অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আজ ১৫ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের এ তারিখ ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরের পাঁচ বছর। সেই হিসাবে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি।
এ ছাড়া জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। আর ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে। বাড়বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্য সংখ্যাও। এবার ভোটের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র অনলাইনেও দাখিল করতে পারবেন। এজন্য অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম তৈরি করেছে ইসি। এ ছাড়া ভোটের তথ্য দিতে তৈরি করা হয়েছে স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি নামে একটি অ্যাপ, যা ইতোমধ্যে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।
এ অ্যাপের মাধ্যমে একজন ভোটার ঘরে বসে তার ভোটার নম্বর জানতে পারবেন। পাশাপাশি তার ভোটার এলাকা বা নির্বাচনী আসন, ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারবেন এবং ভোটকেন্দ্রের ছবি, ভোটকেন্দ্রের ভৌগোলিক অবস্থান (ম্যাপসহ) দেখতে পাবেন।
এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে বিভাগওয়ারি বিভিন্ন আসনের তথ্য, যেমন- মোট ভোটার, মোট আসন, আসনের প্রার্থী, প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য (হলফনামা, আয়কর সম্পর্কিত তথ্য, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী) জানতে পারবেন। অ্যাপটির মাধ্যমে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের তথ্য জানা যাবে এবং সমসাময়িক তথ্যাবলি ‘নোটিশ’ আকারে প্রদর্শিত হবে।
প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য থাকায় একদিকে তিনি যেমন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভোটারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন, অন্যদিকে ভোটাররাও তথ্য বিশ্লেষণ করে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।
প্রার্থী হতে করণীয়
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীকে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পদাধিকারীর সইযুক্ত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইযুক্ত তালিকা। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী আগের কোনো সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে তাকে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা জমা দিতে হবে না।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জামানত হিসেবে জমা দিতে ২০ হাজার টাকা এবং ছবিছাড়া ভোটার তালিকা সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) কিনতে হবে ৫০০ টাকায়। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা জমা দিতে হবে, যেখানে থাকবে আটটি সুনির্দিষ্ট তথ্য। এ ছাড়া আয়ের উৎস, দায়-দেনা, সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি তার অনুলিপি ইসিকেও দিতে হবে।
নির্বাচনের প্রার্থীর ব্যয়সীমা হলো ২৫ লাখ টাকা। প্রার্থী বা তার এজেন্টকে একটি তফসিলি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ ব্যয় করতে হবে।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। ইসি আয়োজিত সর্বশেষ সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ১৮টি দল। তাদের অনেকেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেই মনে করছেন অনেকে।
আগের ১১ সংসদ নির্বাচন
প্রথম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৭ মার্চ। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৬ সালের ২ মার্চ। ভোটগ্রহণ হয়েছিল একই বছরের ৭ মে।
চতুর্থ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ। পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সপ্তম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ওই বছর ১২ জুন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ২০০১ সালের ১৯ আগস্ট। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১ অক্টোবর।
নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয় ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৩০ ডিসেম্বর।
অনলাইন ডেস্ক:
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, যে পরিকল্পনায় বাস্তব অগ্রগতি নেই সে পরিকল্পনা মূল্যহীন।
আজ ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে রাজউক ভবনের অডিটোরিয়ামে সিটি ক্লাইমেট ফাইন্যান্স গ্যাপ ফান্ড এর সহায়তায় রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং GIZ (Deutche Gesellschaft Fur Internationale zusammenarbeit) কর্তৃক প্রস্তুতকৃত “হাজারীবাগ ও লালবাগের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা” শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু পরিকল্পনার কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল এখন পর্যন্ত তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। যেখানে সরিয়ে নিয়েছি সেখানেও কাজটি ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হলে শুধু পরিকল্পনা করে লাভ নেই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। আমি চাই আগামীকাল থেকেই আপনারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করবেন। এবছরের শেষেই যেন কাজের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয় আপনারা সেভাবে কাজ করবেন।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা আইন কানুন ও বিধিনিষেধ মেনে চলি। ক্লাইমেটের রেজিলিয়েন্সের জন্য ওয়ার্কশপ ও প্লানিং এর প্রয়োজন আছে। কিন্তু একটা কথা সবসময় চিন্তা করতে হবে আমাদের দ্বারা যেন ক্লাইমেট নষ্ট না হয়। আমরা যখন বাড়ি বানাবো তখন যতটুকু ছেড়ে দেয়া দরকার ততটুকু যেন ছেড়ে দেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় আমাদের পাশের যে বাড়ি আছে পারলে আমরা সেটিও দখল করার চেষ্টা করি। এই সব থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, রাজউককে বলব আমরা সবাই মিলে এই কাজটি শুরু করে দিতে চাই। ২০২৪ সালের ইতোমধ্যে ৬ মাস চলে গিয়েছে। সময় চলে যাবার আগেই এই কর্মপরিকল্পনাটি শেষ করতে না পারলেও অন্তত যেন শুরু করতে পারি।
কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্যে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় শুধুমাত্র পুরান ঢাকার জন্য। ৪০০ বছরের এই শহরে নগরায়নের ফলে পুরান ঢাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা থেকে আবাসন ব্যবস্থায় নানা ধরনের ঘাটতি আছে। যার কারণে এখানে প্রতিনিয়ন নানা দুর্ঘটনা ঘটে।
মন্ত্রী আরও জানান, পুরান ঢাকাকে কিভাবে আরো উন্নত করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা লালবাগ ও হাজারিবাগ এলাকাকে উন্নত করার পরিকল্পনা করেছি। ওভার পপুলেটেড একটি নগরীকে কিভাবে পরিকল্পনার মাধ্যমে জলবায়ু সহিষ্ণু একটি গ্রিন নগরীতে গড়ে তোলা যায় সে জন্য এই পরিকল্পনা করেছি। আমরা একটি ব্রাউন ফিল্ডকে কিভাবে গ্রিন আইল্যান্ড করা যায় সে ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জি আই জেড কান্ট্রিডিরেক্টর মার্টিনা বারকার্ড বলেন, জার্মান ও বাংলাদেশ সরকার মিলে পুরান ঢাকার জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবং নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই পরিকল্পনাটি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এই দুই এলাকার নগরবাসীর জীবন মান আরো উন্নত হবে।
কর্মশালায় হাজারিবাগ ও লালবাগের জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন। কর্মশালাটির সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) মো ছিদ্দিকুর রহমান সরকার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো নবীরুল ইসলাম, জি আই জেড কান্ট্রিডিরেক্টর মার্টিনা বারকার্ড।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মঞ্জুরুর রহমান, রাজউক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সভাপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
চলতি (জানুয়ারি) মাসেই দেশের ১৫টি উপজেলার সাড়ে ২৪ লাখ নাগরিকের মাঝে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড বিতরণে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীতে আরো ১০ উপজেলায় এই কার্ড বিতরণে যাবে সংস্থাটি। এছাড়া বন্ধ থাকা বিতরণ কার্যক্রমও ফের চালু করা হবে।
ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এতে বরিশালের বাকেরগঞ্জ, কুমিল্লার সেনা নিবাস, দিনাজপুরের বিরামপুর ও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি; চট্টগ্রামের লোহাগড়া, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, নাটোরের লালপুর, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া ও বাগেরহাটের চিতলমারীতে ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি; ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা, পাবনার ভাঙ্গুড়া, সিলেটের বিয়ানীবাজার ও শরিয়তপুরের ডামুড্যায় ২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি এবং খুলনার ফুলতলা ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ৪ থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি স্মার্টকার্ড বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। এই ১৫ উপজেলায় ২৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪০০ জনকে দেওয়া হবে উন্নতমানে এই নাগরিক পরিচয়পত্র।
এদিকে সংসদ নির্বাচনের কারণে স্থগিত স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমও চালু করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাঠিয়েছে ইসি। সংস্থাটির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) ফয়সল কাদেরের পাঠানো ওই নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে মাঠ পর্যায়ে চলমান স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম ৩০ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া যে সব উপজেলা, থানা পর্যায়ে স্মার্টকার্ড মুদ্রণপূর্বক প্রেরণ করা হয়েছিল কিন্তু বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়নি তাদেরকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ওই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এই অবস্থায় যে সকল উপজেলা, থানায় স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল সে সকল উপজেলাথানায় আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১১ সালে হাতে নেওয়া স্মার্টকার্ড প্রকল্পটির মেয়াদ শেষে সরকারি তহবিল থেকে নেওয়া এ সংক্রান্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি প্রথম হাতে নেওয়ার সময়কার নয় কোটি ভোটারকে উন্নত মানে এনআইডি দেওয়াই ছিল একমাত্র লক্ষ্য। অথচ ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ওই নয় কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড বিতরণ সম্পন্ন করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
প্রথমে ফরাসি প্রযুক্তি পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজির কাছ থেকে এই কার্ড করে নিলেও, চুক্তি ভঙ্গ করায় প্রতিষ্ঠানটিকে আর কাজ দেয়নি ইসি।
বর্তমানে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে স্মার্টকার্ড তৈরি করে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
অনলাইন ডেস্ক :
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট’ হিসেবে উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাদের স্থান থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন অন্তরবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, দলটিতে ফ্যাসিবাদের সমস্ত বৈশিষ্ট্য থাকায় দেশের রাজনীতিতে এর কোনো স্থান নেই। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
আজ ৩০ অক্টোবর বুধবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, আপাতত বাংলাদেশে তার (শেখ হাসিনা) কোনো জায়গা নেই, আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা নেই। তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা পলিটিক্যাল ম্যাশিনারি নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা তাদের স্বার্থ বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়। শেখ হাসিনা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে নির্বাচনে কারচুপি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধ করেছেন বলে প্রতিনিয়ত অভিযোগ তুলেছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে জোর দাবি উঠছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে দলটির ভাতৃপ্রতীম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ হয়তো ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু তার সরকার এমন কিছু করবে না। কারণ, তারা রাজনৈতিক সরকার নয়। হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সরকার হাসিনাকে ফেরত চাইবে বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। আমি মনে করি না যে রায় হওয়ার আগে এটা করার দরকার আছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তাদেরকেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্থান নির্ধারণ করতে হবে। ড. ইউনূস জানিয়েছেন, তার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো ইচ্ছা নেই। তার সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রূপরেখাও চূড়ান্ত করেনি। তিনি বলেন, আমাদের কাজ সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় ৮০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে, হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নৃশংসতা নিয়ে ভারত যে অভিযোগ করছে তার কোনো সত্যতা নিশ্চিত করেনি মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে এবং খুব অল্প সংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, তাদেরকে ধর্মের ভিত্তিতে নয়, আওয়ামী লীগের অনুসারী হিসেবে টার্গেট করা হয়েছে। সূত্র: ইত্তেফাক ডিজিটাল।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সারাদেশে প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৭৩১ জন প্রার্থী অবৈধ আর ১৯৮৫ জন প্রার্থী বৈধ বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
এদিকে, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাতিল করা মনোনয়ন ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আগামীকাল থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। এ লক্ষ্যে ইসিতে ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি আলাদা আলাদা বুথ করেছে সংস্থাটি।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি হবে ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি রবিবার।
অনলাইন ডেস্ক :
পুলিশের যেসব সদস্য এখনো পলাতক আছেন দেখামাত্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ ১৯ অক্টোবর শনিবার দুপুরে রাজশাহী বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ বাহিনীর ১৮৭ জন সদস্য কাজে যোগ না দিয়ে পলাতক রয়েছেন। তারা এখন সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং দেখামাত্রই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। অপরাধীদের ক্ষেত্রে যে আইন, তাদের ক্ষেত্রে সে আইন প্রয়োগ করা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘৫ আগস্টের পর পুলিশের যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থা থেকে এখন অনেকটা উত্তরণ হয়েছে। পুলিশের মধ্যে যে ট্রমা কাজ করছে, আমার কাছে এমন কিছু নাই যে দুই চারদিনে সেই অবস্থা থেকে বের করে আনব। বাস্তবতা হচ্ছে উন্নতি করেছে, আরও উন্নতি হবে।’ দলীয় বিবেচনায় চাকরি পাওয়াদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকার আমলের নিয়োগে ক্ষেত্রে কিছু মেধায় চাকরি পেয়েছে। এর বাইরে যারা চাকরি পেয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সমন্বিত ডিসিশন আসতে হবে।’