চলারপথে রিপোর্ট :
মাদক মামলায় মো. জসিম মিয়া (৬২) নামের সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ৭ অক্টোবর শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের কোড্ডা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জসিম মিয়া ওই গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার সহকারী উপ পরিদর্শক বাপন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জসিম মিয়ার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ছিল। সেই মামলায় গত মে মাসে জসিম মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছর তিনমাস সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরো একমাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। রায়ের পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। শনিবার সকালে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একটি হত্যা মামলার আসামী হিসেবে গতকাল ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কালীবাড়ি মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মোস্তফা কামাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিটি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামের বাসিন্দা।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারে পতনের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিটি মডেল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি নবীনগর উপজেলার দানবীর মহেশ ভট্টাচার্য বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ হন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্রে করে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন হয়। ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় গুলিতে নিহত হন বুধল ইউনিয়নের বুধল উত্তরপাড়ার কাউসার আহম্মেদ। এ ঘটনায় কাউসারের চাচা আকরাম হোসেন গত ১০ সেপ্টেম্বর সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ১৯৫ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার আসামী মোস্তফা কামাল। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। এদিকে মোস্তফা কামাল গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরির্তনের পর ১৩ সেপ্টেম্বর একটি সাদা কাগজে হাতে লিখে স্বাক্ষর করে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোস্তফা কামাল। দায়িত্বশীল পদে থেকেও দলের কঠিন মুহুর্তে তিনি দলের পাশে থাকেননি, বরং নিজেকে বাঁচাতে দল ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেও তার শেষ রক্ষা হয়নি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, একটি হত্যা মামলায় এজহারভুক্ত আসামি হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামালকে বৃহস্পতিবার রাতে কালীবাড়ি মোড় থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
শহরের প্রধান সড়ক ও ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়েছে। আজ ১৮ আগস্ট সোমবার বিকেলে সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ অভিযান চালানো হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সিফাত মো. ইসতিয়াক ভূইয়ার নেতৃত্বে শহরের কুমারশীল মোড়, জেলরোড সহ বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে শহরের বিভিন্ন সড়কে ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসানো, পণ্য সামগ্রী রাখা ও অক্সিজেন সিলিন্ডার ফুটপাতে রেখে পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দায়ে জরিমানা করা হয়। অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার, ফুটপাতের বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে আরো ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সিফাত মো. ইসতিয়াক ভূইয়া বলেন, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনার কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ছে। পাশাপাশি শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে স্থানীয় সরকার আইনের বিভিন্ন ধারায় মোট ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরাও।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৩৬ বোতল ফেন্সিডিল, ১০৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ২ কেজি গাঁজাসহবিপুল পরিমান মাদকসহ ৭ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃংখলা বাহিনী। এ সময় একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়। আজ ৬ অক্টোবর রোববার সকালে ও শনিবার বিকেলে পৃথক অভিযানে জেলার নাসিরনগর, আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৯-এর সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সেলিনা আক্তার (৪০), একই এলাকার লাকী আক্তার (৩২), উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের মোঃ ফরিদ মিয়া (৩৪) ও একই এলাকার রুমা আক্তার (৩০), হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার নাজমুল (২৯), আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের আবদুল জলিল (৪৫) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের মোঃ ইমন মিয়া (২৩)।
পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রোববার সকালে আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে থেকে ১৪০ বোতল ফেন্সিডিলসহ নাজমুল ও আবদুল জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।
অপর অভিযানে রোববার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রাম থেকে ১০৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মোঃ ইমন মিয়াকে গ্রেফতার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পুলিশ।
পৃথক অভিযানে শনিবার রাতে র্যাব সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা থেকে ৯৬ বোতল ফেনসিডিল এবং ২ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী সেলিনা আক্তার, লাকী আক্তার, মোঃ ফরিদ মিয়া ও রুমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ৬৩টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি করেছেন “মাজলুম ওলামায়ে কেরাম” নামে একটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আজ ১১ আগস্ট রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম, নবীনগর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাইয়ুম ফারুকীর সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া উম্মুল কোরআন মাদরাসার মোহতামিম মুফতি উবায়দুল মাদানী। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পতন হওয়া স্বৈরাচারি সরকার গত ১৬ বছর এদেশে অসংখ্য গণহত্যা চালিয়েছেন।
২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ৬৩টি মামলায় জেলার ৬৪জন আলেম দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। এ সময় আইন-শৃংখলাবাহিনীর গুলিতে ১৬জন আলেম ও মাদরাসার ছাত্র শাহাদাৎ বরণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৬৩টি মামলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৫৬টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া থানায় একটি মামলা রয়েছে। নেতৃবৃন্দ এসব মামলা সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এ সময় ২০২১ সালে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি এবং ২০২১ সালে চাকরিচ্যুত আলেম-ওলামাদেরকে স্বপদে বহাল রাখার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যার সাথে জড়িতরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা যাকারিয়া, মাওলানা নিয়ামুল করিম, মাওলানা মোজাম্মেল হক, মাওলানা আমানুল হক, মাওলানা খন্দকার ইসলাম প্রমুখ।
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। জেলার ৯টি উপজেলায় বসেছে ৭১টি পশুর হাট। ইতিমধ্যেই এসব হাটে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। তবে ক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর গবাদি পশুর দাম একটু বেশী।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৬৬টি গবাদি পশু লালন-পালন করা হয়। তবে জেলায় কোরবানীর জন্য গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার। চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে ২০ হাজার গবাদি পশু।
তবে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন।
এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। যার জন্য জেলায় কোরবানীর পশু নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা। তিনি বলেন, এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু কেনা বেচা হবে বলে আশা করছি।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে মধ্যে সদর উপজেলায় ৪১০৬টি খামার, সরাইল উপজেলায় ৯৬৬টি, আখাউড়া উপজেলায় ৬৭৪টি, কসবা উপজেলায় ২১৩৬টি, নাসিরনগর উপজেলায় ১৬০৭টি, নবীনগর উপজেলায় ১৫৯৫টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১২৫০টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৯৩৭টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬২০টি খামার রয়েছে।
এসব খামারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ৫২০৭৭টি ষাঁড়, ১৯১৯৫টি বলদ, ১৭৬৮৪টি গাভী, ১২২১৩টি মহিষ, ১৩৫৮৮টি ছাগল, ৫৯০৭টি ভেড়া, অন্যান্য ৩২টি লালন-পালন করা হয়। এছাড়াও অনেক কৃষক পরিবারেই কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন।
এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন উপজেলায় কোরবানীর হাট বসছে ৭১টি। এইসব হাটের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় পৌরসভার ১টিসহ মোট ৫টি, সরাইল উপজেলায় ৯টি, নাসিরনগর উপজেলায় ৯টি, আখাউড়া উপজেলায় ৫টি, কসবা উপজেলায় ১১টি, নবীনগর উপজেলায় ১৩টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৫টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ও বিজয়নগর উপজেলায় বসবে ৮টি কোরবানীর হাট।
এসব হাটে কাজ করবে ৫৩টি মেডিকেল টীম। এর মধ্যে সদর উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, সরাইল উপজেলায় কাজ করবে ৪টা, নাসিরনগর উপজেলায় কাজ করবে ৯টা, আখাউড়া উপজেলায় কাজ করবে ৫টা, কসবা উপজেলায় কাজ করবে ৩টা, বাঞ্চারামপুর উপজেলা কাজ করবে ৫টা, আশুগঞ্জ উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, বিজয়নগর উপজেলায় কাজ করবে ২টা টীম।
সরজমিনে কয়েকটি খামারে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে খামারের মালিক- কর্মচারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারিরা রুটিন মাফিক গবাদি পশুর পরিচর্যা করছেন। প্রতিটি খামারেই কাজ করছে ৮/১০জন শ্রমিক। গবাদি পশুকে গোসল করানো, খাবার দেয়াসহ গবাদি পশুর গোবর পরিষ্কার করেন তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের নয়নপুর এলাকার রূপচান্দ বিবি ডেইরি খামারে গিয়ে দেখা যায় ওই খামারে কোরবানীর জন্য শতাধিক দেশীয় গরু লালন-পালন করা হচ্ছে।
খামারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা দেড় শতাধিক গরু লালন-পালন করেছিলাম। গত বছর ৩০টি গরু বিক্রি করতে পানিনি। গত বছরের থাকা ৩০টি গরুসহ এই বছর শতাধিক গরু লালন-পালন করেছি। সবগুলোই দেশীয় জাতের। প্রতিদিন গরুগুলোকে ২/৩বার করে মোটরের পানি দিয়ে গোসল করাই। গরুর যাতে গরম না লাগে সেজন্য ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে খামারে। গরুগুলোকে স্বাভাবিক খাওয়ার দেয়া হয়। বেশীর ভাগ সময় দেয়া হয় ঘাস।
তিনি বলেন, এ বছর গুরুর খাবার ও ঔষধপত্রসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি গরুতে ২০/২৫ হাজার টাকা বেশী খরছ হয়েছে। আশা করি এই আমাদের সবগুলো গরু বিক্রি হবে, দামও ভাল পাবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের গোকর্ণঘাটের নিউ প্রিন্স ডেইরী খামারে কোরবানীর জন্য ২৬০টি গরু লালন-পালন করা হয়। ইতিমধ্যেই তারা ৩০ টি গরু বিক্রি করে ফেলেছেন। এই খামারে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে।
খামারের মালিক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ২৬০টি গরুর মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩০ গরু বিক্রি করে দিয়েছি। ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা খামারে এসে গরু কিনে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, খামারের বড় গরুটা ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। খামারে ১৮জন শ্রমিক কাজ করে। তিনি বলেন, এই বছর প্রতি গরু ১০-১৫ হাজার টাকা বেশী দিয়ে কিনতে হয়েছে। এছাড়াও এ বছর গবাদি পশুর খাবার ও ঔষুধপত্রের দাম বেশী। তিনি বলেন আশা করি ভারত থেকে গরু না আসলে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে।
এ ব্যাপারে খান এগ্রো ডেইরি ফার্মের কর্ণধার ও জেলা ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ সাইফুদ্দিন খান শুভ্র জানান, জেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৮শত খামারি রয়েছে। গো-খাদ্যের দাম বাড়াতে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, দানাদার খাবারের পরিবর্তে, গো-খাদ্য ঘাসের উৎপাদন বাড়াতে পারলে গরুর দাম অনেক কমে যাবে।
তিনি বলেন, এ বছর তার খামারে বিক্রির জন্য ১০৭টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি খামার থেকেই গরু বিক্রি করি। তিনি বলেন, ভারত থেকে চোরাইপথে গরু না আসলে স্থানীয় খামারীরা লাভবান হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন। এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। এতে জেলার চাহিদা পূরণ হবে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু বিক্রি করা হবে বলে আশা করছি।