চলারপথে রিপোর্ট :
সবদিকে ধুলা। ধুলায় যেন অন্ধকার। বিজয়নগরের হরষপুর- মির্জাপুর উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সড়কের পথচারিদের শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এ পথের যাত্রীদের সীমাহীন দুভোগ।
জানা গেছে, বিজয়নগর উপজেলার খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হরষপুর-মির্জাপুর উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সড়ক।
সড়কটি পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার সাথে বিকল্প সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পাশর্^বর্তী মাধবপুর উপজেলার অধিকাংশ জনগোষ্ঠি চলাচল করে থাকেন। তবে দীর্ঘদিন যাবত এ সড়কটি বেহাল অবস্থায় থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষজন। বর্ষার মৌসুমে কাদা পানি সয়লাব আর শুষ্ক মৌসুমে প্রচুর ধুলাবালির সৃষ্টি। শুষ্ক মৌসুমে সড়কে পানি দিয়ে কিউরিং না করায় ধুলা-বালিতে ভরপুর। এ সড়কের যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ কোনোভাবেই কাটছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারের দরপত্র (টেন্ডার) আহ্বান করা হয়। প্রায় ৪ কোটি টাকায় সংস্কার কাজটি পায় চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিপন ট্রেডার্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেসার্স পিন্টু কন্সট্রাকশন (জয়েন্ট বেঞ্চার) । কাজটি করাচ্ছেন মেসার্স পিন্টু কন্সট্রাকশনের মালিক মোঃ আতাউর রহমান পিন্টু। গেল বছরের মার্চ মাসে সংস্কার কাজটির ওয়ার্ক অর্ডার (অনুমতিপত্র) পায় প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের অক্টোবর মাসে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও আদৌ পর্যন্ত সড়কটির সংস্কারের কাজ শেষ করতে পারে নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সংস্কারের কাজ গত বছরের শেষ দিকে শুরু করে প্রায় ৩ কিলোমিটার সংস্কার কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ঐ সংস্কার করা সড়ক ও ভাঙ্গন ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এ সড়কের হরষপুর ইউনিয়নের অর্ন্তগত বাগদিয়া ব্রীজ থেকে হরষপুর দেওয়ান বাজার পর্যন্ত সড়কের ভেকু দিয়ে সড়ক খুঁড়ে রেখেছে ঠিকাদারীপ্রতিষ্ঠান। সড়কের কাজ না করায় মাসের পর মাস অতিবাহিত হচ্ছে। কাজ বন্ধ থাকায় ধুলাবালিতে বিশাল এলাকায় ধুলোর নগরীর পরিণত হয়েছে। সড়কের পাশে থাকা স্কুল, মাদ্রাসা, দোকানপাট, হাট-বাজারের মানুষের অবস্থায় খুবই নাজুক।বাগদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, এ সড়ক এখন ধূলার কারখানা। এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করলে শরীরে ধুলার প্রলেপ পড়ে ধূলোর আস্ত জমাট বাঁধে। সড়কের পাশে থাকাবাড়ি ঘর লোকজন জানান, সড়কের ধুলাবালি ঘরে ঢুকছে আর এ ধুলাবালু ঘরের আসবাপত্রে জমাট বেঁধেছে। ঘরে খাবার দাবারেও ধুলা পড়েছে। তারপরও সহ্য করে এসব খাবার খেতে হচ্ছে তাদের। সড়কেরপাশে থাকা গাছপালার লতাপাতা এখন ধুলাবালুতে আচ্চাদিত। প্রচুর ধুলাবালুতে বসবাস করতে হচ্ছে তাদের।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রতিদিনই মোটর সাইকেল যোগে এ সড়ক দিয়ে একাধিকবার যাতায়াত করতে হয়। মাস্ক ও রুমাল পড়েও ধুলা থেকে কোনোভাবেই রেহাই মিলছে না।
কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী শান্তা বলেন, ধুলাবালুতে অবস্থা খারাপ। কলেজে আসা-যাওয়ার খুবই কষ্ট হচ্ছে। আর জামা-কাপড়ের অবস্থা তো বলে শেষ করা যাবে না। আর কত দুর্ভোগ পেতে হবে?এদিকে সড়কের অবস্থা ভালো না হওয়ায় এ সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কমে গেছে। আর যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত। সড়কের অতিরিক্ত ধুলাবালি নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানবদেহে প্রবেশকরছে। এতে করে অ্যাজমা, হাঁপানী শ্বাস কষ্টসহ নানা রোগব্যাধির সম্ভবনা রয়েছে।এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মোঃ আতাউর রহমান পিন্টুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশিকুর রহমান ভূঞা সড়কের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কের কাজে কিছু ক্রুটি-বিচ্যুতি থাকায় তা তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত করার জন্য বলা হয়েছে। আর যদি দ্রুত কাজ না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে কাজের সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে গেলেও ঠিকাদার ঢাকা অফিসেও সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘ছাত্র রাজনীতি ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৪ আগস্ট সোমবার সকাল ১১ টায় চম্পকনগর র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী কলেজ হল রুমে বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হৃদয় আহমেদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী রাব্বির সঞ্চালনায় শাহনেওয়াজ শাহ্ এর কোরআন তিলাওয়াত এর মাধ্যমে এ আলোচনা সভা শুরু হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভন।
উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা মকাই আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাহাঙ্গীর মৃর্ধা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে বাগান মালিকদের মুখে। এই উপজেলার লিচু সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশেই কদর রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাগানের পাশাপাশি বাসা-বাড়ির ফাঁকা জায়গাতেও লিচুর আবাদ করেছেন স্থানীয়রা।
বিজয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমুড়া, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, বক্তারমুড়া, রূপা, শান্তামুড়া, কামালপুর, কচুয়ামুড়া, গোয়ালনগর, ভিটিদাউপুর ও পত্তন এলাকায় লিচুর ব্যাপক চাষ হয়েছে।
বিশেষ করে পাটনাই, বম্বে, চায়না থ্রি, চায়না-২ ও এলাচি জাতের লিচুর আবাদ হয় এই উপজেলায়। লিচুর জন্য সেখানকার সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত আউলিয়া বাজার। পাশাপাশি সিংগারবিল, হরষপুর ও চম্পকনগর বাজারে বিক্রি হয় অধিকাংশ লিচু। এসব বাজার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে লিচু কিনে নিয়ে যান।
বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর, সেজামুড়া ও কামালমুড়ার বিভিন্ন বাগানে ঘুরে দেখা যায়, শেষ সময়ে বাগান মালিকরা বাগানের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্থানীয় বাগান মালিকরা জানান, চলতি মৌসুমে বাগানে প্রচুর লিচু এসেছে। বিক্রি গত বারের তুলনায় অনেক বেশি হবে।
হরষপুর গ্রামের লিচু চাষি আবুল হাসেম বলেন, আমার ৫০ টি লিচু গাছ রয়েছে। লিচু গাছে এবার অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এই বছর ৪ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করার আশা করছি।
কামালপুর গ্রামের বাগান মালিক কাউছার ভূঁইয়া বলেন, আমার ৪টি বাগানে ১৭০টি লিচু গাছ আছে। এ বছর ১২ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করার আশা করছি।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাব্বির আহমেদ জানান, উপজেলায় চলতি বছর ৪৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু বাগান আছে ৯০০টি। তিনি আরো জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ১৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার লিচু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের শাহজাহান মাষ্টার ও সাইফুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ থাকায় গ্রামের পুরুষদের আতঙ্কিত অবস্থায় নিরাপত্তার অভাবে পাঁকা ধান কাটা হচ্ছিল না।
এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহমেদের নেতৃত্বে বিজয়নগর থানার পুলিশ সদস্যদের আশ্বাস ও উপস্থিতিতে পাঁকা ধান কাটা হয়েছে।
আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার দিনব্যাপী এই ধান কাটা ও এলাকায় যেন নতুন করে দাঙ্গা সংঘটিত না হয় সেই জন্য বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহমেদের উপস্থিতিতে বিজয়নগর থানার পুলিশ সদস্যরা ব্যবস্থা গ্রহন করেন।
এসময় সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত হোসেনপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, মনির হোসেন, ফরিদ মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেনদের জমির ধান কেটে ঘরে তোলার ব্যবস্থা করা হয়।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহমেদ জানান, ঝগড়াঝাটির জন্য পাঁকা ধান কাটা বন্ধ ছিল। খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নতুন করে যেন কোন দাঙ্গা সংঘটিত না হয় সে জন্য সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে ধান কাটার সহায়তা ও নিরাপত্তা প্রদান করেন বিজয়নগর থানা পুলিশ। পাশাপাশি বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে জানান তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।