স্টাফ রিপোর্টার:
দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রয় করবে ট্রেডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি)। এতে নিম্ন আয়ের কার্ডধারী পরিবারগুলো বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে তেল, চিনি ও ডাল কিনতে পারবে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রাণালয়ের সার্বিক নির্দেশনায় নিম্ন আয়ের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি (তেল, চিনি ও ডাল) সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সে লক্ষ্যে আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হচ্ছে। ডিলারের দোকান বা নির্ধারিত স্থায়ী স্থাপনা থেকে সিটি কর্পোরেশন, জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কার্ডধারী সাধারণ নির্ধারিত ডিলারদের কাছ থেকে নিম্নলিখিত পণ্যসামগ্রী ভর্তুকি মূল্যে কিনতে পারবেন।
নিয়ম অনুযায়ী একজন কার্ডধারী ৬০ টাকায় এক কেজি চিনি, কেজি প্রতি ৭০ টাকায় ২ কেজি মশুর ডাল এবং লিটার প্রতি ১১০ টাকায় ২ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার লাকসামে ১৫শ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে সার ও বীজ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. ইউনুছ ভুঁইয়া।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলী, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেল মিয়া, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আলী আহমদ প্রমুখ।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার ১৫০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ৫ কেজি উচ্চ ফলনশীল আউশ ধান বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে খরিপ-১/২০২৩-২৪ মৌসুমে উফশী আউশ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীর মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের বীজ ও সার দেওয়ার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে তদারকি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলার ১৫শ কৃষককে ১০ জনের গ্রুপ করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, উপকারভোগী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীর মাঝে রয়েছে উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের ২৩০ জন, মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ৮০ জন, কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ৩০০ জন, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ১০ জন, উত্তরদা ইউনিয়নের ৮০ জন, আজগরা ইউনিয়নের ২৮০ জন, লাকসাম পূর্ব ইউনিয়নের ২৯০ জন ও পৌরসভা এলাকার ২৩০ জন।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত) ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। মার্কিন দূতাবাস থেকে আজ ২৯ জানুয়ারি বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, নিয়মিত কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা ও অবস্থান সম্পর্কে আরো বোঝাপড়া ও ধারণা পেতে এসব বৈঠক করা হয়েছে।
এর আগে, গেল ২০ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ওই বৈঠকে জ্যাকবসন বলেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে আপনার সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছি।’
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রম, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের ওপর রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের প্রচেষ্টা এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেন।
জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আশা করছেন এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ফেব্রুয়ারির শুরুতে ঐকমত্যে পৌঁছাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১৭ মার্চ, মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫তম জন্মদিন।
সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। রাত ৮ টার দিকে মা সায়েরা খাতুনের কোল আলোকিত করে আসেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে ডুবে থাকা বাঙালি জাতির মুক্তির দূত হয়ে পৃথিবীতে আসেন একটি শিশু।
সেদিনের সেই শিশুই আজ অবিসংবাদিত নেতা বাঙালি ও বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ সেই মহানায়কের জন্মশতবার্ষিকী। শুভ জন্মদিন জাতির পিতা। আজ বাঙালি জাতির আনন্দে পুলকিত হওয়ার দিন। দিনটি পরবর্তীতে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির এ জন্মদিনে দেশের ১৬ কোটি মানুষ বিনম্র শ্রদ্ধা, সালাম আর হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
খোকা থেকে জাতির পিতা : পিতা শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুনের ঘর আলোকিত করে আসা শেখ মুজিবুর রহমান চার বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন তৃতীয়।
বাবা-মায়ের আদরের খোকা নামের ছোট্ট শেখ মুজিব ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলজীবন শুরু করেন। নয় বছর বয়সে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন।
পরবর্তীকালে তিনি গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪২ সালে শেখ মুজিব গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
একই বছরে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে এই কলেজ থেকেই স্নাতক সম্পন্ন করেন।
বিয়ে করেন শেখ ফজিলাতুননেছাকে (রেনু)। তারা দুই কন্যা- শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তিন পুত্র- শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের জনক-জননী ছিলেন।
১৯৪৩ বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের (অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের শাখা) কাউন্সিলর নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৬ সালে শেখ মুজিব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তানের পাশাপাশি তৃতীয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বতন্ত্র, স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন।
যদিও এই উদ্যোগ বাতিল হয় কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটিই একজন জাতির পিতার স্বপ্নের রাষ্ট্র গড়ার ভিত্তি হয়ে ওঠে।
বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রথম বিরোধীদলীয় ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।
২ মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (বর্তমান আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থাতেই তাকে যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
১৯৫২ সালে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ আরও অনেকেই। জেল থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে শেখ মুজিব শহিদদের প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানান।
একই বছর তিনি শান্তি সম্মেলন উপলক্ষ্যে চীন সফর করেন। শান্তি সম্মেলনে তিনি বাংলায় বক্তৃতা দেন, ভাষা আন্দোলনকে নিয়ে যান বৈশ্বিক অঙ্গনে।
১৯৫৩ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং একজন বাঙালি নেতা হিসেবে তার উত্থান হয়। ১৯৫৪ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসনে জয়লাভ করে।
আওয়ামী লীগ একাই পায় ১৪৩টি। বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ থেকে নির্বাচিত হন এবং ১৫ মে নতুন প্রাদেশিক সরকারের সমবায় ও কৃষিমন্ত্রী হন।
৩০ মে ভারত স্বাধীনতা আইন-১৯৪৭, প্রয়োগ করে কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকার হঠাৎ করে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়। ১৯৫৬ সালে খান আতাউর রহমানের নেতৃত্বে প্রাদেশিক সরকারে তিনি মন্ত্রী হন।
মাত্র নয় মাস তিনি মন্ত্রী পদের দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বাঙালির অধিকার আদায় আন্দোলনকে বেগবান করা এবং সংগঠনকে আরও সুসংহত করার উদ্দেশ্যে ১৯৫৭ সালের ৩০ মে স্বেচ্ছায় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৫৭ সালের ১৩-১৪ জুন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ মুজিবুর রহমান পুনরায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের উপস্থিতিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে এক বিশেষ সভায় আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
এই অধিবেশনে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট থেকে আলাদা হয়ে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়।
১৯৬৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। প্রস্তাবিত ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ।
এই ছয় দফা মুক্তিকামী বাঙালি জাতির জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির বীজ বুনে দেয়। ১৮-২০ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মিটিংয়ে শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
ছয় দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি সারা বাংলায় গণসংযোগ সফর শুরু করেন। এ সময় তাকে আটবার গ্রেফতার করা হয় এবং সর্বশেষ ৮ মে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। প্রায় তিন বছর তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন।
১৯৬৮ সালে ৩ জানুয়ারি আইয়ুব সরকার মোট ৩৫ জন বাঙালির (রাজনীতিবিদ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সরকারি অফিসার) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে।
জেলে বন্দি থাকা অবস্থাতেই ১৮ জানুয়ারি শেখ মুজিবের ওপর পুনরায় গ্রেফতার আদেশ জারি হয়। ভারতের সহায়তায় পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে শেখ মুজিবুর রহমানকে ১ নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’ মামলা দায়ের করা হয়।
বঙ্গবন্ধুসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্তদের মুক্তির দাবিতে সারা দেশে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।
১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং তার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র গণআন্দোলন শুরু হয়। টানা গণআন্দোলনের মুখে আইয়ুব সরকার ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সব বন্দিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে বিশাল ছাত্র সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক জনসভায় শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানের নাম রাখেন ‘বাংলাদেশ’।
১৯৭০ বঙ্গবন্ধু ছয় দফার আলোকে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বা?ন জানান। আওয়ামী লীগের জন্য তিনি নৌকা প্রতীক বেছে নেন।
১২ নভেম্বর এক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় উপকূল এলাকায় লাখো মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত রেখে ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত অঞ্চলে ছুটে যান।
৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হয়। ১৯৭১ সালে ১ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরুর মাত্র দুই দিন আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন।
এই ঘোষণার ফলে সর্বস্তরের বাঙালি জনতা রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা নতুন মোড় নেয়। ১ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু কার্যত ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান।
একদিকে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার নির্দেশ যেত, অপরদিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে যেত বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ। বাংলার মানুষ মেনে চলতেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ।
৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্র থেকে বঙ্গবন্ধু বজ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
এই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু দেশবাসীকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান।
২৫ মার্চ রাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাক হানাদার বাহিনী শতাব্দীর অন্যতম ঘৃণ্য গণহত্যা চালায়। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এরপরই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয় এবং গণপরিষদ কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়। তার অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে ফিরে আসেন।
সেদিন বাঙালি জাতি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে অবিস্মরণীয় সংবর্ধনা জানায়। লাখো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় স্নাত হয়ে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রেসকোর্স ময়দানে আসেন এবং অশ্রুসিক্ত নয়নে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
১২ জানুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে নতুন বাংলাদেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর স্থাপন করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় গ্রিডে সমস্যা হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। আজ ২৬ এপ্রিল শনিবার বিকাল ৫টা ৪৮ মিনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে পড়ে খুলনা ও বরিশালের ২১ জেলা।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ওজোপাডিকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, “গোপালগঞ্জের আমিন বাজারে জাতীয় গ্রিডে সমস্যা হওয়ায় এই ব্ল্যাক আউট হয়েছে। এটি রামপাল ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সঞ্চালনকেন্দ্র। গরমের কারণে হঠাৎ করে লোড বেড়ে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ করা হচ্ছে। সমস্যার সমাধান হতে আরো কিছু সময় লাগবে।
রাত ৮টার দিকে খুলনা নগরীর কিছু কিছু স্থানে বিদ্যুৎ ফিরলেও অধিকাংশ এলাকাই অন্ধকারে ছিল।
এদিকে, এ সমস্যার কারণে বরিশাল নগরীরসহ জেলার ১০ উপজেলা দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল। সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ-পিজিসিবি বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান পলাশ বলেন, “যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৫টা ৫০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বরিশালসহ ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কী ত্রুটি হয়েছিলো এখনো জানি না। সাড়ে ৭টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়া শুরু হয়েছে।”
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় বরিশাল নগরীসহ জেলার ১০ উপজেলার আট লাখ ১২ হাজার গ্রাহক অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপী ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪ উদ্বোধন করেছেন। আজ ২১ জানুয়ারি রবিবার সকালে রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে। খবর বাসসের
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান। অনুষ্ঠানে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে গত ১৫ বছরে গৃহীত সরকারি পদক্ষেপের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
মেলায় স্থানীয় টেক্সটাইল, মেশিনারিজ, কার্পেট, প্রসাধনী, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, গৃহস্থালীর পণ্য, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, খেলাধুলার সামগ্রী, স্যানিটারি সামগ্রী, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, ভেষজ সামগ্রী, টয়লেট্রিস, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, হস্তশিল্প, গৃহসজ্জা, আসবাবপত্র ও অন্যান্য পণ্য প্রদর্শিত এবং বিক্রি হবে।
তুরস্ক, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইরানের কোম্পানিগুলো এ বছর তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। মেলায় বিদেশি কোম্পানির ১৬-১৮টি প্যাভিলিয়নসহ ৩৫১টি স্টল রয়েছে।
মেলায় প্রবেশ মূল্য সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা। সকাল ১০টায় মেলা খোলা হবে এবং সপ্তাহের দিনগুলোতে রাত ৯টায় বন্ধ হবে। সপ্তাহান্তে ছুটির দিনে দর্শনার্থীরা রাত ১০টা পর্যন্ত মেলায় থাকতে পারবেন। মেলায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ফার্মগেট থেকে মেট্রোরেল এবং এলিভেট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযোগের জন্য বাস পাওয়া যাবে।