অনলাইন ডেস্ক :
২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি ইইউ’র সদর দপ্তরের বেশ কয়েকটি চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এক বিবৃতিতে বলেন, আমি আশা করি যে, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আমাদের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ভন ডার লেয়েন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো অর্থায়ন চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি চুক্তি সই প্রত্যক্ষ করেন।
শেখ হাসিনা বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে চায়। তিনি বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রিত ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি দ্রুত এই সংকটের একটি টেকসই সমাধানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে ইইউ’র প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
অনলাইন ডেস্ক :
আবারও বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় স্থান পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের করা তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের ৪৬ তম প্রভাবশালী নারী তিনি। ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ফোর্বসের ওয়েবসাইটে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিশ্বজুড়ে রাজনীতি, মানবসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য, গণমাধ্যম, অর্থনীতি ও প্রযুক্তিখাতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসা প্রভাবশালী নারীদের মধ্য থেকে ১০০ জনকে বেছে নিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস।
এই বছর সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন ১ নম্বরে রয়েছেন। তারপরে আছেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস রয়েছেন তৃতীয় স্থানে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি রয়েছেন চতুর্থ অবস্থানে।
আর তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন মার্কিন পপ তারকা টেইলর সুইফট।
তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন ৪৬তম স্থানে।
গত বছর এই তালিকায় তার অবস্থান ছিল ৪২তম-তে। এর আগে ২০২১ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় ৪৩তম স্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা। আর ২০২০ সালে ছিলেন ৩৯তম স্থানে।
অনলাইন ডেস্ক :
নতুন প্রজন্মকে ধর্মকে ধর্মের জায়গায়, রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রের জায়গায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্ম, ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্র একাকার হতে পারে না। তাহলে ধর্মও রক্ষা হয় না, রাষ্ট্রও চলে না। রাষ্ট্র ধর্মকে তার নিজের প্রয়োজনে তার সব অপকর্মের সাফাই হিসেবে ব্যবহার করে। বর্তমান সংবিধান বৈপরীত্যে ভরা।
আজ ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংবিধান : ক্ষমতার না জনতার’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘যখন যে সরকার ছিল সে তার দলের স্বার্থে, দলকে ক্ষমতার রাখার স্বার্থে, ক্ষমতাকে দীর্ঘায়ু করতে সংবিধান সংশোধন করেছে। চতুর্থ সংশোধনী রাষ্ট্রের পুরো কাঠামো ভেঙে দিয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার এসেছে। বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা পুরাপুরি নির্বাহী বিভাগের হাতে দিয়ে সেপারেশন অব পাওয়ারকে মুছে ফেলা হয়েছে।
বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন না হয় তখন সেই রাষ্ট্রটা আর রাষ্ট্র থাকে না।
রুমিন ফারহানা বলেন, ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলছি আবার একি সঙ্গে ১১৬ অনুচ্ছেদ রাখছি যেটা দিয়ে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় রাষ্ট্রপতির কাছে। এখন প্রশ্ন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কতটুকু। ৪৮-এর (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে সবকিছু করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে।
বাংলাদেশে কারা রাষ্ট্রপতি হন? তাদের কি এতটুকু ক্ষমতা আছে প্রধানমন্ত্রীর বাহিরে গিয়ে একটা হাঁচি দেওয়ার। এ জন্য আগে আওয়াজ তুলেন বাংলাদেশে আর কোনো দলীয় রাষ্ট্রপতি চান কিনা।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৮(ক)-তে বলা হচ্ছে সমাজতন্ত্রের কথা। সমাজতন্ত্র তো দূরে থাক আমরা কি ন্যূনতম একটা কল্যাণরাষ্ট্র তৈরি করতে পেরেছি। যদি আমাদের রাষ্ট্র কল্যাণরাষ্ট্র হতো তাহলে তো স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা এসব খাতে আমরা জিডিপির ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতাম, কিন্তু না আমরা দিচ্ছি কত? প্রতি বছর বাজেট আলোচনায় আমরা দেখি জিডিপির মাত্র এক বা দুই শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
যেখানে আমরা একটা কল্যাণরাষ্ট্র তৈরি করতে পারিনি সেখানে কি করে আমরা সমাজতন্ত্রের কথা বলি। সুতরাং এই গঠনতন্ত্র আপনারা রাখবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সংবিধানের ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে আমরা জাতি হিসেবে বাঙালি, বাংলাদেশে কি চাকমা, মারমাসহ নানা জাতি নেই, তাদের আলাদা ভাষা, সংস্কৃতি নেই? আছে কিন্তু আমাদের এই সংবিধানটি সেটাকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে যে সুযোগটা তৈরি করেছিলাম তা ১৯৭৩ সালে এসেই শেষ করে ফেলেছি। জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি করে। আমরা ১৯৯০ সালেও একটা সুযোগ তৈরি করেছিলাম তাও ধরে রাখতে পারিনি, আমরা ২০২৪ সালে এসে আরেকটা সুযোগ পেয়েছি, এই সুযোগটা আমরা কাজে লাগাব না বেহাত করব তা নির্ভর করছে এই প্রজন্মের ওপর।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজার মুহাম্মদ শাওলীনের সঞ্চালনায় আরো আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমীন্দ নিলোর্মী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। সেখানে বেশির ভাগ দক্ষ জনগোষ্ঠী প্রয়োজন পড়বে। দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
আজ ১৫ জুলাই শনিবার রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে `স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলনে’ প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনকিউবেটর সেন্টার তৈরি করে কম্পিউটার ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেছি। তাছাড়া স্কুল লেভেল থেকে কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি, সেখানে ট্রেনিং দিচ্ছি। পাশাপাশি ন্যানো টেকনোলজির জন্য একটি আইনও করে দিয়েছি। ন্যানো টেকনোলজির ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। আইন ইতিমধ্যে কেবিনেট অনুমোদন দিয়েছি। দ্রুতই আইন পার্লামেন্টে পাস করে দেব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে ওঠে সে জন্য এসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
সরকার বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় পরিকল্পনা নিয়েছিলাম সরকারে গেলে কী করব। আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। ব্যবসা-বাণিজ্যে বেসরকারি খাতকে আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ব্যাংক, বিমা, হেলিকপ্টার সার্ভিস, বিমান থেকে শুরু করে বেসরকারি টেলিভিশন, শিল্প, কলকারখানা, হাসপাতাল, যা কিছু যেখানে দরকার সবকিছু তৈরি করার জন্য বেসরকারি খাতকে সব থেকে গুরুত্ব দিয়েছি। শিল্প, কলকারখানা বা বিনিয়োগ যদি না হয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। অনেক বাধা অতিক্রম করে আমাদের এসব করতে হয়েছে। অনেক পরামর্শদাতা বিদেশ থেকে এসে পরামর্শ দিত, এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। সরকার গঠনের আগেই এই পরামর্শ শুনতে হয়েছে। আমার একটাই কথা ছিল, দেশটা আমাদের, মাটি ও মানুষও আমাদের। তাদের ভালো মন্দ কী হবে সেটা আমরা বুঝি, জানি। আমরা আমাদের মতো করেই করব।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের দেশের জনগণ হবে স্মার্ট সিটিজেন, আমাদের ইকোনোমি হবে স্মার্ট ইকোনমি, আমাদের সমস্ত গভর্নমেন্টকে আমরা স্মার্ট গভর্নমেন্ট করতে চাই, পাশাপাশি আমাদের সমাজ হবে স্মার্ট সোসাইটি। এভাবে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০০৮ সালে ঘোষণা দিয়েছিলাম, দিন বদলের সনদ, রূপকল্প ২০২১। আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। ফলে আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এখন আমরা শিল্প কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে স্মার্ট ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে চাই। সে ক্ষেত্রে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি, রোবোটিক, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিজিটাল ডিভাইসে।
তিনি বলেন, শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না স্বপ্ন বাস্তবায়নেরও চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এখানে যেমন বয়স্ক অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরা আছেন, আবার নতুন প্রজন্মের ব্যবসায়ীরাও আছেন। আমাদের যুব সমাজকে আমরা সেভাবে উৎসাহিত করতে চাই, তারা নিজেরাই মাস্টার হবে, নিজেরাই উদ্যোক্তা হবে, নিজেরাই চাকরি দেবে, সে যোগ্যতা তারা অর্জন করবে। সেজন্য ইতিমধ্যে স্ট্যাটাস প্রোগ্রাম আমরা কার্যকর করেছি। স্ট্যাটাস প্রোগ্রামের পাশাপাশি তাদের জন্য স্পেশাল ফান্ডও রেখেছি আমি বাজেটে। কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে এক ব্যক্তি যাতে একাধিক কোম্পানি খুলতে পারে সেই ব্যবস্থাও নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসা করি না। কিন্তু আমরা ব্যবসায়ীকে উৎসাহিত করা, সুযোগ সৃষ্টি করা, সুবিধার তৈরি করে দেওয়া, পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া এবং সেই সুযোগ নিশ্চিত করে ব্যবসাবান্ধব সরকার আমরা নিশ্চিত করেছি। সেটা আপনার উপলব্ধি করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দল-মত নির্বিশেষে কে কোন দলের আমরা কিন্তু সেটা দেখিনি। কে কোন ব্যবসা করে, কার কারণে দেশের মানুষ লাভবান হচ্ছে সেটাই আমার কাছে বিবেচ্য। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যার যতটুকু প্রয়োজন সুযোগ সুবিধা আমরা কিন্তু সেটা দিই। এটা বলতে পারি আমরা কিন্তু হাওয়া ভবন খুলিনি, স্বাধীন মতো ব্যবসা করতে পারেন সেই ব্যবস্থাটাই করে দিয়েছি। অর্থাৎ সরকার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দেবে, অবকাঠামো উন্নয়ন করে দেবে। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে ব্যবসায়ী-বান্ধব সরকার। সেটা নিশ্চয়ই আপনারা টের পেয়েছেন। আমি চাই, ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাক।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আর এক একটা কাজ করতে গিয়ে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়। মেট্রোরেল করার সময় শুনতে হলো, ‘৩৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে মেট্রোরেল করার কী দরকার। ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করলেই তো নাকি সব সমাধান হয়ে যায়।’ অবশ্য ভালোই একদিকে। আমি বেসরকারি খাতে অনেক টেলিভিশন দিয়েছি, সেখানে সবাই টকশো করে আর টক টক কথা বলে। সেই টক টক কথা শুনতে হয়। মাঝে মাঝে আমি বলি, আপনারা শুধু টক টক বলেন কেন? কথা যদি টক-ঝাল-মিষ্টি হয় তখন না সুস্বাদু হবে।
তিনি বলেন, একজন বলে দিলেন, ‘এতো টাকা খরচ করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল করার কী দরকার ছিল।’ মানে আপনি যাই করতে যান, কিছু লোকের মানসিকতাই হচ্ছে কিছুই ভালো লাগে না। তাই কিছুই ভালো লাগে না লোকের কথা ভুলে গিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য যা করা দরকার সেটাই করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশের সঙ্গে সেই ৮১ সালের বাংলাদেশের অনেক তফাৎ। অনেকেই বলেছিলেন যে, ‘এতো ব্যাংক দিয়ে কী হবে? বাংলাদেশের অর্থনীতি তো এত বড় না।’ আমার কথা ছিল, অর্থনীতি তো এতো ছোটো থাকবে না। অর্থনীতি বড় করার জন্যই তো আমাকে ব্যাংক দিতে হবে। কাজেই সেভাবেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ সময় নতুন বাজার খুঁজতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেন, ইউরোপ-আমেরিকায় মন্দা চলছে। সেখানে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। তাছাড়া সেখানে রপ্তানি খরচও বেড়ে গেছে। এজন্য বিকল্প বাজার খোঁজতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের ‘বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালে’ বেশি বিল হওয়ায় তা পরিশোধ করতে না পেরে এক মাস বয়সী মেয়ে হাসপাতালে ফেলে উধাও হয়ে যান মা-বাবা। পরবর্তীতে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে ওই শিশুকে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
আজ ২২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট এ বিল পরিশোধ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। এর আগে ১২ আগস্ট শনিবার এমন ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে শিশুটির মা-বাবার কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়।
জানা যায়, শিশুটি নরদিংদী মনােহরপুরের রজত চন্দ্র এবং সুজাতা দম্পতি মেয়ে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মােস্তফা জানান, এক মাস পূর্বে শিশুটি তাদের গ্রামের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর থেকে শিশুটি হার্টের ছিদ্র সমস্যাটি নিয়ে ভুগছিলেন। কোনো উপায় না দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে তার মা বাবা ঢাকায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মাতুয়াইল মা ও শিশু ইনস্টিটিউটে এনআইসিইউ না পেয়ে সাইনবোর্ডের নবজাতক হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে এনআইসিইউ থাকা অবস্থায় শিশুটি সুস্থ হতে থাকেন। এমন প্রেক্ষিতে সবমিলিয়ে হাসপাতালের বিল দুই লাখ টাকার বেশি হলে শিশুটির মা-বাবা টাকা ম্যানেজ করে নিয়ে আসবে বলে উধাও হয়ে যান। এভাবে ৬-৭ দিন চলে যাওয়ার পর শিশুটি মা-বাবা ফেরত না আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানায়। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেলের নির্দেশে মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। অতঃপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমাদের সাধ্যমতো বিল পরিশোধ করে শিশুটিকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেই। বর্তমানে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। এমন মানবিক কাজ করতে পেরে আমরা খুব খুশি এবং ভবিষ্যতেও পেশাগত কাজের পাশাপাশি আমরা এসব মানবিক কাজ অব্যাহত রাখবো।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শিশুটির মা-বাবা জানান, আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় আমরা কোনোভাবেই বিল পরিশোধ করতে পারছিলাম না। এর মধ্যে দু’দিন আগে শিশুটার নানী মারা যান। কোনো উপায় না পেয়ে আমরা এ কাজ করি। পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আমাদের ফোনে আশ্বস্ত করে আজ আমাদের শিশুটিকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার পাশাপাশি তারা বাচ্চাটিকে লালন-পালন করার জন্য আরও কিছু টাকা দেয়। তারা আমাদের যে উপকার করলো সেজন্য পুলিশের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালের ম্যানেজার মোশাররফ হােসেন জানান, গত ২৯ জুলাই ওই শিশুটি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হোন। গত ২৪ দিন ধরে সে ডা. মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধায়নে এনআইসিইউতে ভর্তি ছিল। পরবর্তীতে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে গেলে আমরা তাদের বিল পরিশোধ করে বাচ্চাটিকে নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু এরপর তারা উধাও হয়ে গেলে আমরা পুলিশের শরণাপন্ন হোই। আজ বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। পুলিশের এই মানবিক কাজের সঙ্গে আমরাও তাদের অংশীদার হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধন্য মনে করছে।