চলারপথে রিপোর্ট :
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সরাইল উপজেলায় ৪৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাবেন আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-প্রকল্পের আওতায় ঘর। আজ ২১ মার্চ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন এই তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ইউএনও মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন জানান, মুজিব বর্ষে দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা” প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২-প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেনীর ভূমিহীন (যাদের জমি নেই, ঘরও নেই) তাদের পুর্নবাসনের জন্য তৃতীয় পর্যায়ে সরাইল উপজেলার ৪৯টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই ঘর গুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ২ শতাংশ খাস জমিতে ২ কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধাপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫ শত টাকা। সব গুলো ঘর একই নকশায় তৈরী করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল ২২ মার্চ বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি তিনি সরাইল উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর পরই ৪৯ টি পরিবারকে ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সরাইল উপজেলায় এ পর্যায়ে সরাইলে প্রথম পর্যায়ে ১০২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩১ টি ঘর, তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে পেয়েছেন ১৮১ টি পরিবার। বুধবার পাবেন আরো ৪৯টি পরিবার। তিনি বলেন, সরাইলে মোট ৩৬৩টি পরিবার পাবেন আশ্রয়ণ প্রকল্পর ঘর। বুধবার ৪৯টি ঘর হস্তান্তর করলে ৩৬৩টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাইল উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা দিবেন।
ইউএনও মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোন কারণে কোন পরিবার ভূমিহীন ও গৃহহীন হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (প্রেষনে) মোঃ সাইফুল ইসলাম, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আইয়ূব খান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান বাবুলসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছে। নিহত যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাঁটিহাতা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সারোয়া উরপে লাল খাঁ (২৫)।
এ ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টায় সরাইল উপজেলার সদরের বড্ডাপাড়া কুমার বাড়ি সংলগ্ন সড়কে।
এসময় ঘটনাস্থলে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত জসিম মিয়া (৩৭) নামে একজনকে ছুরিসহ হাতেনাতে এলাকার জনতা আটক করে সরাইল থানা পুলিশের হাতে তোলে দেন। একজন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আটক জসিম’কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাৎক্ষনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা আলামিন (৩৫) কে সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লাল খা হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার জসিম মিয়া (৩৭) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানাধীন নরসিংসার এলাকার নুর মিয়া’র ছেলে, সে উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা (হাফিজটুলা) এলাকায় শ্বশুর মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে বসবাস করত এবং অপর আসামি আলামিন (৩৫) বিজয়নগর থানাধীন সেজামুড়া এলাকার মৃত সফিক মিয়া’র ছেলে, তবে বর্তমানে সরাইল বড্ডাপাড়া গ্রামে মৃত হাফিজ মিয়া’র বাড়িতে ভাড়া’য় থাকে আলামিন।
নিহত লাল খা’র বুকের উপরে, নীচে এবং বামহাত মিলিয়ে মোট ৩টি ছুরিকাঘাত করে। লাল খা’র চিৎকারে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে আসেন এবং দ্রুত তাকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিক্ষা–নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: এমরানুল ইসলাম জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডে আটক জসিম ও আল আমিনকে আসামি করে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্টাফ রিপোর্টার :
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। আজ ১৬ জানুয়ারি সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিকেলে উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেছেন।
বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া পেয়েছেন “ডাব” প্রতীক, এই আসনের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত নেতা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পেয়েছেন “ সিংহ” প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ পেয়েছেন “মটর গাড়ি (কার)” প্রতীক, এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী পেয়েছেন “লাঙ্গল” প্রতীক ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল পেয়েছেন “গোলাপ” ফুল প্রতীক।
উপ-নির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান বিকেলে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এখন থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন।
উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এই আসন থেকে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন। তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শুন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির চেয়ারপার্সনের পদ থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামীলীগের তিনজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্তে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল- মামুন সরকার বলেন, ‘এখানে যেহেতু দল কোনো প্রার্থী দেয়নি সেক্ষেত্রে দলের কথা বলে কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। তারা স্বেচ্ছায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। মূলত নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে অনেকটা অসময়ে। দলের প্রার্থীরা সময় নিয়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম ও মাদকের বিস্তৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জনপ্রতিনিধি ও সদস্যরা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ইউএনও মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর।
শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল বলেন, আমাদের ইউনিয়নের একটি এলাকায় কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ব দিনদিন চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। ওই গ্যাং এর সদস্যরা ওঠতি বয়সের মেয়ে ও স্কুলে যাওয়া আসার সময় নারী শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করছে।
বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা আতঙ্কে আছেন। লোক লজ্জার ভয়ে অনেক অভিভাবক মুখ বুঝে সহ্য করছেন। আর মাদকের বিস্তৃতি বলে শেষ করা যাবে না। প্রতি সভায় মাদক নিয়ে বলছি। কোন ভাবেই প্রতিরোধের পথ পাচ্ছি না।
শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোছাম্মৎ আছমা বেগম উনার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের ইউনিয়নে বর্তমানে মাদক ও জুয়ার বিস্তৃতিটা বেশী।
৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য বলেছেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মাদকের ছড়াছড়ি বেশী।
কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন ডাকাতি ও মাদক প্রতিরোধে সরাইল-নাসিরনগর সড়কের কদমতুলি এলাকায় সওজের জায়গায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদের প্রস্তাব দিয়েছেন।
অরুয়াইলসহ আরো কয়েকটি ইউনিয়নে কিশোর গ্যাং-এর দাপট ও তাদের গডফাদারদের আইনের আওতায় দাবি জানিয়েছেন সরাইল মহিলা কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মাহবুব খান।
তিনি অরুয়াইলের সরকারি ঘাটলা উদ্ধার ও ফসলি জমির মাটি কাটার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করায় উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অনেক এলাকায় মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন জনপ্রতিনিধি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দিয়েছেন- পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আ. স. ম. মো. আতিকুর রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ, চুন্টা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান মো. কাউছার হোসেন, পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সরাইল প্রেসক্লাবের সম্পাদক তৌফিক আহমেদ তফছির, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুর রহমান ও সুকের পরিচালক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে জুনায়েদ নামে ছয় বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ৩ জুন সোমবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর আরিফাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত জুনায়েদ (৬) উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর আরিফাইল এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সরাইল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাস জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিশু জুনায়েদ বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে যায়। গোসলের একপর্যায়ে পুকুরের পানিতে ডুবে যায় জুনায়েদ। পুকুরে তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার পরিবারে লোকজন। একপর্যায়ে পুকুরের পানিতে ভাসমান অবস্থায় জুনায়েদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।