চলারপথে রিপোর্ট :
রমজানে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চট্টগ্রাম নগরীতে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে আজ ২০ মার্চ সোমবার দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় বিক্রয় রসিদ সরবরাহ করতে না পারা ও দোকানে মূল্য তালিকা না ঝোলানোয় চারটি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলম ও মাসুদ রানা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ বলেন, বিক্রয় রসিদ সরবরাহ করতে না পারায় আরএম ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্য তালিকা না ঝোলানোয় তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওজন স্কেল যাচাই করেন বিএসটিআই কর্মকর্তারা। ওজন নিয়ে কারচুপি রোধে সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয় নানা নির্দেশনা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, কোনোভাবেই বাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে দেওয়া হবে না। সেটি নিশ্চিত করতে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। রমজান মাসজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুর্বধলায় ১১০ বোতল ভারতীয় মদসহ দুই কারবারিকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ব্যাপারে ডিবি’র এস আই সঞ্জয় সরকার বাদী হয়ে আটককৃত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে বুধবার বিকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে।
আটককৃতরা হচ্ছে- জেলার দূর্গাপুর উপজেলার চন্ডীগড় গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. মাহফুজুল ইসলাম (২২) এবং পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নারায়ণ ডহর গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে মো. বোরহান উদ্দিন (৩৮)।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ এর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এর দিক নির্দেশনায় ওসি, ডিবি (পশ্চিম) মোহাম্মদ শাহনূর আলমের নেতৃত্বে এস আই সঞ্জয় সরকার, এ এস আই ম. মফিজুল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ৪ অক্টোবর (বুধবার) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পূর্বধলা চৌরাস্থার ইলাশপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ ১১০ বোতল ভারতীয় মদসহ দুই চোরাকারবারিকে আটক করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দাবি আদায় না হওয়ায় আবারো বাড়ানো হয়েছে আদালত বর্জন কর্মসূচি। আজ ৩০ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে ৫ম দফায় বর্ধিত কর্মসূচির শেষ দিনে আরো ৮ দিনের জন্য আদালত বর্জন কর্মসূচি নিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
বিকেলে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে সর্বদলীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি এক সভার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন কর্মসূচির আওতায় আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করবেন আইনজীবীরা। এসময় আদালতের কোনো বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না তারা।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়া জানান, দাবি আদায় না হওয়ায় কর্মসূচি বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এবং আদালতের নাজিরকে অপসারন করার দাবি আদায় না হলে আইনজীবীদের সর্বদলীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা। এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। পরবর্তীতে পুরো আদলতের পরিবর্তে জেলা জজ ও নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল-১ আদালত বর্জন করে আসছে আইনজীবীরা। এছাড়াও বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দু’দফায় তলব করেছে উচ্চ আদালত।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভবিষ্যতে ভোটের চিন্তা থাকবে না । জনগণের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে আওয়ামী লীগ। লক্ষ্য স্থির রেখে পরিকল্পনার জন্য দেশে দারিদ্র্যতা হ্রাস পেয়েছে। মানুষের সেবা করলে জনপ্রতিনিধিদের কেউ হারাতে পারবে না। ভবিষ্যতে ভোটের চিন্তাও থাকবে না।
আজ ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়রদের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভবিষ্যতে ভোটের কোনো চিন্তা থাকবে না। মানুষ আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে। এই কথাটা আপনারা মাথায় রাখবেন। জনসেবার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন, সেটাই আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য জাতির পিতা প্রথমে ইউনিয়ন পর্যায়ে দশ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করার ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তিনি সম্পন্ন করতে পারেননি। আমি সরকারে আসার পর কমিউনিটি ক্লিনিক করলাম। স্থানীয় লোক সেখানে জমি দেয়, আমরা ভবনের ব্যবস্থা করা, চিকিৎসার সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে সেখানে নিয়োগ দেই। ৩০ ধরনের ওষুধ আমরা বিনামূল্যে দিচ্ছি। আপনারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে এসব দিকে নজর দেবেন যেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সঠিকভাবে চলছে কিনা। মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে কিনা। মানুষ সেবা পাওয়াটাই বড় কথা।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের কল্যাণে কাজ করে, জনগণের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করেছে তখনই এদেশের মানুষ কমপক্ষে এইটুকু পেয়েছে যে, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে। যে কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন করাটা সম্ভব হয়েছে। আমরা প্রত্যেকটা এলাকায় উন্নয়ন করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, গ্রাম বা তৃণমূলকে লক্ষ্য করে আমরা সব উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে থাকি। দেশের উন্নতি করতে হলে গ্রামকে উন্নত করতে হবে। গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে হবে। তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, তাদের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে হবে। আবার যদি শিল্পাঞ্চলের কথাও চিন্তা করি, তখন আমাদের ভাবতে হবে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আমাদের পণ্য উৎপাদন করা। যাতে আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি হয়। মানুষ যাতে সেই সক্ষমতা অর্জন করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়া, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলাই হচ্ছে সরকারের লক্ষ্য। গ্রামের মানুষ শহরের সব সুবিধা পাবে সেটাকে সামনে রেখে আমরা সব পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকে যার বয়স ১৫ বছর সে হয়তো ভাবতেও পারবে না যে, ১৫ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ এর আগে বাংলাদেশ কি অবস্থায় ছিল। আজকের বাংলাদেশ সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা দারিদ্র্যের হার আমরা নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, অনেক দেশ চাইবে খাদ্য আমদানির মাধ্যমে তাদের ওপর নির্ভরশীল থাকি। তবে কোনো বড় দেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে না বাংলাদেশ।
অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা হরতালের মধ্যে আটক হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ ২৯ অক্টোবর রবিবার সকাল ৯ টা ২০ মিনিট গুলশান বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে গিয়েছে।
জানা যায়, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি জানান, মহাসচিবকে তার গুলশান দুইয়ের বাসা থেকে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।
এর আগে বাসা থেকে তুলে নিতে উপস্থিত হন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা।
মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম জানান, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বাসায় এসে সিসি ক্যামেরার ডিভাইস নিয়ে যায়। তার ১০ মিনিট পর বাসায় গিয়ে মির্জা ফখরুলকে আটক করে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, অসুস্থ একজন মানুষকে এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া মেনে নেয়া যায় না
এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, রাত থেকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের রাজধানীর শাহজাহানপুরের বাসা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছে।
তিনি বলেন, পুলিশ বাড়ির প্রধান গেট ভাঙার চেষ্টা করছে। যে কোনো সময় ভেতরে ঢুকে মির্জা আব্বাসকে তুলে নিয়ে যেতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) উদ্যোগের অধীনে বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ ৬ জুন মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত ও চীনের মতো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ, ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি (লাইন্স অব ক্রেডিট) রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে কালবিলম্ব বা অবহেলা যাবে না। কারণ, এসব উদ্যোগ বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, আজকের একনেক সভায় মোট ১১,৩৮৭.৯১ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মান্নান আরো বলেন, ‘মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে, বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে ৭,৪৪৫.৩৪ কোটি টাকা, ৮০.৭৮ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ও বাকি ৩,৮৬১.৭৯ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসাবে আসবে।’
১৮টি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নয়টি নতুন ও নয়টি সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া বৈঠকে একটি প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে কঠোরতা বজায় রাখতে ও এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে পুনরায় নির্দেশ দিয়েছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বাজার ও কাঁচা বাজারের পণ্যের দামের পার্থক্য থাকায় গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজ ও আদার মতো পচনশীল আইটেমগুলোর জন্য আঞ্চলিক স্টোরেজ ব্যবস্থা স্থাপনের ওপরও জোর দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রবণতা এবং দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির কারণে লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।
মূল্যস্ফীতি কমবে বলে তার পূর্বের ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করে মান্নান বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা কমেনি, বরং বেড়েছে- যার জন্য সরকার তার উপলব্ধ উপকরণ ব্যবহার করার মতো যা যা প্রয়োজন তা করবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রথম কৌশল হবে এটিকে আরও বাড়তে না দেয়া এবং তারপরে তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু মার্কিন ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এটা ঠিক নয়। এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।
মার্কিন ডলার ছাড়া অন্যান্য মুদ্রার সাথে বাণিজ্য পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ এখনও ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে রয়েছে। তবে এটি আবারও ৫০ বিলিয়ন ডলারে যেতে পারে।’ আগামী অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে মান্নান বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কিছু উদ্বেগ থাকতে পারে, তবে সামনে এমন লক্ষ্য রাখা ভুল নয়।
স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পেঁয়াজ আমদানির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে ও সঠিক সময়ে বাজারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে হবে।’ ইইউতে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে উল্লেখ করে মান্নান বলেন, আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনা কঠিন হলেও মূল্যস্ফীতি কমাতে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়াটি (সাপ্লাই চেইন) মসৃণ রাখতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে- কোনও ধ্বংসাত্মক উপাদান যেন প্রক্রিয়াটিকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। অন্যথায়, সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা সত্ত্বেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
সভার শুরুতেই একনেক বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য এত চমৎকার বাজেট প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানায়।
এম এ মান্নান বলেন, প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ায় সরকার আরও কঠোর হবে এবং অনুমোদন দেওয়ার আগে প্রকল্প প্রস্তাব গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রবাসীদের দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি বলেন, ‘যদিও কিছু বেসরকারি ব্যাংক রেমিট্যান্স পাঠাতে সরকার নির্ধারিত আড়াই শতাংশের বাইরে কিছু বাড়তি প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে এই হার বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারের বিপুল আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে যে, ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কারণে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভোট চাইতে সরকার দৃঢ় মনোবল নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে পারবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতী নদীর বাম তীর ভাঙ্গন থেকে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্প। বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণার উন্নয়ন। নেত্রকোনা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প (পঞ্চম সংশোধন)। ১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ প্রকল্প। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন প্রকল্প। হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন এন্ড ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প। গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্প। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভটি প্রজেক্ট-১, শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রকল্প। সাতক্ষীরা সড়ক সিটি ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ প্রকল্প। সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প। ডিজিএফআই-এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন প্রকল্প। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প। নড়াইল জেলার জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প।
আজ একনেক সভার শুরুতে বৈশ্বিক টালমটাল পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য চমৎকার বাজেট পেশ করায় প্রধানমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়।বাসস