চুরির অপবাদ দিয়ে নারী-শিশুকে পেটালেন চেয়ারম্যান

জাতীয়, 28 March 2023, 1015 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগরে স্বর্ণ চুরির অভিযোগে অসহায় নারী ও তার শিশুসন্তানকে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আজিজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জসিম উদ্দীন।

চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে পুলিশ এসে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সোমবার রাতেই আজিজনগরে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা। আহত মা ও শিশুকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- আজিজনগর ইউনিয়নের সোলাইমান বাজার ৬নং ওয়ার্ডের আশরাফপাড়ার বাসিন্দার মো. মোর‌শেদের স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩০) ও তার শিশুসন্তান মো. সেলিম ওরফে সোয়াদ (৯)। শিশুটি চা‌ম্বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। নির্যাতনকারী ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় সেলিনা আক্তারের স্বামী ও সোহাগের পিতা মো. মুরশেদ হাওলাদার লামা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অপরদিকে ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনও লামা থানায় চুরির অভিযোগে করেছেন।

মো. মুরশেদ হাওলাদার বলেন, জসিম চেয়ারম্যানের স্ত্রী আমাকে ফোন করে গত শনিবার রাতে দেখা করতে বলেন। আমি আর আমার স্ত্রী দেখা করলে আমাদের ছেলে স্বর্ণ চুরি করার অভিযোগ করে আমাদের তিনজনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করেন এবং আমার আহত ছেলেকে আটকে রাখেন। আমার সম্পত্তি লিখে দিয়ে ছেলেকে নিয়ে যেতে বলেন। স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে ছেলেকে উদ্ধার করি। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আহত মা ও ছেলেকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত দুবছর ধরে আমার ছেলেকে পড়ালেখার কথা বলে নিয়ে গিয়ে ঘরের কাজ করতে দেন চেয়ারম্যান। ঘরের কাজ করালেও দুই বছরে আমাদের কোনো টাকা দেয়নি।

আজিজনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক এনামুল হক ভূঁইয়া জানান, গত দুই বছর যাবত ছেলেটাকে লেখাপড়া করানোর কথা বলে চেয়ারম্যানের বাসায় রাখছে। ছেলেটা বাড়ির কাজকর্মও করত। কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যানের বউয়ের স্বর্ণ চুরি হয়েছে। সে স্বর্ণ চুরির অপবাদে চেয়ারম্যান ছেলেটাকে পিটাইছে। তারপরে মাকে বাবাকে ডেকেও কিল ঘুসি থাপ্পড় দিছে। পরে ছেলেটাকে আটকিয়ে রাখে চেয়ারম্যান। এ সময় ৯৯৯ নাম্বারে ফোন পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত আজিজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ব‌লেন, শিশু সোয়াদ আমার বাসা থেকে স্বর্ণ চুরি করেছে। ছে‌লেটা আমার কা‌ছে দুই বছর ধ‌রে ছিল। আমি ‌তো শিশুটিকে ধ‌রে এনে বেঁধে রাখিনি যে ৯৯৯ নাম্বারে পু‌লিশ এসে উদ্ধার কর‌বে- এটি সত্য নয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানার ওসি মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ৯৯৯ নাম্বারে কল পেয়ে আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে পিতা ও মায়ের জিম্মায় দিয়েছি। উভয়পক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছে, আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।

প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় সোমবার রাতে অসহায় নারী ও শিশুকে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে আহত করার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি আইনী সহায়তা বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের উদ্যোগে আজ Read more

যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় আলাউদ্দিন (২২) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত Read more

কর্মকালীন সময়ে সাংবাদিকদের সহযোগীতা পেয়েছি :…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনকে বিদায়ী Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যানজট নিরসনে জেলা ট্র্যাফিক…

চলারপথে রিপোর্ট : সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলীর মোড়, Read more

প্রায় ৫ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ীসহ…

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫বিজিবি) এর একটি টহলদল বিপুল Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কের গর্ত মেরামত করছে হাইওয়ে…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল বিশ্বরোডে মোড়ে নিত্যদিনের যানযট মুক্ত করতে Read more

মদসহ ইউপি সদস্য আটক

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. Read more
ফাইল ছবি

নতুন ডিসি পেলো ২৫ জেলা

অনলাইন ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার মাসপূর্তির একদিন পর Read more

অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ

অনলাইন ডেস্ক : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা Read more

নাইজেরিয়ায় জ্বালানি ট্যাংকার-ট্রাক সংঘর্ষে ৪৮ জন…

অনলাইন ডেস্ক : নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চল নাইজার রাজ্যে জ্বালানি বহনকারী ট্যাংকারের Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই নামধারী সাংবাদিক…

চলারপথে রিপোর্ট : মুক্তিযোদ্ধার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুই নামধারী Read more

পর্যটনে দক্ষতা ও সক্ষমতা বেড়েছে

জাতীয়, 20 February 2024, 319 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেছেন, গত ১৫ বছরে দেশের পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্প ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে গেছে। এ সময়ে আমাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বেড়েছে। উন্নয়নের এ ধারাকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।

আজ ২০ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক আগ্রহে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহর নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। নতুন নতুন রুট চালু করা হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ ঢাকা-রোম ফ্লাইট চালু হবে। আরও রুট চালুর জন্য নতুন এয়ারক্রাফট কেনার কথাও ভাবা হচ্ছে। দেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোও ভালো করছে।

মন্ত্রী বলেন, দেশের সব বিমানবন্দর আধুনিকায়ন করার কাজ চলমান। এ বছরই অক্টোবর মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক থার্ড টার্মিনাল চালু হবে। নতুন রাডার স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে দেশের সমগ্র আকাশসীমা নজরদারির আওতায় আসায় আমাদের আকাশসীমা দিয়ে চলাচলকারী উড়োজাহাজ হতে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে। শীতকালে প্রায়ই কুয়াশার কারণে ফ্লাইট ডাইভারশন করতে হয়। এই ডাইভারশন যাতে করতে না হয় তার জন্য আইএলএস সিস্টেম আপগ্রেড করা হচ্ছে।
এছাড়া মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে, কোনো ফ্লাইট ডাইভারশনের প্রয়োজন হলেও তা যেন দেশের ভিতরেই করা হয়। এজন্য শীতকালের ওই সময়ে সিলেট এবং চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট ২৪ ঘণ্টা অপারেটিং থাকবে।

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে ভূমিকা রাখছে তা যাতে আরও বৃদ্ধি পায় সেজন্য আমরা কাজ করছি। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, যুগ্ম সচিব সাঈদ কুতুব, এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি তানজিম আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লবসহ নির্বাহী কমিটির সদস্যরা।

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের

জাতীয়, 10 July 2023, 691 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৭ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা-ফসলী জমি-গাছপালা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে ভাঙনকবলিতরা।

তাদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে পাউবো যেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না তেমনি ভাঙনের শিকার মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। ভাঙনের শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের। অন্যদিকে, পানি বাড়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

জানা যায়, গত এক সপ্তাহ যাবত যমুনা নদীর পানি পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনার অরক্ষিত তীরবর্তী বিস্তৃর্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ইউনিয়ন, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, চৌহালীর খাসপুকুরিয়া ইউপির ভুতের মোড়, বাঘুটিয়া, ওমারপুর, বেলকুচি এবং কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর চরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী মানুষ নির্ঘুম রাত পার করছে।
আর গত দেড়মাসে এসব অঞ্চলের প্রায় ৩ সহস্রাধিক বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে।

শাহজাদপুরের পাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, রহিমা খাতুন, শরিফুল ইসলাম ও শুকুর ফকির জানান, দুদিন আগেও বসতভিটা ছিল। হঠাৎ প্রবল ঘুর্নাবর্তের কারণে বসতভিটাসহ আসবাবপত্র সব কিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কোনরকম ছেলে-মেয়ে নিয়ে রক্ষা পেয়েছি। বর্তমানে যাবার কোনো জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বসতঘর তোলার জায়গা না থাকায় ঘরগুলো ওয়াপদা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রেখেছে। ঝড় বৃষ্টি ও রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন পার করছি। এতো কস্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।

চৌহালীর বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এক ইঞ্চি জায়গাও নেই। এখন একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় পড়ে গেছি। ভবিষ্যতে কিভাবে চলবে সে চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। সরকার বা জনপ্রতি ও প্রশাসন কেউ আমাদের একটু সহযোগিতা করছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার নদী তীর রক্ষায় সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ও চৌহালী রক্ষায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পাউবো ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় তাদের গাফিলতির কারণে নদী ভাঙছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, যমুনা পানি বাড়ায় ভাঙ্গনও বাড়ছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতো বড় এরিয়ায় ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের সামর্থ্য পাউবোর নেই। এরপরেও যেখানে বেশি ভাঙছে সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, রাজনীতি, 21 November 2023, 642 Views,
ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি ও জামায়াতের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না। এটা অন্যায়। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির প্রয়োজন। সে জন্য অগ্নিসন্ত্রাসের পথ পরিহার করে জনগণের কল্যাণে কাজ করার এবং তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তাদের চেতনা জাগ্রত হোক যে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। জনগণের অকল্যাণ করে, তাদের পুড়িয়ে মেরে কিছু অর্জন করা যায় না- অন্তত এই বিষয়টা যেন যারা এগুলো করছে তারা বুঝতে পারেন। খবর- বাসস

আজ ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টি পারপাস কমপ্লেক্সে ‘মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা প্রদান’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদকে ভূষিত করেন।

তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না, একজন মানুষ কীভাবে আরেকটা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। এমনটি দেখেছিলাম ৭১ সালে। তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিতো। আর মানুষ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারত। দুঃখের বিষয় এরপর ২০১৩-১৪ সালে এবং ইদানীং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। পোড়া মানুষগুলোর ক্ষতবিক্ষত দেহ এবং তাদের আত্মচিৎকার ও পরিবারগুলো কী অবস্থায় আছে।

৭৫ এর পর হারাতে বসা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তাঁর সরকার আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লাখো বাঙালি স্বাধীনতার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেই স্লোগানও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যে ৭ মার্চের ভাষণ এ দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল, সেই ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজ সেই ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্থান পেয়েছে। আড়াই হাজার বছরে সামরিক-বেসামরিক নেতারা যত ভাষণ দিয়েছে, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এটুকু আমরা করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো চিহ্নিত, যেখানে গণকবর আছে সেগুলো সংরক্ষণ করা, স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করেছি। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মিউজিয়াম হবে। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বীরত্বের ইতিহাস জানানো দরকার। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই আজকে আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। কিন্তু একসময় সেটা পারিনি। এখন আমাদের স্বাধীন দেশে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শুধু দেশে নয়, বিদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইতোমধ্যে অনেকে জীবন দিয়েছেন। তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম. নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁকে স্বাগত জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনীর প্রধান তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যরা এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ সূচনা করে। সেই আক্রমণের ফলে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয় এবং ফলশ্রুতিতে আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করি।

তিনি এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম ২০০০ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বর্তমানে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁদের উত্তরাধিকারীকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের বছরে দু’টি উৎসব ভাতা, বিজয় দিবস ভাতা এবং নববর্ষ ভাতা তাঁদের নিজ নিজ একাউন্টে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরাসরি প্রদান করা হচ্ছে। যুদ্ধাহত ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মানী ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

২০২১-২২ অর্থবছর হতে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করার পাশাপাশি সকল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদেরকে মেধাভিত্তিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ছাত্রবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ের উপর প্রতি বছর পিএইচডি ডিগ্রির জন্য বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এরসঙ্গে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ জেলা ছাড়া সার্কিট হাউস অথবা ডাক বাংলোয় অবস্থান, সরকারি পরিবহনে সর্বোচ্চ শ্রেণিতে বিনামূল্যে চলাচল, বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটে বছরে একবার ফ্রি যাতায়াত এবং আন্তর্জাতিক যেকোনো রুটে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারসহ বিনা ভাড়ায় বছরে দুইবার যাতায়াত করতে পারছেন। খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বহনকারী গাড়ি টোল ফ্রি, পর্যটন কর্পোরেশের হোটেল ও মোটেলে বিনা ভাড়ায় বছরে একবার দুই রাত যাপন এবং জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে সপরিবারে অবস্থান করার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারীরা রেশন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সশস্ত্র বাহিনী হতে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্হিবিশ্বের যে সকল বরেণ্য রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক এবং সংগঠন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন তাঁদের সম্মাননা প্রদানের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা’, ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত রেখেই দেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের দিকে আমরা এগিয়ে যাব জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে আমরা শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাব। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে আমাদের স্থান করে নেব।

‘বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, আমাদের উন্নয়ন শহরকেন্দ্রিক নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যায় পর্যন্ত আমরা উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পেরেছি। তিনি বলেন, তাঁর সরকার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিতে পেরেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এর প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা হারিয়ে যাচ্ছে

জাতীয়, বিনোদন, 22 January 2024, 603 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আধুনিকতার স্পর্শ আর সভ্যতার ক্রমবিকাশে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রযুক্তির দাপটে অস্তিত্ব হারিয়েছে অধিকাংশ খেলা। একটা সময় গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত শিশু ও যুবকরা পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অভ্যস্থ ছিল। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা অবসরে দলবেঁধে খেলতো নানা প্রকারের খেলা। এসব খেলা বাড়ির উঠান থেকে শুরু করে রাস্তার আনাচে-কানাচে, খোলা মাঠে কম পরিসরেই খেলা যেত।

কিন্তু বর্তমান সময়ে মাঠ, বিল-ঝিল হারিয়ে যাওয়া, আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া ও প্রযুক্তির বিকাশে মহাকালের ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে জনপ্রিয় এসব গ্রামীণ খেলাধুলা। এখানকার দিনে শহরের শিশুরা ঘরের কোণে বসে বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ে পড়ে থাকে। যার কারণে তাদের মেধার বিকাশও সঠিকভাবে হয় না।

গ্রামবাংলার এক সময়ের জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে ছিল: হা-ডু-ডু, কাবাডি, ঘুড়ি খেলা, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুলি, গোল্লাছুট, কুস্তি, গোশত চুরি, কুতকুত, চোর-পুলিশ, হাড়িভাঙা, ইচিং বিচিং, ওপেন টু বায়োস্কোপ, কড়ি খেলা, সাপ খেলা, কানামাছি, লাঠি খেলা, ষাড়ের লড়াই, বউ-ছি, বলী খেলা, টোপাভাতি, নোনতা খেলা, নৌকা বাইচ, লুডু খেলা, রুমাল চুড়ি, পুতুল বৌ, ফুল টোক্কা, বাঘ ছাগল, বরফ পানি, মার্বেল, মোরগ লড়াই, লাটিম, লুডু, ষোল গুটি, এক্কা দোক্কা, সাত পাতা, বটি বটি, দাপ্পা, রস-কস, চারগুটি, চেয়ার সিটিংসহ আরো হাজারো প্রকার খেলা। বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের জনপ্রিয় এসব গ্রামীণ খেলাধুলা আজ প্রায় বিলুপ্ত।

গ্রামীণ এসব খেলাধুলা হলো বিনোদনমূলক, স্বাস্থ্য সচেতনমূলক ও প্রতিভা বিকাশের অন্যতম। যা আমাদের আদি ক্রীড়া সংস্কৃতি। এসব খেলাধুলা এক সময় আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করতো। বর্তমানে গ্রামীণ খেলাগুলো বিলুপ্ত হতে হতে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমান প্রযুক্তির সুবিধা ও এর ব্যবহারে এগিয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। তখন কেন পিছিয়ে থাকবে আমাদের প্রাণের খেলাগুলো? আমাদের সবার একটু চেষ্টাই পারে নতুন প্রজন্মকে এসব খেলার সঙ্গে পরিচিত করাতে। যা আমাদের ইতিহাস আর শিকড়কে টিকিয়ে রাখতে শক্তিশালী একটা মাধ্যম। সরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে এসব খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায়। স্কুলে শিশুদের এসব খেলার সঙ্গে পরিচয় করানোর সুযোগ আছে। চাইলেই বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানো যায় এসব খেলাধুলায় যুক্ত করে।

অতীতের সময়ে প্রতিবছর সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাগুলোতে নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। বর্তমানে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো খেলার মাঠও নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ ঘটছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত অচিরেই গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাবে। পরিণত হবে রূপকথার গল্পে।

এখন, মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে প্রজন্মকে রক্ষা ও গ্রামীণ খেলাকে বাঁচাতে এদেশের সচেতন ব্যক্তিদের এগিয়ে এসে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। এরসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ বৃদ্ধির মাধ্যমেই কেবল অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 27 June 2023, 851 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
দেশবাসীকে কুরবানির ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার এক ভিডিওবার্তায় এ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে তার উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বছর ঘুরে আবার আমাদের মাঝে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা, কুরবানির ঈদ। কুরবানি অর্থ ত্যাগ। ক্ষুদ্রতা, নিচুতা, অহংকার, স্বার্থপরতা ত্যাগের মাধ্যমে কুরবানির ঈদ সার্থক হয়ে উঠে।

‘ত্যাগের মহিমা উজ্জীবিত হয়ে আমরা মানব কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করি। সৌহার্দ্য এবং ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করে নেই।’

দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই ভালো থাকুন, নিরাপদ থাকুন, সুস্থ থাকুন। খোদা হাফেজ। ঈদ মোবারক৷