চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে হাফিজুল নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে আখাউড়া- কুমিল্লা রেল সেকশনের গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে রেল সেতুর ওপর থেকে তার দ্বিখন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। নিহত হাফিজুল আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের বনগজ গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ট্রেনে কাটা মরদেহ পড়ে থাকার খবর পাই পুলিশ। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে নিহত যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি আলীম হোসেন শিকদার জানান, ধারণা করা হচ্ছে সেতু পার হওয়ার সময় আখাউড়া-কুমিল্লা রেলপথে চলাচলকারী রাতের কোনো এক ট্রেনে কাটা পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে আখাউড়া নাসরিন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলার ৩ টি কলেজের পরীক্ষার্থীরা বাংলা পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রথম দিনের পরীক্ষায় ৩ জন অনুপস্থিত ছিল।
জানা গেছে, এবছর আখাউড়া উপজেলার শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ, জাহানারা হক মহিলা কলেজ এবং ক্যামব্রিয়ান কলেজের পুরাতন পরীক্ষার্থীসহ ৮১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
এরমধ্যে শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের ৫০৫ জন, জাহানারা হক মহিলা কলেজের ১৯৯ জন এবং ক্যামব্রিয়ান কলেজের ১০৫ জন। বাকীরা পুরাতন পরীক্ষার্থী।
তবে, প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষার্থী ছিল ৭৯৭ জন। এর মধ্যে ৭৯৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৩ জন অনুপস্থিত ছিল। এবছর প্রথম বারের মতো কেন্দ্রে সিসির ক্যামেরায় স্থাপন করা হয়।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন নকল মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
৩ টা কেমু দিয়েছি। টাকার জন্য আর দিতে পারছি না। ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা দিয়েছে। তাও করাতে পারছি না। সারা শরীর ব্যাথায় অস্থির হয়ে যায়। বালিশ চাপা দিয়ে শুয়ে থাকি। টাকার অভাবে ওষুধ খেতে পারছি না। স্বামী নাই। ছেলেও নাই। আয় রোজগার করার মত কেউ নাই।
এভাবে নিজের অসহায়ত্বের কথাগুলো বলছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত পঞ্চাশোর্ধ জোসনা বেগম। তিনি আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত আরু মিয়ার মেয়ে। বিগত ২ বছর ধরে জটিল ক্যান্সার রোগে ভুগছেন। প্রতিবেশি ও দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় কোন রকমে দিনাতিপাত করছেন।
বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। সমাজের হৃদয়বান মানুষের সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছেন এই অসহায় নারী।
সরজমিনে সোমবার সকালে দরুইন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় দু’চালা ছোট্ট একটি টিনের ঘরে শুয়ে আছেন জোসনা বেগম। শরীর অনেকটা শুকিয়ে গেছে। মাথার চুল কমে গেছে। চুলের রং লালচে হয়ে গেছে। বুকের হাড় গুলো যেন শরীর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
জোসনা বেগম বলেন, নোয়াখালির দুলাল মিয়ার সাথে বিবাহ হয়। স্বামী সাগরে মাছ ধরার কাজ করতো। স্বামীর সাথে চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ছোট্ট দুটি মেয়ে নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। ৩০ বছর আগের কথা। হঠাৎ একদিন জাহাজ ডুবে স্বামী মারা যায়। স্বামীর লাশটি খোঁেজ পাইনি। স্বামী মারা যাওয়ার পর শশুর-শাশুড়ী ঘর থেকে বের করে দেয়। ছোট দুটি মেয়ে ও গর্ভের একটি সন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে পরে যাই। বাসা বাড়িতে কাজ করেছি। গার্মেন্টস্-এ চাকরি করে ৩টা মেয়েকে লালন পালন করেছি। গত ৩ বছর আগে করোনার সময় কাজ কাম চলে যাওয়ায় বাড়িতে চলে আসি। এর কিছু দিন পর আমার ক্যান্সার ধরা পরে। এরপর থেকে অসুস্থতায় ভুগছি।
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, বহু কষ্ট করে বাবা হারা মেয়েগুলোকে বড় করে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার কপালে সুখ সয় না। ছোট মেয়ের জামাই একটি সন্তানসহ তাকে রেখে আরেকটি বিয়ে করেছে। এখন মেয়ে ও নাতি আমার সাথেই থাকে। নিজেই খেতে পারি না। তারমধ্যে দুটি মানুষ আমার উপর। আমি অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না।
তিনি বলেন, আল্লাহ ছাড়া দুনিয়ায় আমার আর কেউ নাই।দরুইন গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ অহিদ মিয়া বলেন, জোসনা বেগম ক্যান্সার আক্রান্ত। তার চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য নাই। সে খুব অসহায় অবস্থায় আছে। হৃদয়বান মানুষ যদি তাকে আর্থিক সহযোগিতা করে পাশে দাঁড়ান। তাহলে হয়তো তিনি চিকিৎসাটুকু করতে পারবে।
জোসনা বেগমের মেয়ে ঝর্ণা বেগম বলেন, বাবা নাই। নানা-নানিও নাই। একটি শিশু সন্তান নিয়ে মায়ের কাছে আশ্রয় নিয়েছি। মায়ের কিছু হয়ে গেলে কোথায় যাবো। তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতার আবেদন করেন। তার বিকাশ নম্বর ০১৮৭৮৮৬২৭১১
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে আটক করা দুই বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী কারাভোগ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। ৯ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরা তরুণ তরুণীরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুব্রত ভট্টাচার্য্য (২১) ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা জান্নাত আক্তার (১৯)।
ভারতের ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্ত দিয়ে তারা দেশে ফেরেন।
এদিকে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সজিব মিয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, বিজিবির আইসিপি পোস্ট কমান্ডার মো. রুহুল আমিনের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা মো. ওমর শরীফ।
এসময় গণমসাধ্যমকে সুব্রত ভট্টাচার্য্যের মা বলেন, ‘আমি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ বিধায় ছেলেকে একটা আশ্রমে পড়াশোনা করার জন্য দেওয়া হয়। একদিন রাতে ফোন আসে আমার ছেলে ভারতে। ফোন পেয়ে আমি দিশাহারা হয়ে যাই। সে ওখানে থাকার প্রায় দশ মাস আমি পাগলপ্রায় ছিলাম। আমার স্বামীও অসুস্থ। কোথায় যাবো, কী করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এতোদিন পর ছেলেকে পেয়ে আমি আনন্দিত।’
দেশে ফেরা সুব্রত ভট্টাচার্য্য জানান, তিনি দশ মাস আগে রামগড় সীমান্তপথে পুরোহিত বিদ্যার্জনে ভারত যান। সেখানে তিনি বিএসএফের হাতে আটক হন।
এদিকে জান্নাত আক্তার জানান, পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য দালালের মাধ্যমে তিনি ভারতে যান। সিলেটের খোয়াই সীমান্তপথে তিনি গিয়েছিলেন। দেশে ফিরতে পেরে তিনি খুব খুশি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মেয়ের সঙ্গে অভিমান করে জালাল মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।
আজ ১৬ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল ৫টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় জালাল মিয়ার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ গ্রামে বিষপানের এ ঘটনা ঘটে। নিহত জালাল মিয়া একই গ্রামের তুফানী বাড়ির মৃত সারু মিয়ার ছেলে।
নিহত জালাল মিয়ার ছেলে তানভীর জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে তারা বাবা জালাল মিয়া তার মেয়ে জিন্নাতকে কলা ও রুটি কিনে খাওয়ার জন্য ২০ টাকা দিয়েছিল। পরে জিন্নাতের ছোটবোনকে দিয়ে ২টি কলা ও ২টি রুটি কিনেন। কলাটি পঁচা হওয়ায় জিন্নাত তার বাবা জালাল মিয়ার সামনে ঢিল দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে জালাল মিয়া খুব কষ্ট পায়। পরে ঘরে রাখা গাছের পোকামাকড় মারার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে জালাল মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে বিকাল ৫টার দিকে সে মারা যায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসাইন জানান, হাসপাতাল থেকে জেনেছি এক লোক বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। আখাউড়া থানাকে জানানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল জব্দ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের দায়ে এক বেকারী মালিককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ ২ অক্টোবর সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আদালত পরিচালনা করা হয়। মৎস্য অফিস ও পুলিশের সহযোগিতায় আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবতী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সহকারী কশিনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী ও সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহানের সমন্বয়ে গঠিত ভ্রাম্যমান আদালত শহরের বড় বাজার নৌ-ঘাট থেকে খড়মপুর এবং ধরখার পর্যন্ত নদীতে অভিযান চালায়। এসময় নদী থেকে ১৫টি রিং জাল, ৩০টি কারেন্ট জাল ও ২০০ মিটার বেড়জাল জব্দ করে। আদালতের অভিযানে বড় বাজার একটি মাছের আড়ৎ থেকে ৮০ কেজি বিদেশী মাগুর মাছ জব্দ করা হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার মোগড়া বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য তৈরির দায়ে বিসমিল্লাহ বেকারীর মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
পরে জব্দকৃত জালগুলো উপজেলা পরিষদ মাঠে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। জব্ধকৃত মাছগুলো ৭টি মাদ্রাসার এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
আখাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান বলেন, নদীতে অবৈধ জাল দিয়ে দেশীয় মাছ ধরা হচ্ছিল। এসব জালের কারণে মাছের প্রজনন ধ্বংস এবং জীব বৈচিত্র নষ্ট হয়। তাই অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে। বিদেশী মাগুরগুলো আমাদের দেশীয় মাছ খেয়ে ফেলে। এসব মাছ উৎপাদন, পরিবহন ও বিক্রি নিষেধ। এজন্য মাছগুলো জব্দ করা হয়।