চলারপথে ডেস্ক :
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচন হচ্ছে, তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আমরা মনে করছি না। আমরা নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন দেখতে চাই।
আজ ২৪ মে বুধবার বিকালে রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় ৫ দিনের সফরে এসে রংপুর সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আমরা সব দল আন্দোলন করেছিলাম, নির্বাচনও বর্জন করেছি। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের জন্য জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করেছিল। আমরা এ দুটি ব্যবস্থার বাইরে আসতে চাই। সকলে মিলে, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করে নতুন নির্বাচন পদ্ধতি বের করতে হবে।
জিএম কাদের একটি নির্বাচন পদ্ধতি তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা নির্বাচনে সরকারের ইচ্ছামতো জয়-পরাজয় নির্ধারিত হচ্ছে। এটি কোনো নির্বাচন হতে পারে না। জনগণ যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এ লক্ষ্যে নতুন একটি নির্বাচন পদ্ধতি তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে আমাদের অবস্থান, সাংগঠনিক শক্তি ও সমর্থন বিবেচনা করে কারও সাথে জোট করতে হলে করব কিংবা সার্মথ্য থাকলে এককভাবে নির্বাচন করব। আমরা এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। বর্তমানে আমরা দেশের রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের দেশ শাসনের অতীত অভিজ্ঞতা আছে, আমরা ৩০০টি আসনে প্রার্থী দেব ঠিক করেছি। এ লক্ষ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী ও সংগঠিত করছি।
তিনি আরো বলেন, দেশের ডলারের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি এটি রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। ডলার সংকট বর্তমান সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটির কারণে সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হতে পারে, দেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। এটি সরকারকে সতর্কভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, তা না হলে তাদের বড় ধরনের মাশুল গুনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৯১ সালের পর বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বারবার দেশের ক্ষমতায় এসেছে। তাদের ওপর দেশের মানুষ সন্তুষ্ট নয়। তাই বিকল্প দল হিসেবে তারা জাতীয় পার্টিকে সমর্থন দেবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আমরা সব দল আন্দোলন করেছিলাম, নির্বাচনও বর্জন করেছি। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের জন্য জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করেছিল। আমরা এ দুটি ব্যবস্থার বাহিরে আসতে চাই। সকলে মিলে, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করে নতুন নির্বাচন পদ্ধতি বের করতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামে আধ্যাত্নিক সাধক পুরুষ শাহ আবদুল কাদির শাহ রহ: স্মরণোৎসব ও বার্ষিক ওরস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাউল উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। তবে উক্ত বাউল উৎসবে ব্যাপক ভক্ত ও আশেকানদের সমাগম ঘটবে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে সারারাত ব্যাপী চলবে এই বাউল উৎসব। এছাড়া নির্মিত শাহ আবদুল কাদির শাহ পাঠাগারেরও উদ্ধোধন করা হবে। এবার গান পরিবেশন করবে ভারতের ত্রিপুরার রাজা হাসান, কুষ্টিয়ার লালন শিল্পি শবনব রাখি। রাতে অনুষ্ঠিত হবে পালাগান। গান পরিবেশন করবেন দেশ বরেণ্য বাউল শিল্পী রুমা সরকার ও জহির পাগলা।
উক্ত বাউল উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বেশেষে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন আয়োজকরা।
এ ব্যাপারে বাউল উৎসব আয়োজক কমিটি সভাপতি ও শরীফপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী জানান আমাদের এই বাউল উৎসবের সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাত ও পায়ের রগ কেটে জনি মিয়া (৩৫) নামের এক যুবককে হত্যা করেছে। এ সময় আওয়াল মিয়া নামের (৪৭) আরো একজন আহত হয়েছেন।
১৪ আগস্ট সোমবার রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের তালশহর নতুন বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত জনি মিয়া ওই এলাকার মকসেন মিয়ার ছেলে।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জনি মিয়া ও আওয়াল মিয়া সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তালশহর বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বাজার-সংলগ্ন সেতু অতিক্রম করতেই কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় জনি মিয়ার দুই পায়ের রগ কেটে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। আওয়ালকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ঢাকা নেওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ২টার দিকে নরসিংদীতে জনি মিয়া মারা যান।
ওসি আরো বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস পেয়েই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ থেকে বহিষ্কার হওয়া আলহাজ্ব সৈয়দ এ.কে. একরামুজ্জামান।
তিনি আজ ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলহাজ্ব সৈয়দ এ.কে. একরামুজ্জামান বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত মতামতকে প্রাধান্য দিয়েই নির্বাচনে এসেছি। আমার বিষয়ে বিএনপি কী বলল- সেটা আমার মন্তব্য করার বিষয় না। আমি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস পেয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এর চেয়ে বেশি আশ্বাস আর প্রয়োজন নেই। এছাড়াও আমার উপর নির্বাচনী এলাকার জনগণের চাপ ছিল নির্বাচন করার।
সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান বলেন, সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকেও সরকারের উপর চাপ আছে সুষ্ঠু নির্বাচনের। তাই আমি জনগণের মতামত নিয়েই নির্বাচনে এসেছি।
বিজয়ী হলে বিএনপি যদি দলে ফেরাতে চায় তাহলে ফিরবেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে একরামুজ্জামান বলেন, যদি আমি নির্বাচিত হই এবং তখন যদি কেউ আমাকে টানে তখন আমি দেখব কোথায় যাব, কী করব।
বিএনপির বিশ্বাসঘাতক বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি তাদের জায়গা থেকে বলতেই পারে, আমি আমার ব্যক্তিগত মতামতে চিন্তা করে নির্বাচনে এসেছি। আমার ব্যাপারে বিএনপি কি বললো না বললো তা আমি মন্তব্য করবো না।
উল্লেখ্য আলহাজ্ব সৈয়দ এ.কে. একরামুজ্জামান নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং আর.এ.কে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
সৈয়দ একরামুজ্জামান গত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে “কুলা” প্রতিক, নবম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মাঠ পর্যায়ে একরামুজ্জামানের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বি.এম. ফরহাদ হোসেন নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ১ হাজার ১১০ হাজার ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান ধানের শীষ প্রতীকে পান ৬০ হাজার ৭৩৪ ভোট। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী প্রয়াত ছায়েদুল হক পেয়েছিলেন ৯৯ হাজার ৮৮৬। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী একরামুজ্জামান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন ৮৫ হাজার ৩৮৮ ভোট। আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামান গত ২৭ নভেম্বর সোমবার দুপুর তিনটার দিকে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এর আগে ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে পুলিশের করা একটি বিস্ফোরক মামলায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় পরদিন মঙ্গলবার বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার পদ সহ দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে আলহাজ্ব সৈয়দ এ.কে. একরামুজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়।
মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুষ্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামানসহ জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোঃ আবু জাফরকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাসহ অন্যান্য পদ থেকে বহিষ্কারের পর বুধবার বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জানকে নাসিরনগরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে উপজেলা বিএনপি। বুধবার দুপুরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম.এ. হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক কে এম বশির উদ্দিন স্বাক্ষরিত ফেসবুকে দেয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।
নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির দলীয় প্যাডে লেখা অবাঞ্ছিতের ঘোষণাটি নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেন এম.এ. হান্নান। নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিবৃতি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি কমিটি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানকে বহিস্কার করেছে। বিএনপির নাসিরনগর উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে এই বহিস্কৃত নেতাকে নাসিরনগরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান বলেন, একরামুজ্জামানকে উপজেলার সকল জায়গায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।