আলোচনা সভা, কেক কাটা, মিলাদ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে জাতীয় মহিলা সংস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে। ১৭ মার্চ শুক্রবার হওয়ায় ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ে চেয়ারম্যান মিসেস মিনারা আলম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক বর্ণনা করে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম, মাঠ সমন্বয়কারী আব্দুল মতিন মোল্লা, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নাজমুন নাহার অপরূপা, সাংগঠনিক সম্পাদিকা মাহফুজা বেগম, শ্রম সম্পাদিকা নাসিমা কাইয়ূম, নারীনেত্রী শিশির হাওলাদার, মনোয়ারা বেগম, জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষণার্থী সাদিয়া সুলতানা, পাপিয়া সুলতানা পলাশী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মিসেস মিনারা আলম বলেন, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেয়া শিশু খোকা ওরফে শেখ মুজিবুর রহমান শিশুকাল থেকেই মানুষের প্রতি দরদি ছিলেন। তিনি ছিলেন অসহায় মানুষের বন্ধু। রাজনৈতিক নেতা হওয়ার পর সচেতন বাঙ্গালিরা তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে পশ্চিম পাকিস্তানের শৃঙ্খল থেকে পূর্ব পাকিস্তান আজকের বাংলাদেশ নামে স্বাধীন হতোনা। এ দেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে যেতে হয়েছিল তাঁকে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই আজকে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয় দিতে পারছি। বিশ্বের বুকে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বুক ফুলিয়ে চলতে পারছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত রাষ্ট্র হতে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে চলেছে। তাই আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নৌকার বিজয় ঘটিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।
আলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ দোয়া এবং মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তৈরি করা কেক কাটা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বিপনী বিতানের দুটি দোকান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় সোয়া কোটি টাকার মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়েছে।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে শহরের কালীবাড়ি মোড়ের এল.আর প্লাজার “মোবাইল মেলা” নামক দুটি দোকানে এই চুরির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আজ ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
দোকান দুটির মালিক মোবারক হোসেন জিসান জানান, তিনি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দোকানে গিয়ে দেখেন দোকানের সার্টার লাগানো, তবে তালা গুলো খোলা। পরে তিনি দোকানের ভেতর প্রবেশ করে দেখেন দোকানে থাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দুইশতাধিক মোবাইল ফোন সেট চোরেরা নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, চুরি হওয়া মোবাইল ফোনের মধ্যে আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স,আইফোন-১৩ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১৩, আইফোন-১২ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১১ প্রো ম্যাক্স, গুগল পিক্সেল ৭ প্রো, অপোর বিভিন্ন মডেলের, ভিভোর বিভিন্ন মডেলের, শাওমি বিভিন্ন মডেলের, ওয়ান প্লাস ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের, স্যামসাংয়ের, স্যামসাং ফোল্ড-৩ মডেলের, ফোল্ড-৪ মডেলের, ফ্লিপ-৩ মডেলের ও ফ্লিপ-৪ মডেলের মোবাইল চুরি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, তার প্রায় সোয়া কোটি টাকা মূল্যর মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, চুরির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। ইতিমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কুষ্ঠরোগ বিষয়ে সাংবাদিকদের সচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগিতায় ও দি লেপ্রোসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (প্রয়াস) এর উদ্যোগে আজ ২৩ জুলাই রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় কুষ্ঠরোগ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ডাঃ মফিজুর রহমান ফিরোজ।
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, দি লেপ্রোসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (প্রয়াস) এর টেকনিক্যাল সাপোর্ট অফিসার জুয়েল খিয়াং ও ফিল্ড ফেসিলেটর নূরে আলম।
কর্মশালায় বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১৬জন কুষ্ঠরোগী সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩ জন, কসবায় ২ জন, নাসিরনগরে ৪ জন, আশুগঞ্জে ১ জন, বিজয়নগরে ১ জন,বাঞ্ছারামপুরে ৩ জন ও নবীনগরে ১ জন রয়েছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত জেলার আখাউড়া ও নবীনগর উপজেলায় কোনো কুষ্ঠরোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর আগে ২০১৯ সালে ৫৪ জন, ২০২০ সালে ৩৮ জন, ২০২১ সালে ৩৭ জন ও ২০২২ সালে ৪৪ জন রোগী সনাক্ত করা হয়। সনাক্তকৃত রোগীদের ধরণ দেখে দুইভাগে ভাগ করে চিকিৎসা দেয়া হয়।
প্রাথমিক অবস্থায় রোগীদেরকে ৬ মাস ও গুরুতর রোগীদের ১২ মাস করে চিকিৎসা দেয়া হয়। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়া ১২৯ রোগীর মধ্যে সবাই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। ২০২২ সালের ৪৪ জন রোগীর মধ্যে ৩৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
তবে ২০২২ সালের ৯ জন ও ২০২৩ সালে ১৪ জনসহ মোট ২৩জন রোগী বর্তমানে ১২ মাসের চিকিৎসায় অর্ন্তভুক্ত হয়ে এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কর্মশালায় বলা হয়, এক সময় কুষ্ঠরোগীকে সমাজে বহু বঞ্চনার শিকার হতে হলেও এখন সে চিত্র পাল্টে গেছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে কুষ্ঠরোগ শতভাগ নিরাময় সম্ভব। কুষ্ঠরোগ ব্যাকটেরিয়াজনিত ছোঁয়াচে রোগ হলেও চিকিৎসার আওতায় এলে ছোঁয়াচের মাধ্যমে অপর ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ার মাত্রাও বহুলাংশে কমে যায়।
কর্মশালায় কুষ্ঠরোগ সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদক মামলায় মো. জসিম মিয়া (৬২) নামের সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ৭ অক্টোবর শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের কোড্ডা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জসিম মিয়া ওই গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার সহকারী উপ পরিদর্শক বাপন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জসিম মিয়ার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ছিল। সেই মামলায় গত মে মাসে জসিম মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছর তিনমাস সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরো একমাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। রায়ের পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। শনিবার সকালে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার:
দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৫৮ জন। রোববার (১১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৮১ জন। তাদেরকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪৮ জন। এ সময়ে টিকার বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ পেয়েছেন ছয় কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন।
২০২১ সালের ১ নভেম্বর ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৯ শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২৪২ শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৬৮৯ শিক্ষার্থী। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়নি।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০টি। এছাড়া দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৪২১ শিশুকে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত ভাসমান জনগোষ্ঠীর ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১৮০ জনকে জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গেল ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৭০ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসায় কোন রোগীর মৃত্যু হলে সেটি “ভুল চিকিৎসা নয়, এটি দুর্ঘটনা এবং এটি অপরাধ হিসেবে গন্য করা যাবেনা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা করেছেন জেলা বিএমএর নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ এফ. জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ।
লিখিত বক্তব্যে ডাঃ আবু সাঈদ বলেন, চিকিৎসকরা রোগীদের সম্মতি নিয়ে অস্ত্রোপচার করে থাকেন। দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ ও ৮৯ অনুসারে চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক এক্ষেত্রে রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার পরও রোগীর মৃত্যু হলে সেটা কোনোভাবেই হত্যা মামলা হতে পারে না। তিনি বলেন, এই আইনে চিকিৎসকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সততার সাথে নিঃসংকোচ চিত্তে কর্তব্য পালন করার নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে এবং হত্যা মামলার মতো ফৌজদারি মামলা হতে ‘দায়মুক্তি’ প্রদান করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ ও ৮৯ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ অনুসারে ভাল উদ্দেশ্যে বা রোগ উপশমের উদ্দেশ্যে সম্মতিসহ কোনো রোগীর অস্ত্রোপচার করার সময় বা পরবর্তীতে যদি ‘মৃত্যু’ ঘটে তবে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। আর দণ্ডবিধির ধারা ৮৯ অনুসারে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা মানসিক প্রতিবন্ধী কোনো ব্যক্তি সম্মতি দিতে অসমর্থ হলে এবং তাকে সুস্থ করার উদ্দেশ্যে কোনো অস্ত্রোপচার করা হলে এবং সেটি করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটলে তা কোনো অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
তিনি বলেন, তারপরও সম্প্রতি চিকিৎসা দুর্ঘটনায় কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে চিকিৎসকদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। অথচ চিকিৎসা সঠিক নাকি ভুল সেই মতামত দেয়ার একমাত্র এখতিয়ার বিএমডিসির।
তিনি বলেন, তদন্তে চিকিৎসকের ভুল বা অপরাধ প্রমাণিত হলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে বিচার হবে। চিকিৎসা দুর্ঘটনা কোনো অপরাধ নয়। তবে রোগীর স্বজনরা জানে না চিকিৎসা নিয়ে কোনো সন্দেহ হলে বিচারের জন্য বিএমডিসির কাছে অভিযোগ দায়ের করতে হয়। এই সুযোগে কতিপয় অতিউৎসাহী মিডিয়া জনগণকে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেয়। বিচার প্রক্রিয়া যেমন আদালতে বিচারকের কাছে গোপনীয়, তেমনি চিকিৎসকের কার্যক্রম ও তার নিজের পেশাগত গোপনীয়তা বিএমডিসির আইন দ্বারা নির্ধারিত এবং সংরক্ষিত। রোগীর শরীর অস্ত্রোপচারে আকস্মাৎ দুর্ঘটনা ঘটে যায় যেমন জ্ঞান না ফেরা, হার্ট ব্লক হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণ বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ জখম হওয়া যা চিকিৎসকের কাছে অনাকাঙ্খিত। এ কারণেই বাংলাদেশ পেনালকোড-এ সার্জনকে দায়মুক্তি দেয়া আছে।
তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ধারা ৩০৪, ৩০৪ এর উপধারা ক ও খ প্রয়োগ করে যদি কোনো চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করতে হয়, সেক্ষেত্রে আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের মতামত লাগবে। এবং উপযুক্ত মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক তদন্তে দোষী সাব্যস্থ হলেই কেবল এই ধারাটি প্রযোজ্য হবে। রোগীর মৃত্যুকে হত্যাকান্ড হিসেবে নথিভূক্ত করা অনাকাঙ্খিত। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি চিকিৎসক আবু সাঈদের অনুরোধ, তারা যেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করেন এবং সঠিক কারণ অনুসন্ধ্যানে বিএমডিসি, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনকে সাহায্য করেন। সেই সাথে চিকিৎসায় কোনো রোগী মারা গেলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন প্রকাশের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্বাবধায়ক ডাঃ মো. শওকত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রানা নূর সামস্, ডাঃ ফয়েজুর রহমান ফয়েজ, ডাঃ আজহারুর রহমান তুহিন, খোকন দেবনাথ, মাহফিদা আলম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হন চিকিৎসক নেতারা। কিভাবে মিডিয়া ক্রাইম হলো? একজন চিকিৎসক অধিক হাসপাতালে কিভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং তার মান কতুটুকু? বেসরকারি হাসপাতালে রাতে কেন কোনো চিকিৎসক থাকেন না? সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের দূর্ব্যবহারসহ সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক।
মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।