চলারপথে রিপোর্ট :
বিয়ে, গায়ে হলুদ, পুজা, খেলা-ধুলা বা মিছিলে বাদ্য বাজানোর জন্য ডাক পরে তাদের। কাঁধে ঢোল ঝুলিয়ে দু’হাতে ঢাকে কাঠির বারি দিয়ে ছন্দের আওয়াজ তুলেন। সেই ছন্দে মানুষ নেচে গেয়ে আনন্দ করে। মানুষকে আনন্দ দিয়েই চলে ঢুলিদের সংসার। পুজা এলেই কদর বাড়ে তাদের। ঢাকের বাদ্য ছাড়া পুজার আনন্দ যেন অসম্পূর্ণ। তাই আসছে দুর্গাপুজায় বাদ্য বাজানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের করুয়াতলী ঋষিদাস পাড়ার ঢুলিরা। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপুজা।
সোমবার দুপুরে ঋষি পাড়ায় ঢুকতেই কানে আসে ঢোলের আওয়াজ টেম-টে টেটেম..টেম.। সেই আওয়াজের ছন্দে শিহরণ জাগায়। মনে করিয়ে দেয় পুজা আসছে। উঠানে গিয়ে দেখা যায় বাদ্যযন্ত্র পরখ করে নিচ্ছেন ঢুলিরা। কেউ বা আঙ্গুলের আলতো ঁেছায়ায় ঢোলে তাল তুলছেন। তাদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক।
ঢুলিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল বাদ্য-বাজনার পেশা ধরে রেখেছে ঋষিদাস পাড়ার ৫/৬টি পরিবার। বিয়ে-গায়ে হলুদ, পুজাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। তাছাড়া ঢাক-ঢোল মেরামত আর মাঝে মধ্যে বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করেও কিছু আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। তবে তাদের ভাষ্য, দিন দিন আয় রোজগার কমে যাচ্ছে। তবু বাপ-দাদার পেশা বলে আকড়ে ধরে রেখেছেন।
ঢুলির সর্দার বিশাম্বর ঋসি প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ডোল বাজাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার বাবা ঢুলি ছিলেন। ১০/১২ বছর বয়স থেকে বাবার সাথে ঢোল বাজাতে বিভিন্ন জায়গায় যেতাম। এভাবেই ঢোল বাজানো শিখি। শখ থেকেই ঢোল বাজানো পেশা হয়ে গেছে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি বাবার পেশা ধরে রেখেছি। প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ঢোল বাজানোর সাথে জড়িত আছি। ২ মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলে আছে তারাও আমার সাথে বাজনা বাজায়।
তিনি আরও বলেন, বছরের অন্য সময় বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে বাদ্য বাজনার ডাক পরে। বছরের ২০/২৫টি অনুষ্ঠান করতে পারি। তবে পুজার সময় কাজের চাপ বাড়ে। এবার দুর্গাপুজায় ৪টি মন্ডপে কাজ পেয়েছি। একটি মন্ডপে ১০/১২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। লোকজনকে দিয়ে নিজের কিছু থাকে। বাপ-দাদা এ পেশায় ছিল। আমিও করছি। আমার ছেলেরাও করবে। তিনি বলেন আয় রোজগারের পাশাপাশি, ভক্ত-বৃন্দ আনন্দ পায় এটাই আমাদের আনন্দ।
কথা হয় রাখাল ঋসির সাথে। তিনি বলেন, ৬৫ বছর বয়স হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই ঢাক-ডোল বাজাই। পুজার সময় রোজগার বেশি হয়। তাই সারা বছর পুজার জন্য অপেক্ষা করি। ঢাক বাজাতে বিভিন্ন জেলাতে চলে যাই। পুজাতে ঢাক বাজিয়ে বেশি আনন্দ পাই। তিনি আরও বলেন, বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে ২/৩ হাজার টাকা পাওয়া যাই। এভাবেই আমাদের সংসার চলে। বয়স হয়েছে। জানি না আর কত দিন ঢোল বাজানোর কাজ করতে পারবো। আখাউড়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক বিশ^জিত পাল বাবু বলেন, পুজার একটি অন্যতম অনুষঙ্গ বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার। এটি আদিকাল থেকেই ছিল। এখনও আছে। তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে আয়ের স্বল্পতার কারণে অনেকেই এ পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ঋষিদাস পাড়ার কয়েকটি পরিবার পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখে কোন রকমে টিকে আছে। আশা করি, সরকারসহ স্থানীয়রা তাদের প্রতি নজর দিবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১২ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। আজ ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে আসেন। তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেন। ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদেরকে দেশে পাঠানো হয়েছে।
দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার জয় হরি রায়ের স্ত্রী। জবা রানী রায় ও তার ছেলে জগদীশ রায়, নেত্রকোনা জেলার কুদরত আলীর মেয়ে মোছা. বিউটি, চাঁদপুর জেলার আবু তাহেরের ছেলে রিয়াদ হোসেন, যশোর জেলার মো. সুবহান মিয়ার মেয়ে বিনা বেগম, একই জেলা মো. আজাদ শেখের ছেলে শেখ সাদি, নওগা জেলার মো. শাহীর আলীর মেয়ে শাহিনা বেগম, জামিলপুর জেলার মো. নরুল ইসলামের ছেলে মো. শামীম মিয়া ও তার ভাই সোহান মিয়া, একই জেলার আকবর আলীর ছেলে মো. ফারুক হোসেন, একই জেলার মো. ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী আসমা বেগম, ঝালকাটি জেলার বিল্পব চন্দ্র অধিকারীর মেয়ে তৃষ্ণা অধিকারী।
দেশে ফেরা এক মেয়ের মা বলেন, আমার মেয়ে ফিরে এসেছে এজন্য আমি খুশি। দালালের মাধ্যমে ভারতে গিয়েছিল বলে তিনি জানান।
ভারত ফেরত জামালপুরের এক নারী (আসমা বেগম) বলেন, আমাকে গার্মেন্টস্ কাজ দেওয়ার কথা বলে আমাকে নিয়ে যায়। বলেছিল ৪০ হাজার টাকা বেতন দিবে। আখাউড়া চেক পোষ্টের সীমান্ত রেখায় উপস্থিত স্বজনরা ভারত ফেরত বাংলাদেশীরদেরকে গ্রহণ করেন।
এসময় আখাউড়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার উপস্থিত ছিলেন। ব্র্যাক মাইগ্রেশন ম্যানেজার সজিব কুমার পান্ডে, ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, ত্রিপুরার সংবাদ পত্রে প্রায়ই দেখছি ত্রিপুরার সীমান্ত দিয়ে নারী এবং শিশু পাচারের ঘটনা ঘটছে। যেহেতু ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বড় সীমান্ত রয়েছে। অনেক জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। দুষ্কৃতিকারীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসব কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি দুদেশই এ বিষয়ে আরও তৎপর হবেন।
তিনি আরো বলেন, ১২ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। পরবর্তীতে তারা ভারতের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে সেখানে একাধিক সেন্টারে রাখা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদক ব্যবসায়ীর ছুরিকাঘাতে আখাউড়া থানার এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ওই পুলিশ সদস্যের নাম মোঃ খাইরুল। তিনি জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন আছেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া থানার এসআই জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযান চলাকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সোহেল ও সেলিমসহ আরও কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে।
এসময় পুলিশ সদস্য মোঃ খায়রুল মাদক ব্যবসায়ী সোহেলকে জড়িয়ে ধরেন। এসময় তাকে পুলিশের হাত থেকে উদ্ধার করতে অপর মাদক ব্যবসায়ী সেলিম পুলিশ সদস্য খায়রুলকে ধারালো ছুরি দিয়ে পেটের বাম পাশে আঘাত করে।
গুরুতর আহত খায়রুলকে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়া হয়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মোঃ আসাদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও হামলাকারীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো। আজ ১৫ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুটি অংশ পৃথক স্থানে পরামর্শ সভা করেছে। আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
সভায় সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অপরটি সভাটি হয় উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আখাউড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি মো. নুরুল হক ভূইয়া। সভায় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মূলত জেলা পরিষদের সদস্য মো. সাইফুল ইসলামের আহবানে সভাটি হয়। দুটি সভাতেই আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। সন্ধ্যার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পৃথক দুটি সভার ছবি ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আগামী ২১ মে ২য় ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২১ এপ্রিল অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ। ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আর মাত্র ৩৫ দিন বাকী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এক ডজনের অধিক নেতাকর্মী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এসব প্রার্থী থেকে প্রতিটি পদে একজন করে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে পরামর্শ সভা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সভায় সকল প্রার্থীকে ডাকা হয়। তবে কয়েকজন প্রার্থী ছাড়া বেশির ভাগ প্রার্থী সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থী ও দলীয় নেতারা প্রতিটি পদে একজন করে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথে পরামর্শ করার সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্তর হবে। এসময় দলীয় কার্যালয়ের সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ার প্রার্থী আবুল কাশেম ভূইয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন বাবুল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনির খান। সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে অনুষ্ঠিত আরেকটি অংশের সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীন, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম হেলাল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. নূরুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ কামাল। সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় সভায় উপস্থিত থাকা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল বলেন, সভায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি পদে একক প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগের প্রার্থী। যেহেতু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আমাদের অভিভাবক। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তাই করবো।
জেলা পরিষদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দেয়নি। সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই আমরা একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী দেওয়ার জন্য পরামর্শ সভা করেছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। প্রার্থীরা আমাদের আমাদের উপর দায়িত্ব দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী (আইনমন্ত্রী) মহোদয়ের সাথে কথা বলবো। তিনি যে দিক নির্দেশনা দিবেন সে অনুযায়ী কাজ করবো।
উল্লেখ্য, প্রায় ২ বছর যাবত উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। এছাড়াও বেশ কয়েকটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলছে কয়েকটি কমিটি।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আখাউড়ায় ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ছুরিঘাতে আহত পাপন (২৭) নামে এক যুবককে উদ্ধার করেছে বিজিবি ও পুলিশ। আজ ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের রাজাপুর এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত যুবক হলো উত্তর ইউনিয়নের রামধননগর গ্রামের নুরুল হকের পুত্র। তার বাম হাতে ও কপালে ছুরিকাঘাত এবং নাকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খবর পেয়ে ২৫ বিজিবি (সরাইল) এর অধিনায়ক কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ এবং আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। আহত যুবককে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। তবে ওই যুবক অচেতন অবস্থায় থাকায় কারা তাকে মারধর করেছে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তার স্বজনরা এলাকায় না থাকায় তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসী ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সকালে আজমপুর বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহল দল সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় এক যুবককে অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। খবর পেয়ে ২৫ বিজিবি (সরাইল) এর অধিনায়ক কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ঘটনাস্থলে যান। পরে বিজিবি ও পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করে।
হাসপাতালে পাপনের প্রতিবেশি জুম্মান মিয়া বলেন, পাপন বিল্ডিংয়ের কারুকাজ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে।
এ ব্যাপারে ২৫ বিজিবি (সরাইল) এর অধিনায়ক কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, বিজিবি টহল ওই যুবককে দেখতে আমাকে অবগত করে। আমি ঘটনাস্থলে সকলের উপস্থিতিতে তাকে উদ্ধার করি। তবে সে কীভাবে সেখানে গেল এবং কারা তাকে মারধর করেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের শেষে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে হিসাবে নির্বাচনের আরও বাকী আছে প্রায় ৮ মাস। অনেকটা আগে ভাগেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করছেন কসবা- আখাউড়ার সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি। ২ মে মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করবেন তিনি। সোমবার সকালে আখাউড়ায় সাংবাদিক সস্মেলন করে মন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ নির্বাচনী প্রচারণার তথ্য তুলে ধরেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। সাংবাদিক সম্মেলনে আখাউড়ার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ২০১৪ সাল থেকে পরপর দুই মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কসবা আখাউড়ায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। গত ১০ বছরে আইনমন্ত্রী এলজিইডি এবং পিআইও দপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ৩২০ কোটি টাকার উন্নয়ণ করেছেন। এছাড়া পৌরসভার মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা এবং পৌরসভার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবন মেরামতের জন্য এক কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গণপূর্ত, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুত বিভাগ, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
কসবা আখাউড়াবাসীর সার্বিক উন্নয়ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দর্শন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জনগণের সমর্থনের মাধ্যমে আনিসুল হককে আবারও এমপি নির্বাচিত করে এলাকার উন্নয়নে অংশীদার হতে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয় সাংবাদিক সম্মেলনে।
তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনী প্রচার করা যায় কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি বলেন উনি উনার জনগণের সাথে গণসংযোগ করতে মনে হয় এতে কোন সমস্যা হবে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এ আসনে আনিসুল হক আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাবেন এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। সাংবাদিক সম্মেলনে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আতাউর রহমান নাজিম, আব্দুল মমিন বাবুল, আওয়ামীলীগ নেতা দীপক ঘোষ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।