চলারপথে রিপোর্ট :
হালদারপাড়াস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় মিলনায়তনে সমন্বিত সাংস্কৃতিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাথে এক প্রতিনিধি সভা আজ মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিতাস পাড়ে অভাবনীয় উন্নয়নের রূপকার, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার লেখক ও কলামিস্ট, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের জন্মের সাথে যুক্ত ছিলাম বলেই নিজের মধ্যে একটি আকাক্সক্ষা জাগে যে এ দেশটিকে কিভাবে সুন্দর করা যায়। সেই বোধ থেকেই রাজনীতিতে এসেছি। রাজনীতিও এখন আর আগের মত সহজ নয়। রাজনীতির সমীকরণ অনেক জটিল হয়ে গেছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে অনেক সমীকরণ নিয়ে মাঠে অনেক প্রার্থী থাকতে পারেন। আমি আবার চতুর্থবার আমার নিজ দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে আমার সংসদীয় কর্মকালে আমি কতটুকু কি করেছি, তার বিচারভার সদর উপজেলা ও বিজয়নগরবাসীই ভালো করে জানবেন। আমি চেষ্টা করেছি এই দুটি উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, একই সাথে আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষার মাধ্যমে সমাজে শান্তি সমুন্নতকরন, চাঁদাবাজি ভূমিদস্যুতা রাহাজানি, ছিনতাই মুক্ত জনপদ গড়ে তোলা। শিক্ষাঙ্গনে অনেক কিছুই করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ নতুন নতুন কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ইত্যাদি একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও গড়ে তোলা হয়েছে। পুরনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রায় প্রতিটিতেই একাধিক শিক্ষা ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষার ব্যাপারে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল এবং আগামীতেও থাকবে ইনশাল্লাহ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জনপদ ঐতিহ্যগতভাবেই একটি উদার সংস্কৃতিচর্চার একটি সমৃদ্ধ জনপদ। দীর্ঘকাল থেকেই এখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমুন্নত ছিল। কিন্তু হাল আমলে আমাদের এই সংস্কৃতি চর্চাকে অবদমিত করার জন্য অনেক প্রচেষ্টাই এখানে সংঘটিত হয়েছে। মানুষের ঐক্যবদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনার কাছে এসব প্রচেষ্টা পরাভূত হয়েছে। আবারো যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক চেতনার সংস্কৃতিবান্ধব সরকার যদি ক্ষমতায় না আসে তবে তার প্রাথমিক ধাক্কা সংস্কৃতি কর্মীদের উপরই বর্তাবে। তাই আমি মনে করি, অসাম্প্রদায়িক চেতনার যে ধারা বর্তমানে বহমান আছে আগামীতেও তা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য সংস্কৃতি কর্মীদেরকে দায়িত্বশীল হয়ে ভোটের মাঠে কাজ করতে হবে। এলাকার উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকাকে জয়যুক্ত করুন।’ ২৯টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সমন্বিত সাংস্কৃতিক পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় সমন্বিত সাংস্কৃতিক পরিষদের উপস্থিত সকল সদস্যবৃন্দ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পক্ষে সকল শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠ শিল্পী, তিতাস ললিতকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, বেতার এবং টেলিভিশন শিল্পী সেহেলি মাসুদ এর মৃত্যুতে শোকাহত শিল্পী বৃন্দের উদ্যোগে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে এ দোয়া মাহফিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পী সংসদের সভাপতি আল আমীন শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ পারুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শিল্পী শাহাদাৎ হোসেন সোহেলের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গীত পরিচালক আলী মোসাদ্দেক মাসুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত প্রশিক্ষক পিযুষ কান্তি আচার্য্য, গীতিকার কবি দেওয়ান মারুফ, গীতিকার ইব্রাহিম খান সাদাত, সাগর মিউজিক প্লাস এর প্রতিষ্ঠাতা ফরিদ আহমেদ সাগর বৈশাখী শিল্পিী গোষ্ঠীর সভাপতি রঙ্গধনু স্টুডিওর সত্বাধিকারী শিল্পী দেবাশীষ দেবু, শ্যামা কাউসার, কণ্ঠ শিল্পী সেলিম রেজা,শিল্পী আলমগীর পলাশ, জেসমিন জাহান, গীতিকার নুসরাত জাহান জেরিন, পরিবারের পক্ষ থেকে শিল্পী এমিল মোরসালিন, অ্যাড. দিলশাদ আরা, সঙ্গীত প্রশিক্ষক মণিকা আচার্য্য, বায়োজিদ বোস্তামি, সাথী ইসলাম, উর্মিলা প্রিয়া, সৈয়দ মারুফ, তাহজীব আহমেদ চৌধুরী, অমিত সহ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও শোকাহত শিল্পী বৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠ শিল্পী সেহেলি মাসুদ মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন উনার অবদান স্মরনীয় হয়ে থাকবে। তিনি মাতৃসুলভ আচরণে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে কাজ করেছেন।
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। জেলার ৯টি উপজেলায় বসেছে ৭১টি পশুর হাট। ইতিমধ্যেই এসব হাটে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। তবে ক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর গবাদি পশুর দাম একটু বেশী।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৬৬টি গবাদি পশু লালন-পালন করা হয়। তবে জেলায় কোরবানীর জন্য গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার। চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে ২০ হাজার গবাদি পশু।
তবে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন।
এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। যার জন্য জেলায় কোরবানীর পশু নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা। তিনি বলেন, এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু কেনা বেচা হবে বলে আশা করছি।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে মধ্যে সদর উপজেলায় ৪১০৬টি খামার, সরাইল উপজেলায় ৯৬৬টি, আখাউড়া উপজেলায় ৬৭৪টি, কসবা উপজেলায় ২১৩৬টি, নাসিরনগর উপজেলায় ১৬০৭টি, নবীনগর উপজেলায় ১৫৯৫টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১২৫০টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৯৩৭টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬২০টি খামার রয়েছে।
এসব খামারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ৫২০৭৭টি ষাঁড়, ১৯১৯৫টি বলদ, ১৭৬৮৪টি গাভী, ১২২১৩টি মহিষ, ১৩৫৮৮টি ছাগল, ৫৯০৭টি ভেড়া, অন্যান্য ৩২টি লালন-পালন করা হয়। এছাড়াও অনেক কৃষক পরিবারেই কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন।
এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন উপজেলায় কোরবানীর হাট বসছে ৭১টি। এইসব হাটের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় পৌরসভার ১টিসহ মোট ৫টি, সরাইল উপজেলায় ৯টি, নাসিরনগর উপজেলায় ৯টি, আখাউড়া উপজেলায় ৫টি, কসবা উপজেলায় ১১টি, নবীনগর উপজেলায় ১৩টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৫টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ও বিজয়নগর উপজেলায় বসবে ৮টি কোরবানীর হাট।
এসব হাটে কাজ করবে ৫৩টি মেডিকেল টীম। এর মধ্যে সদর উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, সরাইল উপজেলায় কাজ করবে ৪টা, নাসিরনগর উপজেলায় কাজ করবে ৯টা, আখাউড়া উপজেলায় কাজ করবে ৫টা, কসবা উপজেলায় কাজ করবে ৩টা, বাঞ্চারামপুর উপজেলা কাজ করবে ৫টা, আশুগঞ্জ উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, বিজয়নগর উপজেলায় কাজ করবে ২টা টীম।
সরজমিনে কয়েকটি খামারে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে খামারের মালিক- কর্মচারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারিরা রুটিন মাফিক গবাদি পশুর পরিচর্যা করছেন। প্রতিটি খামারেই কাজ করছে ৮/১০জন শ্রমিক। গবাদি পশুকে গোসল করানো, খাবার দেয়াসহ গবাদি পশুর গোবর পরিষ্কার করেন তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের নয়নপুর এলাকার রূপচান্দ বিবি ডেইরি খামারে গিয়ে দেখা যায় ওই খামারে কোরবানীর জন্য শতাধিক দেশীয় গরু লালন-পালন করা হচ্ছে।
খামারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা দেড় শতাধিক গরু লালন-পালন করেছিলাম। গত বছর ৩০টি গরু বিক্রি করতে পানিনি। গত বছরের থাকা ৩০টি গরুসহ এই বছর শতাধিক গরু লালন-পালন করেছি। সবগুলোই দেশীয় জাতের। প্রতিদিন গরুগুলোকে ২/৩বার করে মোটরের পানি দিয়ে গোসল করাই। গরুর যাতে গরম না লাগে সেজন্য ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে খামারে। গরুগুলোকে স্বাভাবিক খাওয়ার দেয়া হয়। বেশীর ভাগ সময় দেয়া হয় ঘাস।
তিনি বলেন, এ বছর গুরুর খাবার ও ঔষধপত্রসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি গরুতে ২০/২৫ হাজার টাকা বেশী খরছ হয়েছে। আশা করি এই আমাদের সবগুলো গরু বিক্রি হবে, দামও ভাল পাবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের গোকর্ণঘাটের নিউ প্রিন্স ডেইরী খামারে কোরবানীর জন্য ২৬০টি গরু লালন-পালন করা হয়। ইতিমধ্যেই তারা ৩০ টি গরু বিক্রি করে ফেলেছেন। এই খামারে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে।
খামারের মালিক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ২৬০টি গরুর মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩০ গরু বিক্রি করে দিয়েছি। ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা খামারে এসে গরু কিনে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, খামারের বড় গরুটা ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। খামারে ১৮জন শ্রমিক কাজ করে। তিনি বলেন, এই বছর প্রতি গরু ১০-১৫ হাজার টাকা বেশী দিয়ে কিনতে হয়েছে। এছাড়াও এ বছর গবাদি পশুর খাবার ও ঔষুধপত্রের দাম বেশী। তিনি বলেন আশা করি ভারত থেকে গরু না আসলে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে।
এ ব্যাপারে খান এগ্রো ডেইরি ফার্মের কর্ণধার ও জেলা ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ সাইফুদ্দিন খান শুভ্র জানান, জেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৮শত খামারি রয়েছে। গো-খাদ্যের দাম বাড়াতে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, দানাদার খাবারের পরিবর্তে, গো-খাদ্য ঘাসের উৎপাদন বাড়াতে পারলে গরুর দাম অনেক কমে যাবে।
তিনি বলেন, এ বছর তার খামারে বিক্রির জন্য ১০৭টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি খামার থেকেই গরু বিক্রি করি। তিনি বলেন, ভারত থেকে চোরাইপথে গরু না আসলে স্থানীয় খামারীরা লাভবান হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন। এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। এতে জেলার চাহিদা পূরণ হবে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু বিক্রি করা হবে বলে আশা করছি।
স্টাফ রিপোর্টার :
রানার্স কমিউনিটির উদ্যোগে আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এই প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হাফ ম্যরাথন প্রতিযোগীতায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বয়সের দুই ২৫০ জন দৌড়বিদ প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়।সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষন দেবনাথ ম্যারাথন প্রতিযোগীতা উদ্বোধন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির এডমিন অলি আহাদ রতন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ২১ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার এবং ৫ কিলেমিটার ক্যাটাগরিতে হাফ ম্যারাথন দৌড় শুরু হয়। দৌড়বিদরা শহরের শিমরাইলকান্দি হয়ে শেখ হাসিনা সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক) দিয়ে বিজয়নগর উপজেলা ঘুরে আবারো শেখ হাসিনা সড়কের তিতাস সেতুতে ফিনিসিং পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
আয়োজকরা জানান, ভোরে হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করতে রাশিয়া, জাপান, ভারত, নেপালসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন বয়সী ২৫০জন দৌড়বিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে এসে জড়ো হয়। পরে সেখান থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হাফ ম্যরাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।
ম্যারাথনে অংশ গ্রহণকারীকারীরা জানান, সুস্থ দেহ ও সবল মনের জন্য দৌড়ের কোনো বিকল্প নেই। সিলেট থেকে আসা দৌড়বিদ গোলাম রাহাত তোফায়েল বলেন, আমি দেশের বিভিন্ন জেলায় ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করে থাকি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অংশ গ্রহন করে খুব ভালো লাগছে।
পটুয়াখালী জেলা থেকে আসা দৌড়বিদ মশিউর রহমান পলাশ বলেন, আমি প্রথমবারের মতো ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেছি। ম্যারাথনে অংশ গ্রহণ করে আমার খুব ভালো লাগছে। আগামীতে দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ের ম্যারাথনে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
ফারজানা খানম নামে এক নারী দৌড়বিদ বলেন, জীবনের প্রথমবারের মতো আমি ৫ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করে নারীদের মধ্যে আমি প্রথম হয়েছি। শরীরকে ফিট ও সুস্থ রাখার জন্য প্রতিটা মানুষের দৌড়ানো উচিত।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষন দেবনাথ বলেন, আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় আমাদের দেশসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষসহ ২৫০ জন দৌড়বিদ অংশ গ্রহণ করেছে। আজ হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে আগামীতে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুল ম্যারাথন প্রতিযোগীতার আয়োজন করার চেষ্টা করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির এডমিন অলি আহাদ রতন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমরা প্রথমবারের মতো হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছি। আমাদের সুস্থতার জন্য দৌড়ানো উচিত। সবার কাছে এমন তথ্য পৌছে দেয়ার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। আগামীতে সকলের সহযোগীতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আল্টা বা ফুল ম্যারাথন প্রতিযোগীতা করার চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর উৎস দাস গুপ্ত জানান, প্রতিযোগীরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে সেজন্য প্রতিযোগীতা শুরুর সময় সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়। ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনকারীদের নিরাপত্তার জন্যও আমরা কাজ করেছি।
প্রতিযোগীতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান যোগ দিয়েছেন। এরআগে তিনি সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ছিলেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বদলী আদেশ হয়। এরপর ৭ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব গ্রহন করেন। ২০০৫ সালের ২ জুলাই ২৪ তম বিসিএস-এর মাধ্যমে পুলিশে যোগ দেয়া এই কর্মকর্তা ২০১৮ সালে পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পান। কর্মজীবনে এএসপি হিসেবে টাঙ্গাইল ও নোয়াখালী সদর সার্কেল এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে ঢাকায় নৌপুলিশ এবং সিলেট জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সুদানে দায়িত্ব পালন করেন। জাবেদুর রহমান সিলেট সদর উপজেলার চৌকিদেখির বাসিন্দা। পূর্বতন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের পুলিশ সুপার হিসেবে বদলী করা হয়েছে। প্রায় ২বছর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ৭ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে যান তিনি। যাওয়ার প্রাক্কালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা এমন একটি সমাজ গঠন করতে চাই যেখানে বিচারপ্রার্থীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি শিকার হতে হবে না। কোনো বিচারক তার আসনে বসে আল্লাহকে ছাড়া কোনো রাষ্ট্রশক্তিকে পরোয়া করবে না। রাষ্ট্রের আইন এবং বিবেক শক্তি দিয়ে বিচার কাজ পরিচালনা করবে। আমরা শুনতে চাই না বিচারকের আসনে বসে বিচারকরা ঘুস খায়।
আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ট্যাংকেরপাড় পৌর মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সভায় তিনি এ কথা বলেন। ডা. শফিকুর বলেন, মিডিয়া বের করে নিয়ে আসে উনি অমুক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, তার পাঁচটি গাড়ি রয়েছে, ১০টি বাড়ি রয়েছে। এসব কলঙ্কজনক কথা বিচারকদের ব্যাপারে শুনতে চাই না। আমরা এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই, যে ব্যবস্থা উঁচু-নিচু কাউকে ভাববে না। বিচারপ্রার্থীকে বিচার প্রার্থী হিসেবে দেখবে। কোনো বিচারপ্রার্থী যদি মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়, তাহলে মিথ্যার অভিযোগের দণ্ডও তাকে পেতে হবে। আবার যদি কেউ সঠিক অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে ন্যায় বিচার থেকে যেন বঞ্চিত না হয়। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্য ১০টি দেশ যেমন মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও ইনশাআল্লাহ তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে কিন্তু কোনো প্রভু মেনে নেব না। কেউ আমাদের সঙ্গে প্রভুত্ব দেখাতে আসলে জাতির কাছে তার সঠিক জবাব বুঝিয়ে দেবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুবারক হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য ও কুমিল্লা নোয়াখালী অঞ্চল অঞ্চল টিম সদস্য মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাবেক আমির কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, সাবেক নায়েবে আমির কাজী মো. ইয়াকুব আলী, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।