চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লা থেকে মেরামতকারী দল আসতে না পারায় বিতরণ পাইপ লাইনের ত্রুটি মেরামত কার্যক্রম স্থগিত করেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।
১৯ নভেম্বর রবিবার রাত সোয়া ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম আখতারুজ্জামান। এর আগে গত ৯ নভেম্বর বিতরণ পাইপ লাইনের ত্রুটি মেরামতের কথা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কিছু অংশ ও সরাইল উপজেলায় নয় দিন গ্যাস সরাবরাহ বন্ধ থাকার কথা জানায় বাখরাবাদ।
৯ নভেম্বর প্রেরিত বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এর কুমিল্লার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শঙ্কর মজুমদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানান, আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়ককে চার লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ইউটিলিটি সিফটিং এর আওতায় ঘাটুরা টিবিএস থেকে সরাইল বিশ্বরোড পর্যন্ত নির্মিত ছয় ইঞ্চি ব্যাসের চার বার চাপের মূল বিতরণ গ্যাস পাইপলাইনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে।
২০ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত এ ত্রুটি মেরামতের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। যে কারণে ওই সময়ে ঘাটুরা থেকে উত্তর দিকে সরাইল পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। বিশেষ কারণে নির্ধারিত সময় পরিবর্তন হলে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ডিজিএম আখতারুজ্জামান বলেন, বিশেষ কারণে কুমিল্লা থেকে কারিগরী টিম আসতে না পারায় বিতরণ লাইনে মেরামত কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ফলে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে। পরবর্তীতে মেরামত কার্যক্রমের নতুন সময় নির্ধারণ করে জানিয়ে দেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে নিখোঁজের তিন দিন পর তিতাস নদী থেকে রহমত আলী (৬৯) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ১৭ জানুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে তিতাস নদীর সেতু এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রহমত আলী উপজেলার আইড়ল গ্রামের মৃত জহের আলীর ছেলে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, রহমত আলী বাংলাদেশ ব্যাংকের কেয়ারটেকার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। তার ছেলেও একই পদে চট্টগ্রামে চাকরি করেন। তিনি চট্টগ্রামে ছেলের কাছে থাকতেন। সম্প্রতি তিনি উপজেলার দেওড়া গ্রামে তার মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রহমত আলী মসজিদে নামাজে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। এই ঘটনায় তার মেয়ে একটি জিডি করেছিলেন। বুধবার তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ইতিপূর্বে তিনি তিনবার ষ্ট্রোক করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট ;
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরাইলে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ফয়সাল (২৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আজ ১৪ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত ফয়সাল উপজেলার কুট্টাপাড়ার রাকিব মিয়ার ছেলে।
পরিবারের দাবি, ফয়সাল পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, দুইপক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ হলে স্প্রিন্টারের আঘাতে ফয়সাল নিহত হন।
স্থানীয়রা জানান, ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রামের ইকবালের চৌকিদারের ছেলে অটোরিকশা চালক আকাশ রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় ধরন্তী মূলবর্গ গ্রামের হুমায়ন মেম্বারের ছেলে তোফাজ্জলের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এনিয়ে তাদের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে তোফাজ্জলের লোকজনেরা কালিকচ্ছ বাজারে আকাশের ওপর হামলা চালান। এতে গুরুতর আহত হন আকাশ। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যায় ইফতারের পর কালিকচ্ছ বাজারে দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় বাজারের কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে সরাইল থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। তাদের সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ফয়সালকে আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত ফয়সালের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে পুলিশের ছোড়া গুলিতে মারা গেছে।’
ফয়সালের মামা ওসমান বলেন, ‘ফয়সালের বাড়ি কুট্টাপাড়ায় হলেও আমাদের দোকানে থাকতো। আজ ঝগড়া শুরুর পর দোকানের তালা লাগাচ্ছিলাম। এসময় পুলিশ এসে আমার ভাগনের ওপর গুলি করে। তাকে কেন গুলি করা হলো? আমরা তো ঝগড়ার সঙ্গে জড়িতও না? আমরা এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সংঘর্ষে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। ককটেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে যুবক নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হতাহতের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।
তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে।
তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে ৪টি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর ইস্পাহানী স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।
আজ ১ মার্চ শুক্রবার তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা লাশ হয়ে একে একে এ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। গত বৃহষ্পতিবার রাতে বেইলী রোডে অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হওয়া ভবনটিতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আসার পর বাদ আসর খন্দকার মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহবাজপুর ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার। পরিবারের সবাই ভিসাও হয়েছিল। চলতি মাসে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পুরো পরিবার আর ইতালিতে পাড়ি জমানো হলো না। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
নিহত মোবারকের খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মোবারক প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। তার দেশে আসা যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফিরেন মোবারক। স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকিটও সংগ্রহ করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ ইতালিতে যাওয়ার দিন নির্ধারিত করেছি।
নিহত মোবারের স্বজন মো. ফয়সাল বলেন, ইতালিতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারটি। ভিসাও হয়েছিল। পরিবারের সকলে খেতে যাওয়াটাই কাল হলো তাদের। ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন অপূরণীয় রয়ে গেলো। ওই পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না।
নিহত সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসারের শ্বশুর একই গ্রামের মুন্সী বাহার উদ্দিন জানান, তার মেয়ের জামাই মোবারক ঢাকার মগবাজার এলাকায় থাকতেন। তার মেয়ে স্বপ্না আক্তার, দুই নাতনি সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর এবং একমাত্র নাতি সৈয়দ আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে রাতের খাবার খেতে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবাই পুড়ে মারা গেছেন। পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় চোর চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার ভোরে উপজেলার ইসলামাবাদ (গোগদ) এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার নিজ সরাইল এলাকার মুগল মিয়ার ছেলে তারেক মিয়া (২৮), দামাউড়া এলাকার আবুল উদ্দিনের ছেলে মো. শিপন মিয়া (২৭), অরুয়াইল এলাকার শওকত মিয়া ছেলে হাবিব মিয়া (৫০) ও নাসিরনগরের চাতলপাড় এলাকার মৃত চান মিয়ার ছেলে সাদেক মিয়া (৩৮)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহাসড়কের পাশে ইসলামাবাদ এলাকায় খুঁটি থেকে ট্রান্সমিটার খুলছিলেন চোর চক্রের সদস্যরা। ট্রান্সমিটারটির ভেতরের কয়েলে ব্যবহৃত তামার ক্যাবল বের করার সময় টের পায় স্থানীয়রা। এরপর তাদেরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ট্রান্সফরমারের ভেতরের কয়েল থেকে পিতলের তার চুরির সময় ৪ চোরকে হাতেনাতে আটক পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। তাদেরকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৩ অক্টোবর রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১২টার দিকে ধীতপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের আক্কেল আলীর শিশু পুত্র ইনসাফ আলী (০৪) ও তার আপন ছোট ভাই আশরাফ আলীর শিশু পুত্র সাড়ে তিন বছরের আদিল নামক এই দুই শিশু বাড়ির পাশে খেলা করছিল। খেলার কোন এসময় পরিবারের সদস্যদের অজান্তে শিশুরা বাড়ির নিকট পুকুরের পানিতে তলিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাদের দেখতে না পেয়ে আশ পাশ ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে দুপুর ১টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে তাদের মৃত দেহ ভেসে উঠে।
শাহবাজপুর ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল হুদা চৌধুরী বাদল পানিতে ডুবে শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।