ফেসবুকে নারী-পুরুষ উভয় নামে বানাতেন ফাঁদ

জাতীয়, 28 November 2023, 813 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ভিসা ও বিনিয়োগের নামে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক টাকা হাতিয়ে নেওয়া এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।

banner

২৭ নভেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ৮টার সময় মিরপুর মডেল থানাধীন সনি সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন- মো. আজিজুল হক সরকার। তার বয়স ৩৫ বছর। অভিযানে তার কাছ থেকে অপরাধের কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন, ৮টি ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, ১টি কানাডিয়ান এনআইডি কার্ড, ৩টি ব্ল্যাঙ্ক ব্যাংকচেক ও ৪টি মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়।

আজ ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর মো. ইবাদত হোসেন ভূইয়া মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে এটিইউ’র সাইবার ক্রাইম উইংয়ের কাছে একটি অভিযোগ করেন। সাইবার ক্রাইম উইং অভিযোগকারীকে থানায় মামলা করার পরামর্শ প্রদান করে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার আসামি মো. আজিজুল হকের বিরুদ্ধে গুলশান থানার মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডিএমপির রামপুরা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতার আসামি আজিজুল হক সরকার, ‘নুসরাত আক্তার’ নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে কানাডায় বিনিয়োগ ও ভিসার প্রলোভন দেখিয়ে মো. ইবাদত হোসেন ভূইয়ার সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে নগদ ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে ভূয়া পরিচয় ব্যবহার করে অসংখ্য নারী ও পুরুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে কানাডার ইনভেস্টর ভিসা ও অস্ট্রেলিয়ার স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে সিটিজেনশিপ পাইয়ে দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। আসামি পুরুষদের সঙ্গে মেয়েদের নামের আইডি এবং মেয়েদের সঙ্গে পুরুষদের নামের আইডি ব্যবহার করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে ভিসা প্রদানের নামে অর্থ আত্মসাৎ করতো। এছাড়াও সে কানাডার সিটিজেনের নকল আইডি কার্ড ও জব আইডি কার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগের নামে প্রচুর মুনাফার লোভ দেখিয়ে অসংখ্য মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণার অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

স্টেশনে যাত্রীর ঘুষিতে আনসার সদস্য নিহত

জাতীয়, 9 February 2024, 721 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীর ঘুষিতে আনসার সদস্য মাইনুল ইসলাম (৪৫) নিহত হয়েছেন। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে এক যাত্রী তাকে ঘুষি মারে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি পড়ে যান।

banner

পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আনসার সদস্য মাইনুল ইসলাম পিতার নাম জয়েন উদ্দীন। তার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাঙ্গনপুর গ্রামে। তিনি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, রাত ৯টার দিকে বিনা টিকিটে ঢুকে স্টেশনের প্লাট ফরর্মে এক যুবক ঘোরাঘুরি করছিলো। ওই সময় আনসার সদস্য তাকে বের হয়ে যেতে বললে তর্কাতর্কিতে জড়ায়। এক পর্যায়ে আনসার সদস্য মাইনুলকে ঘুষি মারে। এতে সে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কুমার বলেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে সেখানে কি ঘটেছে বা কিভাবে মাইনুলের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও সিসি ক্যামেরাও দেখা হবে।

তিনি বলেন, মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরে রপ্তানি আয় কমেছে ৩০৪ কোটি টাকা

আখাউড়া, জাতীয়, 6 July 2023, 2000 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
এক সময় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে অর্ধশতাধিক পণ্য ভারতে রপ্তানি হলেও এখন রপ্তানি হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য। মূলত এখন হিমায়িত মাছের ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করে বন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য। তবে মাছ রপ্তানি কমার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৩৭৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার পণ্য। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩০৪ কোটি টাকা কম। এছাড়া তলানিতে ঠেকে আছে বন্দরের আমদানি বাণিজ্যও। ফলে আশানুরূপ রাজস্ব পাচ্ছে না বন্দর এবং শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

banner

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য চললেও ২০০৮ সালে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় আখাউড়া স্থলবন্দর। মূলত এ বন্দর দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে পণ্য রপ্তানি হয়।

পাঁচ বছর আগেও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া পণ্যের তালিকায় ছিল- হিমায়িত মাছ, পাথর, রড, সিমেন্ট, তুলা, ভোজ্য তেল, এলপি গ্যাস, প্লাস্টিক, শুঁটকি ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীসহ অর্ধশতাধিক পণ্য। তবে সময়ের পরিক্রমায় ছোট হয়ে এসেছে সেই তালিকা। বর্তমানে হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট ও প্লাস্টিকসহ হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য যাচ্ছে ভারতে।

রপ্তানিকৃত পণ্যের অর্ধেকই হিমায়িত মাছ। আর মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, পুঁটি, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ও পাবদাসহ সব ধরনের চাষের মাছ। প্রতি কেজি মাছের রপ্তানি মূল্য আড়াই মার্কিন ডলার। প্রতিদিন (ছুটির দিন ব্যতিত) গড়ে এক থেকে দেড় লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে।

তবে, গেল কয়েক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। আগে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টন মাছ রপ্তানি হলেও এখন তা কমে অর্ধেকে নেমেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে বন্দরের রপ্তানি আয় কমেছে। মূলত সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে তাজা মাছ পাচারের কারণে রপ্তানি ক্রমেই কমছে বলে অভিযোগ মাছ রপ্তানিকারকদের।

আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, আখাউড়া উপজেলার সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত তাজা মাছ পাচার হচ্ছে। এর ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা হিমায়িত মাছের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বিষয়টি বিজিবি, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এটি বন্ধ না করতে পারলে যে কোনো মুহূর্তে হিমায়িত মাছের রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়বে।

এদিকে, ভারত থেকে পণ্য আমদানিও এখন অনিয়মিত। সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে গম, ভুট্টা পাথর ও পেঁয়াজ। নিজেদের চাহিদা মতো পণ্য আমদানির সুযোগ পাওয়ায় আমদানি বাণিজ্যে খুব একটা আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। এতে করে বন্দরের রাজস্ব আদায়ও তলানিতে ঠেকেছে।

আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৩৭৬ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ৯১১ টাকার পণ্য। আর ভারত থেকে আমদানি হয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ৯৩ লাখ ৬১ হাজার ৫২৮ টাকার পণ্য। আমদানি পণ্য থেকে শুল্ক কর্তৃপক্ষ রাজস্ব পেয়েছে ৫৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬৯৮ টাকা। তবে বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছিল ৬৮০ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ১৭৪ টাকার পণ্য। ওই অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ২৮৮ কোটি ৪১ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৮ টাকার পণ্য।

স্থলবন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে সড়ক ও রেল যোগযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় অনেক পণ্য এখন নিজ দেশ থেকেই সংগ্রহ করেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। ফলে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমে এখনও বন্দরটির ঘুড়ে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। সেজন্য যখন যে পণ্যের চাহিদা, সেটি আমদানির সুযোগ দিতে হবে ব্যবসায়ীদের।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান আহমেদ খলিফা বলেন, কখন কোন পণ্যের চাহিদা তৈরি হবে- সেটি আগে থেকে বলা যায় না। সেজন্যই আমরা সব পণ্য আমদানির জন্য বন্দর খুলে দেওয়ার দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের সেই দাবি পূরণ হচ্ছে না। সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে কিছু পণ্যের তালিকা দিয়ে আমদানির অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটির এখনও সুরাহা হয়নি।

একমাত্র আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমেই বন্দরে আবার কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে আসতে পারে। যার মাধ্যমে সরকারও বিপুল অংকের রাজস্ব পাবে’- উল্লেখ করেন ফোরকান আহমেদ খলিফা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বন্দরগুলো থেকে সরকারের রাজস্ব আহরণের বিষয়টি অনেকাংশেই আমদানি বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি অনিয়মিত হওয়ায় রাজস্ব আদায় হচ্ছে কম। আমদানি বাড়াতে ব্যবসায়ীরা যেসব পণ্য আমদানির জন্য তালিকা দিয়েছেন- সেটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও চিঠি চালাচালি হচ্ছে। অচিরেই এ বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশা করছি।

আমার ওপর ভরসা রাখুন: শেখ হাসিনা

জাতীয়, 4 January 2024, 821 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপর ভরসা রাখতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।

banner

আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভাষণ দেন তিনি।

জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর আপনাদের সামনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছি। বিশদভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছি কী অবস্থায় দেশকে পেয়েছিলাম, আর আপনাদের জীবনমান উন্নয়নে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। দেশের যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছে, তা টেকসই করে আরও উন্নত জীবন যাতে আপনারা পান- আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হতে পারলে আগামী ৫ বছরে আমরা কী কী কাজ করব সেই ব্যাখ্যা তুলে ধরেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হাজির হয়েছি। এই উন্নয়নকে টেকসই করা, আপনাদের জীবনমান উন্নত করা, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ চাই।

তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে। ইতোমধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে সুযোগ পাওয়া যাবে তা কার্যকর করা এবং যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে; তা একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মোকাবিলা করতে পারবে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ সমাজ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল কারিগর। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোন উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন জোগাবেন না।

তিনি বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। এই প্রথম বাংলাদেশে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করছে। আমাদের সরকার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। গণমানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, দেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করে। জনগণের খাদ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যাপক হারে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, সংঘাতে নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এই নীতিতেই আমরা বিশ্বাস করি। এই নীতি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে উন্নত করেছি।

দেশবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দীর্ঘ চলার পথে যতটুকু অর্জন, তার সবটুকুই আপনাদের অবদান। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ অর্জন করা সম্ভব হতো না। চলার পথে যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি করে থাকি, তাহলে আপনারা ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন- এটাই আমার আবেদন। আবার সরকার গঠন করতে পারলে, ভুলগুলো শোধরাবার সুযোগ পাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য। আমি বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে দুঃখ-বেদনাকে সম্বল করে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের মাঝে খুঁজে পেয়েছি- আমার বাবার স্নেহ, মায়ের মমতা এবং ভাইয়ের মায়া। আপনারাই আমার পরিবার, আমার ওপর ভরসা রাখুন। আসুন, সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন পূরণ করি।

কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই-
‘আমাদের ডাক এসেছে
এবার পথে চলতে হবে।
ডাক এসেছে চলতে হবে আজ সকালে
বিশ্বপথে সবার সঙ্গে সমান তালে।
পিছন পানে তাকাস নি আজ, চল সম্মুখে
জয়ের বাণী নূতন প্রাতে বল ও-মুখে।’

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে সভা

জাতীয়, 30 November 2024, 324 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ভোলায় স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

আজ ৩০ নভেম্বর শনিবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে জেলা প্রশাসন স্মরণ সভার আয়োজন করে। সভা শেষে শহীদ ৪৬ পরিবার এবং আহত ২০ পরিবারকে ১০ হাজার করে মোট ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার অনুদান তুল দেওয়া হয়। এর আগে নিহতের স্মরণে বিশেষ দোয়া করা হয়।

জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ সমন্বয়ক মো. রাসেল মাহমুদ, স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন মনজুর হোসাইন, সিভিল সার্জন ডা. মনিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, জামায়াতের আমির জাকির হোসেন, সেক্রেটারি হারুন অর রশিদ, বিজিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম রতনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী, শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলনে জেলায় ৪৬ জন শহীদ এবং ২০ জন আহত হন।

হিমাগারে বেশি দামে আলু বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা

জাতীয়, 17 September 2023, 933 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সরকার বেঁধে দেওয়া দরে আলু বিক্রি না করায় জয়পুরহাটের কালাই পৌরশহরের শিমুলতলী আরবি হিমাগারের তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে কালাই পৌরশহরের শিমুলতলী আরবি হিমাগারে অভিযান পরিচালনা করেন বগুড়া আঞ্চলিক ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক ইফতে খারুল আলম রিজভি।

banner

বগুড়া আঞ্চলিক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক ইফতে খারুল আলম রিজভি জানান, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ৫টি পণ্য ডিম, আলু, পিয়াজ, চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু বিভিন্ন হিমাগারে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকা কেজির বিপরীতে ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেন। ক্রেতাদের ঠকিয়ে বেশি দাম আদায় করছেন এমন খবরের ভিত্তিতে হিমাগারের আলু ব্যবসায়ী মোস্তফা, মোসাদ্দেক হোসেন এবং মিজানুর রহমানের মোট পনের হাজার টাকা জরিমানাসহ তাদের সতর্ক করা হয়েছে।

বাজারে সরকার নির্ধারিত ওই ৫টি পণ্যের দাম কোনভাবেই যেন ব্যবসায়ীরা বেশি নিতে না পারেন তার জন্য এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। অভিযানের সময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন।