নবীনগরে সেতু ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে ৪ গ্রামের বাসিন্দা

নবীনগর, 29 October 2023, 988 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কেদেরখলা খালের ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে ভেঙে গেছে। চার গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তায় অবস্থিত সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

banner

কাঠের সেতু ব্যবহার করে জেলা ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকেন বিল এলাকায় অবস্থিত কেদেরখলা, শুভারামপুর, তিলকিয়া ও দুর্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া বীরগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বীরগাঁও সোবহানিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাশমৌজা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও মালিক ভরসার মাজারের ভক্তদের সেতুটি পারাপার হতে হয়।

এলাকাবাসী জানান, পাঁচ বছর আগে উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের ওই চার গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারি ও স্থানীয় ব্যক্তিদের যৌথ উদ্যোগে কেদেরখলা খালের ওপর একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়। ৪ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি চার গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দার যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। কয়েক মাস আগে সেটি ভেঙে পড়লে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেদেরখলা খালের ওপর ভেঙে যাওয়া কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, নারী-শিশু ও বৃদ্ধদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আলাপকালে দুর্গারাম গ্রামের স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, সরদার মোছেন মিয়াসহ কয়েকজন জানান, সেতুটি ভেঙে পড়ায় এলাকাবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভাঙা সেতু পার হতে গিয়ে নিচে পড়ে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত কাঠের সেতুটি সংস্কার ও খালের ওপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বর্ষাকালে কচুরিপানা এসে কাঠের পুলের নিচে জমা হয়ে যাওয়ায় এটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। মেরামত করা হলেও ভেঙে যায়। জনদুর্ভোগ কমাতে সেখানে উঁচু একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

নবীনগর : ঈদ বাজারে দাম বেশিতে ক্ষোভ

নবীনগর, 4 April 2024, 757 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত চলছে ঈদের কেনাকাটা। গত ৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে উপজেলার সদর বাজারসহ অন্যান্য কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। ছোট বড় শপিং মলের পাশাপাশি বিক্রি বেড়েছে ফুটপাতেও।

banner

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নবীনগর উপজেলার শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান ও রাস্তার পাশের ফুটপাতে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের নতুন চালান থেকে বেছে নিচ্ছেন অভিভাবকসহ তরুণ তরুণীদের ড্রেস ও প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই শিশুরাও, অভিভাবকরা শিশুদের জন্য কিনছেন বাহারি রকমের পোশাক। ঈদ বাজার জমজমাট হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও। আধুনিক সমবায় সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পুরো পরিবার নিয়েই অনেকে হাজির হয়েছেন শপিং মার্কেটে। নবীনগর পৌর এলাকার পূর্ব পাড়ার মুসা মিয়া বলেন, প্রবাস থেকে দেশে ফিরে এসেছি বন্ধুবান্ধবসহ পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করব। পরিবার ও নিজের জন্য ঈদের কেনাকাটা করছি।

ঈদের শপিং করতে আসা বিদ্যাকুট গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ঈদের কেনাকাটা করবো বলেই উপজেলার সদর বাজারে আসছি কিন্তু এ বছর তুলনামূলক সবকিছুর দাম বেশি মনে হচ্ছে। সমবায় মার্কেট থেকে শার্ট ও প্যান্ট কিনেছি, এখন জুতা কিনতে সালাম রোডের দিকে যাচ্ছি।

রসুলাবাদ থেকে আসা আফরোজা বেগম বলেন, ঈদের কেনাকাটা করতে নবীনগর বাজারে আসছি। ঈদের জন্য জামা কাপড় কিনেছি। ছেলে ভাইনা করেছে নীল রঙের ঘড়ি কিনবে, ঘড়ির দোকানে যাচ্ছি। দামের বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাম একটু বেশি।

পৌর এলাকা রাজ্জাক মিয়া বলেন, গত দুই মাস আগে যে শার্ট ৫০০-৭০০ টাকায় কিনেছি এখন তা ৮০০-১০০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

খাজানগর গ্রামের রহিছ মিয়া জানান, ঈদের কেনাকাটা করতে পরিবার নিয়ে শপিংমলে আসছি। গত বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের দাম বেশি মনে হচ্ছে। একটি থ্রি পিস কিনতে গেলে ৩২০০ টাকা দাম বলেন, যা পরে আমার কাছে ১১০০ টাকা বিক্রি করেন। নির্ধারিত মূল্য তালিকা না থাকায় ঈদকে সামনে রেখে কিছু দোকানদাররা এই সুবিধা নিচ্ছেন বলে তার অভিযোগ। তুলনামূলক রাস্তার পাশের অস্থায়ী দোকানগুলোতে এবছর বেড়েছে বিক্রির পরিমাণ। শপিংমল গুলোতে মূল্য বেশি হওয়ায় অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে। এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে বৈশ্বিক মন্দার কারণে আগের চেয়ে সব পণ্যের দাম চওড়া। তাই আমাদের কিনতে হয় বেশি দামে। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারাও দেখে শুনে যাচাই করে নিচ্ছেন

মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ফয়জুর রহমান বাদল

নবীনগর, 30 November 2023, 976 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে দ্বিতীয়বারের মতো নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান।

banner

আজ ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে সহকারী রিটার্নিং ও নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ফরহাদ তানভীরের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ, মেয়র শিব শংকর দাস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ, সদস্য গুলাম শাহরিয়ার বাদল, পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমুখ।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ফয়জুর রহমান বাদল নেতাকর্মীদেরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নির্বাচনী বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। সেই সঙ্গে সবাইকে নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করতে হবে।’

২০১৪ সালে তিনি নৌকার প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন তিনি।

নবীনগরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়াচ্ছে গুঞ্জন পাঠাগার

নবীনগর, 24 July 2023, 1233 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়াচ্ছে গুঞ্জন পাঠাগার। মাত্র ৩টি বই নিয়ে যাত্রা করা গুঞ্জন পাঠাগারে এখন বইয়ের সংখ্যা ১০ হাজার। গ্রামের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা এই পাঠাগারের বই দিয়ে পড়াশুনা করে। ২০০৪ সালের ৩০ মার্চ ছোট একটি টিনের একচালা ঘরে যাত্রা শুরু করা পাঠাগারটি এখন ১ তলা বিশিষ্ট ভবন।

banner

গুঞ্জন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা স্বপন মিয়া (৩২)। তিনি নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামের মরহুম স্বপন মিয়ার ছেলে। বর্তমানে স্বপন মিয়া জেলার কসবা উপজেলার একটি বেসরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক।

স্থানীয়রা জানান, ছোট বেলা থেকেই বইয়ের প্রতি আগ্রহ ছিলো স্বপন মিয়ার। ২০০৪ সালে স্বপন মিয়া যখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তখনই তিনি তার বাড়ির একটি টিনের ঘরে মাত্র তিনটি বই দিয়ে পাঠাগারটি চালু করেন। পাঠাগারের নামকরন করেন “গুঞ্জন পাঠাগার”। প্রায় ১৯ বছরে পাঠাগারটি এখন ১০ হাজার বইয়ে সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার। পাঠাগারে গ্রামের ছেলে মেয়েরা এক সাথে স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন লেখকের বই পড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র দেড় বছর বয়সে পিতাকে হারান স্বপন মিয়া। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন মা রাজিয়া খাতুন। তিনি মাটি কাটার কাজ করে সন্তানদের খুবই কষ্টে লালন-পালন করেন। স্বপনের দুই ভাই রিকশা চালক।

স্বপন মিয়া যখন গ্রামের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তখনই একটি পাঠাগার গড়ার চিন্তা মাথায় আসে তার। তখন তিনি পরিবারের সদস্যদের অমতে একটি এনজিও থেকে ৮ হাজার টাকা ঋন নিয়ে বাড়ির জায়গায় একটি ছোট একচালা টিনের ঘর তৈরী করে মাত্র তিনটি বই দিয়ে গুঞ্জন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন।

পাঠাগারটি নিয়ে স্বপনের পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। বড় দুই ভাই তাকে শর্ত দেন, পরিবারে থাকতে হলে পাঠাগার ছাড়তে হবে। কিন্তু স্বপন পরিবারকে ছেড়ে পাঠাগারকে আকড়ে ধরে রাখেন। পরবর্তীতে স্বপনের মা রাজিয়া খাতুন স্বপনকে সম্মতি দেন।

এক পর্যায়ে নিজের পড়াশুনা, সংসার আর পাঠাগার দেখাশুনা করতে স্বপন মিয়া দিন-মজুরি শুরু করেন। পথে ঘাটে ফেরি করে পান-সিগারেটসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন তিনি। তবুও পাঠাগারটি বন্ধ করেননি।

উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি।

পরে তিনি মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সোয়া ২ শতাংশ জায়গা পাঠাগারের নামে দান করে সেখানে ঋণের টাকায় একতলা বিশিষ্ট পাকা ভবন করেন। পাঠাগারেই রাত্রিযাপন করেন তিনি। কলেজ থেকে যে টাকা বেতন পান, তার বেশির ভাগই ব্যয় করেন এই পাঠাগারে।

বর্তমানে প্রতি শুক্রবারে পাঠচক্র বসে পাঠাগারে। সেখানে শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজন করা হয় সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগীতার।

নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামের রমজান জানান, তার পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় তার পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বাধ্য হয়ে তিনি বাবার সাথে কৃষি কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে স্বপন তাকে গুঞ্জন পাঠাগারে নিয়ে আসেন। এই পাঠাগারে থাকা বই দিয়েই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান। অনার্স শেষ করে বর্তমানে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাস্টার্স করছেন।

নবীনগর উপজেলার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওহীদ জাহান চৌধুরী জানায়, সে নিয়মিত গুঞ্জন পাঠাগারে গিয়ে বই পড়ে সে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সবধরনের বই আছে এখানে। এছাড়া তার কয়েকজন সহপাঠীও পাঠাগারে এসে বই পড়ে।

উপজেলার কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক রোকসানা জেবিন মলি জানান, গুঞ্জন পাঠাগারের মনোরম পরিবেশ যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। পাঠাগারটি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সবার মাঝে।

পাঠাগারে নিয়মিত আসা পাঠক ও কসবা উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তুহিন কান্তি দাস বলেন, নবীনগর তথা পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য আলোর দিশারী হয়ে দাঁড়িয়েছে গুঞ্জন পাঠাগারটি। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি ও বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে পাঠাগারটি।

পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা স্বপন মিয়া বলেন, পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও অনেক ব্যক্তি তাকে সহায়তা করেছেন। যার জন্য তিনি পাঠাগারটিকে একচালা টিনের ঘর থেকে পাকা ভবন তৈরি করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ‘সমাজে আমার মতো অনেকেই আছে- যারা বই কিনে পড়তে পারে না। অর্থের অভাবে অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তাদের কথা চিন্তা করেই পাঠাগারটি করা হয়েছে। এই পাঠাগারের জন্য আমাকে পরিবার থেকে আলাদা হতে হয়েছিল। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আমি রাস্তায় ফেরী করে পান-সিগারেট বিক্রি করেছি। তবুও পাঠাগারটি বন্ধ হতে দেইনি।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই পাঠাগারের বই পড়ে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। সুহাতা গ্রাম আলোকিত হয়েছে গুঞ্জন পাঠাগারের আলোতে। আমি চাই জ্ঞানের এই আলো ছড়িয়ে পড়–ক সবখানে।

এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, পাঠাগারের জন্য স্বপন তার নিজের ব্যক্তি জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছে। গুঞ্জন পাঠাগার শুধু জ্ঞানের আলোই ছড়াচ্ছে না, ছেলে-মেয়েদের মাদক থেকেও দূরে রাখতে সহায়তা করছে। বই পড়ার কারণে মেধার বিকাশ হচ্ছে, জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে।

নবীনগরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন একেএম মামুন

নবীনগর, 24 August 2024, 520 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এম মামুন অর রশীদ আজ ২৪ আগস্ট শনিবার নবীনগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এসময় তিনি দেশে বন্যা কবলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে সকলকে তাদের পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান।

banner

আলোচনা কালে তিনি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই ফ্যাসিবাদি দলটি রাষ্টের প্রতিটি স্তম্ভ ও প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতির আতুড়ঘর বানিয়েছে। তাদের দুঃশাসনে পঙ্গু হওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সময় প্রয়োজন।

তিনি অন্তর্বর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা যৌক্তিক সময়ের নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন, আমি আমার জন্মভূমি নবীনগরে তৃণমুল রাজনীতি থেকে উঠে এসে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এসেছি। আমি নবীনগরবাসির পাশে থাকতে চাই। আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি বড় দল হিসাবে গ্রুপিং থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে, গ্রুপিং না থাকলে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন হয় না ঠিক কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ। দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। মতবিনিময়কালে তিনি প্রেসক্লাবের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন।

প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সৌরাফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সাদেকুল হক সাদির, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জহিরুল হক জুরু মিয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবুল, পৌর কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার খান, বিএনপি নেতা রাজন দে, কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহিম ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

ইফফাত সুলতানা তমা নবীনগরের প্রথম নারী ব্যারিষ্টার

নবীনগর, 18 February 2023, 1691 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের ভোলাচং গ্রামের কৃতি সন্তান নবীনগর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি, নবীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খায়েরএর ছোট মেয়ে ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে এল এল বি এবং ইউনিভার্সিটি অফ বিপিপি থেকে বার- এট – ল ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নবীনগর উপজেলায় তমা এই প্রথম নারী বার- এট – ল ডিগ্রি অর্জন করেন। এতে তার পিতার স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। তার এই অর্জনে নবীনগর বাসী খুশী। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায়ে অনেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

banner

শিক্ষা জীবনে তমা নবীনগর কল্লোল কিন্ডার গার্ডেন থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করেন। তারপর ঢাকার উত্তরা রাজউক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীণ হন।
তমা একজন নিবেদিত প্রাণ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নবীনগরের সর্বস্তরের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এবং সমাজ ও মানুষের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সকলের দোয়া কামনা করেছেন।