অনলাইন ডেস্ক :
রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর থেকে পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে শাহিন শেখ নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
২৫ নভেম্বর শনিবার রাতে তাকে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত শাহিন উপজেলার বৌলগ্রামের শাহ আলম শেখের ছেলে।
জানা গেছে, টেকেরহাট বন্দরে শনিবার রাতে মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল এক ভুয়া পুলিশ সদস্য। এসময় বিষয়টি সাধারণ মানুষের সন্দেহে হলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে রাজৈর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের একাধিক মামলা রয়েছেন। এ সময় তার কাছ থেকে পুলিশের একটি ভুয়া আইডি কার্ড একটি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিকতার যোগ্যতা নির্ধারণে সাংবাদিকদের দাবির সঙ্গে সরকার একমত বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমি মিলনায়তনে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার প্যানেল আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিসিএস প্রশাসন একাডেমির সহযোগিতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ কর্মশালার আয়োজন করে। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যরা কর্মশালায় অংশ নেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। প্যানেল আলোচনা পর্বে মডারেটর ছিলেন বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) ড. মো. ওমর ফারুক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের দাবি অনুযায়ী সাংবাদিকতার যোগ্যতা নির্ধারণের কিছু একটা থাকা দরকার। সরকার যখনই এটা বলবে তখনই বলা হবে, সরকার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এজন্য বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদেরই আওয়াজ তুলতে হবে। দেশে ও বিদেশের সব জায়গায় এ বিষয়ে লিখতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আপনাদের এ বক্তব্য তুলে ধরতে হবে যে, এটা আপনারাই চান। সরকার সাংবাদিকদের দাবির সঙ্গে একমত। সরকারের এ বিষয়ে কোনো অসুবিধা নেই। সরকার বিষয়টির সমাধান করবে।
তিনি বলেন, সকল পেশাদার সাংবাদিকদের দাবি, সাংবাদিকদের একটা সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হোক, একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকুক, একটা সংজ্ঞায়ন থাকুক কে সাংবাদিক, কে সাংবাদিক না। সাংবাদিকরাই বলছেন, সাংবাদিকদের তালিকা থাকা উচিত। কেন বলছেন, কারণ অনেক অপেশাদার ঢুকে পড়েছে এ কমিউনিটিতে। যার দ্বারা সাংবাদিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু যখনই সরকার বলবে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, তখন আবার আরেক গোষ্ঠী বলে তালিকা কেন তৈরি হবে সাংবাদিকদের।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শক্তি বিভিন্ন সময়ে আক্রান্ত হয়েছে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার দ্বারা। যেখানে সত্য থেমে যায়, সেখানে অসত্য ও মিথ্যাচার জায়গা করে নেয়। অপতথ্যের বিপক্ষে তথ্যের লড়াইটা খুব জরুরি। তথ্য এবং অপতথ্যের লড়াই এখনও চলছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অপতথ্য রোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু সাইবার নিরাপত্তা আইনই নয়, যে কোন আইনের অপব্যবহারের বিপক্ষে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের দাঁড়াতে হবে। সরকার মোটেও চায় না কোনো আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্দোষ ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হোক।
চলারপথে রিপোর্ট :
গাইবান্ধার সদরে বন্ধুদের সঙ্গে ঘাঘট নদীতে গোসলে নেমে মোশারফ হোসেন (১৩) নামের কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মোশারফ হোসেন গোদারহাট এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে।
আজ ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কুটিপাড়ার এলাকার গোদারহাটের লেক পার্কের স্লুইচগেটের স্থলে নদী থেকে কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় এক ব্যক্তি।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মোশারফসহ তিন বন্ধু ঘাঘট নদীতে গোসল করতে যায়। গোসল শেষে সবাই উঠে আসলে নদীতে মোশরাফ নিখোঁজ হয়। পরে থানা ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস দলের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কিশোরের সন্ধান পাননি। পরে স্থানীয় অনিল চন্দ্র নামের এক ব্যক্তি পানিতে নেমে মোশারফের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা।
অনলাইন ডেস্ক :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পৃথক হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও এ কে এম শহীদুল হককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মুদিদোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। অন্যদিকে রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় শহীদুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এ ছাড়া শিশু আলিফ অপহরণ মামলায় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুপারনিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আবদুল্লাহিল কাফীর ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এসব আদেশ দেন। প্রত্যেক আসামির ক্ষেত্রেই ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল।
আবু সায়েদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা শক্ত হাতে ছাত্র–জনতার আন্দোলন দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মামলার আরেক আসামি ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন। মামলার ৩ নম্বর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনসহ অন্যরা ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মামলার ৫ নম্বর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে জামিন চান তাঁর আইনজীবী। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁর ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শহীদুল হকের রিমান্ডের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তাঁর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে শহীদুল হকের জামিন চান তাঁর আইনজীবী। শুনানিতে শহীদুল হক বলেন, তিনি কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িত নন। তিনি নিরপরাধ। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সম্প্রতি শিশু আলিফ অপহরণের অভিযোগে রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা হয়। এই মামলায় আবদুল্লাহিল কাফীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁর ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও শহীদুল হককে গ্রেপ্তারের কথা গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে বলা হয়, শহীদুল হককে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন সেনা হেফাজতে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তিনি সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। রাতে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এই সরকারে আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। সরকার পতনের পরদিন তাঁর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়।
অন্যদিকে শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসরে যান।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফীকে গত সোমবার রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করার কথা জানানো হয়। তখন অবশ্য বলা হয়েছিল, গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল কাফীর সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ ১৬ অক্টোবর সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
রাজধানীর পান্থপথে পানি ভবনে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি গণভবন থেকে যুক্ত ছিলেন।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম যুক্ত ছিলেন শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০ প্রকল্প, পুনঃখননকৃত ৪৩০টি ছোট নদী, খাল, জলাশয়ের উদ্বোধনসহ নতুন ২০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা যেন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। সব জায়গায় পানি সরে যাওয়ার জন্য জলাধার রাখতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নদী-নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো, এগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদী-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যায়। শুধু পাড় বাঁধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে।
জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রত্যেক এলাকায় নদী, খাল, বিল, হাওরের পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। নদীপথগুলোও সচল করার পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। একই সঙ্গে দেশের ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ‘কমিউনিটি আই সেন্টার’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আর জামায়াত হলো যুদ্ধাপরাধীদের দল। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে সচল রাখার জন্য বিএনপি-জামায়াত উভয়ের হাত থেকেই দেশকে মুক্ত রাখতে হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে দেশের ছয় জেলায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ ২৩ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব জনসভায় যুক্ত হন শেখ হাসিনা।
কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরি, ঝিনাইদহের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ, সাতক্ষীরার সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোণার জেলা স্টেডিয়াম, রাঙ্গামাটি জেলার শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এবং বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলায় এসব জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
নিজের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল। এই সন্ত্রাসী এবং যুদ্ধাপরাধীদের থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে। তাহলেই দেশে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকবে। দেশের উন্নয়নের ধারাটা তখনই অব্যাহত থাকবে, যখন নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার মন মতো প্রার্থী বেছে নেবে। তাই আমার আবেদন থাকবে সকলের কাছে, এই গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে আমরা যেন আরও উন্নত সমৃদ্ধ করতে পারি, সেই প্রচেষ্টাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ঘোষণা আমরা দিয়েছি। কাজেই আমাদের বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে আমরা আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে তুলব। জনগোষ্ঠী হবে স্মার্ট, আমাদের সরকার হবে স্মার্ট, অর্থনীতি হবে স্মার্ট এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্থাও স্মার্ট হবে। আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলব, মাথা উঁচু করে চলব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে আমরা ছিনিমিনি খেলতে দেব না, এই কথাটা মনে রাখতে হবে। ওই সন্ত্রাসী বিএনপি এবং যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের হাতে এদেশ কোনোদিনই নিরাপদ নয়। কারণ এরা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। কাজেই এদের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আসার পর ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এই বাংলাদেশটা হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। মানুষের খাদ্যের কোনো অভাব নেই। আজকে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পেরেছি। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে, আজ ৭৬ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই এবং বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। রাস্তা-ঘাট-পুল ব্রিজ, অবকাঠামো তৈরি করে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়েছি, তা আপনারা নিজেরাই দেখছেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছিলাম। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন সাধন করি। একইদিনে সারাদেশে একসঙ্গে ‘শতসেতু’ উদ্বোধনের দিনে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪৫টি ব্রিজ উদ্বোধন করি। রাস্তা-ঘাট করে দিয়েছি এবং এখন সেখানকার এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, নানারকম উন্নয়ন হচ্ছে। সেই সঙ্গে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, নেত্রকোণা, এমনকি বরগুনা- যেটা সব থেকে অবহেলিত একটা জায়গা ছিল, সেখানে আজকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। বরগুনা ও পটুয়াখালী সবমিলিয়ে পুরো বরিশাল বিভাগের চিত্র পাল্টে গেছে। এই উন্নয়নের ধারাটিকে আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। তারা নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৩ ও ১৪ সালে ঠিক যেমন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, আবারও সেই ভয়ংকর রূপ নিয়ে তারা নেমেছে। তাদের নেতা কে সেটাই প্রশ্ন। দু’জনেই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে আজকে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে, তার বোন ও ভাই এবং পরিজনেরা আমাদের অনুরোধ করায়, তার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া, যারা আমাকে গ্রেনেড হামলা করে মারতে চেয়েছিল। বোমা পুঁতে রেখেছে, গুলি করেছে, ট্রেনে হামলা করেছে। তারপরেও তার (খালেদা জিয়া) জন্য আমরা এটুকু মানবিকতা দেখিয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তারেক জিয়া হাওয়া ভবন খুলে, সেটিকে একটি দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা- আমাদের বহু নেতা-কর্মীকে তারা হত্যা করেছে। এরপর ২০০৭ সালে ‘ইমার্জেন্সি’ এলে আর কোনোদিন ‘রাজনীতি’ ও ‘নির্বাচন’ করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে, দেশে থেকে পালিয়েছে। আর, এখন বিদেশ থেকে হুকুম জারি করছে- পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারার।
২০১৩-১৪ এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় বিএনপি রাস্তাঘাট কেটেছে, গাছ কেটেছে ৫৮২টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ছয়টি ভূমি অফিস এবং ৩২৫২টি গাড়ি, ২৯টি রেল, ৯টি লঞ্চ তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। সেগুলো মেরামত করে আমরা আবার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এখন আবার তাদের সেই ভয়ংকর রূপ! কাজেই এখন আমি সবাইকে বলব, যারা এই আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়- তাদের প্রতিহত করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, মাত্র কয়েকদিন আগে রেলে আগুন দিল, ফিশপ্লেট খুলে ফেলল। রেলের বগি পুড়ে সেখানে একজন মানুষ মারা গেল। বাচ্চাকে বুকে আঁকড়ে ধরে থাকা মা ও শিশু আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেল। বাসে আগুন দিচ্ছে, সেখানে ঘুমন্ত হেলপার আগুনে পুড়ে মারা গেল। কোনো মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ থাকলে, এগুলো তারা ঘটাতে পারে না। এ দেশের সাধারণ মানুষকে এই যে হত্যা করা, এর প্রতিশোধ তারা নেবেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে ইলেকশন। এই ইলেকশনটা আমরা এবার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কারণ আমরা চাই, জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। শান্তিমতো ভোট দিক। সকলে জনগণের কাছে যাবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন। আমি চাই নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হোক। জনগণের যে ভোটের অধিকার, সেটা তারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারুক। গণতন্ত্রটাকে আমরা সুরক্ষিত করতে চাই। কারণ একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকলে, বিধি ব্যবস্থা থাকলে, দেশের যে উন্নতি হয়- বর্তমান দৃশ্যমান উন্নতি সেটারই প্রমাণ।