স্টাফ রিপোর্টার:
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিভিন্ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাদের ক্ষমা করে দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। মূলত আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে দলের হাইকমান্ড। শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে দলের জাতীয় কমিটির বৈঠকে শতাধিক বিদ্রোহী নেতাকর্মীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কয়েক জন জেষ্ঠ্য আওয়ামী লীগ নেতা। তারা আরও জানিয়েছেন, অন্যান্য বিদ্রোহীরা যদি দলের সভাপতির বরারব কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে আবেদন করেন, সেক্ষেত্রে তারাও ক্ষমা পেতে পারেন বলেও জানিয়েছেন নেতারা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের পার্টিতে যারা শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ড করেছেৃ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেকে বিদ্রোহ করেছে, আমাদের পার্টির শৃঙ্খলার বিচ্যুতি ঘটিয়েছে। অনেকেই দলের মধ্যে কোলহল সৃষ্টির জন্য দায়ী। এসব ব্যাপারে শতাধিক আবেদন জাতীয় কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
‘জাতীয় কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে যারা আবেদন করেছিল তাদেরকে আমাদের সভাপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা ক্ষমা করে দিয়েছেন। অন্য যারা আছে তারা যদি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারির মাধ্যমে সভাপতির কাছে আবেদন করে, তাহলে জাতীয় কমিটি আমাদের সভাপতিকে এই ক্ষমতা দিয়েছে যে, তিনি (শেখ হাসিনা) আবেদন গ্রহণ করতে পারবেন, ক্ষমা করে দিতে পারবেন। এটা জাতীয় কমিটি তার উপর দায়িত্ব অর্পণ করেছে,’ বলেছেন ওবায়দুল কাদের।
গঠনতন্ত্র সূত্রে গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদ কর্তৃক গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আপিল বিবেচনা ও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতা দেওয়া আছে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিকে। সেই কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বিদ্রোহীদের ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত আসে।
যারা বিগত সময়ে দলের সভাপতির বরাবর আবেদন করে ছিলেন তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার জাতীয় কমিটির বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সভানেত্রীকে উদ্দেশে বলেন, ‘আপা অনেকে তো এটা জানে না। যারা আবেদন করেনি, তাদের কী হবে?’
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সবার জন্যই এই সুযোগ থাকবে। যারা আবেদন করেনি, তারা আবেদন করতে পারবে। আবেদন করলে তাদেরও ক্ষমা করা হবে।’
জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, জেলা পরিষদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন করেছেন। দলীয় প্রার্থী থাকার পর নিজ দলের নেতারা স্বতন্ত্র কিংবা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় অনেক জায়গায় বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়।
এ নিয়ে দলের তৃণমূলে বেশ বিশৃঙ্খলা চলছিল। দলের সাংগঠনিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বাড়ছে এবং ইউপি নির্বাচনে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।
তবে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া যেসব নেতাকর্মীদের ক্ষমা করা হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে দলের হাইকমান্ড এই প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছে যে- ভবিষ্যতে আর কখনও তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে ৪টায় নাসিরনগর উপজেলা ভলাকুট বাজার মাঠে ভলাকুট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাজী মো. বরকত উল্লার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান।
ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বাচ্চু মিয়ার উদ্যোগে সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুসলেহ উদ্দিন চৌধুরী সোহাগের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি একেএম খালেদ, সহ-সভাপতি হাজী নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. শাহ নেওয়াজ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. ইব্রাহিম ভূইয়া রেনু, আবদুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আমিরুল হোসেন চকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক (২) বশির উদ্দিন চৌধুরী, আজিজুল রহমান চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান হাজী তারেক মিয়া, আলমগীর চেয়ারম্যান, আজদু মেম্বার, সৈয়দ আবু সারোয়ার, ওবায়দুল হক, মো. আব্বাস মিয়া, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. জামাল আহাম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা নবীন দলের সভাপতি মো. আমসু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে যে আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে সেটা খোলার আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ ১ অক্টােবর রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনের ৪০১ ধারার কোনো দরখাস্ত যদি একবার নিষ্পত্তি করা হয়, সেই নিষ্পত্তি করা দরখাস্ত পুনর্বিবেচনা করার কোনো অবকাশ আর আইনে থাকে না। ঠিক সেই ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারার উপধারা ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ব্যাখ্যা করে আমরা আমাদের মতামত পাঠিয়ে দিয়েছি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেখানে আমরা মতামত দিয়েছি, ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে যে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে সেটা পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজ ট্রানজেকশন, এটা খোলার আর কোনো উপায় নেই।
খালেদা জিয়ার পরিবার যদি এর পরও তাকে বিদেশ পাঠাতে চায় তাহলে কী প্রক্রিয়ায় যেতে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাকে এখন যে আদেশ বলে ৪০১ ধারায় দুটি শর্তে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেটা বাতিল করে পুনরায় বিবেচনা করার সুযোগ থাকলে সেটা করা হবে।
তাহলে আবার আদালতে যেতে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতে যাওয়ার বিষয়টি সবসময় আছে। তবে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলছি আমাদের এই উপমহাদেশে ৪০১ ধারার ক্ষমতা যখন সরকার প্রয়োগ করে তখন সেটাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় না বলে সিদ্ধান্ত আছে। সেক্ষেত্রে তারা হয়তো যদি প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা হলো এরকম, এখন যে আদেশ আছে সেটা যদি বাতিল করা হয়, বাতিল করে তাকে যদি আবার কারাগারে নেওয়া হয় তাহলে তিনি আদালতে যেতে পারবেন।
এই অবস্থায় তিনি আদালতে যেতে পারবেন এমন কোনো সুযোগ নেই। তাহলে কি আদেশ বাতিল করা হবে? জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, বাতিল করা অমানবিক হবে। বাতিল করব না।
২৪ সেপ্টেম্বর আদেশ জারি করলেন তার কয়েকদিন না যেতে আবার এবিষয়টি নিয়ে তারা আবেদন করলো, এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো আলাপ আলোচনা হয়নি।
আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনি মতামতের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার ভাইয়ের যে সর্বশেষ দরখাস্তটা, সেখানে বলা হয়েছে তাকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দেওয়ার জন্য এবং তাকে বিদেশ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া। সে বিষয়ে আইনি মতামতের জন্য আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল।
আপনাদের প্রশ্ন হলো, প্রথম কথা হলো প্রথম যে দরখাস্তটা ছিলো ২০২০ সালের মার্চ মাসে নিষ্পত্তি হয়। সেখানে বলা হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছিল। সেই দরখাস্তের ওপর আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেটা হলো দুটি শর্তসাপেক্ষে তার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো। এটা ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারার উপধারা ১ এর ক্ষমতা বলে। সেখানে যে দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- প্রথমত তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। দ্বিতীয়ত তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। সেই শর্ত মেনে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হন এবং বাসায় যান। সেভাবেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়।
তিনি বলেন, নিষ্পত্তি করার পর দরখাস্তের মধ্যে এইটুকু জিনিস উন্মুক্ত ছিল সেটা হলো, তাকে দেওয়া হয়েছিল ছয়মাসের জন্য এবং প্রত্যেক ছয় মাসে বাড়ানো যাবে কি না সে ব্যাপার ছিল। প্রত্যেক ছয় মাসে এটা বাড়িয়ে ছিল, আটবার বাড়ানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার কোন দরখাস্ত যদি একবার নিষ্পত্তি করা হয়। সেই নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত পুনর্বিবেচনা করার কোনো অবকাশ আইনে থাকে না।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপিহীন নির্বাচনেও সহজে পার পাচ্ছেন না সরকারের ১০ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। এ দলে আছেন বর্তমান সংসদের আওয়ামী লীগের ৪৫ এমপিও। আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া জাতীয় পার্টির (জাপা) চার প্রার্থীরও পরিস্থিতি বেহাল। নৌকা ও লাঙ্গলের এসব প্রার্থীর সামনে ‘দেয়াল’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের সাত ও জাতীয় পার্টির একজন মনোনয়নবঞ্চিত এমপি।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কয়েকজন শীর্ষ নেতার কাছ থেকে পাওয়া আসনভিত্তিক পর্যালোচনায় এমন ইঙ্গিত মিলেছে। প্রায় একই ধরনের তথ্য দিয়েছেন সরকারি দলের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করে এসেছেন। এ ছাড়া স্থানীয় প্রতিনিধিদের তথ্য বিশ্লেষণেও পাওয়া গেছে এমন আভাস।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে বেশির ভাগ আসনেই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী অনেকেই জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়রের পদ ছেড়ে নির্বাচনে লড়ছেন। তাদের কেউ কেউ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ঘরোয়া বিবাদ।
চ্যালেঞ্জের মুখে ১০ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চাঁদপুর-৩ আসনে। এখানে তাঁর সঙ্গে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক এমপি ড. শামছুল হক ভূঁইয়া। এই আসনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে। ড. শামছুল জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
নওগাঁ-১ আসনে খাদ্যমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপির নাজুক অবস্থা। তাঁর সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সাবেক সহসভাপতি খালেকুজ্জামান তোতার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জমে উঠেছে।
পিরোজপুর-১ আসনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং দলের কেন্দ্রীয় সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এমপি এগিয়ে থাকলেও তাঁকে স্বস্তি দিচ্ছেন না দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি এ কে এম এ আবদুল আউয়াল।
গাজীপুর-২ আসনে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল এমপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের মহানগর শাখার সাবেক সহসভাপতি কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন।
নাটোর-৩ আসনে কিছুটা ঝুঁকিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। তাঁর সঙ্গে সমানভাবে এগোচ্ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিংড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক।
মেহেরপুর-১ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপি। তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
যশোর-৫ আসনে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য এমপির সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ফুলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ আহমেদ এমপি ময়মনসিংহ-২ আসনে এগিয়ে থাকলেও চিন্তামুক্ত নন। তাঁর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন বিএনপির সাবেক নেতা ও সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার।
হবিগঞ্জ-৪ আসনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহাবুব আলী এমপি রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এগিয়ে রয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
শরীয়তপুর-২ আসনে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম এনামুল হক শামীম এমপির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ছেলে খালেদ শওকত আলী।
ঝুঁকিতে ৪৫ এমপি
দিনাজপুর-১ আসনে বর্তমান এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপালের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দলের পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি জাকারিয়া জাকা শক্ত প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। দিনাজপুর-৩ আসনে ইকবালুর রহিম বাবু এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের সদর উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ কুমার ঘোষ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন। দিনাজপুর-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পার্বতীপুরের চণ্ডীপুর ইউনিয়ন শাখার সাবেক আইন সম্পাদক হযরত আলী বেলাল। এ আসনেও দুই প্রার্থীর টক্কর চলছে।
নীলফামারী-২ আসনে আসাদুজ্জামান নূর এমপির সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। গাইবান্ধা-৩ আসনে সমান গতিতে এগোচ্ছেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের সাদুল্লাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান বিপ্লব ও স্থানীয় নেতা আজিজার রহমান। চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় প্রতিদিনই নির্বাচনী হিসাব বদলে যাচ্ছে বগুড়া-১ আসনে। এখানে দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নানের স্ত্রী সাহাদারা মান্নান এমপির সঙ্গে লড়ছেন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, স্থানীয় নেতা শাহজাদী আলম লিপি ও জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ শোকরানা।
বগুড়া-৬ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু এমপির সঙ্গে সমান তালে লড়ছেন দলের শহর শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এমপির বিরুদ্ধে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। শিবগঞ্জের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও সাবেক এমপি গোলাম রাব্বানী। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. শিমুল এগিয়ে থাকলেও সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমান এমপির সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। রাজশাহী-১ আসনে ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি কিছুটা নড়বড়ে অবস্থানে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া মাহি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আক্তার ডালিয়া এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী। আরও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী ও আক্তারুজ্জামান সমান গতিতে এগোচ্ছেন। এখানে চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ছাড়া প্রায় সমান গতিতে এগোচ্ছেন ঝিনাইদহ-১ আসনে আব্দুল হাই এমপি ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল, ঝিনাইদহ-২ আসনে তাহজীব আলম সিদ্দিকী এমপি ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহিদী মহুল, ঝিনাইদহ-৪ আসনে আনোয়ারুল আজীম আনার এমপি ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী কালীগঞ্জ উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আবদুর রশিদ খোকন। শেখ আফিল উদ্দিন এমপি যশোর-১ আসনে এগিয়ে থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী বেনাপোলের সাবেক পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। যশোর-৩ আসনে কাজী নাবিল আহমেদ এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে।
যশোর-৬ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপির সঙ্গে সমান গতিতে লড়ছেন কেশবপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ এইচ এম আমির হোসেন। বাগেরহাট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপির অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইদ্রিস আলী ইজারাদার। খুলনা-৪ আসনে আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপির সঙ্গে তীব্র লড়াই হতে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারার। খুলনা-৫ আসনে ডুমুরিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপির সঙ্গে মূল লড়াই হবে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফুলতলার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেনের। এখানে নৌকার প্রার্থী কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন।
বরগুনা-১ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি, দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার টুকু ও সাবেক এমপি গোলাম সারোয়ার ফোরকানের ত্রিমুখী লড়াই চলছে। তীব্র প্রতিযোগিতা হতে পারে পটুয়াখালী-৩ আসনে এস এম শাহজাদা সাজু এমপির সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী লে. জেনারেল (অব.) আবুল হোসেনের; পটুয়াখালী-৪ আসনে মহিববুর রহমান মহিব এমপির সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি মাহবুবুর রহমান তালুকদার এবং বরিশাল-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপির সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য এ কে ফাইয়াজুল হক রাজুর মধ্যে ভোটের লাড়াই হতে পারে।
পিরোজপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন মহারাজ পিছিয়ে নেই। ময়মনসিংহ-১০ আসনে ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপির সঙ্গে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ড. আবুল হোসেন দীপু ও গফরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ। এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে ড. আবুল হোসেন দীপুর। নেত্রকোনা-৩ আসনে দলের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপির সঙ্গে লড়াই করছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দুই এমপি ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ও মঞ্জুর কাদের কোরায়শী।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে বর্তমান এমপি আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কুমার পাল। মানিকগঞ্জ-২ আসনে সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম এমপির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জাহিদ আহমেদ টুলু এবং সাবেক এমপি শামসুদ্দিন আহমেদের ছেলে ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপির বিরুদ্ধে লড়াই জমিয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর পৌরসভার সাবেক মেয়র ফয়সাল বিপ্লব। ঢাকা-১ আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপির বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, ঢাকা-২ আসনে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপির বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. হাবিবুর রহমান সমান গতিতে এগোচ্ছেন।
নরসিংদী-১ আসনে লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হিরু বীরপ্রতীক এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাজাহান ভূঁইয়া ও তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে উঠেছে। সিলেট-৩ আসনে সমান গতিতে লড়ছেন হাবিবুর রহমান এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমএ মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। সিলেট-৬ আসনে নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপির সঙ্গে মূল লড়াই হচ্ছে কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাবেক এমপি সেলিম উদ্দিনের। তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীও এ আসনে লড়ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপির সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক নেতা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিওর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এছাড়া কুমিল্লা-২ আসনে সেলিমা আহমাদ মেরী এমপির বিরুদ্ধে সমান তালে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের হোমনা উপজেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মজিদ, কুমিল্লা-৭ আসনে অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি অধ্যাপক আলী আশরাফের ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটু, চাঁদপুর-৪ আসনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক এমপি ড. শামছুল হক ভূঁইয়া।
চাঁদপুর-৫ আসনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মাঈনুদ্দিন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। প্রায় একই চিত্র নোয়াখালী-৪ আসনেও। এখানে একরামুল করিম চৌধুরী এমপির সঙ্গে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন। ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে চট্টগ্রাম-১৬ আসনে। এখানে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দক্ষিণ জেলা শাখার সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ও দক্ষিণ জেলা শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন।
জাপার চার প্রার্থী বেকায়দায়
নীলফামারী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না জাতীয় পার্টির মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি। এ আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফার স্ত্রী মারজিয়া সুলতানা ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন পাভেলের মধ্যে।
নীলফামারী-৪ আসনেও অভিন্ন চিত্র। আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলেও জাতীয় পার্টির আহসান আদেলুর রহমান এমপির অবস্থা তেমন ভালো না। তাঁর সঙ্গে লড়াই হবে সৈয়দপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুখছেদুল মুমিন ও জাতীয় পার্টির স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুল আলমের।
রংপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টির হোসেন মকবুল শাহরিয়ার। তাঁর সঙ্গে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি ও গঙ্গাচড়ার সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলুর। তবে স্থানীয় প্রার্থী হওয়ায় আসাদুজ্জামান বাবলু কিছুটা সুবিধা পাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-৫ আসনেও লড়াই হচ্ছে ত্রিমুখী। আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে এ আসনে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি। তাঁর সঙ্গে সমান তালে লড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের নাজিম উদ্দিন।
মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান আট এমপি এগিয়ে
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। এখানে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে। মনোয়ার হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পাননি।
নওগাঁ-৩ আসনে ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিম এমপি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পরও নির্বাচনে আছেন। তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সিনিয়র সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, সাবেক এমপি ড. আকরাম হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী মাহফুজা আকরাম চৌধুরী মায়ার ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে।
ঝিনাইদহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলের জেলা শাখার সহসভাপতি শফিকুল আজম খান চঞ্চল এমপি। তাঁর সঙ্গে মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সালাহ উদ্দিন মিয়াজীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে।
জামালপুর-৪ আসনে ডা. মুরাদ হাসান এমপি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান হেলাল।
ময়মনসিংহ-৯ আসনে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজর জেনালের (অব.) আব্দুস সালামের সঙ্গে সমান তালে লড়ছেন দলের বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
বর্তমান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন। এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রণজিত চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। তবে এখানে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে শাল্লা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সঙ্গে দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী ও বর্তমান এমপি জয়া সেনগুপ্তার জমজমাট লড়াই চলছে। জয়া সেনগুপ্তা আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬ আসনে ভাগাভাগি হলেও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি পীর ফজলুর রহমান মিসবাহর ভাগ্য খোলেনি। তবে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহম্মদ সাদিকের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিচ্ছেন।
নতুন ও পুরোনোর লড়াই
পঞ্চগড়-১ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তার সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। ঠাকুরগাঁও-২ আসনে দবিরুল ইসলাম এমপির ছেলে মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে সমানতালে লড়ছেন বালিয়াডাঙ্গির সাবেক চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল।
লালমনিরহাট-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাবেদ হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কুড়িগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবার সঙ্গে শক্ত লড়াই করছেন জাতীয় পার্টির আবদুস সোবহান ও আক্কাস আলী সরকার। এখানে আক্কাস আলী সরকার কিছুটা এগিয়ে। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপ্লব হাসান পলাশ কিছুটা এগিয়ে থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের রৌমারির যাদুরচর ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান বঙ্গবাসীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
নাটোর-৪ আসনে বড়াইগ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর সঙ্গে সমানতালে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক এমপি আবদুল কুদ্দুসের ছেলে আসিফ আবদুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন। প্রতিযোগিতা থাকলেও সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে জয়ের সম্ভাবনা ডা. আব্দুল আজিজ এমপির। তাঁর সঙ্গে লড়াই হবে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষক লীগের সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইটের সঙ্গে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রয়েছেন মেহেরপুর-২ আসনে দলের জেলা শাখার স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি মকবুল হোসেন। কুষ্টিয়া-৩ আসনে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ এমপি এগিয়ে থাকলেও পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনু পিছিয়ে নেই।
সাতক্ষীরা-১ আসনে কলারোয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের বিরুদ্ধে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মুজিবুর রহমান সরদার মুজিব, তালা উপজেলা শাখার সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত। এখানে ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও দিদার বখতের মধ্যে লড়াই হতে পারে। সাতক্ষীরা-৪ আসনে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আতাউল হক দোলনের সঙ্গে লড়াই হবে বিএনএম প্রার্থী ও সাবেক এমপি এইচ এম গোলাম রেজার। টাঙ্গাইল-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. কামরুল হাসান খানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন আতাউর রহমান খান এমপির ছেলে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানা।
টাঙ্গাইল-৪ আসনে কালিহাতী আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ও সাবেক এমপি আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। শেরপুর-৩ আসনে শ্রীবরদী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ ডি এম শহিদুল ইসলাম ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঝিনাইগাতীর সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আব্দুল্লাহ হেল ওয়ারেজ নাইম সমান গতিতে লড়ছেন। প্রতিদিনই ভোটের রং বদলাচ্ছে ময়মনসিংহ-৪ আসনে। এখানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তর সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা শাখার সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে সিরাজদীখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির সমান গতিতে এগোচ্ছেন।
এ ছাড়া হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছেন ঢাকা-৪ আসনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানমের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ড. আওলাদ হোসেন, ঢাকা-৫ আসনে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্নার বিরুদ্ধে সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল ও ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, ঢাকা-১৪ আসনে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন, সিলেট-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশ্বনাথের পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান, কুমিল্লা-১ আসনে দলের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুরের বিরুদ্ধে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাঈম হাসান। ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মৌলভীবাজার-২ আসনে। তিন প্রার্থী হচ্ছেন– দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কুলাউড়ার সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম শফি আহমদ সালমান ও তৃণমূল বিএনপির সাবেক এমপি এম এন শাহীন।
বর্তমান দুই এমপির যুদ্ধ
বর্তমান সংসদের দুই সদস্য পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়েছেন কুমিল্লা-৬ আসনে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার এমপি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আনজুম সুলতানা সীমা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছুটা এগিয়ে আছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আনজুম সুলতানা সীমা দলের জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফজল খানের মেয়ে।
ভাইবোনের প্রতিযোগিতা
কিশোরগঞ্জ-১ আসনে বোনের সঙ্গে ভাইয়ের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. সৈয়দা জাকিয়া নুর লিপি এমপির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাঁর ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়াতুল ইসলাম। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। সূত্র : সমকাল
অনলাইন ডেস্ক :
সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে দলটি। গতকাল সকাল থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। দ্বিতীয় দিন আজ ৫২২টি ফরম বিক্রি করা হয়েছে। এ থেকে মোট আয় হয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
তিনি জানান, ঢাকা বিভাগ থেকে ১৬৭টি, ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে ৪৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ৭৮টি, সিলেট বিভাগ থেকে ২২টি, বরিশাল বিভাগ থেকে ৩৬ টি, খুলনা বিভাগ থেকে ৬৮টি, রংপুর বিভাগ থেকে ৬০টি এবং রাজশাহী বিভাগ থেকে ৪৪টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে।
এর আগে প্রথম দিন মোট ৮১০টি ফরম বিক্রি করেছিল ক্ষমতাসীন দলটি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগ থেকে ২৭৫টি, ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে ৬২টি, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ১৪৯টি, সিলেট বিভাগ থেকে ২৬টি, বরিশাল বিভাগ থেকে ৫৬টি, খুলনা বিভাগ থেকে ৭৭টি, রংপুর বিভাগ থেকে ৭৫টি এবং রাজশাহী বিভাগ থেকে ৯০টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চের সামনে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে নির্বাচনী সভায় এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। তার সমর্থনে প্রতিবন্ধী ঐক্য ফোরাম নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করে। সভায় হাজারও প্রতিবন্ধী অংশ নেন। সকাল ৯টা থেকেই কাউকে হুইলচেয়ারে করে কেউবা সাদা ছড়ি হাতে আসতে দেখা যায়।
এ সময় উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের যে প্রার্থী আছেন তিনি জয়ী হবেন বলে আশা করি। ভবিষ্যতে শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও সংসদে যাবেন বলে মনে করি।
রংপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী। এ ছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের (লাঙ্গল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক (ডাব), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সহিদুল ইসলাম (মশাল) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম (আম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বক্তব্য দিতে গিয়ে খেলু নামের একজন হিজড়া বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আমাদেরকে ভোটের অধিকার দিয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। মোকতাদির চৌধুরীর এমন আয়োজন বাংলাদেশে প্রথম বলে উল্লেখ করেন তিন। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হেলাল উদ্দিন, হাজি হেলাল উদ্দিন, মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মাহবুব আলম খোকন, মো. লোকমান হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ডা. সাইফুদ্দিন খান শুভ্র। সঞ্চালনায় ছিলেন মো. হেদায়েতুল আজিজ মুন্না।