অনলাইন ডেস্ক :
বিরল এক মাছের বদৌলতে এক দিনের ব্যবধানে সাধারণ জেলে থেকে কোটিপতি বনে গেলেন পাকিস্তানের করাচির এক ব্যক্তি। আজ ১০ নভেম্বর শুক্রবার সকালে নিলামে ওই মাছটি বিক্রি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাদ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাজি বালোচ নামে সৌভাগ্যবান ওই মাছ ব্যবসায়ী করাচির অন্তর্গত ইব্রাহিম হায়দারি নামে একটি দরিদ্র জেলেপল্লিতে বসবাস করেন। সোমবার তার কয়েকজন কর্মী আরব সাগর থেকে ‘গোল্ডেন ফিশ’ নামে বিরল ওই মাছটি ধরেন। মহামূল্যবান ওই মাছটি বাংলাদেশে ‘ভোলা মাছ’ নামে পরিচিত।
পাকিস্তানের মৎস্যজীবী ফোরামের নেতা মুবারক খান বলেছেন, শুক্রবার সকালে করাচি বন্দরে জেলেদের ধরে আনা মাছটি নিলামে সাত কোটি রুপিতে (পাকিস্তানি মুদ্রা) বিক্রি হয়েছে।
ভোলা মাছের পেটের ভেতরে বিজ্ঞানীরা এমন এক বস্তুর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন, যা চিকিৎসাক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এর পর থেকে মাছটিকে মহামূল্যবান এক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভোলা মাছের পেটের ভেতরে সুতার মতো কুণ্ডলী পাকানো ওই বস্তুটি মূলত অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ভোলা মাছ ২০ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্তও বড় হয়ে থাকে এবং এর দৈর্ঘ্য হতে পারে দেড় মিটার পর্যন্ত। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এ মাছের বিপুল চাহিদা রয়েছে।
আরেকটি বিষয় হলো : ভোলা মাছের একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত বিশেষত্বও রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী কিছু ওষুধ তৈরি এবং স্থানীয় রন্ধনপ্রণালিতে এ মাছের চাহিদা বিপুল।
সৌভাগ্যবান জেলে বালোচ বলেন, আমরা আরব সাগরের মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরছিলাম। তারপর হঠাৎ করেই এ মাছটি আমাদের জালে উঠে আসে, এটি আমাদের কাছে আসা এক দৈব সম্পদের মতো।
বালোচ জানিয়েছেন, মাছটি বিক্রি করে যে অর্থ তিনি পেয়েছেন তা তার সহযোগী জেলেদের মধ্যেও ভাগাভাগি করবেন। মূলত প্রজনন মৌসুম এলেই গভীর সমুদ্র থেকে এই মাছটি উপকূলের কাছাকাছি আসে।
অনলাইন ডেস্ক :
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় এক হাজারের বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিক নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। ওই ঘটনার পর ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি নাগরিকরা।
জবাবে সেই ৭ অক্টোবর থেকেই গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। সেই যুদ্ধ এখনও চলছেই।
এর মধ্যেই ভয়ঙ্কর ‘মগজ খেকো’ অ্যামিবা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ইহুদিবাদী ওই ভূখণ্ডে। ইতোমধ্যে দেশটির হাসপাতালগুলোতে কয়েকশ’ মানুষ ছুটে গেছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য।
সেফেডের জিভ মেডিকেল সেন্টারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বুধবার এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে সেফেডের জিভ মেডিকেল সেন্টারে হাসপাতালে ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে ভর্তি করা হয়। ওই শিশুর অবস্থা গুরুতর। টাইবেরিয়াসের গাই বিচ ওয়াটার পার্কে সাঁতার কাটতে গিয়েছিল।
এর আগে ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মগজ খেকো অ্যামিবায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনিও তাইবেরিয়ার গাই বিচ ওয়াটার পার্কে সাঁতার কাটতে গিয়েছিলেন।
এই ঘটনার পর ইসরায়েলি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়াটার পার্কটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরিবেশ স্বাস্থ্যকর্মীরা ইতোমধ্যে ওই ওয়াটার পার্ক পরিদর্শন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কিন্তু ওয়াটার পার্কের পানিতে ‘মগজ খেকো’ অ্যামিবার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টাইবেরিয়াসের গাই বিচ ওয়াটার পার্কে যাওয়া ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেছেন। পরে জানা গেছে, তারা কেউই ‘মগজ খেকো’ অ্যামিবায় আক্রান্ত হননি।
নেগেলেরিয়া ফাওলেরি নামে পরিচিত অ্যামিবা হ্রদ, নদী এবং উষ্ণ প্রস্রবণের মাটি এবং উষ্ণ মিষ্টি পানিতে বাস করে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের তথ্যানুসারে, অ্যামিবাযুক্ত পানি নাকের নাকের ভেতর দিয়ে মস্তিষ্কে সংক্রমণ হয়। এ কারণে এটিকে সাধারণত ‘মগজ খেকো অ্যামিবা’ বলা হয়। এই অ্যামিবায় আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, জিউস নিউজ
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানল শুক্রবারও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। তবে অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা দাবানল ছড়িয়ে পড়ার গতিও কিছুটা কমাতে পেরেছেন। দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে ১০ জনে পৌঁছেছে। এতে অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া পুড়ে গেছে অন্য ভবন ও স্থাপনাও।
দাবানল কীভাবে হলিউডকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে?
লস অ্যাঞ্জেলেস হলো হলিউডের প্রাণকেন্দ্র। যেটি আমেরিকার প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। সেখানে ভয়াবহ দাবানলের আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলসের বিশাল অংশ। বৃহস্পতিবার সেখানে পাচটি সক্রিয় দাবানলে পুড়ছিল সবকিছু। এরমধ্যে ইটন নামে একটি দাবানল গতকাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। এ দাবানলটি ১৭ হাজার ৬০০ একর জায়গাজুড়ে ছড়িয়েছিল। শক্তিশালী বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির চাপ কম থাকায় আগুনের তীব্রতা শুধু বাড়ছিল। দাবানলে পুড়ে গেছে হলিউড হিলসও।
সানসেট নামের দাবানলে জ্বলছে হলিউড হিলস। যেখানে বিখ্যাত হলিউড সাইনবোর্ডটি অবস্থিত। স্থানীয় সময় বুধবার সেখানকার সাধারণ মানুষকে সরে যেতে বলা হয়। এরপরই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। ভয়াবহ এ আগুনে হলিউডের বেশ কয়েকজন তারকার বাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া হার্স্ট এবং লিডিয়া নামের দুটি ছোট আকৃতির দাবানলও লস অ্যাঞ্জেলসে জ্বলছে।
দাবানলে পুড়ে গেছে যেসব তারকার ঘরবাড়ি
বিলি ক্রিস্টাল
৭৬ বছর বয়সী বিলি ক্রিস্টাল একজন আমেরিকান কৌতুক অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি একজন স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান এবং তিনি মঞ্চ নাটকের জন্য বেশি পরিচিত। সানসেট নামের দাবানলে ১৯৭৯ সালে নির্মাণ করা তার প্যাসিফিক প্যালিসেডস নামের বাড়িটি পুড়ে যায়। বিলি ক্রিস্টাল এবং তার স্ত্রী জেনিস বুধবার (৮ জানুয়ারি) একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, তাদের ৪৫ বছরের পুরোনো বাড়ি প্যাসিফিক প্যালিসেডস অঞ্চলে পুড়ে গেছে। বিলি ক্রিস্টাল এবং তার স্ত্রী জেনিস বুধবার বিবৃতিতে জানান, তাদের ৪৫ বছরের পুরোনো বাড়ি প্যাসিফিক প্যালিসেডস অঞ্চলে পুড়ে গেছে। বিবৃতিতে তারা লিখেছেন, ‘জেনিস এবং আমি ১৯৭৯ সাল থেকে আমাদের বাড়িতে বাস করছি। আমরা এখানে আমাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের বড় করেছি। আমাদের বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চি ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল, সুন্দর স্মৃতি যা কখনো চলে যাবে না। আদের অবশ্যই হৃদয় ভেঙ্গেছে। কিন্তু আমাদের সন্তান ও বন্ধুদের ভালোবাসায় আমরা এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব।’
মেল গিবসন
মেল গিবসন আমেরিকান বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি নিউজ নেশনকে জানিয়েছেন, টেক্সাসের অস্টিনে শ্যুটিং করার সময় তার বাড়িটি দাবানলে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, এটা আবেগের বিষয়। বাড়িটিতে আমি দীর্ঘদিন ধরে বাস করছি। সেখানে আমার সব জিনিসপত্র ছিল। সেগুলো সব পুড়ে গেছে। তবে কিছু নথিপত্র সিন্ডারে রাখা আছে সেগুলোর জন্য কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।
জেফ ব্রিজস
প্রবীণ অভিনেতা জেফ ব্রিজসের মুখপাত্র দ্য হলিউড পত্রিকাকে জানান, মালিবুতে জেফ ব্রিজসের বাড়ি আগুনে পুুড়ে গেছে।
প্যারিস হিলটন
জনপ্রিয় টিভিব্যক্তিত্ব প্যারিস হিলটনের বাড়ি দাবানলে পুড়ে গেছে। মালিবুতে তার বাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত। খবরে সরাসরি সম্প্রচার দেখে জেনেছেন সে কথা। ঝলকের কিছু অংশ ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘এই অভিজ্ঞতা যেন আর কারও না হয়।’ তিনি আরও জানান, এই বাড়িতে অনেক মূল্যবান স্মৃতি ছিল তার। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করেছে সব। তার পরিবারের সদস্য ও পোষ্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েই কাঁদলেন প্যারিস হিলটন। প্রিয় বাড়িটি যে এভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে, স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি প্যারিস হিলটন। সেই বিধ্বংসী পরিস্থিতির ভিডিও শেয়ার করেছেন এ হলিউড অভিনেত্রী। দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি লিখলেন, ‘আমি এখন সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যেটা আমার স্বপ্নের বাড়িছিল। কতটা কষ্ট হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। প্রথম যখন খবরটা পেলাম, আমি কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারিনি প্রথমে। তবে এখন এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নিজে যা প্রত্যক্ষ করছি, আমার মন ভেঙে খান খান হয়ে গেল।’
নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে প্যারিস হিলটন বলেন, ‘এটা শুধু আমার বাসস্থান ছিল না। এই সেই বাড়ি যেখানে আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখেছি, হেসেছি-কেঁদেছি, পুরো পরিবারকে নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তৈরি করেছি। যে বাড়ির প্রতিটা কোণায় কোণায় ভালোবাসার চিহ্ন রয়েছে। সেই বাড়ি এভাবে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেল। আমি বাকরুদ্ধ।’
ক্যারি এলওয়েস
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ‘দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড’ ছবির অভিনেতা ক্যারি এলওয়েসেও। তার বাড়িও পুড়ে ছাই। কোনোমতে প্রাণে বেঁচে রয়েছেন পরিবারের অন্যরা। গত রোববার রাতেই ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ সিনেমার জন্য গোল্ডেন গ্লোবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন অ্যাড্রিয়েন ব্রডি। মার্কিন গণমাধ্যম টিএমজেড জানিয়েছে, দাবানলে অস্কারজয়ী এই অভিনেতার বাড়িও পুড়ে গেছে।
কেট বেকিনসল
অনেক দিন ধরেই প্যাসিফিক প্যালিসেডসের বাসিন্দা ব্রিটিশ অভিনেত্রী কেট বেকিনসল। প্যাসিফিক প্যালিসেডসের ধ্বংসযজ্ঞের ছবি ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ও আমার মেয়ের শৈশবের বেশির ভাগ সময় এখানেই কেটেছে। এক নিমেষেই আমাদের শৈশব হারিয়ে গেল। আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’
জেমি লি কার্টিস
অস্কার, এমি ও গোল্ডেন গ্লোবজয়ী অভিনেত্রী জেমি লি কার্টিস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, তার পরিবার নিরাপদ, কিন্তু তাদের বাড়ি রক্ষা পায়নি। তিনি উদ্ধারকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ম্যান্ডি মুর
সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী ম্যান্ডি মুর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, আগুন থেকে বাচতে তিনি তার সন্তান ও পোষা প্রাণীদের নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের আলতাদেনার বাসিন্দা মুর আরও লিখেছেন, দাবানলে তার বসবাসের এলাকাটি ধ্বংস হয়ে গেছে। দাবানল ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন তিনি।
মিলো ভেন্টিমিগ্লিয়া
আরেকজন তারকা মিলো ভেন্টিমিগ্লিয়া সিবিএস নিউজকে জানান, তিনি এবং তার গর্ভবতী স্ত্রী জারাহ মারিয়ানো তাদের মালিবু বাড়ি হারিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনি বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন সেখানে এক ধরনের বিষণ্ন মুহূর্ত রয়েছে। এটি বাস্তবে ঘটেছে। আমরা হার মেনে নিয়েছি।’
দাবানলে উদ্বিগ্ন প্রিয়াঙ্কা
লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ভারতীয় এই অভিনেত্রী কর্মসূত্রে কয়েক বছর ধরে হলিউডের বাসিন্দা। প্রিয়াঙ্কা ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘এই দাবানল রুখতে যারা প্রথম থেকে লড়াই করছেন, তাদের কুর্নিশ। রাত জেগে যারা কাজ করে চলেছেন ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিবারকে অনবরত সাহায্য করে চলেছেন তাদের ধন্যবাদ।’
পুরস্কার অনুষ্ঠান পেছাল
হলিউডে এখন পুরস্কারের মৌসুম। গত রোববার রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। আগামী দুই মাসে অস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশ কয়েক পুরস্কার অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু দাবানলের কারণে এসব অনুষ্ঠান নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দাবানালের কারণে অস্কার মনোনয়ন ঘোষণা পেছনে হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে ভোটদানের সময়ও। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি অস্কারের চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটা দুই দিন পিছিয়ে মনোনয়ন ঘোষণার তারিখ ১৯ জানুয়ারি করা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নের জন্য ভোটদান, যা ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন একাডেমির ভোটাররা।
পিছিয়েছে ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ডও। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অঙ্গনের এক বছরের সেরা কাজের পুরস্কার দেওয়া হয় এই আয়োজনে। আগামী রোববার এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এখন তা পিছিয়ে ২৬ জানুয়ারি করা হয়েছে।
প্রিমিয়ার, শুটিং বাতিল
ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দাবানলের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেসে পূর্বনির্ধারিত বেশ কয়েকটি সিনেমার প্রিমিয়ার স্থগিত করা হয়েছে। এসব সিনেমার মধ্যে আছে ‘আনস্টপেবল’, ‘উলফম্যান’, ‘বেটার ম্যান, ‘দ্য পিট’, ‘দ্য লাস্ট শোগার্ল’ ইত্যাদি।
এ ছাড়া মার্কিন গণমাধ্যম ডেডলাইন প্রযোজনা সংস্থাগুলোর বরাতে জানিয়েছে, দাবানলের কারণে বেশ কয়েকটি সিনেমা ও সিরিজের শুটিং বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া সিনেমা, সিরিজের মধ্যে আছে ‘হ্যাকস’, ‘টেড’, ‘সুইটস: এলএ’, ‘হ্যাপি প্লেস’, ‘ফলআউট ২’, ‘আফটার মিডনাইট’ ইত্যাদি।
অনলাইন ডেস্ক :
ব্যাংকক সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা তাভিসিনের আন্তরিকতাপূর্ণ একান্ত বৈঠক, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং দু’দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গতকাল ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে থাইল্যান্ডের রাজধানীর গভর্নমেন্ট হাউজে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ সময় অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।
দেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ব্যাংককে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই এবং থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. প্রাণপ্রী বাহিদ্ধা নুকারা প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা তাভিসিনের অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে তারা একান্তে কথা বলেন, এরপর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যাসহ সবিস্তারে অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ভ্রাতৃপ্রতিম ও বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক, সেটা আরও জোরদার, বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত করার ব্যাপারে দুই প্রধানমন্ত্রী গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন, বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বর্ণনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ১০০টি ইকোনমিক জোন ও আইটি ভিলেজে থাই বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা চাইলে প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোন করার কথাও বলেছেন।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা প্রায় ১.৩ মিলিয়ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের জন্য বাংলাদেশে যেসব সমস্যা উদ্ভূত হচ্ছে বৈঠকে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ড. হাছান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ডেও অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, এখনো অনেকে আসছেন। থাইল্যান্ডও এই পালিয়ে আসা মানুষের ভারে জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানে উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
এ দিন গভর্ণমেন্ট হাউজে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনারে থাই প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে ছিলেন। শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান। বৃহস্পতিবার ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সেখানে দেওয়া ভাষণে সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা।
অনলাইন ডেস্ক :
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন দেশটির একটি আদালত। স্থানীয় সময় ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের সিয়াটলের একজন ফেডারেল বিচারক এ আদেশ দেন। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারক জন কফেনর এই আদেশের ফলে ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ কার্যকর হওয়া ১৪ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। তবে আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগও লড়ার কথা জানিয়েছে।
আদালতে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, যখন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তখন আইনজীবীরা কোথায় ছিলেন। আইনজীবীদের কেউ একজন এই আদেশকে সাংবিধানিক দাবি করবেন এটা আমাকে বিস্মিত করেছে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেই একরাশ নির্বাহী আদেশে সাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত ছিল নথিপত্রহীন অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার সংক্রান্ত একটি আইন বাতিল। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীতে দেশটির ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া সবার নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের পর মামলা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি অঙ্গরাজ্য, দুটি শহর এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বেশ কয়েকটি সংগঠন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমেরিকায় মেক্সিকান বংশোদ্ভূতরা সর্বোচ্চ সংখ্যায় নাগরিকত্ব পেয়েছেন। আর এখন এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। গত ২০২২ সালে আমেরিকায় ৬৫ হাজার ৯৬০ জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। আর ২০২৩ সালের হিসেবে ভরতে জন্ম নেওয়া মোট ২ কোটি ৮ লাখ ৩১ হাজার ৩৩০ জন মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছেন এখনও পর্যন্ত। আর মেক্সিকোতে জন্ম নেওয়া ১৯ কোটির বেশি মানুষ আজ পর্যন্ত মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। আর এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে চীন। সেই দেশে জন্ম নেওয়া ২ কোটি ২ লাখ মানুষ বিগত দিনে মার্কিন নাগরিত্ব পেয়েছিলেন।
এদিকে, রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিকদের প্রায় ৪২ শতাংশ বর্তমানে মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য অযোগ্য। এদিকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ৯০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের গ্রিন কার্ড বা লিগ্যাল পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি (এলপিআর) ছিল। তারা যোগ্য ছিলেন মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য।
চলারপথে ডেস্ক :
তেল বিক্রি করে রেকর্ড মুনাফা করেছে সৌদি আরবের কোম্পানি আরামকো। ২০২২ সালে তারা মুনাফা করেছে ১৬১ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ১৬ হাজার ১১০ কোটি ডলার।
বিবিসির খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের তুলনায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানিটি ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি মুনাফা করেছে। শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এটি এক বছরে তাদের সর্বোচ্চ আয়।
শুধু আরামকো নয়, আমেরিকার এক্সনমবিল, ব্রিটেনের শেভরনও গত বছর বিপুল আয় করেছে। এক্সনমবিল মুনাফা করেছে ৫ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার। আর শেভরনের মুনাফার পরিমাণ ৩ হাজার ৯৯০ কোটি ডলার।
২০২২ সালের মাঝের চার মাসে রেকর্ড ৪২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করার কথা জানিয়েছিল আরামকো। ওই সময়ই বিশ্বব্যাপী তেলের দাম সবচেয়ে বেশি ছিল। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে বেঞ্চমার্ক অপরিশোধিত প্রতি ব্যারল তেল ৮২ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত বছরের জুনে তা ১২০ ডলার ছুঁয়েছিল।
ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরু করার পর বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম অনেকটা বেড়েছে। সাত বছর পর ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।
গত বছর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, বৈশ্বিক সংকট কাজে লাগিয়ে অনেক তেল-গ্যাস কোম্পানি অনৈতিকভাবে মুনাফার রেকর্ড করেছে। তিনি এসব কোম্পানির ওপর বেশি হারে করারোপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে করের অর্থ চরম অভাবগ্রস্তদের সহায়তায় ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
তবে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই বিশ্ববাজারের জ্বালানির দাম বাড়তে শুরু করেছিল। টানা দেড় বছর কোভিডজনিত নানা বিধিনিষেধ থাকার পর উন্নত দেশগুলো তখন কোভিডজনিত সব ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে তেলের দাম আরো বেড়ে যায়।