চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ৪৪ কেজি গাঁজাসহ মো. আবুল বাশার (৩৫) নামে এক মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আবুল বাশার বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার গুলিশখালি গ্রামের মো: আব্দুল সাত্তার গাজীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ৪৪ কেজি গাঁজা উদ্ধারসহ চালক আবুল বাশারকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় মাদক পাচারে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নাহিদ আহাম্মেদ জানান, এসব গাঁজা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্ত এলাকা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গ্রেফতার আবুল বাশারের বিরুদ্ধে থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রজু করে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিতাস নদীতে ড্রেজারে কাটছে মাটি। সেই মাটি যাচ্ছে এক কিলোমিটার দূরে এশিয়া নামক ইটভাটায়। ভাটায় ব্যবহারের পরও ওই মাটি চড়া দামে অন্যত্র বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। ওদিকে স্বল্প প্রস্থের নদীর গভীরতা বাড়তে থাকায় দু’পাড়ের শতশত একর ফসলি জমি এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর এলাকার নদী সংলগ্ন ফসলি মাঠে এমন হরিলুট করছে মাটি খেকোঁ চক্র। নদী ও মাটি খেকোঁ প্রভাশালী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় সেখানকার কৃষকরা। ভয়ে মুখ খোলার সাহসও করছেন না তারা।
সরজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, ধর্মতীর্থ এলাকার কৃষকরা বারবার নদী, ফসলি জমি ও মাটি খেঁকো একটি চক্রের শিকার হচ্ছেন। ওই চক্রটির কাজ হচ্ছে ইটভাটায় মাটি বিক্রির বাণিজ্য করা। এই লক্ষে তারা ধর্মতীর্থ চানপুর সহ অত্র এলাকার হাওরের ফসলি জমির মালিকদের টার্গেট করে। সহজ সরল কৃষকদের ফুসলিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমি ও গোচারণ ভূমির মাটি ক্রয় করে আসছে।
একটি জমি ক্রয় করে আশপাশের জমির মালিকদের বেকায়দায় ফেলে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করে ওই চক্রটি। হাওরের শতশত একর ফসলি জমি এখন চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। ফসলি জমির পর এখন তারা নদীর দিকে নজর দিয়েছেন। চানপুর মৌজায় তিতাস নদীতে গত ১৫ দিন ধরে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে এক কিলোমিটার দূরে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে এশিয়া নামক ইটভাটায় নিচ্ছেন। সেখান থেকে ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন। ওদিকে ড্রেজারে লাগাতার মাটি উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে করে নদীর দু’পাড়ে শতশত একর ফসলি জমি এখন ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। কৃষকদের আর্তনাদ ও প্রতিবাদ কোন আমলে নিচ্ছেন না প্রভাবশালী মাটি খেঁকোরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায় নদীর মাঝখানে বিকট শব্দে চলছে ড্রেজার। প্রায় ৮-১২ ইঞ্চি প্রস্থের পাইপ দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে মাটি যাচ্ছে। ড্রেজারের পরিদর্শক নুর নবী দাঁড়িয়ে আছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়েই ড্রেজারের কাছ থেকে দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করেন নুরনবী।
ড্রেজার চালক লাখাই থানার মো. ইসমাঈল মিয়া (৪০) নদীর মাটি ইটভাটায় যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার মফিজ মিয়া, হযরত আলী ও সাইজ উদ্দিন। আমরা শ্রমিক। ৪ জনের মধ্যে আমিসহ দু’জনের মাসিক বেতন ৪০ হাজার টাকা। অপর দু’জনের মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা। অনুমতি বা বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা আমরা জানি না।
ড্রেজার চালিয়ে নদীতে মাটি কাটাই আমাদের কাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার একাধিক কৃষক সামনে পেছনে তাকিয়ে বলেন, তারা হাওরের ফসলি জমি খাইছে। এখন মাটি কেটে যেভাবে গভীর করছে নদীর পাড়ের ফসলি জমি গুলো ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যাবে। আমরা শেষ। স্যার পারলে জমি গুলো রক্ষা করে আমাদের বাঁচান। আমাদের নাম লিখলে তারা মেরে ফেলবে। ঠিকাদার মফিজ মিয়া নদীর মাটি ইটভাটায় বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, এশিয়া ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছি। অনুমতির কথা দূর্গাচরণ দাদা বলতে পারবে। তিনিই কাজটি করছেন। আমরা শুধু দেখা শুনা করি।
দূর্গাচরণ দাস ও মাটি বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নদী খননের অনুমতি এনেছি। সেখানে মাটি কাটার কথা বলা আছে। তবে ইটভাটায় বিক্রির কথা বলা নেই। এটি উন্নয়ন প্রকল্প। মাটি বিক্রি না করলে রাখব কোথায়? ফসলি জমির ক্ষতির জন্য আমি দায়বদ্ধ।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, দূর্গাচরণ দাস অনুমতির কোন কাগজ আমাকে দেখাতে পারেননি। অনুমতি ছাড়া উনি যা করছেন, তা করতে পারেন না। আমি উনাকে ড্রেজারে নদীতে মাটি কাটা বন্ধ রাখতে বলেছি। কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় ১৪ কেজি গাঁজাসহ রুবেল মিয়া (৩০) ও বাদশা মিয়া (২৬) নামের দুই মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ।
আজ ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের বাড়িউড়া এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত সিএনজি চালিত অটোরিকশাটিও।
পুলিশ জানায়, শনিবার গোপন সংবাদের তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এস আই মো. ফারুক হোসেন ও এএসআই রুবেল আখন একদল পুলিশ নিয়ে মহাসড়কের বাড়িউড়া এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানকালে তারা মহাসড়কের উত্তর পাশে কালু মিয়ার খাজা গরীবে নেওয়াজ ষ্টোর এর দক্ষিণ পাশের রাস্তার উপরে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে তল্লাশি চালায়। সিএনজি থেকে ১৪ কেজি উদ্ধার করেন। সেই সাথে সিএনজি’র যাত্রী ২ মাদক ব্যবসায়ি রুবেল ও বাদশাকে গ্রেফতার করেন। রুবেল হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের প্রয়াত তৌহিদ মিয়ার ছেলে। আর বাদশা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রামশংকরপুর গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে।
তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত গাঁজার মূল্য ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। মাদক ব্যবসায়ি রুবেল জানায়, গত এক বছরেরও অধিক সময় ধরে এই রোডে মাদক পাচারের ব্যবসা করে আসছে সে। এক চালান পাচার করতে পারলে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হয়।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত ২ ব্যক্তি পেশাদার মাদক ব্যবসায়ি। মাদকের সাথে কোন ধরণের আপোষ নেই। মাদক কারবারী ও সেবনকারীদের বিরূদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, এবং এ ব্যাপারে আমরা সব সময় কঠোর অবস্থানে আছি।