চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় ৪৭ বোতল বিয়ার এবং ৪৭ বোতল বিদেশী মদসহ মোঃ শফিকুল ইসলাম (২২) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার রাতে কসবা পৌর শহরের কসবা-শান্তিপাড়া পাকা রাস্তায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলাম কসবা উপজেলার গঙ্গানগর গ্রামের ধন মিয়ার ছেলে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে কসবা-শান্তিপাড়া রাস্তার পাশ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে তার সাথে থাকা ব্যাগ ও বস্তা তল্লাশী করে ৪৭ বোতল বিয়ারের ক্যান এবং ৪৭ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। আজ রবিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় জহিরুল ইসলাম (৪৫) নামে আটক করেছে কাজিয়াতলি বিওপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম সুতারমুড়া থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত জহিরুল কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে। পরে ওই রাতেই কুমিল্লা কতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের নিকট তাকে সোপর্দ করা হয়েছে।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান সোমবার রাতে কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলি বিওপি’র টহল দল অবৈধ পথে ভারতে পালানোর সময় জহিরুল ইসলামকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাসে সে কাজিয়াতলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে পালানোর চেষ্টার কথা স্বীকার করে। তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে সে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত কুমিল্লা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুলের চাচাতো ভাই। চেয়ারম্যানের ভাই হিসেবে সে অনেক অপকর্মে জড়িত ছিলো। সে কুমিল্লার চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসী। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের দমন-পীড়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা কতোয়ালী মডেল থানায় ৪টি মামলা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে এসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় জসিম উদ্দিন (২৭) নামের এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন।
২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে কসবা-আখাউড়া সড়কের কসবা পৌর এলাকার ফুলতলী হাবিবুল্লাহ মেমোরিয়াল হাই স্কুলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার আদ্রা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জজ মিয়ার ছেলে। তিনি সিলেট সেনানিবাসে সিপাহী পদে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় উপজেলার শাহপুরের সুমন মিয়া নামের এক যুবক আহত হয়েছেন।
কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন জসিম উদ্দিন। সোমবার বিকেলে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হন। কসবা-আখাউড়া সড়কে হাবিবুল্লাহ মেমোরিয়াল হাই স্কুলের সামনে পোঁছালে পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল তার মোটর সাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে জসিম উদ্দিন মোটর সাইকেল নিয়ে সড়কের পাশে গর্তে পড়ে গুরুতর আঘাত পান।
এসময় সুমন মিয়া নামের আরেকজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জসিম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সুমনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। মোটর সাইকেল দুটি পুলিশ হেফাজতে আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় ঘরে ঢুকে এক কিশোরীকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে তার মা, বোন, ভাইসহ চারজন আহত হয়েছেন। আজ ১০ জানুয়ারি বুধবার ভোরে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হোসনেয়ারা আক্তার (১৪) ওই গ্রামের নাছির মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় শ্যামবাড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। আহতরা হলেন হোসনেয়ারার মা নাদিরা বেগম, ছোট বোন ফাহিমা আক্তার (১২), ছোট ভাই নাজমুল ইসলাম (৯) ও নাহিদুল ইসলাম (৭)। তাঁরা কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
নাদিরা বেগম বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। আজ বুধবার ভোরে ফজরের নামাজের আগে তিন-চারজন দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে, আরো কয়েকজন বাইরে ছিল। তারা হোসনেয়ারাকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। তাকে রক্ষা করতে গেলে আমাকেও ছুরিকাঘাত করে। আমার হাত কেটে যায়। আমার একটি মেয়ে ও ছোট দুই ছেলেকেও তারা মারধর করেছে।’
নাদিরা বেগম অভিযোগ করেন, গ্রামে দলাদলি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন এই খুনের সঙ্গে জড়িত।
পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে হোসনেয়ারাকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক মো. ইকরামউল্লাহ বলেন, হোসনেয়ারা নামের ওই কিশোরীকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে। তার মাথায় কয়েকটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে গেছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, ছুরিকাঘাতে হোসনেয়ারা আক্তার নামের এক ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, নিমবাড়ি গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওই গ্রামে আগেও দুটি খুন হয়েছিল। হোসনেয়ারাকে রাতের আঁধারে কে খুন করেছে কিংবা আগের বিরোধের জন্য খুন হয়েছে কি না-জেলা পুলিশসহ একাধিক বাহিনী তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে বেলা দুইটা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় একটি জমির বিদ্যুতের খুঁটির পাশে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটে। এ সময় মাটির নিচ থেকে আগুনের লেলিহান শিখা বের হয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে কসবা উপজেলার কসবা-কুটি চৌমুহনী সড়কের বিশারাবাড়ী নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়।
উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ঈদুল আজহায় ওই গ্রামে জবাইকৃত প্রায় শতাধিক পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে এলাকাবাসী ওই চামড়া মাটির নিচে পুঁতে ফেলেন।
ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পুঁতে রাখা পশুর চামড়া পচে বায়োগ্যাস সৃষ্টি হয়ে বুদবুদ আকারে উদগীরণ হতে থাকে। কোনো কারণে আগুনের সংস্পর্শে আসায় এই ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কোরবানীর পশুর চামড়া পচে গ্যাস সৃষ্টি হওয়ায় বিস্ফোরিত হয়েছে। তবে কসবা প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত। তাই এ বিষয়ে সালদা ও বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আগুনের ঘটনা পশুর চামড়া পচে নাকি প্রাকৃতিক গ্যাসের কারণে হয়েছে তা যাচাই বাছাই করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফের) বাঁধায় দীর্ঘ আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে।
আজ ১২ মার্চ রবিবার বেলা ১১টায় বিজিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম কসবায় প্রকল্প কাজ পরিদর্শনের পর নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের কসবা ও সালদা নদী স্টেশন দুটির অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে হওয়ার কারণে বিএসএফ নির্মান কাজে আপত্তি তুলে। এক পর্যায়ে বিএসএফ’র বাঁধায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
পরে বিভিন্ন পর্যায়ের কুটনৈতিক তৎপরতা এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিএসএফ’র সাথে কার্যকর যোগাযোগ শুরু করে।
অবশেষে আড়াই বছর পর বিএসএফের বাঁধায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বহুল প্রতীক্ষিত আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের কসবা ও সালদা নদী অংশের নির্মান কাজ পুনরায় হয়।
এ ব্যাপারে সরাইল রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান, প্রকল্পটির অসম্পন্ন হওয়া কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে এবং রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন, কোম্পানী ও বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সাথে বিজিবি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে। বিশেষ করে গত বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে বন্ধ থাকা আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে প্রকল্পের বিষয়টি জোরালো ভাবে উত্থাপন করা হয়।
একই বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের নয়া দিল্লীতে বাংলাদেশ ও ভারত প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্পটির বিষয়ে একটি ফলপ্রসু আলোচনা হয়। এছাড়াও অতি স¤প্রতি বাংলাদেশ ও ভারত উভয় রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যেও প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
তিনি জানান, গত ১ মার্চ বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ.কে.এম নাজমুল হাসান আখাউড়া আইসিপি, আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে পকল্পের কসবা ও সালদা নদী স্টেশন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং প্রকল্পটির বন্ধ থাকা কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার দেশের অন্যতম জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক সুুবক্ত গীন জানান, প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডুয়েলগেজ প্রকল্পের সব ধরনের বাঁধা দূর হয়েছে। চলতি বছরই কাজটি শেষ হবে। এতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে সময়ও কমে আসবে।
এ সময় বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আশিক হাসান উল্লাহ, তমা গ্রুপের ট্রেগ ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মহিউদ্দিনসহ বিজিবি ও রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।