এশিয়ান টিভির ১০ বছর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 18 January 2023, 594 Views,

এশিয়ান টেলিভিশনের ১০ বছর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে। আজ ১৮ জানুয়ারি বুধবার বিকাল ৩টা থেকে রাত অব্দি শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা মঞ্চে এ অনুষ্ঠান চলে।

banner

অনুষ্ঠানে কেক কাটা, আবৃত্তি, নৃত্য ও সঙ্গীতসহ নানান আয়োজনে মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ভরে উঠে ভাষা চত্বর মঞ্চ।

প্রতিবারের মত এবারও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকতা ও শিল্প-সংস্কৃতিতে অবদান রাখায় গুণীজনদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের নিজস্ব প্রতিবেদক মোহাম্মদ আরজু, প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন সাংবাদিকতায় সম্মাননা পেয়েছেন, আবদুন নূর, পিযূষ কান্তি আচার্য ও আল আমিন শাহীন শিল্প-সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতায় সম্মাননা পেয়েছেন এবং কবি আবদুল মান্নান সরকার, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটু শিল্প-সংস্কৃতিতে সম্মাননা পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে শহরের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নালল আবেদিন, প্রফেসর অমৃত লাল সাহা, আলী মোসাদ্দেক মাসুদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, জেলা নাগরিক ফোরাম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত, মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাত, আমির হোসেন, হোসেন মিয়া, জেলা খেলাঘর সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদস্য সচিব সঞ্জীব ভট্টাচার্য, মোস্তাক আহমেদ খোকন, আনোয়ার হোসেন সোহেল, অঙ্কুর শিশু-কিশোর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনিসুল হক রিপন, আনিসুর রহমান রনি, আবদুল মতিন শিপন, বাতিঘর সভাপতি- আজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সাহিত্য একাডেমি, আবরনি ও সোনালী সকাল আবৃত্তি পরিবেশন করেন। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন আল আমিন শাহীন, পাবলো চৌধুরী, জেরিন সুলতানা, সবুজ মোল্লা, রূপম সূত্রধর, হুসাইন ইসলাম জয়, পৃথুলা, ওমর আহমেদ, সাদিয়া আনজুম মিতি, ইশতিয়াক হাসান আলিফ, অন্বেশা নুসরাত। সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফারুক আহমেদ পারুল, হোসেন মিয়া, আনিসুল হক রিপন, অবণী সরকার, দেবাশিষ দেবু, ইকরামুল হক, সাথী সরকার, আফরিন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আবরনি আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র এর পরিচালক শারমিন সুলতানা ও কাজী নাজমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন এশিয়ান টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুর রহমান পারভেজ।

Leave a Reply

বিজিবি অভিযানে মাদকসহ নারী আটক

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থেকে মাদকসহ নারীকে আটক করেছে Read more

তুরস্কের রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ডে ৬৬ জনের প্রাণহানি

অনলাইন ডেস্ক : তুরস্কের স্কি রিসোর্টের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৬৬ Read more

ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান…

অনলাইন ডেস্ক : জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মানিকগঞ্জ-১ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি…

চলারপথে রিপোর্ট : তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় র‌্যালি ও Read more

২৩ সেকেন্ডের ভিডিও অভিনেত্রী ঊর্বশী রাউতোলার…

অনলাইন ডেস্ক : বলিউডের অভিনেত্রী ঊর্বশী রাউতোলা। কোনো না কোনো Read more

নির্বাচনী অঙ্গনকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই সংস্কারের প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম Read more

টিকা না পেয়ে প্রবাসীদের সড়ক অবরোধ

অনলাইন ডেস্ক : টিকা না পেয়ে রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় সড়ক Read more

তারুণ্যের উৎসবে বিতর্ক ও কুইজ প্রতিযোগিতা

অনলাইন ডেস্ক : “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” এই প্রতিপাদ্যে Read more

সামাজিক অনুষ্ঠানে নাচলেন ট্রাম্প-মেলানিয়া

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথগ্রহণ Read more

শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার…

অনলাইন ডেস্ক : জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে Read more

দায়িত্ব নিয়েই বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী…

অনলাইন ডেস্ক : ‘কট্টর’ জো বাইডেনের আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ Read more

সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা…

অনলাইন ডেস্ক : বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক বৈঠকে যোগ Read more

১০ দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স যাচ্ছেন গণপূর্তমন্ত্রী

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 29 February 2024, 715 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সে পৃথক অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে ১০ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

banner

আজ ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার উদ্দেশ্যে তিনি এমিরেটস এয়ারলাইন্সের EK 0587 নম্বর ফ্লাইটযোগে যাত্রা করবেন। সেখানে তিনি ফ্লোরিডায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য দুই দিনব্যাপী ২৮তম এশিয়ান ট্রেড, ফুড ফেয়ার অ্যান্ড কালচারাল শো-২০২৪ এর উদ্বোধন করবেন।

ফ্রান্স সরকারের আমন্ত্রণে ৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে তিনি প্যারিসের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন। প্যারিসে তিনি বিল্ডিং অ্যান্ড ক্লাইমেট গ্লোবাল ফোরাম আয়োজিত সেমিনারে অংশ নেবেন।

যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরার পথে মরক্কো ও তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তার যাত্রা বিরতি করার কথা রয়েছে। আগামী ১০ মার্চ তিনি টার্কিশ এয়ারলাইন্সের TK 0712 নম্বর ফ্লাইটযোগে ঢাকা ফিরবেন।

সুহিলপুর ইউপি’র ০১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজনীতি, 13 December 2022, 1292 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ মাহিন খন্দকার। ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আলামিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ ইয়াছিন। ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আরাফাত হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুবলীগের সদস্য মোঃ এহসানুল হক রিপন, ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. মোশাররফ হোসেন সানি, যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল মোল্লা, ইউপি যুবলীগ নেতা মনির ভূইয়া।

banner


সম্মেলনে আলোচনা শেষে মোঃ আলামিন মিয়াকে সভাপতি ও ইউনুছ মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ০১নং ওয়ার্ড যুবলীগের আংশিক ঘোষণা করা হয়। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের দপ্তরে জমাদানের নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ মাহিন খন্দকার বলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অভিভাবক ও উন্নয়নের রূপকার র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর হাতকে শক্তিশালী করে দল ও দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। মাহিন বলেন- তৃণমূলে যুবলীগের নেতাকর্মীরা সুহিলপুরের প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে নিরলস কাজ করে যাবে। তিনি যুবলীগের কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। জেলা যুবলীগ ও সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশক্রমে আমি এই ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করিলাম।

স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গরমে পথচারী ও চালকদের শরবত আপ্যায়ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 29 April 2024, 225 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
খ্রীষ্টিয় মাস এপ্রিল এবং বাংলা বৈশাখের চলমান প্রায় অসহনীয় তাপপ্রবাহে দিবা রাত যখন সারা দেশেই মানুষ ও অবোধ প্রাণী কূলে হাঁসফাঁস অবস্থা চলছে, তখন আজ ২৯ এপ্রিল সোমবার দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবহাওয়ার তাপপ্রবাহ বেড়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁইছুঁই অবস্থা বিরাজ করে।

banner

শহর গ্রামে রাস্তায় চলাচলকারী পথচারী ও ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের মধ্যে প্রায় দিশেহারা অবস্থা দেখা যায়। সবাই যেন একটু ছায়া পেলেই বাঁচে। রোবহার হতেই আবহাওয়ায় বেশি তাপপ্রবাহ অনুভব হয় গত ৩ সপ্তাহের অধিক সময় হতে। মাথা ও শরীরে অত্যাধিক গরমের ছোঁয়া লাগা মাত্রই যেন জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল শরীর। সকাল হতেই বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিশু হতে সকল বয়সী ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক এবং ৮০ বছর পর্যন্ত বয়সী বৃদ্ধ বৃদ্ধাদেরকে। সূর্যের দিকে তাকানোর মতো পরিবেশ নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ এবং দাপ্তরিক কক্ষগুলোর পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর বাসা বাড়িতে তীব্র গরমে টেকা দায়। রাতেও আর্দ্রতা বেশি থাকায় ঘুমানো কষ্টকর। এর মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর কারণে, বিভিন্ন অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসায় এবং ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা কমে গেছে। দিনের বেলায় রাস্তায় জনচলাচল কমে গেছে। মানুষ ও অবোধ প্রাণীকূল একটু ঠান্ডা পানি ও ঠান্ডা পরিবেশ খুঁজছে সর্বত্র।

এই অবস্থায় মানবিক ব্যক্তিদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে তৃষ্ণার্ত পথচারী এবং ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের শরবত পান করানোর মহতী উদ্যোগ। সোমবার দুপুর হতে বিকেল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের তোফায়েল আজম (টি.এ) রোডস্থ ইউনাইটেড সাইকেল সেনিটারী এন্ড মেশিনারীজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী হাজী মোঃ কামাল উদ্দিনের ব্যবস্থাপনায় ফ্রুটিকা স্যালাইন, লেবু, বরফ, চিনি মেশানো তাৎক্ষনিক তৈরী করা ড্রাম ভর্তি ঠান্ডা স্যালাইন শরবত পানে আপ্যায়ন করানো হয় বিপুল সংখ্যক পথচারী, যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। আরেকজন সকালে কালীবাড়ি মোড়ে একই ধরণের শরবত আপ্যায়ন করান। এতে সেবা সহযোগিতা করেন উদ্যোক্তার স্বজনরা। মানব সেবায় এই উদ্যোগ সকলের প্রশংসা অর্জন করেছে। অপর দিকে, ভ্যানগাড়ীতে দিবা রাত লেবু ও ইস্পি পাউডার, বরফ যুক্ত ঠান্ডা পানি বিক্রি জমে উঠেছে।

আজ মহান বিজয় দিবস

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 15 December 2022, 1835 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্ম সমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন কাল। জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় ‘জয়বাংলা’ বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজিবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।
আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। প্রথম আগুন জ্বলে ’৫২-র একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুণের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলীদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সাথে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ’৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে।
বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব করতে বসে। হিসেব-নিকেশ আর দেনা-পাওনায় পাকিস্তানিরাও বসে নেই। তারাও অংক কষতে থাকে কিভাবে বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায়। তাদের কাছে এই অলংকারই বাঙালির শ্রেষ্ঠ প্রাপ্য। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ জানিয়ে যায় সময় আসছে হিসেব নিকেশ চুকিয়ে দেয়ার পালা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। বাঙালি বুঝে যায় শেষ কামড় দেয়ার সময় আসন্ন। পাকিস্তানিরাও আর বসে নেই। পুরো জাতিকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে মারাত্মক মারণাস্ত্র নিয়ে ২৫ মার্চ একাত্তর ঘুমন্ত জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধন যজ্ঞ। বাতাসে লাশের গন্ধ, বারুদে বারুদে আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ। এ যেন এক প্রেতপুরী। আকাশে শকুনের উদ্যত থাবা, নিচে বিপন্ন মানুষের বিলাপ। হায় বাংলাদেশ। একি বাংলাদেশ। এ যেন এক জ্বলন্ত শ্মশান। কিন্তু ঠিকই হাড়ের আর খুলির স্তুপ একদিন পাললিক হয়।
মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।
অবশেষে ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।

banner