চলারপথে রিপোর্ট :
ছাগলে চারাগাছ খাওয়ায় জীবন দিতে হলো অটোরিক্সা চালক লিয়াকত মিয়াকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে প্রতিবেশী রেজেক মিয়ার কিল-ঘুসিতে লিয়াকত মিয়া (৪৫) নামে এক অটোরিক্সা চালকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলার পাকশিমুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
থানা-পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, ওই গ্রামের ছান্দু মিয়ার ছেলে লিয়াকত মিয়ার ছাগল প্রতিবেশী রেজেক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে চারাগাছ খেয়ে ফেলে। এতে রেজেক মিয়া ছাগলটি আটকে রাখে। শুক্রবার সন্ধ্যায় লিয়াকত মিয়া প্রতিবেশী রেজেক মিয়ার বাড়িতে ছাগল আনতে গেলে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেজেক মিয়া কিল ও ঘুসি দিয়ে দুহাত দিয়ে গলায় টিপে ধরলে লিয়াকত মিয়া অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় স্বজনেরা তাকে সরাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নোমান মিয়া বলেন, পাকশিমুল এলাকা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় লিয়াকত মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনেরা। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ সরাইল থানায় আছে। ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে থানায় এখনো মামলা হয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদের জায়গায় থাকা ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুমতি না নিয়েই ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করার অভিযোগে আজ ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ভাটাটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। একই সাথে ভাটায় থাকা মাটিসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির আদেশ দেওয়া হয়।
জানা যায়, ওই ভাটার কোনো ধরনের অনুমতি ছিল না।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, ‘মেসার্স জিসান ব্রিকস্’ নামক ইটভাটাটি অবৈধভাবে ইট প্রস্তুত করে আসছিলো। এ জন্য গত ২৬ নভেম্বর ইটভাটাতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে ইট প্রস্তুতের দায়ে ইট ভাটার চিমনি ভেঙে দেয়া হয় ও দুই ব্যক্তিকে ১০ দিন করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। কিন্তু তারা সরকারি নির্দেশ না মেনে রাতের আধাঁরে লুকিয়ে ইট ভাটার আগুন সচল রাখার চেষ্টা করছিলো। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ইটভাটাতে অভিযান চালিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিভিয়ে দেয়া হয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ব্লুয়ার মেশিন (হাওয়া মেশিন) নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়। যাতে করে ইট ভাটাতে আর আগুন জ্বালাতে না পারে। তিনি আরো জানান, ইট ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পূর্বের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত এই ইটভাটার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পন্ন করে, দ্রুত ভাটার নিলাম কার্যক্রম করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা প্রদানের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাগিদ দেওয়া হয়।
ইউএনও মোশারফ হোসাইন জানান, অনুমতিহীন ওই ভাটায় রাতের আঁধারে ইট প্রস্তুত করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। ভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আগের একটি রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত ওই ইটভাটার নিলাম কার্যক্রম করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেওয়া হয়।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ রাকিবুল হাসান ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ এলাকায় সরাইল উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আজ ১৭ এপ্রিল বুধবার অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
পরিচালিত মোবাইল কোর্টে মেসার্স জিসান ব্রিকস নামক ইট ভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয় এবং বুড্ডা, নোয়াগাও এলাকায় পরিচালিত মোবাইল কোর্টে মেসার্স ভিআইপি ব্রিকস নামক ইট ভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়। একইসাথে ৩ টি ভাটাকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) মেনে ভাটা পরিচালার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
মোবাইল কোর্টে সরাইল উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্ব পালন করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয় কর্তৃক এরূপ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী সাংবাদিকদের জানান।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনের একাধিক ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় দুই প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের ১৪ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় সংসদের ২৪৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) শূন্য আসনে ৫ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনপরবর্তী বিভিন্ন গণমাধ্যমে ৯৫নং যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও ১২৭নং শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের সংবাদ প্রচার হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার এর মাধ্যমে পৃথক তদন্ত করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন মতে প্রকাশিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনের সার্বিক পর্যালোচনা মোতাবেক ৯৫নং যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী প্রিসাইডিং অফিসার হোসেন মো. হাবিবুর রহমান, প্রভাষক (সমাজ বিজ্ঞান) আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজ, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ১২৭নং শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ শফিউল্লাহ, সিনিয়র অফিসার, ইসলামী ব্যাংক, আশুগঞ্জ শাখা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বর্ণিত অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
ফলে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে অসদাচরণের দায়ে প্রভাষক হোসেন মো. হাবিবুর রহমান ও ইসলামী ব্যাংক এর সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ শফিউল্লাহ কে নির্বাচন কমিশন ১৫ নভেম্বর থেকে ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশ প্রদান করেছেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, উল্লিখিত আদেশ মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহণসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে সাত দিনের মধ্যে গৃহীত ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।