চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল রবিবার বিকেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান উপজেলার চুন্টা ও ভুইশ্বর বাজারে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা আদায় করেন।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান জানান, পবিত্র রমজান মাসে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার চুন্টা ও ভুইশ্বর বাজারে অভিযান চালিয়ে চুন্টা বাজারে নামহীন, অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকর শিশু খাদ্য বিক্রয়ের অপরাধে মেসার্স জয় দূর্গা স্টোরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি শিশু খাদ্যগুলো জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়াও মেয়াদোর্ত্তীন ঔষধ বিক্রয়, দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি উৎপাদন ও বিক্রয়ের অপরাধে ভুইশ্বর ও চুন্টা বাজারের আরো ৪টি দোকানকে ১১ জরিমানা করা হয়। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিখোঁজের এক দিন পর কচুক্ষেত থেকে মো. রাহিম নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ২০ জুন শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকার জাফর খালেরপাড় থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. রাহিম (১০) সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকার আসাদ আলীর ছেলে।
সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শিশু রাহিম সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়ার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর থেকে স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। পরে ২০ জুন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয়রা বাড়ির কাছে সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকার জাফর খালেরপাড়ের কচুক্ষেতে শিশুটির মরদেহ দেখতে পান। পরে তারা শিশুটির স্বজন ও পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
শিশুর বাবা আসাদ আলী জানান, বছর খানেক আগে তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এরপর শিশুটি তার নানি বাড়িতে থাকতেন। শিশুটির মা জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তার ছেলেকে কারা কী কারণে হত্যা করে থাকতে পারে – এ ব্যাপারে তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা কামনা করে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল হাসান জানান, নিহত শিশুটির মুখ এবং নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাঘের এই হাড় কাঁপানো শীতে মাঝে মধ্যেই থমকে যাচ্ছে জনজীবন। মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কোন রকমে শীত নিবারণ করছেন। অসহায় দরিদ্র লোকজনের অবস্থা খুবই করূন। তীব্র এই শীতে ভবঘুরে ও ছিন্নমূল মানুষদের দিনরাত যাচ্ছে সীমাহীন কষ্টে। আর সেই শীতার্থ মানুষদের পাশে কম্বল নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সরাইলের ইউএনও মো. মেজবাউল আলম ভূঁইয়া। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইউএনও কম্বল নিয়ে নেমে পড়েন সরাইল সদরের বিভিন্ন সড়কে ও মহল্লায়। ঘুরে ফিরে তিনি দরিদ্র অসহায় ছিন্নমূল নারী পুরূষদের পড়িয়ে দেন কম্বল। সড়ক বা মার্কেটের সামনে স্বামী স্ত্রী আদরের সন্তানদের জড়িয়ে ধরে ঘুমুচ্ছে। ঘুমের মধ্যেই হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে সকলেই। এমন অনেক পরিবারের সদস্যদের কম্বল পড়িয়ে দিয়েছেন। শীতে জবুতবু লোকজন কম্বলের উষ্ণতায় আবেগ আপ্লোত হয়ে পড়েন।
এক বৃদ্ধ জানতে চান কম্বল কে দিয়েছে? ইউএনও বলেন, কম্বল দিয়েছেন সরকার।
আমি সরকারের প্রতিনিধি হয়ে আপনাদের মাঝে বিতরণ করছি। আল্লাহ বলে ওই বৃদ্ধ হাসিনা ও ইউএনও’র জন্য দোয়া করতে থাকেন। এভাবে কুট্টাপাড়া মোড়, হাসপাতালের মোড় ও কালিকচ্ছ এলাকায় রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ঘুরে শীতার্ত মানুষদের কম্বল দিয়েছেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল আলম ভূঁইয়া বলেন, এটা দরিদ্র অসহায় শীতার্থ মানুষদের জন্য সরকারের একটা প্রচেষ্টা। কেউ শীতে কষ্ট করবেন না। আমাদের প্রচেষ্টা আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারত থেকে চোরাই পথে আনা ট্রাকভর্তি চিনিসহ দুজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। ৭ অক্টোবর সোমবার গভীর রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, সিলেটের জৈয়ন্তাপুর উপজেলার চিকরাগুলের নাজিম উদ্দিনের ছেলে মো. সোলাইমান আহম্মদ (২১) ও একই জেলার শাহ পরান থানার খাদিমপাড়া এলাকার মৃত আকলিছ মিয়ার ছেলে সাকিবুল ইসলাম (২২)।
জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। এ সময় একটি ট্রাকে তল্লাশি করে সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে আনা ১৭০ বস্তা চিনি উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় চিনি পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকটি। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়। পাশাপাশি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯৮ কেজি গাঁজা এবং ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৬ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় মাদকদ্রব্য বহনকারী ২টি প্রাইভেটকার ও ১টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
আজ ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ১০টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা এবং শনিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ ও সরাইল থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম ইমন (২৩), একই উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামের মোঃ মশিউর আলম (২২), একই উপজেলার খরশপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম রাব্বি (২০), স্বপন মিয়া (২৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার কালিশিমুল গ্রামের মোঃ সাকিব মিয়া (২১) ও একই উপজেলার জালালপুর গ্রামের রিপন (২২)।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহামেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেল তাদের আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলে তল্লাশী চালিয়ে ৯৮ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম ইমন, মশিউর আলম, মাজহারুল ইসলাম রাব্বি ও স্বপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া বাজারে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ী সাকিব মিয়া ও রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দাঙ্গা ভুলে গ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে ব্যানার হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে শিশু শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া একদল শিশু শিক্ষার্থী এই কর্মসূচি পালন করে। জানা যায়, উপজেলার পল্লী এলাকা পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। একাধিকবার হামলা সংঘর্ষ ভাঙচুর ও মামলার ঘটনাও ঘটেছে। রাত দিন ২৪ ঘণ্টাই একটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতো গ্রামবাসী। গত ১৮ই এপ্রিল একটি খাস জমির দখলকে কেন্দ্র দু’দল গ্রামবাসী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে যোগ দেয়। আহত হয় শতাধিক নারী-পুরুষ। পুলিশ গ্রেপ্তার করে ২০ জনকে। পরে কয়েকশত লোককে আসামি করে পুলিশ মামলা করে।
গ্রেপ্তার এড়াতে নারী-পুরুষ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। গ্রামে বৃদ্ধ, অসুস্থ ও শিশু ছাড়া আর কাউকে খুব একটা চোখে পড়ে না। মাঝে মধ্যে পুলিশ হানা দেয়। ২-৪ জনকে ধরে আনে। এতে করে আতঙ্কে গোটা গ্রামেই এখন বিরাজ করছে ভুতুড়ে অবস্থা। একটি মাধ্যমিক ও দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পূর্বের তুলনায় অনেক কমে গেছে। বিষয়টি ওই গ্রামের শিশু শিক্ষার্থীদের মনে দাগ কেটেছে। তারা অনেক ভেবে-চিন্তে গতকাল সাদা কাগজে লেখা ব্যানার নিয়ে গ্রামীণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে। এসময় তদের হাতে লেখা ছিল, ‘দাঙ্গা নয়, শান্তি চাই’, ‘ডু নট কোয়ারেল’, ‘দল বেঁধে স্কুলে যেতে চাই’। শিশু শিক্ষার্থীরা জানায়, ঘরে বাবা নেই, ভাই নেই। মাও লুকিয়ে থাকেন। স্কুলে শিক্ষার্থী নেই। বিকালে ইচ্ছামতো খেলতে পারছি না। এভাবে আর ভালো লাগছে না। আমরা ঝগড়া চাই না। সকলে মিলে গ্রামে শান্তি এনে দেন। সকল মানুষকে গ্রামে এনে দেন।
কলেজের প্রভাষক মো. এলাই মিয়া বলেন, ওই শিশুদের আকুতি ও মনের চাওয়া আমাদের বুঝতে হবে। তাদের চাওয়াটাকে পাওয়ায় পরিণত করতে কাজ করতে হবে। শিশুরা শান্তি চায়। গ্রামের সকল সরদার মাতব্বরকে মন খুলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। প্রয়োজনে পাশের গ্রামের লোকজনকে কাজে লাগিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।