চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে বিজয়ী সরাইলের তিন সন্তান কার্যকরী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা ও কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বেলালকে সরাইল উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
আজ ২৭ মার্চ সোমবার দুপুরে সরাইল উপজেলা পরিষদের কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু।
বক্তব্য রাখেন সংবর্ধিত অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা ও কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বেলাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন, সরাইল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুর রহমান কামাল, উপজেলা পরিষদ ভাইস- চেয়ারম্যান আবু হানিফ, মহিলা ভাইস- চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খালিদ জামিলের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক হাজী মাহফুজ আলী।
বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ সুমন মিয়া, ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা বাদল, মোঃ আবদুল জব্বার, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, সাংবাদিক নূরুল হুদা প্রমুখ।
সভায় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, মুক্তিযোদ্ধাগন, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কর্মরত সাংবাদিকগন, জনপ্রতিনিধিগন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্ত ডাঃ নোমান মিয়া।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে তিন সাংবাদিককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সরাইলের সাংবাদিকতা খুবই সমৃদ্ধ। সংবর্ধিত তিন সাংবাদিক সরাইলের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
তিনি সাংবাদিকতায় সরাইলের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন চুন্টা প্রকাশ নামে পত্রিকা ভারতবর্ষে অভিবক্ত বাংলার প্রথম পত্রিকা। কালিকচ্ছ থেকে জিত দাসের সম্পাদনায় ১৮৭০ সালে বঙ্গবন্ধু পত্রিকা ও কালিকচ্ছ থেকে রায়ত বন্ধু পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সংবর্ধিত তিন সাংবাদিকের সফলতা কামনা করেন। পরে প্রধান অতিথি সংবর্ধিত তিন সাংবাদিকের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মনোমুগ্ধকর লাঠি খেলা। লাঠি খেলার আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিল উৎসবের আমেজ। আজ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়েনের তেরোকান্দা গ্রামের একটি বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই প্রাচীন খেলা।
খেলায় ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার শব্দে চারপাশে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাদ্যের তালে তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে তরুণ ও বর্ষিয়ান লাঠিয়ালরা। তারপরই চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও তাকে আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা।
এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে উৎসাহ যোগায় খেলোয়াড়দের। কালক্রমে হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা দেখতে ভিড় করে নানা বয়সের নারী-পুরুষ। গ্রামীন এ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাকে টিকিয়ে রাখতে দরকার প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা এমনটাই মনে করেন দর্শনার্থীরা। বিকেল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলা লাঠিখেলায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েকটি লাঠিয়াল বাহিনী অংশগ্রহণ করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে আজ ৫ নভেম্বর রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু (নৌকা প্রতীক) ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি এই আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (কলার ছড়ি) পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট।
আজ ৫ নভেম্বর রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার ১৩২টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে অপর প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ (লাঙ্গল প্রতীক) পেয়েছেন ৩ হাজার ১৪২ ভোট, জাকের পার্টির প্রার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম জুয়েল (গোলাপ ফুল) পেয়েছেন ৫৬১ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোঃ রাজ্জাক হোসেন (আম প্রতীক) পেয়েছেন ৭৩৯ ভোট।
জেলা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম আনুষ্ঠানিকভাবে কোন ফলাফল ঘোষনা করেননি। উল্লেখ্য ১৯৭৩ সালের পর এই আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
এদিকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর বিজয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন, শাহজাহান আলম সাজুকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করায় আমি সংসদীয় আসনের ভোটারদেরকে ধন্যবাদ জানাই। শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন উপহার দেয়ায় জেলা প্রশাসন, আইন-শৃংখলাবাহিনী সহ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই ও শাহজাহান আলম সাজুকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসেবে তাহের উদ্দিন ঠাকুর বিজয়ী হয়েছিলেন। এর পরের নির্বাচনগুলোতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী দিলেও তারা জয়লাভ করতে পারেননি । নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি আওয়ামীলীগ মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৭ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫ এপ্রিল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কের ধরন্তী দুল্লাই ব্রিজের পাশ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মো. ইব্রাহিম মিয়া জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা এলাকার সহিদ মিয়ার ছেলে, একই উপজেলার ইসলামাবাদ (গোগদ) এলাকার জমির আলীর ছেলে মো. হেলাল, ধরন্তী (মুলবর্গ) এলাকার ফুল মিয়ার ছেলে মোখলেছ মিয়া, একই এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে অপু মিয়া, আ. হামিদের ছেলে মো. বিল্লাল মিয়া, জেলার সদর উপজেলার মালিহাতা এলাকার মো. আক্তার মিয়ার ছেলে মো. শামীম মিয়া ও একই এলাকার আনোয়ার মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সরাইল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কের ধরন্তী এলাকায় দুল্লাই ব্রিজের পাশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড ও ছোরা উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি করে আসছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। শনিবার দুপুরে কোর্টের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে অধ্যক্ষ শেখ মোঃ আবু হামেদ স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৩ মার্চ শুক্রবার বিকেলে আবু হামেদ স্মৃতি সংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি।
আবু হামেদ স্মৃতি সংসদের আহবায়ক সঞ্জীব কুমার দেবনাথের সভাপতিত্বে ও সরাইল প্রেসক্লাবের সাহিত্য সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ড. আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী, কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসেন, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ঠাকুর জিয়া উদ্দিন আহমেদ, শাহবাজপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. ওবায়েদুল্লাহ মামুন প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ।
সভায় বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ শেখ মোঃ আবু হামেদ ছিলেন একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবিদ। আবু হামেদ আপাদ মস্তক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাধারণকারী অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তার নীতি ও আদর্শ বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
সভায় আবু হামেদের সংক্ষিপ্ত জীবনীসহ একটি মুর্যাল নির্মাণ করার প্রস্তাব করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলের বিখ্যাত বংশীবাদক মো. রুবেল (৩২) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে তিনি মারা যান। উদীয়মান এই নক্ষত্রের আকস্মিক মৃত্যুতে সরাইলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তির মৃত্যুতে এতিম ৩ সন্তান নিয়ে দিশেহারা এখন স্ত্রী রুপা বেগম (৩২)।
পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার শাহবাজপুর প্রথম গেইট এলাকার প্রয়াত হাসনাত মিয়ার ছেলে রুবেল। রুবেল ২ ছেলে সন্তানের জনক। ছাত্র জীবন থেকেই সাংস্কৃতিক চর্চার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল তার। সেই থেকেই বাঁশি বাজানো অনুশীলন করতে থাকেন। এক সময় রুবেল ভাল বংশীবাদক হয়ে ওঠেন। বড় বড় অনুষ্ঠানে রুবেলের ডাক আসতে থাকে। ইউনিয়ন ছাড়িয়ে উপজেলা, জেলায় ও সমগ্র দেশে রুবেলের পরিচিতি বিস্তৃতি লাভ করে। আর এভাবেই রুবেলের বংশীবাদকের ক্যারিশমা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার ভক্তের কাছে রুবেল হয়ে ওঠেন প্রিয় বংশীবাদক। তাঁর আচার আচরণ ও সদালাপের সুনাম খ্যাতিও মানুষের মন কাড়ে। অগণিত দর্শক শ্রোতার প্রিয় রুবেল প্রথমে ডায়বেটিস ও পরে লিভারের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে হঠাৎ করে রুবেলের শাররীক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত নিয়ে যান জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন রুবেল।