চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে কেঁরির বড়ে খেয়ে তাঁরা বানু (৭০) নামে এক বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেছে।
আজ ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধা মারা যান। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তাঁরা বানু উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের মৃত বলু মিয়ার স্ত্রী।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২০ বছর আগে বলু মিয়া মারা যায়। তারপর থেকে তাঁরা বানু একা হয়ে পড়ে। আজকে সকালে তাঁরা বানু পরিবারের অগোচরে গিয়ে কেঁরি ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাঁরা বানুকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসাইন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বৃদ্ধা মারা গেছে। কি কারনে আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি। আজকে সুরতহালের পর লাশের ময়নাতদন্ত হবে। তারপর নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়াইল হোসাইনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ইতি:পূর্বে অবসর গ্রহণকারী তিনজন সিনিয়র শিক্ষকদের বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
আজ ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলের প্রাঙ্গনে সংবর্ধনা দেয়া হয় বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর, সিনিয়র শিক্ষক হেফজুল করিম, সিনিয়র শিক্ষক আলহাজ্ব সিদ্দিকুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক এস. এম আবুল কালাম, সিনিয়র শিক্ষক মো. ইউসুফ আলী (মৌলভী)।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অসুস্থতাজনিত কারণে সিনিয়র শিক্ষক আলহাজ্ব সিদ্দিকুর রহমান এবং সিনিয়র শিক্ষক মো. ইউসুফ আলী (মৌলভী) উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে উপস্থিত শিক্ষকরা সংবর্ধনা সভায় যোগ দিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিদায়ী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করা হয় এবং উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সায়েদুল হক সাঈদ এর সভাপতিত্বে এবং ডা. আলী আযম ও মুসলেহ উদ্দিন দুলালের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন কসবা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সায়েদুজ্জামান, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মো রুহুল আমীন, আশুগঞ্জ ফিরোজ মিয়া ডিগ্রী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান জিন্নাহ, চিনাইর বঙ্গবন্ধু কলেজের সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম, বড়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবুল বাশার, নাজির ভূঁইয়া হাই স্কুলের শিক্ষক নান্নু মাস্টার, পিটিআই এর অবসরপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর আবদুল আওয়াল কামাল, চিলোকুট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক, বড়াইল হোসাইনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান লিটন, নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মঈন উদ্দিন প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর সদরে ১৯৬৮ সালে সাবরেজিস্ট্রি জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সময় হতে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান করণিক মরহুম হাজী আব্দুর রাজ্জাক মসজিদের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ২০০৪ সালে মৃত্যুবরণের পূর্ব পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে মসজিদের দায়িত্ব পালন করে গেছেন বিধায় ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদের অরিজিনাল দলিলপত্রাদি সংরক্ষণে রাখেন।
মরহুম হাজী আব্দুর রাজ্জাকের তৃতীয় পুত্র নারায়ণপুর ডি.এস কামিল (এম.এ) মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক, সাংবাদিক এ. কে. এম. হাবিবুর রহমান হেলাল ১৫ জুলাই সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ে সাব রেজিস্টার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ তফাজ্জল হোসেনের নিকট ওই মসজিদের প্রতিষ্ঠালগ্নের অরিজিনাল দলিল পত্রাদি হস্তান্তর করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক মাহাবুব আলম লিটন, মোঃ জহিরুল ইসলাম, কাওসার আলম ভূঁইয়া অপু, আবু হাসান আপন, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জারু মিয়া ও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের ৩৫০ জন নিম্ন আয়ের মানুষ পেয়েছেন ইফতার সামগ্রী। প্রত্যেককে মোট ১০ কেজি পরিমান ছানাবুট, ডাল, তেল, পিয়াজ, আলু, খেজুর ও লবন দেয়া হয়।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে সাতঘর হাটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রাঙ্গণে সাতঘর হাটি দারুস সুন্নাহ্ ইসলামীয়া মাদ্রসার সহ-সভাপতি, প্রবাসী আলহাজ্ব মোঃ হারুন আল-রশিদের অর্থায়নে ও আলোকিত সমাজ সাতঘর হাটির আয়োজনে এ ইফতার সামগ্রী বিতরণের উদ্বোধন করেন উত্তর লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. মাসুদুল ইসলাম মাসুদ।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন। আলোকিত সমাজ সাতঘর হাটির আহবায়ক এম. নাঈমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও শারমিনুল ইসলাম সাইফুলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির রায়হান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবু কাউছার, নবীনগর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন রাজু, নবীনগর পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি ইলিয়াছুর রহমান, সাতঘর হাটি দারুস সূন্নাহ্ ইসলামিয়া মাদ্রসার সহ-সভাপতি হাজী ছিদ্দিকুর রহমান মেম্বার, কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক সদস্য সাংবাদিক এম. নুরুল আলম সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আবু বকর (রাযি:) মডেল মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতী ইয়াছিন আরাফাত।
অনুষ্ঠানে ইফতার সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি সমাজ সেবক হারুন আল-আল রশিদ এর পক্ষে অতিথিবৃন্দ আমতুলি খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদ্রসার টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য মাদ্রসার মোহতামিম মাওলানা আব্দুর রহমানের হাতে দশ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন। পাশাপাশি ‘সবার জন্য ইসলাম’ নামক বই সবার মাঝে বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করেন মাওলানা আরাফাত হুসাইন মুজাহিদী।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়াচ্ছে গুঞ্জন পাঠাগার। মাত্র ৩টি বই নিয়ে যাত্রা করা গুঞ্জন পাঠাগারে এখন বইয়ের সংখ্যা ১০ হাজার। গ্রামের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা এই পাঠাগারের বই দিয়ে পড়াশুনা করে। ২০০৪ সালের ৩০ মার্চ ছোট একটি টিনের একচালা ঘরে যাত্রা শুরু করা পাঠাগারটি এখন ১ তলা বিশিষ্ট ভবন।
গুঞ্জন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা স্বপন মিয়া (৩২)। তিনি নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামের মরহুম স্বপন মিয়ার ছেলে। বর্তমানে স্বপন মিয়া জেলার কসবা উপজেলার একটি বেসরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক।
স্থানীয়রা জানান, ছোট বেলা থেকেই বইয়ের প্রতি আগ্রহ ছিলো স্বপন মিয়ার। ২০০৪ সালে স্বপন মিয়া যখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তখনই তিনি তার বাড়ির একটি টিনের ঘরে মাত্র তিনটি বই দিয়ে পাঠাগারটি চালু করেন। পাঠাগারের নামকরন করেন “গুঞ্জন পাঠাগার”। প্রায় ১৯ বছরে পাঠাগারটি এখন ১০ হাজার বইয়ে সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার। পাঠাগারে গ্রামের ছেলে মেয়েরা এক সাথে স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন লেখকের বই পড়তে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র দেড় বছর বয়সে পিতাকে হারান স্বপন মিয়া। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন মা রাজিয়া খাতুন। তিনি মাটি কাটার কাজ করে সন্তানদের খুবই কষ্টে লালন-পালন করেন। স্বপনের দুই ভাই রিকশা চালক।
স্বপন মিয়া যখন গ্রামের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তখনই একটি পাঠাগার গড়ার চিন্তা মাথায় আসে তার। তখন তিনি পরিবারের সদস্যদের অমতে একটি এনজিও থেকে ৮ হাজার টাকা ঋন নিয়ে বাড়ির জায়গায় একটি ছোট একচালা টিনের ঘর তৈরী করে মাত্র তিনটি বই দিয়ে গুঞ্জন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন।
পাঠাগারটি নিয়ে স্বপনের পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। বড় দুই ভাই তাকে শর্ত দেন, পরিবারে থাকতে হলে পাঠাগার ছাড়তে হবে। কিন্তু স্বপন পরিবারকে ছেড়ে পাঠাগারকে আকড়ে ধরে রাখেন। পরবর্তীতে স্বপনের মা রাজিয়া খাতুন স্বপনকে সম্মতি দেন।
এক পর্যায়ে নিজের পড়াশুনা, সংসার আর পাঠাগার দেখাশুনা করতে স্বপন মিয়া দিন-মজুরি শুরু করেন। পথে ঘাটে ফেরি করে পান-সিগারেটসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন তিনি। তবুও পাঠাগারটি বন্ধ করেননি।
উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি।
পরে তিনি মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সোয়া ২ শতাংশ জায়গা পাঠাগারের নামে দান করে সেখানে ঋণের টাকায় একতলা বিশিষ্ট পাকা ভবন করেন। পাঠাগারেই রাত্রিযাপন করেন তিনি। কলেজ থেকে যে টাকা বেতন পান, তার বেশির ভাগই ব্যয় করেন এই পাঠাগারে।
বর্তমানে প্রতি শুক্রবারে পাঠচক্র বসে পাঠাগারে। সেখানে শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজন করা হয় সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগীতার।
নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামের রমজান জানান, তার পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় তার পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বাধ্য হয়ে তিনি বাবার সাথে কৃষি কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে স্বপন তাকে গুঞ্জন পাঠাগারে নিয়ে আসেন। এই পাঠাগারে থাকা বই দিয়েই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান। অনার্স শেষ করে বর্তমানে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাস্টার্স করছেন।
নবীনগর উপজেলার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওহীদ জাহান চৌধুরী জানায়, সে নিয়মিত গুঞ্জন পাঠাগারে গিয়ে বই পড়ে সে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সবধরনের বই আছে এখানে। এছাড়া তার কয়েকজন সহপাঠীও পাঠাগারে এসে বই পড়ে।
উপজেলার কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক রোকসানা জেবিন মলি জানান, গুঞ্জন পাঠাগারের মনোরম পরিবেশ যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। পাঠাগারটি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সবার মাঝে।
পাঠাগারে নিয়মিত আসা পাঠক ও কসবা উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তুহিন কান্তি দাস বলেন, নবীনগর তথা পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য আলোর দিশারী হয়ে দাঁড়িয়েছে গুঞ্জন পাঠাগারটি। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি ও বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে পাঠাগারটি।
পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা স্বপন মিয়া বলেন, পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও অনেক ব্যক্তি তাকে সহায়তা করেছেন। যার জন্য তিনি পাঠাগারটিকে একচালা টিনের ঘর থেকে পাকা ভবন তৈরি করতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, ‘সমাজে আমার মতো অনেকেই আছে- যারা বই কিনে পড়তে পারে না। অর্থের অভাবে অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তাদের কথা চিন্তা করেই পাঠাগারটি করা হয়েছে। এই পাঠাগারের জন্য আমাকে পরিবার থেকে আলাদা হতে হয়েছিল। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আমি রাস্তায় ফেরী করে পান-সিগারেট বিক্রি করেছি। তবুও পাঠাগারটি বন্ধ হতে দেইনি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই পাঠাগারের বই পড়ে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। সুহাতা গ্রাম আলোকিত হয়েছে গুঞ্জন পাঠাগারের আলোতে। আমি চাই জ্ঞানের এই আলো ছড়িয়ে পড়–ক সবখানে।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, পাঠাগারের জন্য স্বপন তার নিজের ব্যক্তি জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছে। গুঞ্জন পাঠাগার শুধু জ্ঞানের আলোই ছড়াচ্ছে না, ছেলে-মেয়েদের মাদক থেকেও দূরে রাখতে সহায়তা করছে। বই পড়ার কারণে মেধার বিকাশ হচ্ছে, জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরে আলমের বিরুদ্ধে চাঁবাবাজীর মামলা হয়েছে। ২ মার্চ বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে নয়জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজীর মামলা করা হয়।
নবীপুর গ্রামের আবু কালামের স্ত্রী লিপি আক্তার বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। অন্যান্য আসামীরা হলেন, ওই ইউনিয়নের দড়িলাপাং গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে হাদিস মিয়া, জাহের আলী মেম্বারের ছেলে শাহ জালাল, কবির মিয়া, সাইফুল মিয়া, মুর্শিদ মিয়া, রুস্তম আলী ছেলে হযরত আলী, শাহ কামালের স্ত্রী সালেহা বেগম, মৃত রুস্তম আলীর ছেলে আক্তার হোসেন।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ‘পিবিআই’কে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পশ্চিম ইউনিয়নে গত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নবীপুর গ্রামের কালাম মিয়ার সাথে চেয়ারম্যান নুর আলম ওরুফে নুরে আজ্জম ও তার গ্রুপের সাথে বিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিল। তারই জের ধরে গত ২০ জানুয়ারি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার বাহিনী লিপি বেগমও তার স্বামী কালামকে পথে আটকিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাদের মারধরসহ শ্রীলতাহানী ঘটায় এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ২ ফর্দ নন জুডিসিয়াল খালি ষ্ট্যাম্প তাদের দু’জনের স্বাক্ষর নেয়। এ ঘটনা ‘কাউকে জানালে বা মামলা মোকদ্দমা করলে তার স্বামীকে খুন করে মেঘনা নদীতে ভাসাইয়া দিবে’ প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে চলে যায়।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান নূরে আলম তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলার বিষয়টি অবগত নয় জানিয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।