চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির ডাকা মহাসড়ক অবরোধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনের নিরাপত্তা এবং চালকদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য আজ ১ নভেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিশেষ টহল দিয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনী।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শাহগীর আলমের নেতৃত্বে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর পৌনে দুইটা পর্যন্ত এই দুই মহাসড়কে টহল দেয়া হয়।
সকালে জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, গোয়েন্দা পুলিশ, পুলিশের বিশেষ শাখাসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি গাড়ি বহর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত মহাসড়কে বিশেষ টহল দেয়। এ সময় দেখা যায় মহাসড়কে ট্রাক,মাইক্রোবাস, আন্তঃজেলা লোকাল বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকসাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়াও দূরপাল্লার বাস এনা পরিবহনের কয়েকটি বাসও মহাসড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বিশেষ টহল দেয়ার সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের ( সরাইল ব্যাটালিয়ন) লেঃ কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরাম উল্লাহ, র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের নাশিদ হাসান, জেলা আনসার ও ভিডিপির অ্যাডজুটেন্ট, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার উদ্দিনসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টহল শেষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অবরোধ থাকলেও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। তিনি বলেন, মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল একটু কম হলেও সময়ের সাথে সাথে তা বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, কেউ কোন ধরনের বিশৃংখলার চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবেনা।
এ ব্যাপারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, অবরোধের শুরু থেকেই আমরা মহাসড়কের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। তথাকথিত অবরোধ থাকলেও মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। সব কিছু স্বাভাবিক আছে। তবে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা একটু কম। এর প্রধান কারণ হচ্ছে যাত্রী স্বল্পতা। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেছেন, দীর্ঘদিন যাবত কমিটি বিহীন একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিনত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটকে গতিশীল করে আর্ত মানবতার একটি কার্যকর সংগঠনে পরিনত করা হবে।
আজ ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার ইউনিটের কার্যনির্বাহী কমিটি সভা ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং সুইজারল্যান্ড রেডক্রস সোসাইটির যৌথ উদ্দ্যেগে ‘‘ব্রাঞ্চ ক্যাপাসিটি ডেভালেপমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়ন’’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ইউনিটের সেক্রেটারী আলহাজ্ব মোঃ শাহ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রোগ্রাম ম্যানেজার তুহিন সমদ্দার, সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা আলবী রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জায়েদুল হক, প্রেসক্লাব সেক্রেটারী বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাদেকুর রহমান শরীফ, আশিকুর রহমান পাঠান, মাসুকুল কবির, সালা উদ্দিন সরকার, ইউনিট কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম, যুব রেড ক্রিসেন্টের আফরিন ফাতেমা জুঁই, মনির হোসেন ও ফাহিম মুনতাছির প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
স্থানীয় পৌর কমিউনিটি সেন্টারে প্রয়াত প্রিয় পাঁচ বন্ধুজন স্মরণে গতকাল শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাদল স্টল কেন্দ্রিক বন্ধু মহল এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে কুরআন খানি ও দোয়া মাহফিল।
প্রয়াত ৫ বন্ধুরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, জেলা বিএনপির আহবায়ক, সদা হাস্যজ্জল ব্যক্তিত্ব মোঃ জিল্লুর রহমান, সজ্জন ও মৃতভাসি মাহবুবুল আলম ফারুক, জেলার সুশীল সমাজের প্রিয় মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক নাজু ও সুপরিচিত সামাজিক ব্যক্তিত্ব সফিউদ্দিন আহমেদ রতন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, তিতাস পাড়ে অভাবনীয় উন্নয়নের সফল রূপকার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। তিনি তাঁর বক্তব্য বলেন, প্রয়াত ৫ বন্ধু জনের মধ্যে আল মামুন সরকার জিল্লুর রহমান নাজমুল হক নাজু ও শফিউদ্দিন আহমেদ রতনকে আমি ভালোভাবেই জানি এবং চিনি। তাঁদের সাথে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক সখ্যতা ছিল। শুধুমাত্র প্রয়াত ফারুক সাহেবের সাথে আমার ভালো যোগাযোগ না থাকলেও তাঁর পরিবারের অনেকের সাথেই আমার খুব মধুর সম্পর্ক রয়েছে। আমি প্রয়াত এই ৫ বন্ধুজনের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। উপস্থিত সকলের কাছে আমিও আবেদন জানাই, এই প্রয়াতজনেরা তাঁদের জীবদ্দশায় যদি আমাদের কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকেন আমরা যেন এগুলো ভুলে যাই। তাঁরা যেন জান্নাতবাসী হন আমরা আজকে সেই দোয়াই করব। প্রয়াত পাঁচ বন্ধুজন স্মরণে বাদল স্টল কেন্দ্রিক তাঁদের প্রিয় বন্ধুমহল এরকম একটি সুন্দর আয়োজন করেছেন দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব আছেন, কিন্তু বাদল স্টলের বন্ধুদের যে বন্ধন, যে সুদৃঢ় বন্ধন এটি আসলেই তা অন্যান্য সকলের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। প্রয়াত বন্ধুদের স্মরণে তাঁদের মাগফেরাত কামনায় যাঁরা আজকে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন তাঁদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে প্রয়াত বন্ধুদের শোকাহত পরিবারের সবার প্রতিও গভীর সমবেদনা জানাই।’
দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজী মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা তাজ মোহাম্মদ ইয়াসিন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াসেল সিদ্দিকী, এবিএম তৈমুর, বাহার চৌধুরী প্রমুখ।
মোনাজাত পরিচালনা করেন জেলার বিশিষ্ট আলেম মাওলানা হাদিয়াতুল্লাহ নূর।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন দৈনিক সমতট বার্তা সম্পাদক মনজুরুল আলম।
দোয়া মাহফিলে দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী পেশার আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ১২ দফা দাবিতে আজ ১১ আগস্ট রবিবার দুপুরে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ও শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুর ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা কলেজের উপাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক হামজা মাহমুদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবু সালেহ মো. নইমুদ্দিনের পদত্যাগ, কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
দাবিগুলো লিখিতভাবে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে জমা দেন। বিষয়টি নিয়ে কলেজের সকল শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করেন কলেজের অধ্যক্ষ।
দাবিগুলো হলো-ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে সকল প্রকার রাজনীতি কলেজে নিষিদ্ধ করতে হবে, শিক্ষকরাও ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না এবং কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডাসহ কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পালিত হবে না। ক্লাসের মানোন্নয়নসহ শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যবই পৌঁছাতে পারছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। শেণিকক্ষে পড়ানো সিলেবাসের বিষয়বস্তর উপর পরীক্ষা নিতে হবে এবং হুটহাট নোটিশে বা শ্রেণিকক্ষে ঘোষণা দিয়ে চাপানো যাবে না। শ্রেণি পরীক্ষা, অর্ধবার্ষিকী ও বাৎসরিক পরীক্ষা খাতা মূল্যায়নের পর নম্বরপত্রে নম্বর তুলে নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং মূল্যায়নের ধরণের জবাবদিহিতা শিক্ষকদের দিতে হবে। পরিকল্পিতভাবে ব্যবহারিক ক্লাসের সময় নির্ধারণসহ মানোন্নয়ন করতে হবে। কলেজে ধর্মপালন, হিজাব বা নিকাব পরিধানে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া যাবে না এবং কোনো প্রকার কটুক্তি, অপমানমূলক কথা বা ইঙ্গিত কোনো শিক্ষক দিতে পারবে না। এমন হলে সেই শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ধর্মপালনে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া যাবে না, সকল শিক্ষককে লিখিতভাবে এই বিবৃতি দিতে হবে এবং কলেজের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের বোঝাপড়া ও যোগাযোগ বাড়াতে হবে। প্রত্যেক শ্রেণিতে মনিটর নিয়োগ দেয়াসহ শিক্ষকরা কিভাবে পাঠদান করাচ্ছেন সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে রিপোর্ট করবেন। শ্রেণিকক্ষের উন্নয়নসহ শিক্ষার্থীদের দ্বারা শ্রেণিকক্ষের কার্যক্রমে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভূক্তি বাড়াতে হবে। পড়াশোনায় প্রায় এক মাসের ক্ষতি হওয়ায় একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা বাতিলসহ সবাইকে অবিলম্বে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করে দ্বিতীয় বর্ষের পাঠদান শুরু করতে হবে।
আন্দোলন চলাকালীন কলেজের উপাধ্যক্ষ নিজের ফেসবুকের মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলে সম্বোধন করেছিল। তাই উপাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। এবিষয়ে কলেজের ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে হবে। মেয়েদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ নানা রকম অভিযোগ থাকায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবু সালেহ মো. নইমুদ্দিনের পদত্যাগ বা বদলির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ. জেড. এম. আরিফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেন। শিক্ষকদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। কলেজের উপাধ্যক্ষ হামজা মাহমুদ এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবু সালেহ মো. নইমুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠাব।