অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের উত্তরাখণ্ডের নির্মাণাধীন টানেলের ভেতর আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পাইপ স্থাপনের যে কাজ চলছিল সেটি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে উন্মুক্ত হয়েছে টানেলের মুখ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবারের লাইভ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শ্রমিকদের বের করে আনার কাজ শুরু হয়েছে আর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স। গত ১২ নভেম্বর ভোরে টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে ভেতরে আটকা পড়েন ৪১ শ্রমিক। এরপর ১৭ দিন ধরে সেখানে আটকা তারা।
টানেলে মোটা পাইপ স্থাপনে ব্যবহার করা হয়েছে নিষিদ্ধ ‘র্যাট হোল’ মাইনিং। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আমেরিকান অগারস ড্রিলিং মেশিন দিয়ে ড্রিল করে সেখানে ৬০ মিটার লম্বা পাইপ স্থাপনের কাজ চলছিল। কিন্তু শুক্রবার সেই ড্রিলিং মেশিনটি ভেঙে যায়। এরপর হাত দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে শ্রমিকদের উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এই উদ্ধার অভিযানের জন্য ডাকা হয় সেনা সদস্যদের।
উদ্ধার অভিযানের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং চিকিৎসকরা এখন টানেলের ভেতরে ঢোকার জন্য প্রস্তুত আছেন। ভেতরে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন তারা। এরপরই পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের বের করে আনা হবে।
শ্রমিকদের বের করে আনা মাত্র প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দিতে ৩০ কিলোমিটার দূরে ৪১ বেডের একটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিয়ে যেন অ্যাম্বুলেন্সগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে সেজন্য সেখানে একটি গ্রিন করিডোর তৈরি করা হয়েছে।
ওই হাসপাতালে যে ৪১টি বেড তৈরি রাখা হয়েছে সেগুলোর সবগুলোতে অক্সিজেন সুবিধা রয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি
স্টাফ রিপোর্টার:
এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় আরও ২৬৩ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন। এসব কর্মীরা মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিউলের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। ঢাকার কোরিয়ান দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার ইপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে আরও ২৬৩ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন।
এদিকে, প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এসব কর্মীদের বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
ঢাকার কোরিয়া দূতাবাসের তথ্য বলছে, ২০০৮ সাল থেকে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম বা ইপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানো সংক্রান্ত চুক্তি হলো ইপিএস। এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৫৬১ জন কর্মী এই পদ্ধতিতে কোরিয়া গেছে। বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) তথ্য বলছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৬৯১ জন ইপিএসের আওতায় কর্মী নিয়েছিল কোরিয়া। ইপিএসের প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ থেকে অদক্ষ বিদেশী কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে কোরিয়া। করোনা মহামারির কারণে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশি ইপিএস কর্মী নেওয়া স্থগিত রেখেছিল। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে কোরিয়া সরকার আবার বিদেশি কর্মী নেওয়া শুরু করে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেখতে দেখতে এসেই গেল মহেন্দ্রক্ষণ। অপেক্ষার পালা শেষে। এবার মাঠের খেলা শুরু। আজ থেকে ভারতের মাটিতে ১০ দেশের জাতীয় দলকে নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়ানাডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এবারের আসরে অংশ নেওয়া দলগুলো হচ্ছে স্বাগতিক ভারতসহ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস। ভারতের ১০টি ভেন্যুতে ৪৬ দিনে মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। লিগপর্বে প্রতিটি দলই একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। লিগপর্ব শেষে সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। দুই সেমিফাইনালের দুই জয়ী দল ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে।
আহমেদাবাদে আজ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এবারের আসরের। লর্ডসে ২০১৯ সালের স্মরণীয় ফাইনালের সুখস্মৃতি যেন ফিরে আসবে এই ম্যাচের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে উদ্বোধনী ম্যাচটি। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি দেখা যাবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টসে।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু হবে ৭ অক্টোবর, ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে। ১০ অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটিও বাংলাদেশ খেলবে এই ধর্মশালাতেই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচ দুটি সামনে রেখে বাংলাদেশ দল আসামের গোহাটি থেকে এরই মধ্যে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় পৌঁছে গেছে।
এদিকে, গুঞ্জন ছিল ভারতে অনুষ্ঠেয় ক্রিকেট বিশ্বকাপে হতে যাচ্ছে জমকালো উদ্বোধন। সময় ঘনিয়ে আসতে আসতে সেই খবরও বাতাসে মিলিয়ে গেল! দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এবারের আসরে থাকছে না কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যদিও সর্বশেষ ২০১১ সালে এই উপমহাদেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। যার জমকালো উদ্বোধন হয়েছিল ঢাকায়। এবার অবশ্য তেমন কিছু হচ্ছে না। তবে বুধবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হয়েছে ‘ক্যাপ্টেন্স ডে’ নামের পোশাকি ইভেন্ট। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১০ দলের অধিনায়ক প্রেস কনফারেন্স ও ছবি তোলার আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। এদিকে, জশ বাটলারের ইংল্যান্ড ১০ দলের এই টুর্নামেন্টে শিরোপা ধরে রাখার অন্যতম ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারকা অল-রাউন্ডার বেন স্টোকসের ফেরা ইংলিশদের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এ কারণেই এক লাখ ৩০ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশে^র সবচেয়ে বড় নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের প্রমাণে মুখিয়ে থাকবে।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারের বিশ্বাস, ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া টানা তিনবার বিশ^কাপ শিরোপা জয়ের যে রেকর্ড গড়েছিল, এরপর একমাত্র ইংল্যান্ডই পরপর দুই আসরে শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার। সহজেই তারা এবারও ফাইনালে পৌঁছতে সক্ষম হবে। এ সম্পর্কে সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টার স্টার স্পোর্টসে গাভাস্কার বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে যে পরিমাণ প্রতিভা আছে, তা অনেক দলেরই নেই। তাদের দলে দুই থেকে তিনজন বিশ্বমানের অল রাউন্ডার আছে, যারা ব্যাট ও বলহাতে যে কোনো সময় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলিং লাইন আপে রয়েছে- রেসি টপলি, ডেভিড উইলি, মার্ক উড ও ক্রিস ওকস। তাদের সঙ্গে আরও রয়েছেন স্টোকস, যিনি সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার পর আবারও ফিরে এসেছেন। তবে এবারের বিশ্বকাপে তিনি দলে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ২০১৯ সালে ইয়ন মরগানের নেতৃত্বে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের আটজন এবারের দলে আছেন। মরগানের অবসরের পর বাটলারের জন্য অধিনায়কের আসনে আসীন হওয়াটা সহজ ছিল। গত বছর তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড।
জশ বাটলার বলেন, বিশ্বকাপ শিরোপা অবশ্যই ধরে রাখতে চাই। যদিও আমরা নিজেদের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখছি না। এটা একটি নতুন টুর্নামেন্ট এবং আমরা সবাই জানি, এই আসরটা অত্যন্ত কঠিন হতে যাচ্ছে। কারণ এখানে বেশ কিছু শীর্ষ দল আছে। কিন্তু আমাদের দলও ভালো, ইংল্যান্ড একটি বিপজ্জনক দল। এই দলে বেশ কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে, যাদের ওপর অনায়াসেই নির্ভর করা যায়।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৯ সালে লর্ডসের ফাইনাল ম্যাচটি টাই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ম্যাচের ফলাফল নিষ্পত্তি না হওয়ায় বাউন্ডারি-কাউন্ট আইনে সেরা দল হিসেবে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়। চার বছর আগে বিশ^চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে দারুণ এক বেঞ্চমার্ক সেট করে চলেছে ইংল্যান্ড। গত বছর নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তারা ৪৯৮ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল।
সব সময়ের মতই এবারও আন্ডারডগ হিসেবেই মাঠে নামতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। হাঁটুর ইনজুরির কারণে প্রথম ম্যাচে দলে থাকছেন না অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গিয়ে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া সত্ত্বেও উইলিয়ামসন বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্ত হন। কঠোর পরিশ্রম করে ফিট হয়ে দলে ফিরে আসার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ম্যাচজয়ী ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছেন কিউই অধিনায়ক। ২০১৯ বিশ^কাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন উইলিয়ামসন। প্রস্তুতি ম্যাচের পর উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘পাকিস্তান অত্যন্ত ভালো একটি দল। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সবসময়ই আনন্দের। আমিও নিজেকে পরখ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। সবকিছুই ভালোভাবে এগুচ্ছে। এখন মূল আসরে নিজেদের প্রমাণের অপেক্ষায় আছি।’
উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে আজ নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিবেন টম লাথাম। এদিকে বুড়ো আঙুলের ইনজুরির কারণে বিশ^কাপের কয়েকটি ম্যাচ মিস করতে যাচ্ছেন ফাস্ট বোলার টিম সাউদি। দুই সপ্তাহ আগে তার আঙুলে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। দ্রুতই সে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন লাথাম।
এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১২টি বিশ্বকাপের আটটিতেই সেমিফাইনালে খেলা নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। ট্রেন্ট বোল্ট-সাউদির নেতৃত্বে বিশ্বমানের পেস আক্রমণের পাশাপাশি ভারতীয় টার্নিং পিচে মিচেল সান্টনার ও ইশ সোধির স্পিন ভালো সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। লাথামের নেতৃত্বে শেষ প্রস্তুত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড সাত রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা ভালোভাবে সেরে নিয়েছে। লাথাম বলেন, ‘বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে এখানে খেলতে হবে। প্রতি ম্যাচেই লক্ষ্য থাকতে হবে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার। তবে আমরা ভারতে আগামী কয়েকটি দিন দারুণভাবে উপভোগ করতে চাই। আর ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’ সংগৃহীত
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ফেরার পথে আখাউড়া সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক সবুজ দাস (২২) কে আটক করেছে ২৫ বিজিবি সরাইল ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।
আজ ১৬ অক্টোবর বুধবার দুপুরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া আব্দুল্লাহপুর নামক স্থান থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত সবুজ দাস জেলার নাসিরনগর উপজেলা কুন্ডা ইউনিয়নের ইন্দ্রজিত দাসের ছেলে।
বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তির জানায়, আখাউড়া ফকিরমোড়া বিওপির টহল দল সীমান্ত পিলার ২০২২/১০-এস হতে আনুমানিক ৩০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আব্দুল্লাহপুর নামক স্থান হতে বাংলাদেশী নাগরিক সবুজ দাসকে আটক করা হয়। আটককৃত বাংলাদেশী নাগরিক সবুজ জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, প্রায় ৪ মাস পূর্বে রাজ মিস্ত্রির কাজের সন্ধানে ভারতের আগরতলায় যায়। পরে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশী মানব পাচারকারী মোঃ নাঈম চৌধুরীর সহায়তায় আখাউড়া আবদুল্লাহপুর এলাকায় অবৈধভাবে ভারত হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবি কর্তৃক আটক হয়।
আটককৃত বাংলাদেশী নাগরিককে আখাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং মানব পাচারে সহায়তাকারী মোঃ নাঈম চৌধুরী বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক : তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ ৯জুন রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় শপথগ্রহণ করেন তিনি। শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় রাষ্ট্রপতি ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এর মধ্য দিয়ে কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহেরুর পর ভারতে টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেন মোদী।
রাষ্ট্রপতি মোদী ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অন্যান্য নেতাদেরকে নতুন সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মোদীর পরই শপথ নিয়েছেন রাজনাথ সিং। পাশাপাশি তার মন্ত্রিপরিষদের আরও কয়েকজন সদস্যও শপথ গ্রহণ করছেন।
অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। কেবল বিদেশিই নয়, ভারতের রাজনৈতিক নেতাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয় মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে।
এর মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে। তবে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি অনুষ্ঠানে যাননি। ওদিকে, চলচ্চিত্র তারকারা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।
শপথের আগে সকাল সকাল মোদীকে গিয়েছিলেন রাজঘাটে। মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধের সামনে গিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সৌধ ‘সদৈব অটল’-এর কাছেও গিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন তিনি।
মোদীর শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাজ সাজ রব ছিল দিল্লিতে। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় রাজধানী। তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের ব্যবস্থা নেয় দিল্লি পুলিশ। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কারণে দিল্লির আকাশসীমাতেও রোববার কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে ২৯২টি আসনে জয় পেয়েছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৩টি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে এনডিএ সরকার গড়লেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। ফলে তারা চাপে রয়েছে।
সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বিজেপি’কে শরিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এনডিএ শরিকরা মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি শপথ নিলেন। রোববারই সরকার গড়ার কথা রয়েছে এনডিএ’র।
শপথ নেওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর মোদী বলেছিলেন, “সকালে এনডিএ জোটের সব শরিক আমাকে নেতা হিসাবে বেছে নিয়েছে এবং রাষ্ট্রপতিকে তা জানিয়েছে। রাষ্ট্রপতি এরপর আমাকে ডেকেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। তারপরই আমি সন্ধ্যায় শপথগ্রহণের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি।”
এনডিএ-কে জয়যুক্ত করার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোদী বলেন, “এনডিএ-কে তৃতীয়বারের মতো দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাইৃ আমি এও বলতে চাই, গত দুই মেয়াদে দেশ যে গতিতে উন্নতি করেছে এবারও আমরা একই গতিতে একই দিশায় কাজ করে যাব।”
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বৈঠকে জ্বালানি, ব্যবসা ও বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশি জনশক্তি এবং মুসলিম উম্মাহ, বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এই বৈঠকটি অত্যন্ত উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।’
জ্বালানি সম্পর্কে কাতারের আমির বলেন, ‘কাতার থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা কয়েক মাস ধরে বিবেচনাধীন রয়েছে। আমি আমির হিসাবে, আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, বন্ধু দেশ হওয়ায় আমি আপনাকে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেব।’
ড. মোমেন বলেন, এটি (প্রতিশ্রুতি) বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন। এই নতুন চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে।
২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত ১৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন প্রায় ৪০ কন্টেইনার অর্থাৎ ১.৮ থেকে ২.৫ এমটিএ জ্বালানি আমদানি করছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশ কাতার থেকে আরও এলএনজি সরবরাহ চায়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও প্রশংসা করে কাতারের আমির বলেন, তারা একসময় জানত বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ ও দারিদ্র্যপীড়িত দেশ। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের খাদ্য ঘাটতি দূর করেছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত করেছি। দারিদ্র্য একটি অভিশাপ।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার পিতার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) স্বপ্নের বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিছুটা এগিয়েছি। কিন্তু আমার কাজ শেষ হয়নি। আমি আরও কাজ করতে চাই। কিন্তু আমি একা তা করতে পারবো না। আমি আপনার সাহায্য চাই। আমার আরও বিনিয়োগ দরকার। আমি আমার দেশকে বিনিয়োগের জন্য খুলে দিয়েছি। আপনি পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারেন।’
শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে এ বছরের মধ্যে সম্ভব হলে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, তিনি অবশ্যই বাংলাদেশ সফর করবেন এবং এটি এই বছরের মধ্যেই হবে।
মুসলিম উম্মাহ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে তুচ্ছ বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য অন্তরায়।’ তিনি কাতারের আমিরকে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য কাজ করার অনুরোধ জানান।
জবাবে আমির বলেন, তিনি হয়তো মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন না, তবে, মুসলিম উম্মাহ যাতে আরও অগ্রসর হয় সে বিষয়ে তার প্রচেষ্টা থাকবে।
কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা সম্পর্কে আমির বলেন, ‘এখন তিন লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি এখানে আছেন এবং তারা কাতারের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কাতার নতুন প্রকল্প নিতে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশিরা এখানেই থাকবে এবং তারা পরিশ্রমী ও আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আমরা বাংলাদেশিদের নিয়ে খুবই খুশি।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বৈঠকটির পরিবেশে ছিল খুবই আন্তরিক। এটি একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় যে, তিনি তাঁকে তাঁর গাড়ি থেকে নামার সময়ই স্বাগত জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রী দোহায় কাতার ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি বিশেষায়িত স্কুল আওসাজ একাডেমি পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা একাডেমির বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেন। আওসাজ একাডেমিতে ৩ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সী প্রায় ৫০০ জন ছাত্র এবং ১৮৫ জন শিক্ষক রয়েছেন।
এর শিক্ষার্থীদের আঁকা শিল্পকর্ম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। তিনি একাডেমিতে বাংলাদেশি অটিস্টিক শিশুদের আঁকা চারটি শিল্পকর্মও উপহার দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশে অটিস্টিক শিশুদের দ্রুত শনাক্তকরণে কাতারের সহায়তা চান। ড. মোমেন জানান, কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে যে, তারা একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে।