পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে বিচারিক কাজ বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 4 January 2023, 1149 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
আইনজীবী ও কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালত। বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ, কর্মচারীদের মারধর, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আদালতের কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছেন। বুধবার সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করছে জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। এতে ১০ থেকে ১৫ হাজার বিচারপ্রার্থী সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে কর্মবিরতির প্রতিবাদে দুপুর ১২টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতা ও সদস্যরা আদালত চত্বরে মিছিল করেন। মিছিলে জেলা জজ শারমিন নিগারের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। এসব পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোনো আদালতেই বিচারিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়নি।
এর আগে গত রোববার থেকে আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। আইনজীবী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বার অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ তুলে এই বিচারকের প্রত্যাহার দাবি করে জেলা আইনজীবী সমিতি।

আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওই দিন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালতে কয়েকজন আইনজীবী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকটি মামলা দাখিল করেন। কিন্তু দাখিলে বিলম্ব হওয়ার কারণে ওই আদালতের বিচারক মামলাগুলো গ্রহণ করেননি। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মামলাগুলো নেওয়ার অনুরোধ করলেও বিচারক তা শোনেননি। পরে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সশরীর ওই বিচারকের এজলাসে গিয়ে মামলাটি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন বিচারক তাঁদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘১ ডিসেম্বর আমার আদালতে পাঁচটি সিআর মামলার শুনানি শেষে বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাগুলো অনুসন্ধানের জন্য পাঠাই। নামাজ ও দুপুরের খাবার শেষে আবার আদালতে উঠি। নিয়মানুযায়ী সব শেষ করি। বিকেলে এজলাসে দুই থেকে তিন আইনজীবী নতুন করে মামলা নিতে চাপ সৃষ্টি করেন। তবে তাঁদের নিয়ম অনুসরণ করে মামলা জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এজলাস থেকে নেমে যাই। কারণ, আইনানুযায়ী সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে বিচারকের এজলাসে ওঠার আগেই আদালতে মামলা দাখিল করতে হয়। কিন্তু বিকেল চারটার দিকে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক খাস কামরায় এসে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।’
আদালতের কর্মচারীদের কর্মবিরতির জন্য জেলা জজ শারমিন নিগারকে দায়ী করছেন আইনজীবী সমিতির নেতারা। সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়া বলেন, আইনজীবী সমিতি ও আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা। এক মাস হলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। জেলা জজের খাস কামরায় বসে কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পেছনের মূল নায়ক জেলা জজ শারমিন নিগার। আইনজীবীরা জেলা জজ শারমিন নিগার, বিচারক মোহাম্মদ ফারুক ও নাজির মমিনুল হকের অপসারণ দাবি করেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানও একই দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা জজ শারমিন নিগারের কার্যালয়ে গেলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, সকালেই কর্মবিরতি স্থগিতের জন্য কর্মচারীদের চিঠি দিয়েছেন জেলা জজ স্যার। চিঠিটি আইনজীবী সমিতির কাছেও পাঠানো হয়েছে।
তবে জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘তিন শতাধিক কর্মচারী অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে কর্মবিরতি স্থগিতের বিষয়ে জেলা জজ স্যারের চিঠি পেয়েছি। আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।’

Leave a Reply

ফাইল ছবি

পবিত্র শবেবরাত আজ

চলারপথে রিপোর্ট : পবিত্র শবেবরাত আজ। ফারসি ভাষা থেকে আসা Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগ নেত্রীর সহযোগী আটক

চলারপথে রিপোর্ট : অপারেশন ডেভিল হান্টের অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত Read more

আখাউড়ায় যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ডেভিল হান্ট অভিযানে হানিফ Read more

নবীনগর প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত

মো. কামরুল ইসলাম, নবীনগর : নবীনগর প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন উৎসবমুখর Read more

বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গাঁজা উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : কসবায় ১শ ৩০ কেজি ভারতীয় গাঁজা উদ্ধার Read more

হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের Read more

কোটি টাকার ভারতীয় কমলা জব্দ

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল ব্যাটালিয়নের (২৫ বিজিবি) টহলদল কর্তৃক বিশেষ Read more

বাঞ্ছারামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুরে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন ফারজানা Read more

আশুগঞ্জে চকলেট বোমসহ গ্রেফতার ৩

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ৬০৭০ পিস চকলেট বোম, Read more

আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা দফতরের প্রধান হলেন…

হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা Read more

১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেনটাইন’স ডে

হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে : ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিশ্ব Read more

এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” প্রতিপাদ্যে…

মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর : নাসিরনগর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে এবং Read more

সাহিত্যের আড্ডায় গুণীদের মিলনমেলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 23 November 2024, 184 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
প্রাণবন্ত এক হঠাৎ আড্ডায় মেতে উঠেছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া। দেশবরেণ্য এই জ্ঞানী গুণীদের আড্ডায় স্থান পেয়েছে সাহিত্যের সমকালীন অনেক বিষয়। সাহিত্যের গতিপ্রকৃতি। আগামীদিনের করণীয় ইত্যাদি ইত্যাদি। বলছিলাম ২২ নভেম্বর শুক্রবারের এক ভিন্নমাত্রার সন্ধ্যার কথা।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পশ্চিম মেড্ডার দারোগা বাড়ি। সেখানেই জন্ম গ্রহণ করেন এই জেলার কৃতি পুরুষ ডক্টর শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক। যিনি একজন আপাদমস্তক বিনয়ী মানুষ। সাবেক এই আমলা ভদ্রলোকটিই আয়োজন করেন বিশাল এক সাহিত্যমেলার। আর সেটি তাঁর বাসার বিশাল ড্রয়িংরুমে। উৎসবমুখর এই মিলনমেলায় অংশ নেন, ডক্টর গোলাম কিবরিয়া পিনু, কথাসাহিত্যিক ফরিদ আহমেদ দুলাল, কবি ও সাংবাদিক ফারুক মাহমুদ। আর আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে অংশ নেন, কবি ও সংস্কৃতিজন আব্দুল মান্নান সরকার, কবি জয়দুল হোসেন, অধ্যাপক মানবর্দ্ধন পাল, কবি মো. আব্দুর রহিম, কবি-অধ্যাপক মোসলমে উদ্দিন সাগর, কবি এডভোকেট মানিক রতন শর্মা, কবি শাদমান শাহিদ, কবি এড. হুমায়ুন কবীর, কবি ও কথাশিল্পী আমির হোসেন, কবি ও সংগঠক হেলাল উদ্দিন হৃদয়, কবি রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস, আধুনিক পুতুল নাচের নবসংস্করণের পুরোধা জিয়া আমিন, কণ্ঠশিল্পী আনিসুল হক রিপন, সংগঠক ফারুক আহমেদ ভুঁইয়া, কবি মাশরেকী শিপার, কবি ও সংগঠক শাহাজাদা জালাল, কবি ও চিত্রশিল্পি কাজী বর্ণাঢ্য, কবি মাসুদ হাসান শিহাব, কবি এসএম ইউনূস, কবি ও ছড়াশিল্পী মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, সাহিত্য চর্চার জন্য গভীর পর্যবেক্ষণ আর অভিজ্ঞতা দরকার। অবশ্যই নিজস্ব সৃজনশীলতা থাকতে হবে। উদার মানসিকতা না থাকলে উত্তম সাহিত্য বেরিয়ে আসবে না। পুরনো পদ্ধতি ফিরিয়ে এনে তাতে নিজেদের চিন্তার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে কল্যাণমুখি সাহিত্যকর্ম বের করে আনতে হবে। তারা বলেন, সাহিত্যের জন্য এখন আর রাজধানী আর মফসল শব্দ গুলো অনিবার্য নয়। কারণ প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ঢাকা যা মফসলও তা। তাছাড়া এদেশের অনেক বিখ্যাত লেখক বেরিয়ে এসেছেন মফসলে থেকেই। তারা নিজের কাজটি কাজের মতো করেছেন। মুল কথা সাহিত্যের জন্য পরিশ্রম করতে হবে। কাজ করতে হবে। কাজের মূল্যায়ন হবেই। সভায় বাংলা সাহিত্যের বেশ কয়েকজন প্রবাদ পুরুষকে নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

প্রসঙ্গত: মনোজ্ঞ এই আড্ডার শুরু থেকে শেষ অবধি হরেক রকমের ভর্তাসমেত শীতের বাহারি পিঠা, কলা আর চা পরিবেশন অব্যাহত ছিলো।

সাংবাদিক আলতাফ হোসেন চৌধুরী স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 18 October 2024, 203 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী স্মরণে ব্রাহ্মণবাডিয়া জেলা কমিটির পক্ষ হতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপ পরিচালক আলহাজ্ব আব্দুল মালেক।

banner

অনুষ্ঠানে প্রধান মেহমান ছিলেন আলহাজ্ব অ্যাড. কাজী মাওলানা মোঃ ইসলাম উদ্দিন (দুলাল)।

প্রধান বক্তা ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাগরিক জোটের আহবায়ক অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফারুক আহমেদ, আরিফুজ্জামান, মনিরুজ্জামান, আব্দুর রহমান (বুলবুল), মো: হারুন আল রশিদ, মো: রফিকুল হাসান সোহাগ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাডিয়া সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি এম এ মুসা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ শাহ আলম বক্স ও রফিকুল হাসান সোহাগ। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত এর মাধ্যমে শুরু হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তাগণ মরহুম সাংবাদিক আলতাফ হোসেন চৌধুরীর জীবন ও কর্মের উপর স্মৃতি চারণ করেন।

মিলাদ ও দোয়া পরিচালনায় হাফেজ মাওঃ ইসহাক আল মামুন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাজার মনিটরিং করেছে শিক্ষার্থীরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 9 August 2024, 293 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর ঊর্ধ্বগতিরোধে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করছে শিক্ষার্থীরা। শুধু বাজার মনিটরিংই নয়, তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপন কার্যক্রমও শুরু করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ ৯ আগস্ট শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহরের আনন্দ বাজার, মেড্ডা বাজার, ফারুকী বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে মাছ, মাংস ও শাকসবজিসহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রীর মূল্য তালিকা দেখে।

banner

এ সময় শিক্ষার্থীরা কেউ যাতে মানুষকে জিম্মি করে চড়াদামে পণ্য সামগ্রী বিক্রি না করে সেজন্য সর্তক করে দেয়। তারা বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন।

শিক্ষার্থী সালেকিন বিজয় বলেন, সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় ভোগান্তির জায়গা হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। এজন্যই আমরা বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করছি। আমরা বিভিন্ন আড়ৎ, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সাথে পণ্য সামগ্রীর দাম নিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে সীমিত লাভে পণ্য সামগ্রী বিক্রি করবেন বলে আশ্বস্য করেছেন।

এছাড়াও শিক্ষার্থীরা জেলা শহরের সড়কের বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালে আল্পনা আকছে। সড়কের ডিভাইডারে রোপন করছে গাছের চারা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রায়হান ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে দেখা যায় সড়কের ডিভাইডারে (বিভাজন) অনেক গাছ লাগানো রয়েছে। তাছাড়া সুন্দর সুন্দর আল্পনায় রাঙিয়ে তোলা হয়েছে দেয়ালগুলো। তাই শুক্রবার থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশের স্কুল-কলেজের দেয়ালে আল্পনা আঁকছি। সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য সড়কের ডিভাইডার ও সড়কের পাশে গাছের চারা লাগাচ্ছি।

ইতিমধ্যে নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা নিজের টাকা দিয়েই এসব কার্যক্রম করছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, তিন শতক খাস জায়গা উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 23 June 2023, 1003 Views,

চলারপথে রিপোর্ট  :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ সীমানা প্রাচীর, টিনের ঘর ও চার চালা টিনের ঘর উচ্ছেদ করে প্রায় তিন শতক খাস জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে।

banner

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামে এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুলতানপুর ও রামরাইল ইউনিয়নের অধীনে সেন্দ মৌজায় রামরাইল ইউনিয়নের শিলাউর গ্রামের সৈয়দ জাকির হোসেন বাহারের ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা রয়েছে। জাকির হোসেনের জায়গার উত্তর পাশে রয়েছে সরকারি রাস্তা। সরকারি সার্ভেয়ার নিয়োগ করে সরকারি রাস্তার সীমানা নির্ধারণের জন্য ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জাকির হোসেন বাহার জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। ওই বছরের ৮ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সার্ভেয়ারকে নিয়ে মাপঝোঁক করে সরকারি রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করেন।

সে সময় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা ও রাস্তার সীমানার উপর ছয়টি পিলার স্থাপন করে জাকিরকে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু সেন্দ গ্রামের চার ভাই সেলিম মিয়া, মনির মিয়া, খোকন মিয়া ও মামুন মিয়া নিষ্পত্তিকৃত সীমানা নির্ধারণ লঙ্ঘণ করে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে বরাদ্দ নিয়ে সরকারি রাস্তাটি বিভাজন করেন। পরে তারা জাকিরের জায়গা দখলের পায়তাঁরা শুরু করেন। এক পর্যায়ের তারা সরকারী রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করা শুরু করেন। ২০২০ সালের ১২ জুলাই জাকির হোসেন বাহার নকশা অনুযায়ি সরকারি রাস্তাসহ তার ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে কাছে লিখিত আবেদন করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামের চার ভাই সেলিম মিয়া, মনির মিয়া, খোকন মিয়া ও মামুন মিয়া সেন্দ মৌজার ১ নং বিএস খাস খতিয়ানভুক্ত ৫৬৩২ দাগে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। সেখানে তারা অবৈধভাবে দুটি সীমানা প্রাচীর, একটি ভিটি পাকা টিনের ঘর ও একটি চার চালা টিনের ঘর নির্মাণ করে বসবসা করে আসছিলেন।

২০২০ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের ( রাজস্ব) আদালতের এক উচ্ছেদ মামলার রায়ের নির্দেশনা এবং জেলা প্রশাসসক কার্যালয়ের এক চিঠি অনুযায়ী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন অবৈধভাবে দখলদার চার ভাই সেলিম, মনির, খোকন ও মামুনকে প্রথমে গত ১০ এপ্রিল পরে গত ৫ জুনের মধ্যে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও তারা কর্ণপাত না করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের চার ভাইয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। এসময় দুটি সীমানা প্রাচীর, একটি ভিটি পাকা টিনের ঘর ও একটি চার চালা টিনের ঘর উচ্ছেদ করে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারী কমিমশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন জানান, অবৈধ স্থাপনাসহ দখল সরিয়ে নিতে তাদের দুই দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু দখলকারীরা কোনো কর্ণপাত করেননি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতের উচ্ছেদ মামলা মূলে খাস জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উক্ত অবৈধ স্থাপনা সমূহের কারণে সেখানে সরকারি রাস্তা নির্মান করা যাচ্ছিল না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 13 July 2024, 362 Views,

৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সভাপতি পদে উপ-নির্বাচনের সিদ্ধান্ত

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা আজ ১৩ জুলাই শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ক্লাবের সম্মানিত সদস্য মোঃ আশিকুল ইসলামের কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে সভার কাজ শুরু হয়। সভার শুরুতেই শোক প্রস্তাব পাঠ করেন ক্লাবের সহ সভাপতি নিয়াজ মোঃ খান বিটু। পরে ক্লাবের প্রয়াত সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামিসহ সম্মানিত সদস্যদের আত্মীয় স্বজন যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।

banner

সভায় ক্লাবের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা। সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন করা হয়। সভায় আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ক্লাবের সভাপতি পদে উপনির্বাচন করার সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ক্লাবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনাক্রমে সদস্যদের মধ্যে সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সিনিয়র সদস্যদের সমন্বয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করা হয়। ক্লাবের গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়নে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সাথে আরো দুইজন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সভায় ক্লাবের গঠনতন্ত্রের খসড়া অনুমোদনে আগামী আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে বিশেষ সাধারণ সভা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভায় ক্লাবের বহিস্কৃত সদস্য সৈয়দ রিয়াজ আহমেদ অপু তার কৃতকর্মের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় ও তিনি কার্যকরি কমিটির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে লিখিত আবেদন করায় কার্যকরি কমিটির আগামী সভায় তার সদস্য পদ পুর্নবহাল করে তাঁকে চিঠি দেয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মোহাম্মদ আরজু, মোঃ সাদেকুর রহমান, খ. আ. ম রশিদুল ইসলাম, দীপক চৌধুরী বাপ্পী, পিযুষ কান্তি আচার্য্য, শেখ মোঃ শহিদুল ইসলাম, আল-আমীন শাহীন, জাবেদ রহিম বিজন, সৈয়দ মিজানুর রেজা, আবদুন নূর, সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম, মনজুরু আলম, ইব্রাহিম খান সাদাত, মফিজুর রহমান লিমন, নজরুল ইসলাম শাহজাদা, মোঃ মনির হোসেন, আ. ফ. ম কাউছার এমরান, মোঃ নজরুল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি