স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় টিকটক করতে বাধা দেয়ায় তানিয়া আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধুর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
২৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার ভোরে উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের গাববাড়ী গ্রাম থেকে ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তানিয়া আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের মোঃ জাহাঙ্গীর মিয়ার মেয়ে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি তাদের মেয়েকে মেরে ফেলেছে স্বামীর বাড়ির লোকজন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তানিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের গাববাড়ী গ্রামের হামদু মিয়ার ছেলে এনামুল হকের সাথে ২০১৬ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার মেয়ে তানিয়া আক্তারের। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের জন্য তানিয়ার উপর নির্যাতন করতো স্বামীর বাড়ির লোকজন। এসব বিষয় নিয়ে আগে একাধিকবার সালিশ সভাও হয়েছে। তার দাবি, শনিবার রাতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার মেয়ে নির্যাতন করে মেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে। পরে স্থানীয় মেম্বার তাকে তার মেয়ের মৃত্যুর খবরটি জানায় ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মুজিবুর রহমান জানান, গৃহবধু তানিয়া টিকটক করতো। স্বামী এনামুল হক সৌদি আরবে থাকেন। অন্য ছেলেদের সাথে টিকটক করার ছবি স্বামী এনামুলের নজরে আসলে প্রবাস থেকে স্ত্রী তানিয়াকে এসব করতে নিষেধ করেন। স্বামীর অবাধ্য হওয়ায় একপর্যায়ে স্বামী এনামুল এসব ছবি তার শ্বশুড়ের নিকট পাঠানো হবে বলে স্ত্রীকে ধমক দেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমলিন্যের সৃষ্টি হয়। এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে তানিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে জানান তিনি। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজু আহাম্মেদ জানান, গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। শরীরে কোনো প্রকার আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্ত শেষে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাটোরের গুরুদাসপুরে শিকারীর ফাঁদ থেকে উদ্ধার হওয়া ২০টি বক পাখি মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে। আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর মাঠে পাখিগুলো উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগ। এ সময় শিকারি পালিয়ে গেলেও শিকারির হাত থেকে উদ্ধার করা ১৮টি বক পাখি ও দুইটি শিকারি বক পাখি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন, সাধারণ সম্পাদক সুবাসিষ কবিরসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্থানীয়দের নিয়ে অবমুক্ত করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মশিন্দা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সুজন, রিয়াদ, আক্তার, আরিফ,মুক্তার ও সোহাগ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন ও সাধারণ সম্পাদক সুবাসিষ কবির জানান, ‘মশিন্দা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাহাপুর মাঠে পাখি শিকার করার সময় শিকারির ফাঁদ থেকে ২০টি বক পাখি ও ফাঁদ আটক করে খবর দেয়। ততক্ষণাৎ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের নিয়ে পাখিগুলো মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করেছি। পাখি শিকার বন্ধে পরিবেশকর্মীদের পাশাপাশি উপজেলা ছাত্রলীগ তৎপর রয়েছে। পাখিগুলোকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তবে শিকারি পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া স্থানীয়দের নিয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে। আশা করছি এমনভাবেই একসময় পাখি শিকার বন্ধ হয়ে যাবে।
গুরুদাসপুর জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। তারা আমাদের পাশাপাশি এ সকল মানবিক কার্যক্রম করে থাকে। সমাজের সকলেই যদি সচেতন হতো তাহলে পাখি শিকারিরা পাখি শিকার করতে পারতো না। আশা করছি সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা পাখি শিকার বন্ধ করতে পারবো।
চলারপথে নিউজ :
সৌদি আরব প্রবাসী মুবাশ্বির ঈদের পর ২৬ এপ্রিল ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিল। পরিবারের সবাই আনন্দে উদ্বেল হয়ে তার আগমনের অপেক্ষার প্রহর গুণছিল। কিন্তু যে দিন আসার কথা তার আগের দিন তার মৃত্যু সংবাদ পেল পরিবার। মুহুর্তের মধ্যেই সব আনন্দ ফিকে হয়ে পরিবারের নেমে এলো বিষাদের ছায়া। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
গতকাল মঙ্গলবার স্ট্রোক করে মারা যায় সে। নিহত মুবাশ্বির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীর বাজারের ব্যবসায়ী ও সাহেব নগর গ্রামের আবু জাহের ভূঁইয়ার ছেলে।
মুবাশ্বিরের পঞ্চাশোর্ধ্ব মা রোকেয়া বেগম আহাজারি করে কাঁদছিলেন ‘তোমরা আমার বুকের মানিককে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও’।
নিহত মুব্বাশির ভূঁইয়ার ছোট ভাই মুকাদ্দেস ভুঁইয়া জানান গত ৪ বছর আগে পরিবারের সুখের আশায় সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিল মুব্বাশির ভূঁইয়া। এরই মধ্যে গত ৬ মাস আগে দেশে এসে ছুটি কাটিয়ে আবার প্রবাসে চলে যান। ঈদের পর ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী দেশে আসার সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিল।
আজ ২৬ এপ্রিল বুধবার দেশে আসার কথা ছিল। আমি গাড়ি ভাড়া করে রেখে ছিলাম রাতে ঢাকা এয়ারপোর্টে গিয়ে দুপুরের মধ্যে তাকে নিয়ে বাড়ি আসব। এর একদিন আগেই স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। কথা গুলো বলার সময় কন্ঠ জড়িয়ে আসে তার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, নিহত মুবাশ্বির আমার এলাকার সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা। তার মৃত্যু সংবাদটি আমি পেয়েছি। আমি তার পরিবারের খোঁজ খবর রাখছি। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় শীতার্ত অসহায় ও দুস্থ মানুষের উষ্ণতা দিতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পাশে দাঁড়াল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য ও সাংবাদিক মো: সাইফুল ইসলাম। আজ ১২ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেলে তার নিজস্ব অর্থায়নে দুইশত কম্বল অসহায় ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এই সময় জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আখাউড়ায় ঠাণ্ডা বাতাসের দাপটে শীত জেঁকে ধরেছে সবাইকে। হিম ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় নাকাল জনজীবন। শীতের এই তীব্রতা বেশি কাবু করে নিয়েছে মানুষকে।
কম্বল বিতরণকালে সকলের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি আপনাদের ঘরের সন্তান। এই শীতে আপনারা কষ্ট করবেন, তা মেনে নেয়া যায় না। আপনাদের প্রতি বুকভরা ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ, সম্মান ও সহমর্মিতা নিয়ে আমি এখানে এসেছি, পরিবারের সদস্য হিসেবে আপনাদের পাশে দাঁড়াতে। এ সময় তিনি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর আনন্দ মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন।
আজ ৫ জুন বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা শহরের কলেজপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম আয়াশ আহমেদ ইজাজ (২৩)। তিনি শহরের কলেজপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের স্নাতক উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ইজাজ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ও সদ্য সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শাহাদৎ হোসেন শোভন (আনারস প্রতীক) পক্ষে কাজ করেছিলেন।
স্থানীয় সূত্র ও বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে চেয়ারম্যান পদে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভন (আনারস প্রতীক) বিজয়ী হওয়ার খবরে সমর্থকরা বিজয় মিছিল বের করেন। মিছিলটি কলেজপাড়া এলাকার খান টাওয়ারের সামনে এলে আয়াশ আহমেদ ইজাজ গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তার বন্ধুরা তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। পরে ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছাত্রলীগের কর্মী আয়াশ আহমেদ ইজাজ গুলিবিদ্ধ হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আটকে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।