেজন্য শাস্তিও দ্বিগুণ হবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।