যে কারণে এতো সুন্দর তুরস্কের মেয়েরা

আন্তর্জাতিক, 16 January 2023, 1426 Views,
ফাইল ছবি

ডেস্ক :
যদি আপনার কাছে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মেয়েরা কোন দেশের। তবে শেষ পর্যন্ত অল্প যে কয়টি দেশের মেয়েদের চেহারা ভেসে আসবে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ধরবেন নিশ্চয়ই তুরস্কের মেয়েদের। হ্যাঁ, আসলেই তারা অনিন্দ্য সুন্দর। দেশটির মারিয়াম ওজরেলি, হান্দে আর্সেল ও হাজেল কায়ার মত অভিনেত্রীদের পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর নারী হিসেবে গণ্য করা হয়। শুধু দেশটির নায়িকাই নয়, সাধারণ মেয়েরাও একেকজন অনিন্দ্য সুন্দর। তাদের চুল, চোখ, ত্বক, বডি শেপ সবমিলিয়ে তারা এতই সুন্দর যে, যে কোনো অবস্থাতেই তারা আবেদনময়ী। তারা কি জন্মগতভাবেই এত সুন্দর নাকি এ পেছনে রয়েছে অন্য রহস্য? তুরস্কের মেয়েরা এত সুন্দর হয় কেন? সৌন্দর্য ধরে রাখতে কি কি পন্থাই বা অবলম্বন করে- এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন এবি। তাদের সৌন্দর্যের রহস্য উদঘাটনও করেছে তারা। এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে ম্যাগজিনটিতে।

banner

ম্যাগাজিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, তুর্কি মেয়েদের সাধারণ রূপচর্চার পাশাপাশি কিছু সিক্রেটও আছে যার বদৌলতে তারা এত সুন্দর। তুরস্কের বিভিন্ন অঞ্চলের মেয়েদের মধ্যে পরিস্কার ত্বকের মধ্যে রোদের মত সোনালী আভা দেখা যায়। দেশটির কৃষ্ণসাগর তীর অঞ্চলের মেয়েদের পরিস্কার ত্বকের পাশাপাশি সোনালী কিংবা বাদামী রঙের চুল দেখা যায় যা তাদেরকে অনিন্দ্য সুন্দর মেয়ে হিসেবে আলাদাভাবে দাঁড় করায়। তাছাড়া কালো চোখের পাশাপাশি সবুজ ও নীল রঙের চোখ সবার দৃষ্টি কাড়ে। অন্যদিকে, ইস্তাম্বুল ও ইজমীরের মেয়েদের মধ্যে বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য দেখা যায় এবং আনাতোলিয়া প্রদেশের মেয়েদের গায়ের রং থাকে কিছুটা ডার্ক তবে তাদের গড়ন ও চুলের সৌন্দর্য হয় নজরকাড়া।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মেয়েদের মত তুর্কি মেয়েরাও রূপচর্চা করে থাকে। নিজেদের ন্যাচারাল সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলতে মেকআপ করে থাকে তারা। তবে খুব ভারী মেকআপ করতে খুব একটা অভ্যন্ত নয় তারা। সাধারণত মিনিমাম ও ন্যাচারাল ত্বক ফুটিয়ে তুলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে তারা। এজন্য বেশিরভাগ অনুষ্ঠানের জন্য তুর্কি মেয়েরা সামান্য মাশকারা, আইলাইনার ও ব্রাশ ব্যবহার করে। তবে একমাত্র জন্মদিনের মত অনুষ্ঠানে অনেক সময় ভারী মেকআপ করে তারা।

তুরস্কের মেয়েরা চুলকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। সুস্থ, সুন্দর ঢেউখেলানো চুলের জন্য তারা বিখ্যাত। অধিকাংশ মেয়ে চুলের যত্নে স্যালুনে যাতায়াত করে। পোশাক-পরিচ্ছেদের ব্যাপারে তার্কিশ মেয়েরা বেশ অভিজাত। সাধারণত ক্যাজুয়াল ও শালীন পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে তারা। এছাড়া নেকলেস ও ইয়ারিংয়ের মত গয়নাও তাদের কাছে অনেক প্রিয়।

এসব সাধারণ অভ্যাসের পাশাপাশি তুরস্কের মেয়েদের সৌন্দর্যের আরও কিছু গোপন রহস্য আছে। এর মাঝে গোলাপজল অন্যতম। তুর্কি মেয়েরা ক্লিনজার হিসেবে গোলাপজল ব্যবহার করে থাকে। প্রাকৃতিক এই উপাদান ত্বক থেকে ময়লা ও তেল দূর করার পাশাপাশি পিচ ভারসাম্য ফিরে আনে। একই সঙ্গে ত্বক রাখে সতেজ ও সজীব। গোলাপজল সাধারণত দোকানে পাওয়া যায়। তবে অনেক তার্কিশ মেয়েরা তাদের নিজস্ব রেসিপিতে বাসায় গোলাপজল তৈরি করে থাকে।

তুর্কি মেয়েদের সৌন্দর্যের আরেকটি গোপন রহস্য হচ্ছে সুগারিং। এটি মূলত প্রাচীন মিসরের রূপচর্চার একটি বিশেষ পদ্ধতি, যা মূলত শরীরের অবাঞ্চিত লোম দূর করতে ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতি খুব সহজ ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই তৈরি করা যায়। তুরস্কের মেয়েরা নিয়মিতই এই রিমুভাল সুগারিং পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

দেশটির মেয়েদের সৌন্দর্যের আরেকটি কারণ হচ্ছে হাম্মাম বা তার্কিশ বাথ। বিশেষ পদ্ধতির এই গোসল তুরস্কে অনেক জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে দেহ ও মনের সজীবতা পায় তুর্কি মেয়েরা।

তুরস্কের মেয়েদের অন্যতম একটি সৌন্দর্য চর্চার উপায় হচ্ছে হ্যাজাল নাট অয়েল। এটি একধরণে বাদাম তেল, যা মূলত তুরস্কেই উৎপন্ন হয় বেশি। ভিটামিন ও ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ এই তেল নিজেদের রূপচর্চায় ব্যবহার করে থাকে তুর্কি মেয়েরা।

তুরস্কের মেয়েদের ডায়েট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যার মাধ্যমে সুস্থ থাকার পাশাপাশি সৌন্দর্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে তারা। সংগৃহীত

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

ভূস্বর্গ কাশ্মীরে এক টুকরো ‘বাংলাদেশে’র সন্ধানে

আন্তর্জাতিক, 18 December 2023, 949 Views,

ডেস্ক রিপোর্ট :

banner

বেশ কয়েক বছর আগে এই তথ্যটা আমাকে প্রথম দিয়েছিলেন আজমত হোসেইন, যে কাশ্মীরি যুবক ছিলেন হুরিয়ত কনফারেন্সের প্রয়াত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির সর্বক্ষণের সঙ্গী আর ঘনিষ্ঠ অনুচর। বাংলাদেশ নিয়ে খবরাখবর করি শুনে তিনি বলেছিলেন, “জানেন কি, আমাদের কাশ্মীরেও আছে বাংলাদেশ নামে আস্ত একটা গ্রাম?”

শুধু তা-ই নয়, আরো জেনেছিলাম এই ‘বাংলাদেশ’ নামে গ্রামটা নাকি গিলানি সাহেবের জন্মস্থান জুরিমাঞ্জ-এর ঠিক পাশেই! পরে গুগল ম্যাপেও খুঁজে বের করি সেই বাংলাদেশ, তবে বিশদে খোঁজ নেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও নানা ব্যস্ততায় সে কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম।

মাসকয়েক আগে কাশ্মীরেরই একটা খবরের কাগজে চোখে পড়ে, সেই ‘বাংলাদেশ’ গ্রামের লোকেশনে উলার লেকের ধারেই শুরু হয়েছে বিগ বাজেট একটি দক্ষিণী ছবির শ্যুটিং। এমন কী, বলিউড ছবিরও সেট পড়েছে ‘বাংলাদেশে’ – এমনটাও জানানো হয়েছিল।

বুঝতে পারি, কাশ্মীরের ‘বাংলাদেশ’ ইদানীং ধীরে ধীরে পরিচিতি পাচ্ছে, ওই এলাকার অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের টানে দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও আসতে শুরু করেছেন দলে দলে।

তখনই স্থির করে ফেলি, কীভাবে এই ‘বাংলাদেশ’ নামকরণ হল, সেটা জানতে একবার যেতেই হবে ওই গ্রামে। অবশেষে দীর্ঘদিনের লালিত সেই স্বপ্নটা পূর্ণ হল এ মাসের গোড়ায়।

শ্রীনগর শহর থেকে এমনিতে ওই জায়গাটার দূরত্ব আশি কিলোমিটার। তবে নানা কারণে সোপোর-বান্দিপোরা রোড হামেশাই বন্ধ থাকে বলে প্রায়শই পুরো উলার লেক পরিক্রমা করে পৌঁছতে হয় সেই গ্রামে – রাজধানী থেকে পাড়ি দিতে হয় অন্তত সোয়াশো কিলোমিটার রাস্তা।

তবে বিস্তর মেহনত করে একবার ‘বাংলাদেশে’ পৌঁছলে বোঝা যায়, কেন গ্রামটি বাইরের দুনিয়ার কাছে এভাবে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

গ্রীষ্মের পিক সিজনে তো বটেই, ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডাতেও সেখানে এখন পর্যটকদের ঢল ও ট্রেকারদের তাঁবু।

প্রচলিত আছে, মুঘল বাদশাহ জাহাঙ্গীরই না কি কাশ্মীর নিয়ে একদা বলেছিলেন :
আগর ফিরদৌস বার রু-য়ে জমিন অস্ত
হামিন অস্ত-ও হামিন অস্ত-ও হামিন অস্ত!
বাংলায় এই অমর পংক্তির অনুবাদ করা যেতে পারে, ‘এই পৃথিবীর বুকে কোথাও যদি স্বর্গ থেকে থাকে তাহলে তা এখানেই, তা এখানেই, তা এখানেই!’
এখন এই লাইনগুলো আসলে কবি আমীর খসরুর লেখা, না কি অন্য কারও – তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে।
কিন্তু এই ‘জন্নত-ই-জাহান’ বা ‘ভূস্বর্গ’ খেতাবের সবচেয়ে বড় দাবিদার যে কাশ্মীর – তা নিয়ে বোধহয় বিন্দুমাত্র বিতর্ক নেই!
আর সেই ভূস্বর্গের বুকে আজ বাহান্ন বছর ধরে এক টুকরো ‘বাংলাদেশ’ও যে বহাল তবিয়তে টিঁকে আছে এবং ক্রমশ বিখ্যাত হচ্ছে, এ খবরও রীতিমতো রোমাঞ্চ জাগায় বই কী!
যেভাবে এই নামকরণ
ডিসেম্বরের এক হিমেল সকালে যখন বান্দিপোরা জেলার এই বাংলাদেশ গ্রামে পৌঁছলাম, তখন মুষলধার বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে জনপদ। উলার লেক থেকে আসা ঠান্ডা হওয়ায় হাত-পা অবশ হওয়ার উপক্রম।
উলারের অন্য পারে মাউন্ট হরমুখের তুষারধবল চূড়া কুয়াশাতে আবছায়া। আর লেকের বুকে রাজহাঁসের ঝাঁক আর সাইবেরিয়া থেকে আসা পরিযায়ী পাখিদের উদ্দাম দাপাদাপি।
বাংলাদেশ গ্রামের কূলে কয়েকটা নৌকা ওই তুমুল বৃষ্টিতেও মাছ ধরতে ব্যস্ত। আর পর্যটকদের জন্য চালু হওয়া শিকারাগুলো লেকের জলে ভেসে বেড়াচ্ছে ইতিউতি।
গ্রামবাসীদের দেখা মিলল দুপুরের ঠিক আগে আগে, যখন জোহরের নামাজের ঠিক আগে লোকজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্থানীয় মসজিদের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।
কীভাবে তাদের গ্রামের নাম ‘বাংলাদেশ’ হল, সেই প্রশ্নের জবাবে নবীন যুবক নিসার আহমেদ দার কিংবা প্রবীণ পঞ্চায়েত সদস্য গুলাম আহমাদের কাছে মোটামুটি একই রকম বিবরণ পেলাম।
আসলে পাশের জুরিমাঞ্জ গ্রামে (যেটা আবার সৈয়দ আলি শাহ গিলানির জন্মস্থান, তার বাবা ছিলেন ব্রিটিশ আমলে খাল খনন বিভাগের একজন ভূমিহীন শ্রমিক) ’৭১ সালের শীতে এক ভয়ঙ্কর অগ্নিকান্ড হয়েছিল।
সেই আগুনে প্রায় পুরো গ্রামটাই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গ্রামের এক পাশে উলার লেকের কোল ঘেঁষে অনেকটা ফাঁকা জমি ছিল, তখন সেখানেই সর্বস্ব-হারানো পরিবারগুলোকে নতুন করে ঘরবাড়ি তৈরি করে দেয় সরকার।
এরপর প্রশ্ন ওঠে, নতুন এই জনপদটা তো জুরিমাঞ্জ থেকে বেশ খানিকটা দূরে – তো এই গ্রামের নাম কী দেওয়া হবে?
তখন একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সবে শেষ হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনা ও মুক্তিবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে, সারা পৃথিবীর সঙ্গে জুরিমাঞ্জও সে খবর রেডিওতে শুনেছে।
সেই নবীন রাষ্ট্রকে সম্মান জানাতে নতুন গ্রামটির নামও দেওয়া হবে ‘বাংলাদেশ’ – এমনটাই সেদিন স্থির করেছিলেন ওই জনপদের বাসিন্দারা।
বাংলাদেশের নামে গ্রামটির নামকরণের মূল আইডিয়াটা কার, এটা নিয়ে অবশ্য দুরকম ব্যাখ্যা পাওয়া গেল।
নিসার আহমেদ দার জানালেন, তিনি বাপ-চাচাদের কাছে শুনেছেন তখন কাশ্মীর সরকারের একজন মন্ত্রীই না কি পরামর্শ দিয়েছিলেন নতুন গ্রামটির নাম ‘বাংলাদেশ’ রাখা হোক, আর গ্রামবাসীরা সানন্দে সেটা মেনেও নিয়েছিলেন।
তুলনায় প্রবীণ গুলাম আহমাদ বা গুলাম নবি বাট অবশ্য বললেন বাইরের কারও পরামর্শে নয় – গ্রামের তখনকার মুরুব্বিরা মিলেই না কি স্থির করেছিলেন নতুন জনপদের নাম দেবেন তারা বাংলাদেশ, সদ্য স্বাধীন দেশটিকে স্বীকৃতি জানাবেন।
দুটোর যে কোনও ব্যাখ্যাই সত্যি হতে পারে, তবে ‘বাংলাদেশ’ নামটা নিয়ে ওই গ্রামের যে আলাদা একরকম গর্ব আছে তা টের পেতে কোনও অসুবিধা হয় না।
প্রথম দিকে নামটা মুখে মুখে চালু থাকলেও ২০১০ সালে বান্দিপোরা জেলার ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার অফিসও বাংলাদেশ নামটিকে নথিভুক্ত করেছে, এখন প্রায় ৭০টি পরিবারের সাড়ে তিনশো লোকের বসবাস সেখানে।
গ্রামের আশি বছরের প্রবীণা আজাইব বিবি বিকেলের দিকে খুব যত্ন করে নিজের বাড়ির দাওয়ায় বসিয়ে কাশ্মীরের বিখ্যাত ‘কাহওয়া চা’ খাইয়ে আপ্যায়ন করছিলেন।
তাঁর সন্তানদের মধ্যে দু’জন মূক ও বধির, কোনও ক্রমে হাঁস ও মুরগী প্রতিপালন করে তিনি নিজের বিরাট সংসার চালান।
এত কষ্টের মধ্যেও আজাইব বিবি হাসিমুখে বলছিলেন, “আমাদের গ্রামের নামটা কিন্তু একেবারে অন্য রকম! গোটা কাশ্মীরে এরকম নাম আপনি আর কোথাও পাবেন না!”
গ্রামের সব লোকজন মাথা নেড়ে তাঁর কথায় সায় দেন, জানাতে ভোলেন না এই যে অন্য একটি দেশের নামে তাদের গ্রামের নাম – বিষয়টা তাদের অন্য রকম একটা ভালো লাগা দেয়!
বেড়াতে বা কাজে কাশ্মীরের অন্যত্র গেলেও তারা প্রথমেই বলেন, “আমরা বাংলাদেশ গ্রাম থেকে এসেছি!” আগে লোকজন শুনে একটু অবাক হত, কিন্তু এখন আস্তে আস্তে সবাই চিনে গেছে এই অভিনব নামের গ্রামটিকে।
‘বাংলাদেশে’র পুনর্জন্ম
তবে প্রায় বাহান্ন বছর আগে এই নামকরণ হলেও পরবর্তী প্রায় চার দশক ‘বাংলাদেশ’ একটি অখ্যাত জনপদ হিসেবেই রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হালে সেই ছবিটা খুব দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে।
আর এর পেছনে খুব বড় ভূমিকা রয়েছে উলার লেককে ঘিরে পরিবেশ সংরক্ষণ ও পর্যটন প্রসারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার।
উলার লেক হল সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে বৃহত্তম মিঠা পানির লেক, কাশ্মীরের সুপরিচিত ডাল লেকের অন্তত সাড়ে আট গুণ এর আয়তন।
কিন্তু শ্রীনগরের ডাল লেক পর্যটকদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় হলেও তুলনায় উলারে ‘ট্যুরিস্ট ফুটফল’ অনেক কম, যদিও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে উলারের আকর্ষণ বোধহয় বেশি ছাড়া কম নয়।
সম্প্রতি সেই ছবিটাই বদলে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ‘উলার কনজার্ভেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’, সরকারি অর্থায়ন আর বেসরকারি সহযোগীদের নিয়ে তারা নতুন করে আঁকছেন উলার লেকের চালচিত্র।
“আমাদের এই প্রকল্পে একটা খুব বড় জায়গা নিয়ে আছে বাংলাদেশ গ্রাম, কারণ ওই এলাকাটার পর্যটন সম্ভাবনা অপরিসীম”, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেটর মুদাসির মেহমুদ।
গত দু-তিন বছরের মধ্যে ‘বাংলাদেশে’র সৌন্দর্যায়নে তারা বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছেন।
জুরিমাঞ্জ-বাংলাদেশ-ওয়াতলাব গ্রামগুলোকে ঘিরে উলারের তীর ঘেঁষে তৈরি হচ্ছে একটি আধুনিক বুলেভার্ড।
ইতিমধ্যেই লেকের বুক চিরে তৈরি হয়েছে প্রায় দুশো মিটার লম্বা একটি বোর্ডওয়াক, যেটির ওপর দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া যায় একদম উলারের বুকে। পদ্মের বনের ওপর দিয়ে ডানা ঝাপটাতে দেখা যায় নানা প্রজাতির মাইগ্রেটরি বার্ডদের।
‘বাংলাদেশ’ গ্রামের বাসিন্দারা এই বোর্ডওয়াকেরই নাম দিয়েছেন ‘ভিউপয়েন্ট’।
নিসার আহমেদ বলছিলেন, “বছরতিনেক আগে এই ভিউপয়েন্ট খোলার পর থেকেই হঠাৎ করে আমাদের গ্রামে ট্যুরিস্টদের আনাগোনা খুব বেড়ে গেছে।”
“ভারতের নানা প্রান্ত থেকে তো বটেই, অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ কোরিয়া-ইউরোপ থেকেও আজকাল দলে দলে পর্যটকরা আসছেন।”
গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য গুলাম আহমাদ জানাছেন, ২০২২ আর ২০২৩র গ্রীষ্মে এমন কী বাংলাদেশ থেকেও জনাকয়েক পর্যটক তাদের গ্রামে বেড়াতে এসেছিলেন। মানে প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীরের বাংলাদেশ দেখতে!
এমনিতে বাংলাদেশ গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা অনেকটাই উলার লেক-নির্ভর।
তারা কেউ লেকে মাছ ধরেন, কেউ আবার লেকের তীরে হাঁসের চাষ করেন।
অনেকে আবার নৌকায় লেকের বুক থেকে তুলে আনেন ওয়াটার চেস্টনাট, জলের যে কাঁটাওলা ফসল অনেকটা বাংলার ‘পানিফলে’র মতো দেখতে। কাশ্মীরিরা স্থানীয় ভাষায় বলেন ‘সিংগারা’।
উলার লেকের বুকে পদ্মবন থেকে পদ্মের কন্দ বা ‘নদরু’ তুলে আনাটাও বাংলাদেশে অনেকেরই পেশা। এই নদরু দিয়ে তৈরি ‘ইয়াখনি’ নামে একটি পদ কাশ্মীরে খুবই জনপ্রিয়, আর বাংলাদেশের ‘নদরু’ এখন পাড়ি দিচ্ছে দিল্লি-মুম্বাই-ব্যাঙ্গালোরের বাজারেও।
সব মিলিয়ে উলার লেকের তীরে একদা অপরিচিত ‘বাংলাদেশ’ যেন সম্প্রতি নতুন জীবন পেয়েছে, প্রতিবেশী দেশের নামে নামাঙ্কিত গ্রামটির নামডাক ছড়িয়ে পড়ছে দূর-দূরান্তে।
“রাস্তাটা যদি আর একটু ভাল করা হয় আর উলার লেকে নিয়মিত ড্রেজিং-টা চালু রাখা যায় তাহলে দেখবেন আমাদের বাংলাদেশ ট্যুরিস্টদের সামলাতে কূল পাবে না”, একগাল হেসে বলেন প্রবীণ গ্রামবাসী গুলাম নবি বাট।
‘হামলা আওয়ার খবরদার!’
বাংলাদেশ গ্রাম থেকে সন্ধ্যার দিকে যখন শ্রীনগরে ফিরছি, তখনও কিন্তু একটা খটকা রয়েই গিয়েছিল।
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে ‘ইন্ডিয়া’র বিরোধিতা এবং পাকিস্তানের প্রতি প্রচ্ছন্ন সহানুভূতি নিয়ে এত কথা শোনা যায়, সেই কাশ্মীর কীভাবে পাকিস্তান ভেঙে স্বাধীন হওয়া একটি দেশের জন্মকে ‘সেলিব্রেট’ করেছিল সে প্রশ্নটার জবাব কিন্তু সেদিন বাংলাদেশ গ্রামে পাইনি।
পরে কাশ্মীরি গবেষক ও ‘কে ফাইল’ গ্রন্থের লেখক বশির আসাদ এর একটা চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিলেন।
তিনি জানাচ্ছেন, “সাতচল্লিশে ভারত ভাগ থেকে পরবর্তী তিরিশ বছর কিন্তু সাধারণ কাশ্মীরিদের সমর্থন পুরোপুরি ভারতের দিকেই ঢলে ছিল। ছবিটা তখন মোটেই আজকের মতো ছিল না, বরং কাশ্মীরিরা তখন সবাই পাকিস্তানি দখলদারির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছিলেন।”
“এমন কী সাতচল্লিশ সালের শেষ দিকেই যখন পাকিস্তানি হানাদাররা কাশ্মীরে হামলা চালায়, তখন শ্রীনগর-সহ গোটা ভ্যালিতে তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছিল ‘হামলা আওয়ার খবরদার, হাম কাশ্মীরি হ্যায় তৈয়ার’! মানে তারা তখন পাকিস্তানিদের উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত ছিলেন!”
ফলে একাত্তরের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের দু-টুকরো হওয়াকে কাশ্মীরের একটি জনপদ যে ‘বাংলাদেশ’ নামকরণের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করেছিল, তাতে বশির আসাদ এতটুকুও বিস্মিত নন।
“এমন কী সাতাত্তর সালের আগে জামাত-ই-ইসলামীও কিন্তু কাশ্মীরে সেভাবে পায়ের তলায় জমি পায়নি। ফলে একাত্তরে পূর্ব পাকিস্তানে জামাতের নির্যাতন-অত্যাচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকাটাও অস্বাভাবিক নয়”, বলছিলেন তিনি।
বশির আসাদ আরও মনে করেন, ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে উগ্রপন্থা আর জঙ্গীবাদের রমরমা শুরু হওয়ার আগে কাশ্মীর ছিল সম্ভবত সমগ্র উপমহাদেশেই সবচেয়ে উদার ও সহিষ্ণু একটি সমাজ – কাজেই সেখানে অবাধ গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে চেতনাও ছিল খুব শক্তিশালী।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ’ নামকরণের আর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যাও হয়তো আছে – যার আভাস নিহিত ছিল “কাশ্মীর সরকারের একজন মন্ত্রীই এই পরামর্শ দিয়েছিলেন”, নিসার আহমেদ দারের এই কথাতে।
সে সময় জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ মীর কাশিম।
কংগ্রেসের এই সিনিয়র নেতা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন, কাশ্মীরে কংগ্রেসের সংগঠন গড়ে তোলার কৃতিত্ব অনেকে তাঁকেই দিয়ে থাকেন।
একাত্তরের যুদ্ধ ছিল ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
ফলে তাঁকে সম্মান জানাতে মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মীর কাশিম বা তাঁর কংগ্রেসি মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য নতুন একটি গ্রামের নাম ‘বাংলাদেশ’ রাখার সুপারিশ করেছিলেন, এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সত্যিটা ঠিক কী ছিল, আজ হয়তো তা পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব নয়।
কিন্তু সুদূর উত্তর কাশ্মীরের এক প্রান্তে, সুবিস্তীর্ণ উলার লেকের এক তীরে বাংলাদেশ নামে একটি ছোট্ট গ্রাম যে অর্ধশতাব্দীরও বেশি পুরনো ইতিহাসকে নিজের বুকে আজও ধরে রেখেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
শুভজ্যোতি ঘোষ
জড়ষব,বিবিসি নিউজ বাংলা, বান্দিপোরা

সুদানে দুই বাহিনীর সংঘর্ষ: ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি

আন্তর্জাতিক, 25 April 2023, 1413 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সুদানের সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) তিন দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

banner

স্থানীয় সময় ২৪ এপ্রিল সোমবার মধ্যরাত থেকে ৭২ ঘণ্টার এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।

লড়াই শুরুর পর এর আগে আরও দুইবার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল এই দুই বাহিনী। তবে কোনো পক্ষই তা মানতে সক্ষম হয়নি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার আলোচনার পর সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে।

১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া দুই বাহিনীর এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

সংঘাত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছেন হাজার হাজার মানুষ।

এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছেন যে, সুদানের সহিংসতা একটি ‘বিপর্যয়কর দাবানল’ সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি এটি সমগ্র অঞ্চল এবং তার বাইরেও গ্রাস করতে পারে।

সহিংসতা শুরুর পর থেকে, যুদ্ধ-বিক্ষত রাজধানী খার্তুমের বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকতে বলা হয়েছে।

তবে খাদ্য ও পানির সরবরাহ কম হচ্ছে। কারণ বোমা হামলায় পানির পাইপের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার কারণে অনেক মানুষ নীল নদ থেকে পান করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অনেকে আশা করছেন, এবারের যুদ্ধবিরতি বেসামরিক নাগরিকদের শহর ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে। বিদেশি সরকারগুলো আশা করবে যে, দেশ থেকে তাদের নাগরিকদের অব্যাহতভাবে সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেবে।

দেশগুলো তাদের কূটনীতিক এবং বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কারণ রাজধানীর মধ্য ও ঘনবসতিপূর্ণ অংশে দুই বাহিনীর ব্যাপক লড়াই চলছে।

এর আগে সোমবার ব্লিনকেন বলেছিলেন যে, নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার সময় কিছু দুষ্কৃতকারীরা বিদেশিদের বহরে ডাকাতি ও লুটপাট চালানোর চেষ্টা করেছে।

তিনি যোগ করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুদানে সম্ভাব্যভাবে তার কূটনৈতিক উপস্থিতি পুনরায় শুরু করার দিকে নজর দিচ্ছে।

তবে সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘খুব চ্যালেঞ্জিং’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।

এদিকে সংঘাতের কারণে ‘ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’-এ ভুগছে সুদান। নেট ব্লক্স সোমবার জানিয়েছে, রোববার রাত থেকে খার্তুমে ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে।

ঢাকায় আইওএম’র মহাপরিচালক

আন্তর্জাতিক, 5 May 2024, 673 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ পাঁচ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।

banner

আজ ৫ মে রবিবার দুপুর ১২টার পর ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান আইওএম’র বাংলাদেশ প্রধান আবদুস সাত্তার ইসোভ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পাঁচ দিনের সফরে অ্যামি পোপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।মঙ্গলবার ঢাকায় আইওএম-এর বার্ষিক অভিবাসন বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন অ্যামি পোপ।

আগামী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সফর শেষে ঢাকা ত্যাগ করবেন আইওএমের মহাপরিচালক। ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর আইওএম মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়া অ্যামি পোপের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশি অভিবাসী ও বাংলাদেশে আটকে পড়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে নিবিড়ভাবে কাজ করছে আইওএম।

পাকিস্তানে জনপ্রিয় টিকটকার সানা ইউসুফকে গুলি করে হত্যা

আন্তর্জাতিক, বিনোদন, 3 June 2025, 159 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সানা ইউসুফ (১৭) নামে এক জনপ্রিয় টিকটকারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ২ জুন সোমবার ইসলামাবাদের সুম্বল থানার জি-১৩ সেক্টরে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। খবর প্রকাশ করেছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

banner

পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি সানার নিজ বাড়িতে প্রবেশ করে কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সানাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ বর্তমানে ইসলামাবাদের পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (পিআইএমএস)-এ ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ ধারণা করছে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকারী অতিথি সেজে সানার বাড়িতে ঢুকেছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

সানা ইউসুফ ইসলামাবাদের চিত্রাল এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। অল্প বয়সেই টিকটকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। ফ্যাশন, লিপ-সিঙ্ক, জীবনধারা এবং সামাজিক বার্তা-নির্ভর কনটেন্ট তৈরি করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি এবং হত্যার পেছনে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্যও জানা যায়নি।

সবার আগে নতুন বছরকে বরণ করল নিউজিল্যান্ড

আন্তর্জাতিক, 31 December 2023, 794 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইংরেজি নতুন বছর ২০২৪ সালকে সবার আগে বরণ করে নিল নিউজিল্যান্ড। দেশটির অকল্যান্ডের আইকনিক স্কাই টাওয়ার থেকে স্থানীয় সময় মধ্যরাতে ঘড়ির কাটা ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তাদের উদযাপন।

banner

খবর ডয়েচে ভেল ও বিবিসি। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় সেখানে বর্ষবরণের উৎসব শুরু হয়। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঘড়ির কাঁটা সবার আগে রাত ১২টা ছুঁয়েছে নিউজিল্যান্ডে।

সময়ের তারতম্যের কারণে নতুন বছরকে আগে বরণ করার সুযোগ পায় এমন দেশগুলোর একটি নিউজিল্যান্ড। নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানানোর উৎসবে মেতে ওঠার ক্ষেত্রে বড় শহরগুলোর মধ্যে অকল্যান্ডের সুযোগ আসে সবার আগে।

নতুন বছরকে বরণ করতে অকল্যান্ডের কেন্দ্রস্থলের ১ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতার স্কাই টাওয়ারে ঝুলন্ত একটি বিশাল ঘড়ির সময় দেখে রাত ১২টা বাজার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে সেখানে জড়ো হওয়া মানুষ। শুরু হয় কাউন্টডাউন। আর ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে দেখা যায় আতশবাজির বর্ণিল ছটা।

নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি দেশ হওয়ায় একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় খ্রিস্টীয় নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। দেশটির তথা ওশেনিয়া মহাদেশের বৃহত্তম ও জনবহুল শহর সিডনির বাসিন্দারা সাদরে বরণ করে নেয় ইংরেজি নববর্ষকে।

তবে এবার বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে নববর্ষ শুরু হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ কিরিবাতিতে।

বিশ্বে সবার আগে ইংরেজি ২০২৪ সালকে স্বাগত জানিয়েছে কিরিবাতি। ইএসএ আর্থ অবজারভেশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশটিতে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর ঘোষণা দিয়েছে।